Ajker Patrika

মা-বাবাকে খুন করে জেলে রাজু, অনিশ্চিত স্ত্রী ও ৯ মাসের শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি  
রিয়াদ হোসেন রাজুর ৯ মাসের শিশুকন্যা সিদরাতুল মুনতাহা রাইসা ও তাঁর স্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত
রিয়াদ হোসেন রাজুর ৯ মাসের শিশুকন্যা সিদরাতুল মুনতাহা রাইসা ও তাঁর স্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বইলর ইউনিয়নের বাঁশকুড়ি গ্রামে মা-বাবা হত্যার মর্মান্তিক ঘটনায় গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এ ঘটনার পর থেকে ঘাতক ছেলে রিয়াদ হোসেন রাজুর স্ত্রী ও ৯ মাসের শিশুকন্যা সিদরাতুল মুনতাহা রাইসা এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার চার দিন আগে স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে আসেন রাজু। পরিবারে দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলছিল, বিশেষ করে টাকার হিসাব-নিকাশ নিয়ে। গত কয়েক বছরে রাজু তাঁর বাবার কাছ থেকে ১০-১২ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। সম্প্রতি আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি ঋণ শোধ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা কেনার অজুহাতে। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা এতে রাজি হননি।

এই বিরোধ থেকে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রাজু। কয়েক দিন আগে নিজের মা-বাবাকে হত্যা করে লাশ শোবার ঘরে পুঁতে রাখেন তিনি।

রাজু গ্রেপ্তারের পর শোকাহত পরিবারের সদস্যরা এবং গ্রামের মানুষ এক ভয়াবহ বাস্তবতার মুখোমুখি, যেখানে রাজুর স্ত্রী ও শিশুকন্যার জীবনের দিশা এখন অজানা। সামাজিক লজ্জা, অর্থনৈতিক সংকট ও মানসিক আঘাতে দিশেহারা তারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ‘শিশুটির তো কোনো দোষ নেই, কিন্তু এমন ঘটনার পর তার ভবিষ্যৎ কে গড়বে? রাজু শুধু নিজের বাবা-মাকেই হত্যা করেনি, এক অর্থে স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যৎকেও ধ্বংস করেছে।’

রাজুর এক আত্মীয় বলেন, ‘আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারছি না, কীভাবে এমন জঘন্য কাজ করল রাজু। ওর মেয়েটা এত ছোট, মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, কিন্তু ভবিষ্যতে ওর ঠিকানা কী হবে, এই ভাবনাই কুরে খাচ্ছে সবাইকে।’

প্রতিবেশী আরেকজন বলেন, ‘রাজু সমাজে খারাপ ছিল না। কিন্তু মা-বাবার সঙ্গে তার আচরণটা সব সময় খারাপ ছিল। টাকার প্রতি লোভ বেড়ে গিয়েছিল ভয়ানকভাবে। বছর তিনেক আগে প্রেম করে বিয়ে করে, তবে মেয়ের পরিবার সেটা পুরোপুরি মেনে নেয়নি। এখন রাজুর মা-বাবা মারা গেছেন, সে জেলে আর তিন বোনই শ্বশুরবাড়িতে—একেবারে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে পরিবারটি।’

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহাম্মদ জানান, রাজুকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত