মন্টি বৈষ্ণব
সিলেট বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে মণিপুরী নারীদের হাতে বোনা মণিপুরী শাড়ির কথা। বাংলাদেশের গর্ব মণিপুরী শাড়িকে দেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বে পরিচিত করার স্বপ্ন জেব উন নাহার যূঁথীর। এ স্বপ্ন নিয়ে মণিপুরী শাড়ি নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা থেকে অনলাইনে শুরু করেন কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম ‘পদ্মপুরাণ’।
যূঁথীর জন্ম, বেড়ে ওঠা, স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি সব সিলেটেই। দেশীয় ঐতিহ্যের প্রতি তাঁর টান ছিল সেই ছোটবেলা থেকেই। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পড়ালেখার শেষের দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেনাকাটার প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হন। এই আকর্ষণ থেকেই নিজের একটি ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টির ইচ্ছার জন্ম। তাই বেশ কয়েকটি চাকরিতে যুক্ত হলেও আর চাকরিজীবী হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা স্থায়ী হয়নি। শুরু করেন ‘পদ্মপুরাণ’।
ছোটবেলা থেকে স্বাধীনভাবে থাকতে পছন্দ করতেন যূঁথী। আর এই চিন্তাই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পর তাঁর জীবন-ভাবনায় প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। এই সময়টা ছিল কোনো না কোনো পেশায় যুক্ত হওয়ার সময়। ঠিক সে সময়টাতে তিনি ভাবলেন, এই ১০ টা-৫টা রুটিন তাঁর জন্য নয়। তাই স্বাধীন পেশা নির্বাচন করতে গিয়েই অনলাইন ব্যবসায় নিজেকে যুক্ত করেন। সিলেটের মানুষ হওয়ায় মণিপুরী শাড়ি দিয়েই শুরু করেন কাজ।
‘পদ্মপুরাণ’-এর স্বত্বাধিকারী যূঁথীর শুরুর গল্পে তাকাতে হলে ফিরতে হবে ২০১৬ সালে। নিজেই জানালেন, ‘পদ্মপুরাণের জন্ম ২০১৬ সালে। শুরুর সেই সময়ে আমি একদমই বিক্রির চিন্তা বা চেষ্টা—কিছুই করিনি। সময় নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের পেজ ও ছবি দেখতাম। নিজে নিজে ছবি তোলার চেষ্টা করতাম। পদ্মপুরাণের নিয়মিত বিক্রি শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। মাত্র ছয় হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করি।’
যেহেতু মণিপুরী শাড়ির দাম একটু বেশি, তাই শুরুতে চ্যালেঞ্জটাও বেশি ছিল। কিন্তু থেমে থাকেননি যূঁথি। এর মধ্যেই ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে গুজরাট মহারাজা সায়াজিরাও ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যান। ভারতে থাকার সময় তাঁর প্রতিষ্ঠানের কাজে সহায়তার হাত বাড়ান পরিবারের লোকেরাই। বললেন, ‘২০১৮-১৯ সালে পদ্মপুরাণের যাবতীয় কাজ করেছেন আমার মা, আর ভাই। শাড়ি আনা, ছবি তোলা, ঠিকানা অনুযায়ী সেগুলো পাঠানোর ব্যবস্থা—এ কাজগুলো করতেন তাঁরা। ২০২০ সালে ফিরে আমি আবার নতুন করে সবকিছু শুরু করি। মণিপুরী শাড়ি, গামছা, ওড়না, শাল, মাফলার নিয়ে প্রচুর কাজ করেছি। ইদানীং মণিপুরী শাড়িতে একটু আনকমন কম্বিনেশন নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। আমার মনে হয়, আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে, এমন একটা পেশা নিতে পেরেছি, যা আমার প্যাশন। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ তাদের পেশাকে পছন্দ করতে পারে না।’
যূঁথী মণিপুরী শাড়ি, ওড়নাসহ মণিপুরী অন্যান্য পণ্য, পেইন্টের শাড়ি, ড্রেস, ব্লাউজপিস, দেশীয় তাঁত শাড়ি, গৃহ সজ্জাসামগ্রী, টিপ ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছেন। মণিপুরী শাড়ির পাশাপাশি খাদি কাপড়ের কামিজ পিস নিয়েও কাজ করেছেন। এ ছাড়া কাজ করেছেন টাঙ্গাইলের সুতি ও সফট কাতান নিয়ে। পেইন্টিংয়ের প্রতি দুর্বলতার কারণে ২০২০ সাল থেকে শুরু করেন ফ্যাব্রিক পেইন্টিংয়ের কাজ।
এই সময়ে দেশে উদ্যোক্তার সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে অনলাইনে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যাও। দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীদের ব্যবসায় যুক্ত হওয়া অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এই পেশাটা মানুষের মনে কিছুটা হলেও একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে। যারা এই পেশায় এসেছেন বা আসতে চান তাঁদের বিষয়ে যূঁথী বলেন, ‘আপনার ক্রিয়েটিভিটির সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা করুন, তাহলেই মৌলিক কাজ বের হয়ে আসবে। অমুক ওই জিনিস বিক্রি করছে, তাই আমাকেও করতে হবে—এ রকম ধারণা মাথায় না আনাই ভালো। কারণ, প্রত্যকের ক্রেতা-শ্রেণি আলাদা। বিক্রির স্ট্র্যাটেজি আলাদা। তাই আগে বাজার ও পণ্য সম্পর্কে জানাটা বেশি জরুরি। তবে, এখন সবাই যেভাবে অনলাইন পেশায় আসছেন, তাতে সত্যি কথা বলতে পেশাদারি কতটা রাখতে পারছেন—এটা একটা প্রশ্ন থেকে যায়। তবে এই পেশার প্রতি সম্মান বাড়ছে, এটা দেখতে ভালো লাগে।’
‘পদ্মপুরাণ’ গুটিসুটি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে সারা দেশ ছাড়িয়ে এখন বাইরের কয়েকটা দেশেও পৌঁছে গেছে। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতে নিয়মিত যাচ্ছে পদ্মপুরাণের পণ্য। আগামী মাস থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে দুজন আঁকিয়ে যুক্ত হবেন। মূল কাজে এখন আছেন দুজন সহকারী। আর আরেকটু গুছিয়ে উঠতে পারলে একটা বড় স্টুডিও নেওয়ার স্বপ্ন আছে যূঁথীর। যূঁথীর স্বপ্ন দেশীয় ফ্যাশনের প্রতি সবার সচেতনতা তৈরি করা।
কাজের অনুপ্রেরণার বিষয়ে যূঁথী বলেন, ‘আমার কাজের জন্য প্রতি মুহূর্তে অনুপ্রেরণা দেয় আমার ভাই। তারপর মা ও কাছের বন্ধুরা। তবে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার ক্রেতারা। জানি না এমন ভাগ্য কারও হয় কি না। আমার ক্রেতারা আমাকে পরিবারের একজন করে নিয়েছেন। যে ভালোবাসা ক্রেতাদের কাছ থেকে পেয়েছি, তার জন্য যেকোনো বাধাই তুচ্ছ। এখন পদ্মপুরাণের সব ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষী নিয়ে আমার বিশাল পরিবার।’
গত দেড় বছর মহামারি করোনায় থমকে ছিল অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কাজ। এই সময়ে আর্থিক সংকটে পড়েছেন অনেকেই। করোনাকালে কেমন ছিল ‘পদ্মপুরাণ’? যূঁথী বলেন, ‘করোনাকালে প্রথম লকডাউনের সময় কিছুদিন কাজ বন্ধ রেখেছিলাম। কিন্তু তাঁতি, বিশেষ করে আমার সাপ্লায়ার যিনি ছিলেন, তিনি সব সময় বলতেন—“আপনি যদি না নেন, তাহলে আমরা কোথায় যাব? ” ওই সময় আমার সহকারী ছেলেটার সংসারের সবাই বেকার হয়ে পড়ে। আমিও কাজ বন্ধ রাখায় ছেলেটার রোজগারও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এসব দিক বিবেচনা করে আবার চালু করি কাজ। আমার সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে যেটুকু সম্ভব এই মানুষগুলোর জন্য কাজ চালিয়ে গেছি।’
তা ছাড়া করোনাকালে হোম ডেলিভারি দিয়েছেন যূঁথী। বললেন, ‘সিলেটে এসএ পরিবহন ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস হিসেবে বেশ ভালো। কোভিডের প্রথমদিকে সুন্দরবনের হোম ডেলিভারি বন্ধ ছিল। শুধু এসএ পরিবহনে হোম ডেলিভারি হতো; চার্জ বেশি লাগত। সে সময় ২৫০,৩০০ এমনকি ৪০০ টাকা দিয়েও পার্সেল পাঠাতে হয়েছে। তবুও যেন ক্রেতারা নিরাপদে বাসায় বসেই পণ্য পান, এ জন্য এই ক্ষতিটা স্বীকার করে নিয়েছি। এখন পর্যন্ত এভাবেই হোম ডেলিভারি দিয়ে যাচ্ছি।’
স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে মানুষ। স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখে সবাইকে। যুঁথীর স্বপ্নের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমার সব সময় স্বপ্ন ছিল এমন একটা পেশা নির্বাচন করব, যেখানে আমার চিন্তার ছাপ থাকবে। যেখানে আমি কখনো ক্লান্ত হব না। নিয়মিত পণ্যের পাশাপাশি অনেক ডিজাইনের টিপ বানিয়েছি। কিছু পেইন্টিংও বিক্রি করেছি। এটা ছিল আমার কাছে পুরস্কার পাওয়ার মতো আনন্দের। আজ এখানে দাঁড়িয়ে মনে হয় আমার সিদ্ধান্ত ভুল হয়নি। সকালে চোখ মেলার পর থেকে মাঝরাত, কখনো কখনো শেষ রাত পর্যন্ত কাজ করি, তবুও নেশা যায় না। কখনো কাজ থেকে মন সরে যায় না। সত্যিই কেউ যদি নিজের স্বপ্নের সঙ্গে হাঁটে, তাহলে সাফল্য আসবেই।’
সিলেট বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে মণিপুরী নারীদের হাতে বোনা মণিপুরী শাড়ির কথা। বাংলাদেশের গর্ব মণিপুরী শাড়িকে দেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বে পরিচিত করার স্বপ্ন জেব উন নাহার যূঁথীর। এ স্বপ্ন নিয়ে মণিপুরী শাড়ি নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা থেকে অনলাইনে শুরু করেন কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম ‘পদ্মপুরাণ’।
যূঁথীর জন্ম, বেড়ে ওঠা, স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি সব সিলেটেই। দেশীয় ঐতিহ্যের প্রতি তাঁর টান ছিল সেই ছোটবেলা থেকেই। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পড়ালেখার শেষের দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেনাকাটার প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হন। এই আকর্ষণ থেকেই নিজের একটি ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টির ইচ্ছার জন্ম। তাই বেশ কয়েকটি চাকরিতে যুক্ত হলেও আর চাকরিজীবী হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা স্থায়ী হয়নি। শুরু করেন ‘পদ্মপুরাণ’।
ছোটবেলা থেকে স্বাধীনভাবে থাকতে পছন্দ করতেন যূঁথী। আর এই চিন্তাই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পর তাঁর জীবন-ভাবনায় প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। এই সময়টা ছিল কোনো না কোনো পেশায় যুক্ত হওয়ার সময়। ঠিক সে সময়টাতে তিনি ভাবলেন, এই ১০ টা-৫টা রুটিন তাঁর জন্য নয়। তাই স্বাধীন পেশা নির্বাচন করতে গিয়েই অনলাইন ব্যবসায় নিজেকে যুক্ত করেন। সিলেটের মানুষ হওয়ায় মণিপুরী শাড়ি দিয়েই শুরু করেন কাজ।
‘পদ্মপুরাণ’-এর স্বত্বাধিকারী যূঁথীর শুরুর গল্পে তাকাতে হলে ফিরতে হবে ২০১৬ সালে। নিজেই জানালেন, ‘পদ্মপুরাণের জন্ম ২০১৬ সালে। শুরুর সেই সময়ে আমি একদমই বিক্রির চিন্তা বা চেষ্টা—কিছুই করিনি। সময় নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের পেজ ও ছবি দেখতাম। নিজে নিজে ছবি তোলার চেষ্টা করতাম। পদ্মপুরাণের নিয়মিত বিক্রি শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। মাত্র ছয় হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করি।’
যেহেতু মণিপুরী শাড়ির দাম একটু বেশি, তাই শুরুতে চ্যালেঞ্জটাও বেশি ছিল। কিন্তু থেমে থাকেননি যূঁথি। এর মধ্যেই ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে গুজরাট মহারাজা সায়াজিরাও ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যান। ভারতে থাকার সময় তাঁর প্রতিষ্ঠানের কাজে সহায়তার হাত বাড়ান পরিবারের লোকেরাই। বললেন, ‘২০১৮-১৯ সালে পদ্মপুরাণের যাবতীয় কাজ করেছেন আমার মা, আর ভাই। শাড়ি আনা, ছবি তোলা, ঠিকানা অনুযায়ী সেগুলো পাঠানোর ব্যবস্থা—এ কাজগুলো করতেন তাঁরা। ২০২০ সালে ফিরে আমি আবার নতুন করে সবকিছু শুরু করি। মণিপুরী শাড়ি, গামছা, ওড়না, শাল, মাফলার নিয়ে প্রচুর কাজ করেছি। ইদানীং মণিপুরী শাড়িতে একটু আনকমন কম্বিনেশন নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। আমার মনে হয়, আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে, এমন একটা পেশা নিতে পেরেছি, যা আমার প্যাশন। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ তাদের পেশাকে পছন্দ করতে পারে না।’
যূঁথী মণিপুরী শাড়ি, ওড়নাসহ মণিপুরী অন্যান্য পণ্য, পেইন্টের শাড়ি, ড্রেস, ব্লাউজপিস, দেশীয় তাঁত শাড়ি, গৃহ সজ্জাসামগ্রী, টিপ ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছেন। মণিপুরী শাড়ির পাশাপাশি খাদি কাপড়ের কামিজ পিস নিয়েও কাজ করেছেন। এ ছাড়া কাজ করেছেন টাঙ্গাইলের সুতি ও সফট কাতান নিয়ে। পেইন্টিংয়ের প্রতি দুর্বলতার কারণে ২০২০ সাল থেকে শুরু করেন ফ্যাব্রিক পেইন্টিংয়ের কাজ।
এই সময়ে দেশে উদ্যোক্তার সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে অনলাইনে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যাও। দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীদের ব্যবসায় যুক্ত হওয়া অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এই পেশাটা মানুষের মনে কিছুটা হলেও একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে। যারা এই পেশায় এসেছেন বা আসতে চান তাঁদের বিষয়ে যূঁথী বলেন, ‘আপনার ক্রিয়েটিভিটির সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা করুন, তাহলেই মৌলিক কাজ বের হয়ে আসবে। অমুক ওই জিনিস বিক্রি করছে, তাই আমাকেও করতে হবে—এ রকম ধারণা মাথায় না আনাই ভালো। কারণ, প্রত্যকের ক্রেতা-শ্রেণি আলাদা। বিক্রির স্ট্র্যাটেজি আলাদা। তাই আগে বাজার ও পণ্য সম্পর্কে জানাটা বেশি জরুরি। তবে, এখন সবাই যেভাবে অনলাইন পেশায় আসছেন, তাতে সত্যি কথা বলতে পেশাদারি কতটা রাখতে পারছেন—এটা একটা প্রশ্ন থেকে যায়। তবে এই পেশার প্রতি সম্মান বাড়ছে, এটা দেখতে ভালো লাগে।’
‘পদ্মপুরাণ’ গুটিসুটি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে সারা দেশ ছাড়িয়ে এখন বাইরের কয়েকটা দেশেও পৌঁছে গেছে। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতে নিয়মিত যাচ্ছে পদ্মপুরাণের পণ্য। আগামী মাস থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে দুজন আঁকিয়ে যুক্ত হবেন। মূল কাজে এখন আছেন দুজন সহকারী। আর আরেকটু গুছিয়ে উঠতে পারলে একটা বড় স্টুডিও নেওয়ার স্বপ্ন আছে যূঁথীর। যূঁথীর স্বপ্ন দেশীয় ফ্যাশনের প্রতি সবার সচেতনতা তৈরি করা।
কাজের অনুপ্রেরণার বিষয়ে যূঁথী বলেন, ‘আমার কাজের জন্য প্রতি মুহূর্তে অনুপ্রেরণা দেয় আমার ভাই। তারপর মা ও কাছের বন্ধুরা। তবে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার ক্রেতারা। জানি না এমন ভাগ্য কারও হয় কি না। আমার ক্রেতারা আমাকে পরিবারের একজন করে নিয়েছেন। যে ভালোবাসা ক্রেতাদের কাছ থেকে পেয়েছি, তার জন্য যেকোনো বাধাই তুচ্ছ। এখন পদ্মপুরাণের সব ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষী নিয়ে আমার বিশাল পরিবার।’
গত দেড় বছর মহামারি করোনায় থমকে ছিল অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কাজ। এই সময়ে আর্থিক সংকটে পড়েছেন অনেকেই। করোনাকালে কেমন ছিল ‘পদ্মপুরাণ’? যূঁথী বলেন, ‘করোনাকালে প্রথম লকডাউনের সময় কিছুদিন কাজ বন্ধ রেখেছিলাম। কিন্তু তাঁতি, বিশেষ করে আমার সাপ্লায়ার যিনি ছিলেন, তিনি সব সময় বলতেন—“আপনি যদি না নেন, তাহলে আমরা কোথায় যাব? ” ওই সময় আমার সহকারী ছেলেটার সংসারের সবাই বেকার হয়ে পড়ে। আমিও কাজ বন্ধ রাখায় ছেলেটার রোজগারও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এসব দিক বিবেচনা করে আবার চালু করি কাজ। আমার সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে যেটুকু সম্ভব এই মানুষগুলোর জন্য কাজ চালিয়ে গেছি।’
তা ছাড়া করোনাকালে হোম ডেলিভারি দিয়েছেন যূঁথী। বললেন, ‘সিলেটে এসএ পরিবহন ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস হিসেবে বেশ ভালো। কোভিডের প্রথমদিকে সুন্দরবনের হোম ডেলিভারি বন্ধ ছিল। শুধু এসএ পরিবহনে হোম ডেলিভারি হতো; চার্জ বেশি লাগত। সে সময় ২৫০,৩০০ এমনকি ৪০০ টাকা দিয়েও পার্সেল পাঠাতে হয়েছে। তবুও যেন ক্রেতারা নিরাপদে বাসায় বসেই পণ্য পান, এ জন্য এই ক্ষতিটা স্বীকার করে নিয়েছি। এখন পর্যন্ত এভাবেই হোম ডেলিভারি দিয়ে যাচ্ছি।’
স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে মানুষ। স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখে সবাইকে। যুঁথীর স্বপ্নের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমার সব সময় স্বপ্ন ছিল এমন একটা পেশা নির্বাচন করব, যেখানে আমার চিন্তার ছাপ থাকবে। যেখানে আমি কখনো ক্লান্ত হব না। নিয়মিত পণ্যের পাশাপাশি অনেক ডিজাইনের টিপ বানিয়েছি। কিছু পেইন্টিংও বিক্রি করেছি। এটা ছিল আমার কাছে পুরস্কার পাওয়ার মতো আনন্দের। আজ এখানে দাঁড়িয়ে মনে হয় আমার সিদ্ধান্ত ভুল হয়নি। সকালে চোখ মেলার পর থেকে মাঝরাত, কখনো কখনো শেষ রাত পর্যন্ত কাজ করি, তবুও নেশা যায় না। কখনো কাজ থেকে মন সরে যায় না। সত্যিই কেউ যদি নিজের স্বপ্নের সঙ্গে হাঁটে, তাহলে সাফল্য আসবেই।’
পশ্চিমের বলয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় বিকল্প অর্থনৈতিক জোট হিসেবে ব্রিকসের জন্ম। এই জোটের সদস্য দেশগুলো হলো—ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সাম্প্রতিক সময়ে মিসর, ইথিওপিয়া, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইন্দোনেশিয়া নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেগার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড দেশের একটি সুপরিচিত বিমা প্রতিষ্ঠান, সম্প্রতি বিমা কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য সমালোচিত হয়েছে। প্রায় চার বছর ধরে সিইও (মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা) ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে সিইও পদটি শূন্য, যা বিমা আইন..
১৮ ঘণ্টা আগেজাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এখনো রাজস্ব আহরণের আধুনিক ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। বিশেষ করে আয়কর ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন এখনো অনেক পিছিয়ে। ২০০৫ সালে অটোমেশনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও দুই দশক পরেও তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।
১৮ ঘণ্টা আগেসরকারের ব্যাপক চাল আমদানি এবং দেশের ৬৪ জেলায় ওএমএসের (খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয়) মাধ্যমে সুলভ মূল্যে চাল বিক্রির ঘোষণার প্রভাব বাজারে ইতিবাচকভাবে পড়তে শুরু করেছে। গত মাসের শেষ দিকে হঠাৎ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়া চালের দাম এখন নিম্নমুখী।
১৮ ঘণ্টা আগে