কামরুল হাসান

সমাজে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা নিয়ে খুবই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। সেটা সবচেয়ে বেশি বোঝা যায় কারও সাক্ষাৎকার নিতে গেলে। আবার এর উল্টো দিকের মানুষও আছেন, যাঁরা মনে করেন গণমাধ্যম হলো মানুষের শেষ ভরসাস্থল।
এত বছর কাজ করতে গিয়ে জীবনে অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তাতে যেমন ভালো লাগা জমেছে, তেমনি বিব্রতও কম হতে হয়নি। তার পরও কিছু কিছু ঘটনা আছে, যার রেশ থেকে গেছে অনেক বছর। আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’-এ তেমন একটি সাক্ষাৎকারের গল্প বলি।
সেনানিবাসের ভেতর থেকে কোনো সংবাদ সংগ্রহ করতে হলে আগাম অনুমতি নিতে হয়। সেই অনুমতি নিতে নিতে দেরি হয়ে গেল। অ্যাসাইনমেন্টের সঙ্গী ছিলেন এবিসি রেডিওর সাংবাদিক শাহনাজ শারমীন (বর্তমানে নাগরিক টিভির প্রধান প্রতিবেদক)। তাঁর হাতে সময় কম, সে কারণে তিনি খুবই অস্থির। এটা ছিল বিডিআর বিদ্রোহের পরের বছর, ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি।
আমাদের লক্ষ্য ছিল নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্ত্রী বা পরিবারের নিকটজনের সঙ্গে একান্তে কথা বলে সেদিনের ঘটনাটা ভেতর থেকে বোঝা। কথা বলার অনুমতি চেয়ে নানা চেষ্টা-তদবির হলো। শুরুতে কেউ কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দুজন কথা বলতে রাজি হলেন, যাঁরা দুজনই নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী।
আমরা প্রথমে গেলাম ঢাকা সেনানিবাসের রজনীগন্ধা কোয়ার্টারের একটি বাসায়। সেই বাসায় ছিলেন বিডিআর বিদ্রোহে নিহত মেজর মমিনুল ইসলাম সরকারের স্ত্রী সানজানা সোনিয়া। বাসার দরজায় কলবেল বাজাতেই এক কিশোরী এসে দরজা খুলে বসতে বলল। একটু পরে এলেন সোনিয়া। কাছের কেউ হারিয়ে গেলে মানুষ যে কীভাবে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়, সোনিয়াকে দেখে তা বোঝা যাচ্ছিল। স্বামী মারা যাওয়ার এক বছর পরেও তিনি শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। আমরা টুকটাক প্রশ্ন করে ভেতর থেকে তাঁকে জানার চেষ্টা করছিলাম। সোনিয়াও নিজের মতো করে আামাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলেন।
বলছিলেন, মমিনুলের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় হয়েছিল ’৯৫ সালে। আর বিয়ে হয় ২০০২ সালে। সাত বছরের সংসারে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে কাটিয়েছেন খুব কম দিন। দুজনের চাকরির কারণে তাঁদের থাকতে হয়েছে বাইরে বাইরে। পিলখানার ঘটনার মাত্র তিন মাস আগে তাঁরা ঢাকায় পুরোপুরি সংসারজীবন শুরু করেন। মমিনের সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল চট্টগ্রামে। পিলখানায় বদলি হয়ে আসেন ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে।
বিডিআর বিদ্রোহের দিনের কথা মনে করে বললেন, বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষে মমিন ভেতরের অফিসার্স মেসে ছিলেন। বিদ্রোহের আগের দিন বিকেলে একবার বাসায় এসেছিলেন। বিডিআর সপ্তাহের কাজের তাড়াহুড়োর কারণে বিকেলে আবার চলে যান। মমিনের সঙ্গে শেষ কথা কী ছিল? সোনিয়া বললেন, বিদ্রোহের দিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে খবর পেলাম পিলখানার ভেতরে গন্ডগোল হচ্ছে।
মমিনকে অনেকবার ফোন করলাম, কিন্তু পেলাম না। শেষ পর্যন্ত বিডিআর সিগন্যাল রুমে ফোন করতেই একজন ফোন ধরে জানতে চাইলেন, আপনি কোথায় আছেন সেটা আগে বলুন। সোনিয়া নিজের অবস্থানের কথা জানাতেই অপর প্রান্ত থেকে বিডিআরের এক জওয়ান বললেন, ভেতরে এসে লাভ হবে না, যেখানে আছেন সেখানেই থাকেন।
এরপর অনেকবার তিনি ফোন করেছেন, কেউ আর ফোন ধরেনি। সোনিয়া বললেন, তখন তিনি ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা, তার ওপর স্বামীর খোঁজ নেই। সে অবস্থা কাউকে বলা যায় না, বোঝানো যায় না। কী করবেন, তা-ও বুঝতে পারছিলেন না। এভাবে দুই দিন কেটে যায়। ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জানতে পারেন, অন্য সব কর্মকর্তার সঙ্গে মমিনও নিহত হয়েছেন। মমিনুল সেনাবাহিনীর কমান্ডো ছিলেন। সোনিয়া আশা করেছিলেন, এত কিছুর মধ্যেও মমিন বেঁচে যাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও বাঁচতে পারেনি।
সোনিয়া আমাদের বললেন, তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার ১১ দিন পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) জন্ম হয় তাঁদের প্রথম সন্তানের। এই সন্তানকে নিয়ে মেজর মমিনের বুকভরা স্বপ্ন ছিল। দীর্ঘ সাত বছর পর প্রথম সন্তানের আগমনে তাঁর বাবা অনেক আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করে রেখেছিলেন। শুধু সন্তানকে দেখে যেতে পারেননি। এক বছরের শিশুর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে সোনিয়া বললেন, এই সন্তানের কাছে বাবার কোনো স্মৃতি নেই।
আমাদের অনেকক্ষণ হয়ে গেছে, কথাও প্রায় শেষ। এবার উঠি উঠি করতে করতে সোনিয়ার কাছে জানতে চাইলাম কী নাম রেখেছেন সন্তানের। সোনিয়া একটু চুপ করে থাকলেন। তারপর বললেন, আমি একটা জিনিস খুঁজছি। সেটা পেলে তবেই সন্তানের আসল নাম রাখব। এখন ছোট বাচ্চাদের সবাই যেভাবে ডাকে, আমরা তা-ই ডাকছি।
একটু অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, কী জিনিস সেটা? তিনি বললেন, আমি হন্যে হয়ে একটি ডায়েরি খুঁজছি। যাকে পেয়েছি জানতে চেয়েছি। পিলখানা থেকে আনা সব মালপত্রও ঘেঁটেছি, কিন্তু ডায়েরিটা আর পাইনি। বিদ্রোহের সময় বিডিআর জওয়ানরা সব কর্মকর্তার বাসা ও মেসের কক্ষ লুটপাট করে। কিন্তু মমিনুলের কক্ষ স্বাভাবিক ছিল। প্রথম কয়েক দিন সেই কক্ষে গিয়ে সব জিনিসপত্র খোঁজ করেছি। সেই সঙ্গে খুঁজেছি মমিনুলের ডায়েরিটা। হয়তো ডায়েরিটা মোমিনের কাছেই ছিল, ঘাতকেরা সেটি ফেলে দিয়েছে।
আমি আরও অবাক হয়ে বললাম, ডায়েরি? কী ছিল তাতে? সোনিয়ার কণ্ঠস্বর খুব নিচু। বললেন, ডায়েরিতে ছিল আমার অনাগত সন্তানের নাম। ও আমাকে বলে গেছে, ‘কয়েকটি নাম ঠিক করে রেখেছি। আমি আগে থেকে নামগুলো বলব না। বলে দিলে তোমার কাছে সব নাম পুরোনো হয়ে যাবে।’ ওর বাবা সেই নামগুলো গোপনে লিখে রেখেছিল। ছেলের বাবার সঙ্গে সেই ডায়েরিটাও হারিয়ে গেছে। বলতে বলতে সোনিয়ার চোখ ভারী হয়ে আসে, আমাদেরও। আমি কিছু বলতে পারি না। শারমীন হাতের আঙুলে চোখ মোছেন।
এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি অনেকবার বনানীর সামরিক কবরস্থানে গিয়েছি, যেখানে মমিনুলকে দাফন করা হয়েছে। সোনিয়ার সঙ্গে কয়েকবার দেখাও হয়েছে, কিন্তু কিছু বলতে পারিনি। তাঁকে দেখলেই আমার চোখের সামনে অনেকগুলো ডায়েরি ভেসে ওঠে, যার পাতায় পাতায় একটি করে শিশু নাম লেখা। যে নামটি আমরা কেউই পড়তে পারি না।
আরও পড়ুন:

সমাজে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা নিয়ে খুবই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। সেটা সবচেয়ে বেশি বোঝা যায় কারও সাক্ষাৎকার নিতে গেলে। আবার এর উল্টো দিকের মানুষও আছেন, যাঁরা মনে করেন গণমাধ্যম হলো মানুষের শেষ ভরসাস্থল।
এত বছর কাজ করতে গিয়ে জীবনে অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তাতে যেমন ভালো লাগা জমেছে, তেমনি বিব্রতও কম হতে হয়নি। তার পরও কিছু কিছু ঘটনা আছে, যার রেশ থেকে গেছে অনেক বছর। আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’-এ তেমন একটি সাক্ষাৎকারের গল্প বলি।
সেনানিবাসের ভেতর থেকে কোনো সংবাদ সংগ্রহ করতে হলে আগাম অনুমতি নিতে হয়। সেই অনুমতি নিতে নিতে দেরি হয়ে গেল। অ্যাসাইনমেন্টের সঙ্গী ছিলেন এবিসি রেডিওর সাংবাদিক শাহনাজ শারমীন (বর্তমানে নাগরিক টিভির প্রধান প্রতিবেদক)। তাঁর হাতে সময় কম, সে কারণে তিনি খুবই অস্থির। এটা ছিল বিডিআর বিদ্রোহের পরের বছর, ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি।
আমাদের লক্ষ্য ছিল নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্ত্রী বা পরিবারের নিকটজনের সঙ্গে একান্তে কথা বলে সেদিনের ঘটনাটা ভেতর থেকে বোঝা। কথা বলার অনুমতি চেয়ে নানা চেষ্টা-তদবির হলো। শুরুতে কেউ কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দুজন কথা বলতে রাজি হলেন, যাঁরা দুজনই নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী।
আমরা প্রথমে গেলাম ঢাকা সেনানিবাসের রজনীগন্ধা কোয়ার্টারের একটি বাসায়। সেই বাসায় ছিলেন বিডিআর বিদ্রোহে নিহত মেজর মমিনুল ইসলাম সরকারের স্ত্রী সানজানা সোনিয়া। বাসার দরজায় কলবেল বাজাতেই এক কিশোরী এসে দরজা খুলে বসতে বলল। একটু পরে এলেন সোনিয়া। কাছের কেউ হারিয়ে গেলে মানুষ যে কীভাবে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়, সোনিয়াকে দেখে তা বোঝা যাচ্ছিল। স্বামী মারা যাওয়ার এক বছর পরেও তিনি শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। আমরা টুকটাক প্রশ্ন করে ভেতর থেকে তাঁকে জানার চেষ্টা করছিলাম। সোনিয়াও নিজের মতো করে আামাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলেন।
বলছিলেন, মমিনুলের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় হয়েছিল ’৯৫ সালে। আর বিয়ে হয় ২০০২ সালে। সাত বছরের সংসারে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে কাটিয়েছেন খুব কম দিন। দুজনের চাকরির কারণে তাঁদের থাকতে হয়েছে বাইরে বাইরে। পিলখানার ঘটনার মাত্র তিন মাস আগে তাঁরা ঢাকায় পুরোপুরি সংসারজীবন শুরু করেন। মমিনের সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল চট্টগ্রামে। পিলখানায় বদলি হয়ে আসেন ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে।
বিডিআর বিদ্রোহের দিনের কথা মনে করে বললেন, বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষে মমিন ভেতরের অফিসার্স মেসে ছিলেন। বিদ্রোহের আগের দিন বিকেলে একবার বাসায় এসেছিলেন। বিডিআর সপ্তাহের কাজের তাড়াহুড়োর কারণে বিকেলে আবার চলে যান। মমিনের সঙ্গে শেষ কথা কী ছিল? সোনিয়া বললেন, বিদ্রোহের দিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে খবর পেলাম পিলখানার ভেতরে গন্ডগোল হচ্ছে।
মমিনকে অনেকবার ফোন করলাম, কিন্তু পেলাম না। শেষ পর্যন্ত বিডিআর সিগন্যাল রুমে ফোন করতেই একজন ফোন ধরে জানতে চাইলেন, আপনি কোথায় আছেন সেটা আগে বলুন। সোনিয়া নিজের অবস্থানের কথা জানাতেই অপর প্রান্ত থেকে বিডিআরের এক জওয়ান বললেন, ভেতরে এসে লাভ হবে না, যেখানে আছেন সেখানেই থাকেন।
এরপর অনেকবার তিনি ফোন করেছেন, কেউ আর ফোন ধরেনি। সোনিয়া বললেন, তখন তিনি ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা, তার ওপর স্বামীর খোঁজ নেই। সে অবস্থা কাউকে বলা যায় না, বোঝানো যায় না। কী করবেন, তা-ও বুঝতে পারছিলেন না। এভাবে দুই দিন কেটে যায়। ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জানতে পারেন, অন্য সব কর্মকর্তার সঙ্গে মমিনও নিহত হয়েছেন। মমিনুল সেনাবাহিনীর কমান্ডো ছিলেন। সোনিয়া আশা করেছিলেন, এত কিছুর মধ্যেও মমিন বেঁচে যাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও বাঁচতে পারেনি।
সোনিয়া আমাদের বললেন, তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার ১১ দিন পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) জন্ম হয় তাঁদের প্রথম সন্তানের। এই সন্তানকে নিয়ে মেজর মমিনের বুকভরা স্বপ্ন ছিল। দীর্ঘ সাত বছর পর প্রথম সন্তানের আগমনে তাঁর বাবা অনেক আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করে রেখেছিলেন। শুধু সন্তানকে দেখে যেতে পারেননি। এক বছরের শিশুর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে সোনিয়া বললেন, এই সন্তানের কাছে বাবার কোনো স্মৃতি নেই।
আমাদের অনেকক্ষণ হয়ে গেছে, কথাও প্রায় শেষ। এবার উঠি উঠি করতে করতে সোনিয়ার কাছে জানতে চাইলাম কী নাম রেখেছেন সন্তানের। সোনিয়া একটু চুপ করে থাকলেন। তারপর বললেন, আমি একটা জিনিস খুঁজছি। সেটা পেলে তবেই সন্তানের আসল নাম রাখব। এখন ছোট বাচ্চাদের সবাই যেভাবে ডাকে, আমরা তা-ই ডাকছি।
একটু অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, কী জিনিস সেটা? তিনি বললেন, আমি হন্যে হয়ে একটি ডায়েরি খুঁজছি। যাকে পেয়েছি জানতে চেয়েছি। পিলখানা থেকে আনা সব মালপত্রও ঘেঁটেছি, কিন্তু ডায়েরিটা আর পাইনি। বিদ্রোহের সময় বিডিআর জওয়ানরা সব কর্মকর্তার বাসা ও মেসের কক্ষ লুটপাট করে। কিন্তু মমিনুলের কক্ষ স্বাভাবিক ছিল। প্রথম কয়েক দিন সেই কক্ষে গিয়ে সব জিনিসপত্র খোঁজ করেছি। সেই সঙ্গে খুঁজেছি মমিনুলের ডায়েরিটা। হয়তো ডায়েরিটা মোমিনের কাছেই ছিল, ঘাতকেরা সেটি ফেলে দিয়েছে।
আমি আরও অবাক হয়ে বললাম, ডায়েরি? কী ছিল তাতে? সোনিয়ার কণ্ঠস্বর খুব নিচু। বললেন, ডায়েরিতে ছিল আমার অনাগত সন্তানের নাম। ও আমাকে বলে গেছে, ‘কয়েকটি নাম ঠিক করে রেখেছি। আমি আগে থেকে নামগুলো বলব না। বলে দিলে তোমার কাছে সব নাম পুরোনো হয়ে যাবে।’ ওর বাবা সেই নামগুলো গোপনে লিখে রেখেছিল। ছেলের বাবার সঙ্গে সেই ডায়েরিটাও হারিয়ে গেছে। বলতে বলতে সোনিয়ার চোখ ভারী হয়ে আসে, আমাদেরও। আমি কিছু বলতে পারি না। শারমীন হাতের আঙুলে চোখ মোছেন।
এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি অনেকবার বনানীর সামরিক কবরস্থানে গিয়েছি, যেখানে মমিনুলকে দাফন করা হয়েছে। সোনিয়ার সঙ্গে কয়েকবার দেখাও হয়েছে, কিন্তু কিছু বলতে পারিনি। তাঁকে দেখলেই আমার চোখের সামনে অনেকগুলো ডায়েরি ভেসে ওঠে, যার পাতায় পাতায় একটি করে শিশু নাম লেখা। যে নামটি আমরা কেউই পড়তে পারি না।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

সমাজে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা নিয়ে খুবই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। সেটা সবচেয়ে বেশি বোঝা যায় কারও সাক্ষাৎকার নিতে গেলে। আবার এর উল্টো দিকের মানুষও আছেন, যাঁরা মনে করেন গণমাধ্যম হলো মানুষের শেষ ভরসাস্থল।
এত বছর কাজ করতে গিয়ে জীবনে অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তাতে যেমন ভালো লাগা জমেছে, তেমনি বিব্রতও কম হতে হয়নি। তার পরও কিছু কিছু ঘটনা আছে, যার রেশ থেকে গেছে অনেক বছর। আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’-এ তেমন একটি সাক্ষাৎকারের গল্প বলি।
সেনানিবাসের ভেতর থেকে কোনো সংবাদ সংগ্রহ করতে হলে আগাম অনুমতি নিতে হয়। সেই অনুমতি নিতে নিতে দেরি হয়ে গেল। অ্যাসাইনমেন্টের সঙ্গী ছিলেন এবিসি রেডিওর সাংবাদিক শাহনাজ শারমীন (বর্তমানে নাগরিক টিভির প্রধান প্রতিবেদক)। তাঁর হাতে সময় কম, সে কারণে তিনি খুবই অস্থির। এটা ছিল বিডিআর বিদ্রোহের পরের বছর, ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি।
আমাদের লক্ষ্য ছিল নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্ত্রী বা পরিবারের নিকটজনের সঙ্গে একান্তে কথা বলে সেদিনের ঘটনাটা ভেতর থেকে বোঝা। কথা বলার অনুমতি চেয়ে নানা চেষ্টা-তদবির হলো। শুরুতে কেউ কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দুজন কথা বলতে রাজি হলেন, যাঁরা দুজনই নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী।
আমরা প্রথমে গেলাম ঢাকা সেনানিবাসের রজনীগন্ধা কোয়ার্টারের একটি বাসায়। সেই বাসায় ছিলেন বিডিআর বিদ্রোহে নিহত মেজর মমিনুল ইসলাম সরকারের স্ত্রী সানজানা সোনিয়া। বাসার দরজায় কলবেল বাজাতেই এক কিশোরী এসে দরজা খুলে বসতে বলল। একটু পরে এলেন সোনিয়া। কাছের কেউ হারিয়ে গেলে মানুষ যে কীভাবে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়, সোনিয়াকে দেখে তা বোঝা যাচ্ছিল। স্বামী মারা যাওয়ার এক বছর পরেও তিনি শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। আমরা টুকটাক প্রশ্ন করে ভেতর থেকে তাঁকে জানার চেষ্টা করছিলাম। সোনিয়াও নিজের মতো করে আামাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলেন।
বলছিলেন, মমিনুলের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় হয়েছিল ’৯৫ সালে। আর বিয়ে হয় ২০০২ সালে। সাত বছরের সংসারে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে কাটিয়েছেন খুব কম দিন। দুজনের চাকরির কারণে তাঁদের থাকতে হয়েছে বাইরে বাইরে। পিলখানার ঘটনার মাত্র তিন মাস আগে তাঁরা ঢাকায় পুরোপুরি সংসারজীবন শুরু করেন। মমিনের সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল চট্টগ্রামে। পিলখানায় বদলি হয়ে আসেন ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে।
বিডিআর বিদ্রোহের দিনের কথা মনে করে বললেন, বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষে মমিন ভেতরের অফিসার্স মেসে ছিলেন। বিদ্রোহের আগের দিন বিকেলে একবার বাসায় এসেছিলেন। বিডিআর সপ্তাহের কাজের তাড়াহুড়োর কারণে বিকেলে আবার চলে যান। মমিনের সঙ্গে শেষ কথা কী ছিল? সোনিয়া বললেন, বিদ্রোহের দিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে খবর পেলাম পিলখানার ভেতরে গন্ডগোল হচ্ছে।
মমিনকে অনেকবার ফোন করলাম, কিন্তু পেলাম না। শেষ পর্যন্ত বিডিআর সিগন্যাল রুমে ফোন করতেই একজন ফোন ধরে জানতে চাইলেন, আপনি কোথায় আছেন সেটা আগে বলুন। সোনিয়া নিজের অবস্থানের কথা জানাতেই অপর প্রান্ত থেকে বিডিআরের এক জওয়ান বললেন, ভেতরে এসে লাভ হবে না, যেখানে আছেন সেখানেই থাকেন।
এরপর অনেকবার তিনি ফোন করেছেন, কেউ আর ফোন ধরেনি। সোনিয়া বললেন, তখন তিনি ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা, তার ওপর স্বামীর খোঁজ নেই। সে অবস্থা কাউকে বলা যায় না, বোঝানো যায় না। কী করবেন, তা-ও বুঝতে পারছিলেন না। এভাবে দুই দিন কেটে যায়। ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জানতে পারেন, অন্য সব কর্মকর্তার সঙ্গে মমিনও নিহত হয়েছেন। মমিনুল সেনাবাহিনীর কমান্ডো ছিলেন। সোনিয়া আশা করেছিলেন, এত কিছুর মধ্যেও মমিন বেঁচে যাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও বাঁচতে পারেনি।
সোনিয়া আমাদের বললেন, তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার ১১ দিন পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) জন্ম হয় তাঁদের প্রথম সন্তানের। এই সন্তানকে নিয়ে মেজর মমিনের বুকভরা স্বপ্ন ছিল। দীর্ঘ সাত বছর পর প্রথম সন্তানের আগমনে তাঁর বাবা অনেক আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করে রেখেছিলেন। শুধু সন্তানকে দেখে যেতে পারেননি। এক বছরের শিশুর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে সোনিয়া বললেন, এই সন্তানের কাছে বাবার কোনো স্মৃতি নেই।
আমাদের অনেকক্ষণ হয়ে গেছে, কথাও প্রায় শেষ। এবার উঠি উঠি করতে করতে সোনিয়ার কাছে জানতে চাইলাম কী নাম রেখেছেন সন্তানের। সোনিয়া একটু চুপ করে থাকলেন। তারপর বললেন, আমি একটা জিনিস খুঁজছি। সেটা পেলে তবেই সন্তানের আসল নাম রাখব। এখন ছোট বাচ্চাদের সবাই যেভাবে ডাকে, আমরা তা-ই ডাকছি।
একটু অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, কী জিনিস সেটা? তিনি বললেন, আমি হন্যে হয়ে একটি ডায়েরি খুঁজছি। যাকে পেয়েছি জানতে চেয়েছি। পিলখানা থেকে আনা সব মালপত্রও ঘেঁটেছি, কিন্তু ডায়েরিটা আর পাইনি। বিদ্রোহের সময় বিডিআর জওয়ানরা সব কর্মকর্তার বাসা ও মেসের কক্ষ লুটপাট করে। কিন্তু মমিনুলের কক্ষ স্বাভাবিক ছিল। প্রথম কয়েক দিন সেই কক্ষে গিয়ে সব জিনিসপত্র খোঁজ করেছি। সেই সঙ্গে খুঁজেছি মমিনুলের ডায়েরিটা। হয়তো ডায়েরিটা মোমিনের কাছেই ছিল, ঘাতকেরা সেটি ফেলে দিয়েছে।
আমি আরও অবাক হয়ে বললাম, ডায়েরি? কী ছিল তাতে? সোনিয়ার কণ্ঠস্বর খুব নিচু। বললেন, ডায়েরিতে ছিল আমার অনাগত সন্তানের নাম। ও আমাকে বলে গেছে, ‘কয়েকটি নাম ঠিক করে রেখেছি। আমি আগে থেকে নামগুলো বলব না। বলে দিলে তোমার কাছে সব নাম পুরোনো হয়ে যাবে।’ ওর বাবা সেই নামগুলো গোপনে লিখে রেখেছিল। ছেলের বাবার সঙ্গে সেই ডায়েরিটাও হারিয়ে গেছে। বলতে বলতে সোনিয়ার চোখ ভারী হয়ে আসে, আমাদেরও। আমি কিছু বলতে পারি না। শারমীন হাতের আঙুলে চোখ মোছেন।
এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি অনেকবার বনানীর সামরিক কবরস্থানে গিয়েছি, যেখানে মমিনুলকে দাফন করা হয়েছে। সোনিয়ার সঙ্গে কয়েকবার দেখাও হয়েছে, কিন্তু কিছু বলতে পারিনি। তাঁকে দেখলেই আমার চোখের সামনে অনেকগুলো ডায়েরি ভেসে ওঠে, যার পাতায় পাতায় একটি করে শিশু নাম লেখা। যে নামটি আমরা কেউই পড়তে পারি না।
আরও পড়ুন:

সমাজে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা নিয়ে খুবই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। সেটা সবচেয়ে বেশি বোঝা যায় কারও সাক্ষাৎকার নিতে গেলে। আবার এর উল্টো দিকের মানুষও আছেন, যাঁরা মনে করেন গণমাধ্যম হলো মানুষের শেষ ভরসাস্থল।
এত বছর কাজ করতে গিয়ে জীবনে অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তাতে যেমন ভালো লাগা জমেছে, তেমনি বিব্রতও কম হতে হয়নি। তার পরও কিছু কিছু ঘটনা আছে, যার রেশ থেকে গেছে অনেক বছর। আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’-এ তেমন একটি সাক্ষাৎকারের গল্প বলি।
সেনানিবাসের ভেতর থেকে কোনো সংবাদ সংগ্রহ করতে হলে আগাম অনুমতি নিতে হয়। সেই অনুমতি নিতে নিতে দেরি হয়ে গেল। অ্যাসাইনমেন্টের সঙ্গী ছিলেন এবিসি রেডিওর সাংবাদিক শাহনাজ শারমীন (বর্তমানে নাগরিক টিভির প্রধান প্রতিবেদক)। তাঁর হাতে সময় কম, সে কারণে তিনি খুবই অস্থির। এটা ছিল বিডিআর বিদ্রোহের পরের বছর, ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি।
আমাদের লক্ষ্য ছিল নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্ত্রী বা পরিবারের নিকটজনের সঙ্গে একান্তে কথা বলে সেদিনের ঘটনাটা ভেতর থেকে বোঝা। কথা বলার অনুমতি চেয়ে নানা চেষ্টা-তদবির হলো। শুরুতে কেউ কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দুজন কথা বলতে রাজি হলেন, যাঁরা দুজনই নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী।
আমরা প্রথমে গেলাম ঢাকা সেনানিবাসের রজনীগন্ধা কোয়ার্টারের একটি বাসায়। সেই বাসায় ছিলেন বিডিআর বিদ্রোহে নিহত মেজর মমিনুল ইসলাম সরকারের স্ত্রী সানজানা সোনিয়া। বাসার দরজায় কলবেল বাজাতেই এক কিশোরী এসে দরজা খুলে বসতে বলল। একটু পরে এলেন সোনিয়া। কাছের কেউ হারিয়ে গেলে মানুষ যে কীভাবে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়, সোনিয়াকে দেখে তা বোঝা যাচ্ছিল। স্বামী মারা যাওয়ার এক বছর পরেও তিনি শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। আমরা টুকটাক প্রশ্ন করে ভেতর থেকে তাঁকে জানার চেষ্টা করছিলাম। সোনিয়াও নিজের মতো করে আামাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলেন।
বলছিলেন, মমিনুলের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় হয়েছিল ’৯৫ সালে। আর বিয়ে হয় ২০০২ সালে। সাত বছরের সংসারে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে কাটিয়েছেন খুব কম দিন। দুজনের চাকরির কারণে তাঁদের থাকতে হয়েছে বাইরে বাইরে। পিলখানার ঘটনার মাত্র তিন মাস আগে তাঁরা ঢাকায় পুরোপুরি সংসারজীবন শুরু করেন। মমিনের সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল চট্টগ্রামে। পিলখানায় বদলি হয়ে আসেন ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে।
বিডিআর বিদ্রোহের দিনের কথা মনে করে বললেন, বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষে মমিন ভেতরের অফিসার্স মেসে ছিলেন। বিদ্রোহের আগের দিন বিকেলে একবার বাসায় এসেছিলেন। বিডিআর সপ্তাহের কাজের তাড়াহুড়োর কারণে বিকেলে আবার চলে যান। মমিনের সঙ্গে শেষ কথা কী ছিল? সোনিয়া বললেন, বিদ্রোহের দিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে খবর পেলাম পিলখানার ভেতরে গন্ডগোল হচ্ছে।
মমিনকে অনেকবার ফোন করলাম, কিন্তু পেলাম না। শেষ পর্যন্ত বিডিআর সিগন্যাল রুমে ফোন করতেই একজন ফোন ধরে জানতে চাইলেন, আপনি কোথায় আছেন সেটা আগে বলুন। সোনিয়া নিজের অবস্থানের কথা জানাতেই অপর প্রান্ত থেকে বিডিআরের এক জওয়ান বললেন, ভেতরে এসে লাভ হবে না, যেখানে আছেন সেখানেই থাকেন।
এরপর অনেকবার তিনি ফোন করেছেন, কেউ আর ফোন ধরেনি। সোনিয়া বললেন, তখন তিনি ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা, তার ওপর স্বামীর খোঁজ নেই। সে অবস্থা কাউকে বলা যায় না, বোঝানো যায় না। কী করবেন, তা-ও বুঝতে পারছিলেন না। এভাবে দুই দিন কেটে যায়। ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জানতে পারেন, অন্য সব কর্মকর্তার সঙ্গে মমিনও নিহত হয়েছেন। মমিনুল সেনাবাহিনীর কমান্ডো ছিলেন। সোনিয়া আশা করেছিলেন, এত কিছুর মধ্যেও মমিন বেঁচে যাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও বাঁচতে পারেনি।
সোনিয়া আমাদের বললেন, তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার ১১ দিন পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) জন্ম হয় তাঁদের প্রথম সন্তানের। এই সন্তানকে নিয়ে মেজর মমিনের বুকভরা স্বপ্ন ছিল। দীর্ঘ সাত বছর পর প্রথম সন্তানের আগমনে তাঁর বাবা অনেক আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করে রেখেছিলেন। শুধু সন্তানকে দেখে যেতে পারেননি। এক বছরের শিশুর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে সোনিয়া বললেন, এই সন্তানের কাছে বাবার কোনো স্মৃতি নেই।
আমাদের অনেকক্ষণ হয়ে গেছে, কথাও প্রায় শেষ। এবার উঠি উঠি করতে করতে সোনিয়ার কাছে জানতে চাইলাম কী নাম রেখেছেন সন্তানের। সোনিয়া একটু চুপ করে থাকলেন। তারপর বললেন, আমি একটা জিনিস খুঁজছি। সেটা পেলে তবেই সন্তানের আসল নাম রাখব। এখন ছোট বাচ্চাদের সবাই যেভাবে ডাকে, আমরা তা-ই ডাকছি।
একটু অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, কী জিনিস সেটা? তিনি বললেন, আমি হন্যে হয়ে একটি ডায়েরি খুঁজছি। যাকে পেয়েছি জানতে চেয়েছি। পিলখানা থেকে আনা সব মালপত্রও ঘেঁটেছি, কিন্তু ডায়েরিটা আর পাইনি। বিদ্রোহের সময় বিডিআর জওয়ানরা সব কর্মকর্তার বাসা ও মেসের কক্ষ লুটপাট করে। কিন্তু মমিনুলের কক্ষ স্বাভাবিক ছিল। প্রথম কয়েক দিন সেই কক্ষে গিয়ে সব জিনিসপত্র খোঁজ করেছি। সেই সঙ্গে খুঁজেছি মমিনুলের ডায়েরিটা। হয়তো ডায়েরিটা মোমিনের কাছেই ছিল, ঘাতকেরা সেটি ফেলে দিয়েছে।
আমি আরও অবাক হয়ে বললাম, ডায়েরি? কী ছিল তাতে? সোনিয়ার কণ্ঠস্বর খুব নিচু। বললেন, ডায়েরিতে ছিল আমার অনাগত সন্তানের নাম। ও আমাকে বলে গেছে, ‘কয়েকটি নাম ঠিক করে রেখেছি। আমি আগে থেকে নামগুলো বলব না। বলে দিলে তোমার কাছে সব নাম পুরোনো হয়ে যাবে।’ ওর বাবা সেই নামগুলো গোপনে লিখে রেখেছিল। ছেলের বাবার সঙ্গে সেই ডায়েরিটাও হারিয়ে গেছে। বলতে বলতে সোনিয়ার চোখ ভারী হয়ে আসে, আমাদেরও। আমি কিছু বলতে পারি না। শারমীন হাতের আঙুলে চোখ মোছেন।
এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি অনেকবার বনানীর সামরিক কবরস্থানে গিয়েছি, যেখানে মমিনুলকে দাফন করা হয়েছে। সোনিয়ার সঙ্গে কয়েকবার দেখাও হয়েছে, কিন্তু কিছু বলতে পারিনি। তাঁকে দেখলেই আমার চোখের সামনে অনেকগুলো ডায়েরি ভেসে ওঠে, যার পাতায় পাতায় একটি করে শিশু নাম লেখা। যে নামটি আমরা কেউই পড়তে পারি না।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

সমাজে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা নিয়ে খুবই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। সেটা সবচেয়ে বেশি বোঝা যায় কারও সাক্ষাৎকার নিতে গেলে। আবার এর উল্টো দিকের মানুষও আছেন, যাঁরা মনে করেন গণমাধ্যম হলো মানুষের শেষ ভরসাস্থল।
১৬ জুলাই ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সমাজে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা নিয়ে খুবই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। সেটা সবচেয়ে বেশি বোঝা যায় কারও সাক্ষাৎকার নিতে গেলে। আবার এর উল্টো দিকের মানুষও আছেন, যাঁরা মনে করেন গণমাধ্যম হলো মানুষের শেষ ভরসাস্থল।
১৬ জুলাই ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

সমাজে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা নিয়ে খুবই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। সেটা সবচেয়ে বেশি বোঝা যায় কারও সাক্ষাৎকার নিতে গেলে। আবার এর উল্টো দিকের মানুষও আছেন, যাঁরা মনে করেন গণমাধ্যম হলো মানুষের শেষ ভরসাস্থল।
১৬ জুলাই ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

সমাজে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা নিয়ে খুবই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। সেটা সবচেয়ে বেশি বোঝা যায় কারও সাক্ষাৎকার নিতে গেলে। আবার এর উল্টো দিকের মানুষও আছেন, যাঁরা মনে করেন গণমাধ্যম হলো মানুষের শেষ ভরসাস্থল।
১৬ জুলাই ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৭ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৭ দিন আগে