নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি ও সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যক্রম ভেঙে করনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পৃথক করা হচ্ছে। আগামী জুলাই থেকেই এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘আয়কর আইন, ২০২৩: সংস্কার ও প্রেক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান এ তথ্য জানান। এতে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস ট্যাক্সেশন ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকী।
এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, টক অব দ্য কান্ট্রি ট্যাক্স পলিসি এবং কর ব্যবস্থাপনা আলাদা হচ্ছে। এটা এত দিন অনুমান ছিল। এটা বাস্তবে রূপ পাচ্ছে।
আবদুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আমাকে গতকালও ডেকেছেন এবং বলেছেন ঈদের আগেই পাশ হবে। আর আগামী পয়লা জুলাই থেকেই এটা অপারেশনে যাবে। উনি এটা চাচ্ছেন, যত দ্রুত সম্ভব আমরা অপারেশনে যাই।
বিষয়টা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, এর যে কাঠামো, সফটওয়্যার, সেটা তৈরি করার জন্য যথেষ্ট সময় লাগে। সেটা যদি আমরা দৌড়ে করতে পারি, তাহলে অসম্ভব বলে কিছু নেই। আমরা সেদিকে আগাচ্ছি।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের নীতিগত সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছিল। এখন আমরা আইনের একটা খসড়া করেছি। আইনটাও আমরা অচিরেই উপদেষ্টা পরিষদে উঠবে এবং জারি হবে। সেখানে বিশদভাবে আমরা যে জিনিসটা চাচ্ছি, বা সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেটা হলো রাজস্ব নীতি একটা বিভাগ হবে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, যেটা আমাদের প্রধান কাজ, আইন প্রয়োগ করা, সেটার জন্য আলাদা একটা বিভাগ হবে। এই দুটো বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করবে। কিছু সমন্বয়ের ব্যবস্থা থাকবে। কিছু বাইরের লোকও থাকবে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের জন্য।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় যাঁরা অভিজ্ঞ, তাঁরাই এই কাজগুলো করবেন। তার সঙ্গে অন্যান্য লোকও থাকবেন। এভাবে আমরা এটাকে ডিজাইন করেছি। এটা হলে আমরা যাঁরা রাজস্ব ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত, তাঁরা আইনে যা আছে, তা প্রয়োগের দিকে মনোযোগী হতে পারব।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কর কমিশনার ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ মামুন বলেন, ‘আমাদের দেশের কর-জিডিপি অনুপাত খুবই কম, যা ৩ দশমিক ২ শতাংশ। এর অন্যতম কারণ, আমাদের অনেক বেশি কর অব্যাহতি দিতে হয়। যার কারণে আমাদের করব্যয় অনেক বেশি।’
তিনি আরও বলেন, প্রত্যক্ষ করের গড় হার ১০ শতাংশ অনুমানের ভিত্তিতে আমাদের জিডিপির প্রায় ৭০ শতাংশ প্রত্যক্ষ করের আওতার বাইরে। আমাদের অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতির আধিক্য বেশি, যা জিডিপির প্রায় ৩৭ শতাংশ। আয়কর আহরণে উৎসে করের ওপর নির্ভরশীলতা বেশি।
কর কমিশনার ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ মামুন বলেন, এসব অসংগতি দূর করার জন্য চারটি ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন। এগুলো হলো প্রশাসনিক সংস্কার, তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর আয়কর বিভাগ বিনির্মাণের সংস্কার, আইন ও বিধি সংস্কার এবং সকল অংশীজনের দৃষ্টিভঙ্গির সংস্কার প্রয়োজন।
আয়কর আইনের অসংগতির বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কারণ চিহ্নিত করলেও একবারে সমস্যার সমাধান করতে পারব না। কারণ, সমস্যার সমাধান করলে আমাদের যে পরিমাণ রাজস্ব কমবে, তা কাভার করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘যে কথাটি উঠে এসেছে কর-জিডিপির হার অত্যন্ত কম, এটা সত্য কথা। আমাদের জিডিপির হিসাব কষা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। যেহেতু আমরা সরকারি কাজ করি। সরকারের একটা বিভাগের তথ্যের সত্যতা নিয়ে আরেকটা বিভাগের প্রশ্ন উত্থাপন করা ঠিক নয়। আমি নিজে সেগুলো নিয়ে কাজ করিনি। তাই বলতে চাই না। তবে অনেকেই বলেন, জিডিপির হিসাব অতিরঞ্জিত থাকতে পারে। যতই বাড়িয়ে বলা হোক, তারপরও আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত যেটা, সেটা নিয়ে খুশি হওয়ার সুযোগ নেই।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের দেশের জনগণের অনেক চাহিদা। আমাদের জনবহুল দেশে অবকাঠামো নির্মাণের চাহিদা, সাধারণ মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্যে যে পরিমাণ ব্যয় করার কথা, সেই পরিমাণ রাজস্ব আহরণ আমরা করতে পারছি না। এই সত্যটা স্বীকার করে নিতে হবে।’
কর অব্যাহতিকে রাজস্ব কম আহরণের বড় কারণ উল্লেখ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কর অব্যাহতির সংস্কৃতিটা চর্চা করছি। এখান থেকে আমাদের ধীরে ধীরে বের হতে হবে।’
কর অব্যাহতি দেওয়ার কারণ ছিল জানিয়ে আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আমাদের নিজেদের তেমন কোনো পুঁজি তৈরি হয়নি। স্বাভাবিকভাবে আমরা বিদেশি পুঁজি আকৃষ্ট করার জন্য নানা রকমভাবে প্রণোদনা দিয়েছি। আমাদের ধারণা ছিল, কর অব্যাহতি দিলেই অনেক পুঁজি বাংলাদেশে চলে আসবে।’
ব্যবসায়ীরা প্রকৃতপক্ষে কর দিতে ভয় পান না বলে প্রশংসাও করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সে (ব্যবসায়ী) যদি ব্যবসা করে, মুনাফা হয়, তার কিছু অংশ সরকারকে দেবে, সেটা হিসাব করেই ব্যবসায় নামে।’
বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বড় না হওয়ার কারণ তুলে ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের এফডিআইয়ের যে ফ্লো, তা আমাদের প্রতিযোগিতামূলক দেশের সঙ্গে তুলনাযোগ্য নয়। এর কারণ, এখানে সুশাসনের অভাব। এখানে গুরুত্ব দিতে হবে।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা যদি বলি কর দিতে হবে না। উল্টো আমরা সরকারি কোষাগার থেকে প্রণোদনা দেব, তারপরও এখানে বিনিয়োগ আসবে কি না সন্দেহ। কারণ, তাদের যে ধরনের সেবা প্রয়োজন, সেটা ঠিকমতো দিতে পারি না। এটাই হলো মূল বিষয়। আইনের শাসন একেবারেই অনুপস্থিত। আমাদের যা আইনকানুন আছে, তা প্রয়োগ করতে আমরা অত্যন্ত দুর্বল। সেটা অনিশ্চিত, প্রত্যেক জায়গায়। উন্নত, সভ্য দেশের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য এই জায়গায়।’
দেশের করজাল একেবারেই ছোট নয় জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশের যাঁরা করদাতা নন, তাঁরাও কর দেন। গৃহিণী, ছাত্রছাত্রী, তাঁরাও কিন্তু ব্যাংকে টাকা রাখেন। তাঁদের মুনাফা থেকেও আমরা কর নিয়ে নিই। তাঁরা আমাদের নেটের বাইরের কথা। এটা আয়করের কথা। আর যদি পরোক্ষ করের কথা বলি, তাহলে এখনো বাংলাদেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড যা আদায় করে, তার দুই-তৃতীয়াংশ আসে পরোক্ষ কর থেকে। তার মানে এখনো গরিব মানুষেরা বাংলাদেশে কর দেয়। এটাই সত্য।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা ৫৩ বছর ধরে ঘাটতি বাজেট করছি। আমাদের প্রচুর ঋণ হয়েছে। সেই ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধ করা জাতি হিসেবে ইতিমধ্যে আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা পরবর্তী প্রজন্মকে সুন্দর জীবন দিতে চাই, তাহলে রাজস্ব বাড়িয়ে আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে।’
রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য আইনের প্রয়োগের ওপর জোর দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা বৈষম্যহীনভাবে, সঠিকভাবে আইন প্রয়োগ করতে পারি। যার যতটুকু আয়, ততটুকু আদায় করতে পারতাম, তাহলে আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ত। এই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এখানে ফোকাস করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনবিআর সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ বলেন, ব্যবসার পরিধি অনুযায়ী উৎসে কর নির্ধারণ করা হয়। সব ব্যবসার আয় ও মুনাফা একরকম নয়। মুনাফার ভিত্তিতে আমরা উৎসে কর বিভিন্নরকম করেছি। এগুলোর পুনর্বিবেচনা করা হবে।
রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি ও সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যক্রম ভেঙে করনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পৃথক করা হচ্ছে। আগামী জুলাই থেকেই এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘আয়কর আইন, ২০২৩: সংস্কার ও প্রেক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান এ তথ্য জানান। এতে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস ট্যাক্সেশন ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকী।
এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, টক অব দ্য কান্ট্রি ট্যাক্স পলিসি এবং কর ব্যবস্থাপনা আলাদা হচ্ছে। এটা এত দিন অনুমান ছিল। এটা বাস্তবে রূপ পাচ্ছে।
আবদুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আমাকে গতকালও ডেকেছেন এবং বলেছেন ঈদের আগেই পাশ হবে। আর আগামী পয়লা জুলাই থেকেই এটা অপারেশনে যাবে। উনি এটা চাচ্ছেন, যত দ্রুত সম্ভব আমরা অপারেশনে যাই।
বিষয়টা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, এর যে কাঠামো, সফটওয়্যার, সেটা তৈরি করার জন্য যথেষ্ট সময় লাগে। সেটা যদি আমরা দৌড়ে করতে পারি, তাহলে অসম্ভব বলে কিছু নেই। আমরা সেদিকে আগাচ্ছি।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের নীতিগত সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছিল। এখন আমরা আইনের একটা খসড়া করেছি। আইনটাও আমরা অচিরেই উপদেষ্টা পরিষদে উঠবে এবং জারি হবে। সেখানে বিশদভাবে আমরা যে জিনিসটা চাচ্ছি, বা সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেটা হলো রাজস্ব নীতি একটা বিভাগ হবে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, যেটা আমাদের প্রধান কাজ, আইন প্রয়োগ করা, সেটার জন্য আলাদা একটা বিভাগ হবে। এই দুটো বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করবে। কিছু সমন্বয়ের ব্যবস্থা থাকবে। কিছু বাইরের লোকও থাকবে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের জন্য।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় যাঁরা অভিজ্ঞ, তাঁরাই এই কাজগুলো করবেন। তার সঙ্গে অন্যান্য লোকও থাকবেন। এভাবে আমরা এটাকে ডিজাইন করেছি। এটা হলে আমরা যাঁরা রাজস্ব ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত, তাঁরা আইনে যা আছে, তা প্রয়োগের দিকে মনোযোগী হতে পারব।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কর কমিশনার ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ মামুন বলেন, ‘আমাদের দেশের কর-জিডিপি অনুপাত খুবই কম, যা ৩ দশমিক ২ শতাংশ। এর অন্যতম কারণ, আমাদের অনেক বেশি কর অব্যাহতি দিতে হয়। যার কারণে আমাদের করব্যয় অনেক বেশি।’
তিনি আরও বলেন, প্রত্যক্ষ করের গড় হার ১০ শতাংশ অনুমানের ভিত্তিতে আমাদের জিডিপির প্রায় ৭০ শতাংশ প্রত্যক্ষ করের আওতার বাইরে। আমাদের অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতির আধিক্য বেশি, যা জিডিপির প্রায় ৩৭ শতাংশ। আয়কর আহরণে উৎসে করের ওপর নির্ভরশীলতা বেশি।
কর কমিশনার ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ মামুন বলেন, এসব অসংগতি দূর করার জন্য চারটি ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন। এগুলো হলো প্রশাসনিক সংস্কার, তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর আয়কর বিভাগ বিনির্মাণের সংস্কার, আইন ও বিধি সংস্কার এবং সকল অংশীজনের দৃষ্টিভঙ্গির সংস্কার প্রয়োজন।
আয়কর আইনের অসংগতির বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কারণ চিহ্নিত করলেও একবারে সমস্যার সমাধান করতে পারব না। কারণ, সমস্যার সমাধান করলে আমাদের যে পরিমাণ রাজস্ব কমবে, তা কাভার করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘যে কথাটি উঠে এসেছে কর-জিডিপির হার অত্যন্ত কম, এটা সত্য কথা। আমাদের জিডিপির হিসাব কষা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। যেহেতু আমরা সরকারি কাজ করি। সরকারের একটা বিভাগের তথ্যের সত্যতা নিয়ে আরেকটা বিভাগের প্রশ্ন উত্থাপন করা ঠিক নয়। আমি নিজে সেগুলো নিয়ে কাজ করিনি। তাই বলতে চাই না। তবে অনেকেই বলেন, জিডিপির হিসাব অতিরঞ্জিত থাকতে পারে। যতই বাড়িয়ে বলা হোক, তারপরও আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত যেটা, সেটা নিয়ে খুশি হওয়ার সুযোগ নেই।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের দেশের জনগণের অনেক চাহিদা। আমাদের জনবহুল দেশে অবকাঠামো নির্মাণের চাহিদা, সাধারণ মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্যে যে পরিমাণ ব্যয় করার কথা, সেই পরিমাণ রাজস্ব আহরণ আমরা করতে পারছি না। এই সত্যটা স্বীকার করে নিতে হবে।’
কর অব্যাহতিকে রাজস্ব কম আহরণের বড় কারণ উল্লেখ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কর অব্যাহতির সংস্কৃতিটা চর্চা করছি। এখান থেকে আমাদের ধীরে ধীরে বের হতে হবে।’
কর অব্যাহতি দেওয়ার কারণ ছিল জানিয়ে আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আমাদের নিজেদের তেমন কোনো পুঁজি তৈরি হয়নি। স্বাভাবিকভাবে আমরা বিদেশি পুঁজি আকৃষ্ট করার জন্য নানা রকমভাবে প্রণোদনা দিয়েছি। আমাদের ধারণা ছিল, কর অব্যাহতি দিলেই অনেক পুঁজি বাংলাদেশে চলে আসবে।’
ব্যবসায়ীরা প্রকৃতপক্ষে কর দিতে ভয় পান না বলে প্রশংসাও করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সে (ব্যবসায়ী) যদি ব্যবসা করে, মুনাফা হয়, তার কিছু অংশ সরকারকে দেবে, সেটা হিসাব করেই ব্যবসায় নামে।’
বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বড় না হওয়ার কারণ তুলে ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের এফডিআইয়ের যে ফ্লো, তা আমাদের প্রতিযোগিতামূলক দেশের সঙ্গে তুলনাযোগ্য নয়। এর কারণ, এখানে সুশাসনের অভাব। এখানে গুরুত্ব দিতে হবে।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা যদি বলি কর দিতে হবে না। উল্টো আমরা সরকারি কোষাগার থেকে প্রণোদনা দেব, তারপরও এখানে বিনিয়োগ আসবে কি না সন্দেহ। কারণ, তাদের যে ধরনের সেবা প্রয়োজন, সেটা ঠিকমতো দিতে পারি না। এটাই হলো মূল বিষয়। আইনের শাসন একেবারেই অনুপস্থিত। আমাদের যা আইনকানুন আছে, তা প্রয়োগ করতে আমরা অত্যন্ত দুর্বল। সেটা অনিশ্চিত, প্রত্যেক জায়গায়। উন্নত, সভ্য দেশের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য এই জায়গায়।’
দেশের করজাল একেবারেই ছোট নয় জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশের যাঁরা করদাতা নন, তাঁরাও কর দেন। গৃহিণী, ছাত্রছাত্রী, তাঁরাও কিন্তু ব্যাংকে টাকা রাখেন। তাঁদের মুনাফা থেকেও আমরা কর নিয়ে নিই। তাঁরা আমাদের নেটের বাইরের কথা। এটা আয়করের কথা। আর যদি পরোক্ষ করের কথা বলি, তাহলে এখনো বাংলাদেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড যা আদায় করে, তার দুই-তৃতীয়াংশ আসে পরোক্ষ কর থেকে। তার মানে এখনো গরিব মানুষেরা বাংলাদেশে কর দেয়। এটাই সত্য।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা ৫৩ বছর ধরে ঘাটতি বাজেট করছি। আমাদের প্রচুর ঋণ হয়েছে। সেই ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধ করা জাতি হিসেবে ইতিমধ্যে আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা পরবর্তী প্রজন্মকে সুন্দর জীবন দিতে চাই, তাহলে রাজস্ব বাড়িয়ে আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে।’
রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য আইনের প্রয়োগের ওপর জোর দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা বৈষম্যহীনভাবে, সঠিকভাবে আইন প্রয়োগ করতে পারি। যার যতটুকু আয়, ততটুকু আদায় করতে পারতাম, তাহলে আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ত। এই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এখানে ফোকাস করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনবিআর সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ বলেন, ব্যবসার পরিধি অনুযায়ী উৎসে কর নির্ধারণ করা হয়। সব ব্যবসার আয় ও মুনাফা একরকম নয়। মুনাফার ভিত্তিতে আমরা উৎসে কর বিভিন্নরকম করেছি। এগুলোর পুনর্বিবেচনা করা হবে।
দেশের পুঁজিবাজার ও ব্যাংক খাত এখন খাদের কিনারায় আর বিমা খাত খাদের ভেতরে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম। তাঁর মতে, বিমা খাতের এই দুরবস্থার মূল কারণ মালিকদের অনিয়ম ও গ্রাহকদের আস্থার অভাব।
৫ মিনিট আগেব্লকচেইন প্রযুক্তিতে বাংলাদেশে তৈরি ‘গ্রিন এলসি’ প্ল্যাটফর্মের প্রুফ অব কনসেপ্ট (পিওসি) সফলভাবে সম্পন্ন করেছে প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। গ্রিন এলসি সিস্টেমটি বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে তৈরি প্রথম ডিজিটাল ট্রেড প্ল্যাটফর্ম, যেটির মাধ্যমে প্রথম অভ্যন্তরীণ এলসি ইস্যু করেছে প্রাইম ব্যাংক। বাংলাদেশের ট্রেড...
২৩ মিনিট আগেঅনেক বছর ধরে এই দিনের জন্যই তো অপেক্ষা করে ছিলেন আবুল হোসাইন। খুব আয়োজন করে ছেলের বিয়ে দেবেন। অবশেষে সেই দিনটি এল। তাই তিনি চাচ্ছিলেন, বাড়িটা রং করাবেন। কিন্তু রং করানো তো আর সহজ কথা নয়। ব্যাপক প্রস্তুতির ব্যাপার, অন্তত কয়েকবার তো কোটিং করাতেই হবে। আর হাতে বেশি সময়ও নেই, খরচাপাতিও অনেক...
২৫ মিনিট আগেবিশ্বমানের দুগ্ধজাত পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে ‘কাউবেল’। সম্প্রতি আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাউবেল তাদের বিশেষ পণ্যসমূহ উন্মোচন করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কাউবেল প্রিমিয়াম ফুল ক্রিম মিল্ক। এ ছাড়া কাউবেল মোজারেলা চিজ, কাউবেল চেডার চিজ এবং কাউবেল কাশকাভাল চিজ...
৩১ মিনিট আগে