Ajker Patrika

বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকটে দেশের ২০ শতাংশ প্লাস্টিক কারখানা বন্ধের পথে: বিপিজিএমইএ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিপিজিএমইএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত
বিপিজিএমইএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকটের কারণে বাংলাদেশের প্লাস্টিকশিল্পের প্রায় ২০ শতাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ প্লাস্টিকদ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ)। আজ বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর পল্টনে বিপিজিএমইএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এই তথ্য জানান। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, চলমান ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে এই শিল্প আরও বড় হুমকির মুখে পড়বে, যা প্লাস্টিকসহ সব খাতের ব্যবসায়ীদের উদ্বেগে রেখেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিপিজিএমইএ নেতারা বলেন, সরকার পোশাক খাত ছাড়াও আরও চারটি খাতকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছে, যার মধ্যে প্লাস্টিক অন্যতম। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেট (২০২৫-২৬) এই খাতের উন্নয়নে তেমন কোনো সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নেই। তাঁদের মতে, সামগ্রিক বাজেট ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার না দিয়ে ‘পুরোনো বোতলে পুরোনো পানি পরিবেশনের’ মতো হয়েছে, এমনকি ‘বোতলটাও পাল্টানো হয়নি’।

বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘গত দেড় বছরে প্লাস্টিক খাতের ২০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে বা বন্ধের পথে রয়েছে। জ্বালানিসংকট, সুদের হারসহ নানা সংকটে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় শিল্পের বিকাশে প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা, টেবিলওয়্যার ও গৃহস্থালি সামগ্রীর ওপর ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার দাবিগুলো বাজেটে বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।’

সামিম আহমেদ আরও বলেন, ‘আমাদের শিল্প কোভিড-১৯ সময়ে ক্ষতির মুখে পড়েছিল। অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছিল। পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। এখন কোভিড আবার শুরু হয়েছে। এর মাঝে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ আরও শঙ্কা তৈরি করেছে। যুদ্ধের ফলে এলএনজিসহ অন্যান্য কাঁচামাল আমদানির খরচ বাড়বে, এতে আবারও ক্ষতির মুখে পড়বে দেশের প্লাস্টিক খাত।’

বিপিজিএমইএ সভাপতি উল্লেখ করেন, প্লাস্টিকশিল্প বর্তমানে দেশের একটি সম্ভাবনাময় খাত। এই খাতে দক্ষতা ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যন্ত্রপাতি ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। অথচ শুল্ক ও ভ্যাট জটিলতার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান নতুন যন্ত্রপাতি আমদানিতে আগ্রহ হারাচ্ছে।

সংগঠনের সহসভাপতি এনামুল হক বিদ্যুৎ সরবরাহের নাজুক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে বলেন, ‘গাজীপুরে আমার কারখানায় দিনে ৮ থেকে ১০ বার বিদ্যুৎ চলে যায়। অথচ একটি মেশিন গরম হতে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। বিল বাড়ছে, কিন্তু নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-গ্যাস দেওয়া হচ্ছে না।’

সংগঠনের পরিচালক সৈয়দ নাসির বাজেটের সমালোচনা করে বলেন, এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণে বাজেটে তেমন কিছুই নেই। এমনকি বাজেটে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রতিফলন নেই। প্রতিবছর পুরোনো পানি নতুন বোতলে দেওয়া হয়, এবার বোতলটাও পরিবর্তন করা হয়নি। বাজেটে শুধু আয়-ব্যয়ের হিসাব রয়েছে, উন্নয়নের দিকনির্দেশনা নেই।

সংবাদ সম্মেলনে বিপিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত