Ajker Patrika

পাচারের অর্থ উদ্ধারে ৩০ মামলায় জোর: বাংলাদেশ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পাচারের অর্থ উদ্ধারে ৩০ মামলায় জোর: বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশের বাইরে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ২০২৫ সালের মধ্যে এ-সংক্রান্ত ৩০টি বড় মামলা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরিচালনা করার পরিকল্পনা চলছে। এসব মামলায় প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের লিটিগেশন তহবিল (মামলার তহবিল) সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক আইনি ও তদন্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বাড়িয়ে এসব সম্পদ দ্রুত উদ্ধার করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

আজ শনিবার (১৪ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান ইস্যুকৃত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে জানানো হয়, সম্প্রতি চার দিনের লন্ডন সফরের সময় আন্তর্জাতিক আইন সংস্থা ডিএলএ পাইপার আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এই আলোচনায় ওমনি ব্রিজওয়ে, বেঞ্চওয়াক ক্যাপিটাল, আলভারেজ অ্যান্ড মার্সাল ও ইউনিটাস গ্লোবালের মতো বৈশ্বিক তদন্ত ও লিটিগেশন ফান্ডিং প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।

গভর্নরের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের এই গোলটেবিল আলোচনায় যুক্তরাজ্য ও সিঙ্গাপুরের মতো বড় অর্থ পাচার গন্তব্য দেশে মামলা চালাতে ‘স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এসপিভি) ’ গঠনের প্রস্তাব রয়েছে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠান গঠন করলে মামলা পরিচালনায় রাজনৈতিক প্রভাব কমবে এবং সম্পদের প্রাতিষ্ঠানিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত হবে বলে দাবি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ১৭০ মিলিয়ন ডলার এবং বেক্সিমকোর শায়ান ও শারিয়ার রহমানের ৯০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ জব্দ বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন। যা অন্য গন্তব্য দেশগুলোকেও অনুপ্রাণিত করবে।

এদিকে লন্ডনে চার দিনের সফরকালে ১১ জুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) পরিদর্শন করেন এবং আইএসিসিসি প্রধান ড্যানিয়েল মারফিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সেখানে তিনি ১১টি অগ্রাধিকার মামলায় যৌথ তদন্ত দলের (জেটিটি) সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ ছাড়া বৈঠকগুলোয় বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে তথ্য বিনিময় ত্বরান্বিত করার জন্য গোপনীয়তা চুক্তি স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এ সফর ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে গোলটেবিল আলোচনার পর আন্তর্জাতিক লিটিগেশন ফান্ডিং ও তদন্ত সংস্থাগুলোর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা বলছেন, এসব উদ্যোগ শুধু অর্থ পুনরুদ্ধারে নয়, বরং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে।

গভর্নর মূলত প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে লন্ডনে যান, তবে তিনি স্বতন্ত্রভাবে সেখানে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে সহায়ক হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত