Ajker Patrika

বিনা প্রশ্নে পাচারের অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দুর্নীতিকেই উৎসাহিত করবে: টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিনা প্রশ্নে পাচারের অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দুর্নীতিকেই উৎসাহিত করবে: টিআইবি

প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার সুযোগকে অনৈতিক বলছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রীর এই প্রস্তাবকে ন্যক্কারজনক আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। তাদের চোখে এমন পদক্ষেপ অসাংবিধানিক, সংশ্লিষ্ট আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক এবং অর্থ পাচারের মতো অপরাধকে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা দেওয়ার নামান্তর। 

আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে টিআইবি জানায়, পাচারকৃত অর্থ বিনা প্রশ্নে ফেরত আনতে প্রস্তাবিত বাজেটে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন বিধান সংযোজনের অভূতপূর্ব অনৈতিক এক প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। করোনা সংক্রমণ এবং রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনে সৃষ্ট বিশ্ব অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা, সরকারি ব্যয় সংকুলান এবং বেসরকারি খাতকে চাঙা করার যুক্তিতে এ প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। 

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী যেভাবেই ব্যাখ্যা করেন না কেন, নামমাত্র কর দিয়ে প্রশ্নহীনভাবে পাচার করা অর্থ বিদেশ থেকে আনার সুযোগ স্পষ্টতই অর্থ পাচারকারীদের অনৈতিক সুরক্ষা ও পুরস্কার প্রদান। অথচ অর্থপাচার রোধ আইন ২০১২ এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অর্থপাচার গুরুতর অপরাধ, দেশের আইন অনুযায়ী যার শাস্তি পাচারকৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত করা এবং তার দ্বিগুণ জরিমানা ও ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। এই সুযোগ অর্থ পাচার তথা সার্বিকভাবে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে, যা সংবিধান পরিপন্থী এবং প্রধানমন্ত্রীর “দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা” ঘোষণার জন্য অবমাননাকর।’ 

টিআইবি মনে করে, যারা বৈধ উপার্জননির্ভর করদাতা তাঁদের জন্য এই প্রস্তাব প্রকটভাবে বৈষম্যমূলক, কারণ তারা ৭ শতাংশের কমপক্ষে তিনগুণ হারে কর দিয়ে থাকেন। এটি বৈষম্য ও সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থী। অবিলম্বে এ সুযোগ বাতিল করতে হবে এবং অর্থ পাচারকারীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য যে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইনি প্রক্রিয়া নির্ধারিত রয়েছে তা অনুসরণ করে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। 

পাচারকৃত অর্থ বৈধ করার সুযোগ প্রদান বিগত বছরগুলোর মতোই কালো টাকা সাদা করার বেআইনি ও অন্যায় সুযোগের ধারাবাহিকতা মাত্র, যা স্থানিক থেকে বৈশ্বিক করা হলো—এমন মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এতে বিদেশে অর্জিত অর্থ ও সম্পদ দেশের অর্থনীতির মূলধারায় সংযুক্তির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ ও আয়কর রাজস্ব বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, বারবার সুযোগ দিয়েও দেশের অর্থনীতিতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাশিত ফল বয়ে আনেনি, সরকারও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব পায়নি। তাই নতুন এই বিশেষ বিধানের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে তা না বললেও চলে। কারণ যারা অর্থ পাচার করেছেন তারা এ ধরনের প্রণোদনায় উৎসাহিত হয়ে পাচারকৃত অর্থ ফেরত নিয়ে আসবে, এ রকম দিবাস্বপ্নের কোনো ভিত্তি নেই। বিশেষ করে, যেখানে পাচারকৃত দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের দেশের পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি ব্যতিরেকে এই অর্থ বা সম্পদ ফিরিয়ে আনা অসম্ভব। বরং এর মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ ও অর্থ পাচারকারীরাই শুধু স্বস্তি বোধ করবেন, পুলকিত হবেন। অর্থপাচারকে এভাবে লাইসেন্স দেওয়া হলে দেশে দুর্নীতি ও অর্থপাচার আরও বিস্তৃতি ও গভীরতা লাভ করবে।’ 

প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আমদানিতে মূল্যস্ফীতির চাপ, ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধরে রাখা, আমদানি ব্যয় বেড়ে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকার মতো বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটগুলোকে স্বীকার করলেও এগুলোকে মোকাবিলায় কার্যকর কৌশল বা পথ নির্দেশিকা দিতে পারেননি বলে মন্তব্য করেছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। 

টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়, প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে আরও বড় করার প্রত্যাশা থাকলেও প্রস্তাবিত বাজেটে তার তেমন কোনো নিদর্শন দেখা যায়নি। বরং সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ব্যয়কে বড় করে দেখাতে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, সঞ্চয়পত্রের সুদ, করোনার অভিঘাত উত্তরণে দেওয়া ঋণের সুদ মওকুফকে অন্তর্ভুক্ত করে দেখানো হয়েছে, যেগুলো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অংশই নয়। 

এমন বাস্তবতায় বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রীর মাধ্যমে উল্লিখিত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার কার্যকর কৌশল নির্ধারণে বাস্তবসম্মত ও নিরপেক্ষ দিক নির্দেশনার জন্য সুখ্যাতি সম্পন্ন বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেটকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শও দিয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার দাম আরও কমে দুই লাখের ঘরে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বাজারে কমেছে সোনার দাম। এবার নতুন করে প্রতি ভরি ভালো মানের সোনার (২২ ক্যারেট) দাম কমেছে ২ হাজার ৬১৩ টাকা। এখন থেকে দেশের বাজারে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের সোনা বিক্রি হবে ২ লাখ ৯৬ টাকায়।

আগামীকাল শুক্রবার থেকে সারা দেশে সোনার নতুন এ দর কার্যকর হবে।

আজ বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এক বিজ্ঞপ্তিতে সোনার এ দাম কমার তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি (পিওর গোল্ড) সোনার মূল্য কমেছে। সে কারণে সোনার দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস।

নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৯০ হাজার ৯৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭১৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৩৬ হাজার ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে সোনার দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের রুপার ভরি ৪ হাজার ২৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের রুপার ভরি ৪ হাজার ৪৭ টাকা ও ১৮ ক্যারেটের রুপার ভরি ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৬০১ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১০ শতাংশ শুল্কছাড়ের বিনিময়ে ট্রাম্পকে ফেন্টানিল ও বিরল খনিজ দিচ্ছেন সি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৪৩
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে এপেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। ছবি: এএফপি
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে এপেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। ছবি: এএফপি

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরেই তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক কিছুটা কমানো হবে। তিনি বলেছেন, ‘বেইজিং অবৈধ ফেন্টানিলের বাণিজ্য বন্ধ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পুনরায় সয়াবিন আমদানি শুরু এবং বিরল উপাদান রপ্তানি অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাই আমরা চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক কিছুটা কমাব।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান শহরে আজ বৃহস্পতিবার দুই নেতার মুখোমুখি বৈঠকে এই সমঝোতা হয়েছে। ২০১৯ সালের পর এটাই তাঁদের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। এর আগে ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বৈঠক করেন।

দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়ার কিছুক্ষণ পর এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘অসাধারণ একটি বৈঠক হয়েছে—আমি একে ১০-এর মধ্যে ১২ দেব।’

ট্রাম্প জানান, চীন থেকে আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক ৫৭ থেকে কমিয়ে ৪৭ শতাংশ করা হবে। বিশেষ করে, ফেন্টানিল উৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্যের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। তিনি বলেন, সি চিন পিং কথা দিয়েছেন, ফেন্টানিলের পাচার রোধে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।

প্রসঙ্গত, ফেন্টানিল সাধারণত চিকিৎসায় ব্যথা উপশমকারী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর শক্তি মরফিন বা হেরোইনের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ গুণ বেশি। তবে এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার বা অপব্যবহার অত্যন্ত বিপজ্জনক। ফেন্টানিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হওয়া সবচেয়ে ভয়ানক মাদকগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর কারণে শুধু ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১২ মাসে ৫২ হাজারের বেশি মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, চীন বিরল খনিজ উপাদান রপ্তানির ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ এক বছরের জন্য স্থগিত করেছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এই উপাদানগুলো গাড়ি, বিমান ও অস্ত্রশিল্পে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে এগুলো বেইজিংয়ের অন্যতম শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল।

এ ছাড়া দুই দেশ কৃষি-বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছে। এর পাশাপাশি টিকটক অ্যাপসংক্রান্ত মালিকানা সমস্যার সমাধানেও একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছে বেইজিং।

যদিও ট্রাম্প এই বৈঠককে ‘অসাধারণ সাফল্য’ হিসেবে তুলে ধরেছেন, তবে বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে এর প্রতিক্রিয়া ছিল মিশ্র। চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক ১০ বছরের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে কিছুটা নেমে আসে এবং যুক্তরাষ্ট্রে সয়াবিন ফিউচারও দুর্বল ছিল।

অস্ট্রেলিয়ার উইলিয়াম বাক পরামর্শক সংস্থার প্রধান অর্থনীতিবিদ বেসা ডেডা রয়টার্সকে বলেন, বাজারের প্রতিক্রিয়া ট্রাম্পের বর্ণনার মতো উচ্ছ্বসিত নয়—বরং বেশ সতর্ক।

অন্যদিকে, মার্কিন সিনেটের ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘ট্রাম্প চীনের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন—তাঁর কথায় বিশ্বাস করা উচিত নয়।’

বুসানে সির সঙ্গে বৈঠকের আগে ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউংয়ের সঙ্গে শুল্কসংক্রান্ত চুক্তির অধিকাংশ বিষয় চূড়ান্ত করেন। ট্রাম্প জানান, চীনও যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু করবে। তিনি ইঙ্গিত দেন, আলাস্কায় ৪৪ বিলিয়ন ডলারের এলএনজি প্রকল্প নিয়ে বড় ধরনের চুক্তি হতে পারে। তিনি আরও জানান, আগামী এপ্রিলে তিনি চীন সফর করবেন এবং পরে সি চিন পিংকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানাবেন।

চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এ বৈঠককে সির কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বর্ণনা করেছে।

তবে বৈঠকে তাইওয়ান বা এনভিডিয়ার আধুনিক ব্ল্যাকওয়েল চিপ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে ট্রাম্প জানান। এতে চীনের ৫০ বিলিয়ন ডলারের এআই বাজারে এনভিডিয়ার অবস্থান আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। তবে তাইওয়ানের প্রধান বাণিজ্য আলোচক জানান, তিনি এপেক সম্মেলনের ফাঁকে এক মার্কিন বাণিজ্য কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যদিও আলোচনার বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান।

এদিকে বৈঠক শুরুর কয়েক মিনিট আগে ৩৩ বছর পর আবারও পেন্টাগনকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি জানান, রাশিয়া ও চীনের বাড়তে থাকা প্রভাবের প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা আশা করে, যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক পরীক্ষা স্থগিত রাখার নীতি বজায় রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বন্দরের মাশুল নিয়ে ১০-১৫ দিনের মধ্যে স্টেকহোল্ডারদের বৈঠক: পোর্ট ইউজারস ফোরাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বন্দরের মাশুল নিয়ে ১০-১৫ দিনের মধ্যে স্টেকহোল্ডারদের বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও পোর্ট ইউজারস ফোরামের সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী। বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের সিটি হল কনভেনশনে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।

আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান সাহেব সম্মত হয়েছেন, উনারা বন্দর ব্যবহারকারী, ক্ষতিগ্রস্ত, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে ১০-১৫ দিনের মধ্যে বৈঠকে বসবেন ইনশা আল্লাহ। বৈঠকে উনারা ঠিক করবেন কোনটা যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত ট্যারিফ। সেটিই গ্রহণযোগ্য হবে। প্রাথমিকভাবে আমরা সফল হয়েছি।’

চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরাম চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক প্রসারে প্রতিবন্ধক ওজন স্কেল, বন্দর ট্রাফিক ও চিটাগাং চেম্বারকে জবাবদিহিমূলক ও ব্যবসায়ীবান্ধব করার প্রত্যয়ে মতবিনিময় সভা হয়। সভায় আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরামের প্রথম সভায় এক সপ্তাহ আগে আলটিমেটাম দেওয়ার পর বন্দরের চেয়ারম্যান স্বপ্রণোদিত হয়ে মন্ত্রণালয়ে লিখে চারটি খাতে ট্রাক, প্রাইমমুভার, ট্রেইলার, গেট ফি খাতে বর্ধিত ট্যারিফ স্থগিতের ব্যবস্থা করেছিলেন। সিঅ্যান্ডএফ ৪ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছিল, সে কারণে কর্মসূচি উইথড্র করে নিয়েছি। আমরা চাইনি চট্টগ্রাম বন্দরের কোনো ক্ষতি হোক।’

পোর্ট ইউজারস ফোরামের সভাপতি বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমরা চিঠি দিয়েছি। উনি একটি পক্ষকে আমাদের সঙ্গে আলাপ করার জন্য নিযুক্ত করেছেন। গতকাল (বুধবার) বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ করেছি। আমি অত্যন্ত খুশি হয়ে বলতে পারি আপনাদের, বন্দরের চেয়ারম্যান সম্মত হয়েছেন যে, উনারা বন্দর ব্যবহারকারী, ক্ষতিগ্রস্ত, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে ১০-১৫ দিনের মধ্যে বৈঠকে বসবেন ইনশা আল্লাহ।’

পোর্ট ইউজারস ফোরামের সভাপতি আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় পর্যায়ে অনুরোধ করব সব অ্যাসোসিয়েশনকে বন্দরের ট্যারিফ কোন কোন খাতে বেশি হয়েছে, তা আমাদের জানাবেন। আমরা চেষ্টা করব সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া করে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত ট্যারিফ যাতে নির্ধারণ করতে পারি। আমরা আশা করব, সরকার ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে।’

সভার বিশেষ অতিথি বিজিএমইএর পরিচালক এম এ সালাম বলেন, আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন চিটাগাং চেম্বারে গতিশীল নেতৃত্ব দরকার। বিভিন্ন সেক্টর থেকে প্রতিনিধি নিয়ে ইউনাইটেড বিজনেস ফোরামের প্যানেল দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত ট্যারিফ নিয়ে এ ফোরাম সোচ্চার ছিল।

ব্যবসায়ী নেতা মোহাম্মদ আমিরুল হক বলেন, ‘আপনারা শুনে লজ্জিত হবেন, খুবই দুঃখজনক মহাসড়কে একটা স্কেলের জন্য চট্টগ্রাম থেকে মিরসরাই পাথর, কয়লা যায় না। মোংলা বন্দর থেকে ট্রাকে মিরসরাইর ইকোনমিক জোনে কয়লা-পাথর আসে। তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ দুর্ভোগ আমাদের দিয়ে গেছে।’

বক্তরা জানান, বন্দর ট্যারিফ ৪১ শতাংশ বেড়েছে প্রচার করলেও কোনো ক্ষেত্রে ৩০০ শতাংশও বেড়েছে। আগে ৩৭১ ডলার দিতে হতো, এখন ১৫০০ ডলার দিতে হচ্ছে। ব্যাপারটা উদ্বেগজনক।

বারভিডার সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর আমদানি-রপ্তানির লাইফলাইন। সম্প্রতি বন্দরের সেবার ওপর যেভাবে ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছে, তাতে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। চট্টগ্রাম চেম্বারে এক বছর ধরে প্রশাসক।

নাসিরুদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম কাস্টম এজেন্ট সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী চৌধুরী, বিজিএপিএমইএর প্রথম সহসভাপতি শহীদুল্লাহ্ চৌধুরী, বিজিএপিএমইএর উপদেষ্টা লতিফুর রহমান আজিম, টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা বেলায়েত হোসেন ও সভাপতি আবদুল মান্নান, টায়ার টিউব ডিলার গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান, চাক্তাই=খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, চট্টগ্রাম বন্দর মেরিন কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি দোস্ত মোহাম্মদ, সেন্ট্রাল প্লাজা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলম টিটু, ফিনলে স্কয়ার ব্যবসায়ী সমিতির মিয়া মো. খালেদ, ব্যবসায়ী নেতা এরফান উদ্দিন খোকন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বড় পতনের পর ঘুরে দাঁড়াল সোনার দাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ২৮
বড় পতনের পর ঘুরে দাঁড়াল সোনার দাম

বড় দরপতনের পর বিশ্ববাজারে সোনার দাম আবার প্রায় ২ শতাংশ বেড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানো ও যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য চুক্তির ফলাফল ঘিরে অনিশ্চয়তার কারণে এই দাম বেড়েছে।

পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল ৯টা ৪৩ মিনিটে স্পট সোনার দাম বেড়ে প্রতি আউন্সে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯৭০ দশমিক ৩৬ ডলার, যা দিনের শুরুতে প্রায় ২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল। ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে সোনার ভবিষ্যৎ ক্রয়াদেশ (গোল্ড ফিউচারস) স্থিতিশীল ছিল, প্রতি আউন্সে ৩ হাজার ৯৯২ দশমিক ৪০ ডলার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক ৫৭ থেকে কমিয়ে ৪৭ শতাংশে আনবেন। বিনিময়ে বেইজিং আবারও যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন কেনা শুরু করবে, বিরল খনিজ রপ্তানি পুনরায় চালু করবে এবং অবৈধ ফেন্টানিল ব্যবসা দমনে পদক্ষেপ নেবে।

সিপিএম গ্রুপের ম্যানেজিং পার্টনার জেফ্রি ক্রিশ্চিয়ান বলেন, সোনার বাজার কিছুটা টালমাটাল হয়েছিল, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-চীনের চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ পাওয়ার পর দেখা যায়, এটি বেশ ফাঁপা একটি সমঝোতা। তাই বাজার বুঝে নিয়েছে যে বাণিজ্যযুদ্ধ এখনই শেষ হচ্ছে না।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ গতকাল বুধবার বাজারের প্রত্যাশা অনুযায়ী সুদের হার কমিয়েছে। তবে সংকেত দিয়েছে, চলমান সরকারী অচলাবস্থার কারণে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্যপ্রবাহ ব্যাহত হওয়ায় এ বছর এটি সম্ভবত শেষবারের মতো হার কমানো হতে পারে।

সুদহার কমে গেলে সোনা আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, কারণ, এটি সুদবিহীন সম্পদ। পাশাপাশি ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়েও সোনা সাধারণত স্থিতিশীল থাকে এবং দাম বাড়ে।

ওয়েলস ফার্গো ইনভেস্টমেন্ট ইনস্টিটিউট তাদের ২০২৬ সালের সোনার দাম লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ৭০০ ডলার নির্ধারণ করেছে, যা আগে ছিল ৩ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার ১০০ ডলার। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ‘আমরা মনে করি, ভূরাজনৈতিক ও বাণিজ্য নীতিগত অনিশ্চয়তা বেসরকারি ও সরকারি পর্যায়ে সোনার চাহিদা বাড়াবে এবং দাম আরও ওপরে তুলবে।’

অন্যদিকে, স্পট সিলভার বা রুপার দাম ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সে ৪৮ দশমিক ৩৪ ডলারে দাঁড়ায়। প্লাটিনাম ০ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৫৯৮ দশমিক ৫৫ ডলারে এবং প্যালাডিয়াম ১ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৪১৫ দশমিক ৫২ ডলারে পৌঁছায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত