Ajker Patrika

ট্যানারি শ্রমিকেরা মৌলিক শ্রম অধিকার থেকে বঞ্চিত: সমীক্ষা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর অদূরে সাভারের হেমায়েতপুর ট্যানারি শিল্প এলাকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শ্রমিক অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত। পাশাপাশি ৭৭ শতাংশ শ্রমিক আইনগত ন্যূনতম মজুরির চেয়ে কম বেতন পান। আর ৮৬ শতাংশ শ্রমিকের কোনো নিয়োগপত্র নেই।

বাংলাদেশ ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়ন ও সলিডারিটি সেন্টার পরিচালিত একটি যৌথ সমীক্ষায় ট্যানারি শ্রমিকদের এ চিত্র ফুটে উঠেছে।

রাজধানীর এক হোটেলে আজ রোববার অংশীজনদের সভায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। সেখানে চলতি বছরের আগস্ট থেকে নভেম্বর মাসে পরিদর্শন চেকলিস্ট এবং শ্রমিক সাক্ষাৎকার ব্যবহার করে ছায়া পরিদর্শনের মাধ্যমে পরিচালিত সমীক্ষাটি ১২১টি কারখানার ২২৫ জন শ্রমিকের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে অস্থায়ী কর্মসংস্থান ব্যবস্থা, মজুরিবৈষম্য এবং পেশাগত সুরক্ষার নানা দিক তুলে ধরা হয়।

সমীক্ষায় এক-পঞ্চমাংশ শ্রমিক জানান, তাঁরা বেতন স্লিপ পান এবং বেশির ভাগই তাঁদের মজুরি অনিয়মিত বা বিলম্বিত।

আর ৪২ শতাংশের মতে, তাঁরা দিনে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় কাজ করেন এবং ৩৩ শতাংশ সপ্তাহের সাত দিনই কাজ করেন। ৬৩ শতাংশ আইন অনুযায়ী দ্বিগুণ হারে ওভারটাইম পান না।

সমীক্ষায় আরও বলা হয়, এক-তৃতীয়াংশ শ্রমিক ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) পান। ৫৮ শতাংশ বলেছেন, তাঁদের সঠিক পিপিই ব্যবহারের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয় না এবং ৭৭ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা কোনো আনুষ্ঠানিক স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা প্রশিক্ষণ পাননি।

শ্রমিকেরা অপর্যাপ্ত বায়ু চলাচল, দুর্গন্ধ, জলাবদ্ধতা এবং দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়ও উল্লেখ করেছেন।

প্রতিবেদন অনুসারে, ৮৫ শতাংশ নারী অংশগ্রহণকারী বলেছেন, তাঁরা মাতৃত্বকালীন ছুটি বা সুবিধা পান না এবং প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী পরিষ্কার, পৃথক টয়লেট সুবিধার অভাব লক্ষ্য করেছেন।

গবেষণায় বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার উল্লেখযোগ্য সীমাবদ্ধতা উঠে এসেছে। এক-তৃতীয়াংশ শ্রমিক মজুরি বা সুরক্ষা-সংক্রান্ত অভিযোগ দায়েরের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার অনুপস্থিতির কথা জানিয়েছেন। ৪৩ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা কোনো না কোনো ধরনের দুর্ব্যবহারের সম্মুখীন হয়েছেন এবং প্রতিঘাতের ভয়ে অভিযোগ দায়ের করা থেকে এড়িয়ে চলেন।

এতে আরও দেখা যায়, ইউনিয়নভুক্ত কারখানাগুলো ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন, লিখিত চুক্তি, মজুরি-সম্পর্কিত অভিযোগ ব্যবস্থা এবং সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদানে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে।

অনুষ্ঠানে সলিডারিটি সেন্টারের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এ কে এম নাসিম বলেন, এই ছায়া পরিদর্শনের মাধ্যমে হাজারীবাগ থেকে হেমায়েতপুরে ট্যানারি কারখানা স্থানান্তরিত হওয়ার পরেও শ্রমিকেরা যে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে, সে চিত্র উঠে এসেছে। এটা স্পষ্ট, শ্রমিকদের সমস্যাগুলো এখনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর অগ্রাধিকার নয়। এর প্রতিফলন ঘটে বিপুলসংখ্যক শ্রমিককে ‘চুক্তিভিত্তিক’ নিয়োগ দেওয়া এবং এই খাতে ন্যূনতম মজুরি অব্যাহতভাবে বাস্তবায়ন না করার মাধ্যমে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও দুই মিত্র হারালেন মাদুরো, লাতিনে ভেনেজুয়েলার পাশে এখন কারা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ