Ajker Patrika

ঋণ পরিশোধ শুরু করল শ্রীলঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঋণ পরিশোধ শুরু করল শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম উৎস ট্যুরিজম। বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট বেসামাল করে তুলেছিল দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে। তবে ট্যুরিজমে ভর করে ঘুরে দাঁড়ানো পথে দেশটির অর্থনীতি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) বিদেশি ঋণ পেয়েছে দেশটি। এতে দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে।

এর প্রমাণ মিলেছে বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ২০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি পরিশোধের মধ্য দিয়ে। গত বৃহস্পতিবার প্রথম কিস্তিতে ৫ কোটি ডলার পরিশোধ করে দেশটি। এর ফলে আমাদের দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বশেষ রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার।

ঋণ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘আমরা প্রথম কিস্তির অর্থ ফেরত পেয়েছি। ৩০ আগস্ট আরও একটি কিস্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। শ্রীলঙ্কা পুরো ঋণ এ বছরের মধ্যে পরিশোধ করবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংক।’

তিন মাসের মধ্যে ফেরত দেওয়ার শর্তে কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতির আওতায় ২০২১ সালে ঋণ নেয় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু যথাসময়ে ফেরত দিতে পারেনি। এরপর কয়েক দফা সময় চায় দেশটি। উপায় না থাকায় বাংলাদেশও কয়েক দফা সময় দেয়। সর্বশেষ আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার ওয়াদা ঠিক রাখতে প্রথম কিস্তির অর্থ ফেরত দিল দেশটি।

এ প্রসঙ্গে পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে ধস নামার পর বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ হস্তক্ষেপ করে। আইএমএফ নতুন ঋণও দেয়। অপরদিকে সেখানে বৈদেশিক আয়ের অন্যতম উৎস ট্যুরিজম খাত ঘুরে দাঁড়ানোর পথে। অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তারা ঋণের প্রথম কিস্তির ৫ কোটি ডলার ফেরত দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য সুখবর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কাকে প্রথম দফায় ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট ৫ কোটি ডলার ছাড় করে বাংলাদেশ ব্যাংক। দ্বিতীয় দফায় ১০ কোটি ডলার দেওয়া হয় একই বছরের ৩০ অক্টোবর। এরপর ৫ কোটি ডলার দেওয়া হয় নভেম্বরে। বিদ্যমান চুক্তির আওতায় গত বছরের আগস্ট, অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যে সুদসহ অর্থ ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। ঋণের বিপরীতে লন্ডন আন্তব্যাংক অফার রেট বা লাইবর যোগ করে তার সঙ্গে আড়াই শতাংশ সুদ পাওয়ার কথা বাংলাদেশের।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৩৭ কোটি ডলার (২৯ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন) ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে হিসাব করতে গিয়ে ৬২৩ কোটি ৭৬ লাখ ডলার বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই হিসাবে প্রকৃত রিজার্ভ নেমে দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারে। প্রতি মাসে ৬ বিলিয়ন ডলার হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের মতো আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বাংলাদেশ।

জানা গেছে, গত বছর শেষে শ্রীলঙ্কার মোট ৯ হাজার ৭০০ কোটি (৯৭ বিলিয়ন) ডলার ঋণের মধ্যে বিদেশি ঋণ ৫ হাজার ১০০ কোটি (৫১ বিলিয়ন) ডলার। মোট ঋণ জিডিপির ১১৯ শতাংশ। বিদেশি ঋণের মধ্যে আন্তর্জাতিক সভরেন বন্ডের (আইএসবি) ১ হাজার ১৮০ কোটি ডলার (৩৬.৪ শতাংশ), এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) ৪৬০ কোটি ডলার (১৪.৩ শতাংশ), জাপানের ১৮০ কোটি ডলার (১০.৯ শতাংশ) এবং চীনের ১৭০ কোটি ডলার (১০.৮ শতাংশ) এবং বাংলাদেশের ২০ কোটি ডলার (.০৪ শতাংশ প্রায়)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৩৩
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের তৃতীয় বৃহদাকার এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ছবি: ইউএস-বাংলার সৌজন্যে
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের তৃতীয় বৃহদাকার এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ছবি: ইউএস-বাংলার সৌজন্যে

দেশের বৃহত্তম বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বহরে যুক্ত হয়েছে তৃতীয় বৃহদাকার এয়ারবাস ৩৩০-৩০০। নতুন যুক্ত হওয়া এয়ারবাসের আসনসংখ্যা ৪৩৬।

এয়ারবাসটি স্পেনের ট্যুরেল থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এয়ারক্র্যাফটটি গ্রহণ করেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম জানান, নতুন এই এয়ারবাস দিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সৌদি আরবের জেদ্দা, রিয়াদ, মদিনা রুটে ফ্লাইট পরিচালিত হবে।

নতুন এয়ারবাস যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে ইউএস-বাংলার বহরে এয়ারক্র্যাফটের সংখ্যা এখন ২৫টি। এয়ারক্র্যাফটের সংখ্যার বিচারে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস এখন দেশের সর্ববৃহৎ বিমান সংস্থা। এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ ছাড়াও তাদের বহরে রয়েছে ৯টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, ১০টি এটিআর ৭২-৬০০ মডেলের এয়ারক্র্যাফট।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের তৃতীয় বৃহদাকার এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ছবি: ইউএস-বাংলার সৌজন্যে
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের তৃতীয় বৃহদাকার এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ছবি: ইউএস-বাংলার সৌজন্যে

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সব রুটসহ আন্তর্জাতিক রুটে কলকাতা, চেন্নাই, মালে, মাসকাট, দোহা, দুবাই, শারজা, আবুধাবি, জেদ্দা, রিয়াদ, ব্যাংকক, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর ও গুয়াংজু রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গয়না ছাড়া আর কোন কোন খাতে সোনার চাহিদা বাড়ছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ২২
হিন্দুদের দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে সোনার গয়না কেনার প্রচলন রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
হিন্দুদের দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে সোনার গয়না কেনার প্রচলন রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

সোনার দাম হু হু করে বাড়ছে। প্রায় দৈনিকই নতুন রেকর্ড হচ্ছে। সোনা এখন আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ২০০ ডলারের সীমা ছাড়িয়েছে।

সব মিলিয়ে চলতি ২০২৫ সাল সোনার জন্য একটি অভূতপূর্ব বছর। বাজারের এই অবস্থা চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে, এটা ১৯৭৯ সালের পর সেরা বছর হবে। কারণ এ বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম বছরওয়ারি বেড়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশের বেশি।

শুধু সোনাই নয়, মূল্যবান অন্য ধাতুর দামও বেড়েছে। যেমন প্লাটিনামের দাম বেড়েছে ৮০ শতাংশ আর রুপার ৭৫ শতাংশ।

ভারতের বাইরে সোনার গয়নার ব্যবহার কম। এরপরও বিশ্বে মোট চাহিদার সিংহভাগই ব্যবহৃত হয় গয়নায়। ব্যবহারকারী দেশের মধ্যে শীর্ষে ভারত। বিশ্বজুড়ে সোনার মোট চাহিদার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যায় গয়না শিল্পে, ঐতিহাসিকভাবেই এই মূল্যবান ধাতুর প্রধান ব্যবহারকারী এই খাত।

তবে, সাম্প্রতিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গয়না বা জুয়েলারি খাত ছাড়াও সোনা বিশ্ব অর্থনীতিতে তিনটি প্রধান খাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে—বিনিয়োগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ এবং প্রযুক্তি/শিল্প। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য অনুসারে, এই খাতগুলোতে সোনার বার্ষিক চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। এই খাতগুলোই বিশ্বজুড়ে সোনার বাজারকে প্রভাবিত করছে।

প্রধান ব্যবহারকারী খাত:

জুয়েলারি খাতের পর সোনার সবচেয়ে বড় তিনটি ব্যবহারকারী খাত এবং তাদের চাহিদার পরিমাণ (২০২৪ সালের পূর্ণাঙ্গ বছরের তথ্য, টন হিসাবে) নিচে তুলে ধরা হলো:

2014

(সূত্র: ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল, ২০২৪ সাল)

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের গোল্ড ডিমান্ড ট্রেন্ডস রিপোর্ট থেকে ও প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের উপাত্ত মিলিয়ে ২০২৫ সালের প্রথম অর্ধবছরের একটি চিত্র পাওয়া যায়। এর মধ্যে ওটিসি মার্কেট একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে উঠে এসেছে। ওভার-দ্য-কাউন্টার বা ওটিসি মার্কেট হলো আনুষ্ঠানিক পুঁজিবাজারের বাইরে ব্রোকারের মাধ্যমে কেনাবেচা।

h1-2025

চলতি বছরের প্রথমার্ধে মোট সোনার চাহিদা (ওটিসি-সহ) প্রায় ২ হাজার ৪৫৫ টনে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ বেশি। ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং উচ্চ মূল্যের মধ্যে শক্তিশালী বিনিয়োগের কারণে অবশ্য গয়নার চাহিদা দুর্বল হয়েছে।

১. বিনিয়োগ: অনিশ্চয়তার সময়ে ‘নিরাপদ আশ্রয়’

জুয়েলারি শিল্পের পরেই সোনার সবচেয়ে বড় বাজার হলো বিনিয়োগ খাত। অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মূল্যস্ফীতি এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার সময় বিনিয়োগকারীরা সোনাকে ‘নিরাপদ সম্পদ’ হিসেবে দেখেন।

এ ক্ষেত্রে সোনার বার, সরকারি কয়েন এবং গোল্ড এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড গোল্ড (ইটিএফ)-এর মাধ্যমে সোনা কেনা হয়।

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে সোনার বিনিয়োগের চাহিদা ১ হাজার ১৮০ টন-এ পৌঁছে চার বছরের রেকর্ড ভেঙেছে, এটি পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি।

২. কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং প্রাতিষ্ঠানিক ক্রয়: রিজার্ভ বহুমুখীকরণ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ভারসাম্য আনতে সোনা কেনে। এটি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং একক মুদ্রার (যেমন মার্কিন ডলার) ওপর নির্ভরতা কমাতে সহায়তা করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনার ধারা অব্যাহত রয়েছে। ২০২৪ সালে তারা ১ হাজার ৪৬ টন সোনা কিনেছে। এটি টানা তৃতীয় বছর যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনা ১ হাজার টন ছাড়িয়েছে। এটি বিশ্বজুড়ে সোনার দামে প্রভাব ফেলছে।

৩. প্রযুক্তি ও শিল্প: ইলেকট্রনিকসের অপরিহার্য উপাদান

প্রযুক্তি ও শিল্প খাতে সোনার ব্যবহার কম হলেও এটি অত্যাবশ্যক। এর মূল কারণ হলো সোনার চমৎকার বিদ্যুৎ পরিবাহিতা এবং ক্ষয় বা মরিচা প্রতিরোধ ক্ষমতা।

ইলেকট্রনিকস: প্রযুক্তি ও শিল্প খাতের মোট ব্যবহারের প্রায় ৭০ শতাংশ সোনা ব্যবহৃত হয় এই খাতে। স্মার্টফোন, কম্পিউটার, এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের সার্কিট বোর্ড, কানেক্টর এবং সুইচে সোনা ব্যবহার করা হয়। এতে যন্ত্রাংশের দীর্ঘস্থায়িত্ব ও উচ্চ কার্যকারিতা নিশ্চিত হয়।

এআই প্রযুক্তির প্রভাব: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে এই খাতে সোনার চাহিদা বাড়ছে। এআই প্রসেসর এবং উচ্চ কার্যক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটিং চিপে (এইচপিসি) সোনা ব্যবহৃত হচ্ছে।

অন্যান্য শিল্প: ইলেকট্রনিকস ছাড়াও ডেন্টিস্ট্রি (দাঁতের চিকিৎসা), চিকিৎসাবিদ্যা এবং মহাকাশ গবেষণার মতো বিশেষায়িত ক্ষেত্রেও সোনা ব্যবহার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একনেক সভা আজ

অর্থবছরের চতুর্থ একনেকে উঠছে ১২ প্রকল্প

  • প্রকল্পের মধ্যে ৪টি নতুন।
  • সংশোধিত প্রকল্প ৫টি।
  • মেয়াদ বৃদ্ধি প্রকল্প ৩টি।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৪৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

১ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘জলবায়ু-সহনশীল জীবনমান উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প এবং ৮৫২ কোটি ব্যয়ে ‘বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পদার্থ ও রসায়ন পরীক্ষার ল্যাবরেটরির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন’ প্রকল্পসহ মোট ১২টি প্রকল্প উঠছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায়।

চলতি অর্থবছরের চতুর্থ জাতীয় একনেক সভা আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের ১৫তম একনেক সভা। সভায় মোট ১২টি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এর মধ্যে ৪টি নতুন, ৫টি সংশোধিত এবং ৩টি মেয়াদ বৃদ্ধি প্রকল্প।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১২টি প্রকল্পের মধ্যে ৬টি সরকারি অর্থায়ন, ১টি সরকারি ও বৈদেশিক ঋণসহায়তা, ১টি সরকারি ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন এবং ১টি বৈদেশিক অনুদানভিত্তিক প্রকল্প।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) এস এম রেজাউল মোস্তফা কামাল বলেন, আজ মঙ্গলবার একনেক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের চার বিভাগের বেশ কিছু প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে।

একনেকে যেসব প্রকল্প উঠছে, সেগুলো হলো—পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ৪টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ের ‘প্রো-অ্যাক্ট বাংলাদেশ: কক্সবাজারে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থা রূপান্তরের মাধ্যমে সহনশীলতা বৃদ্ধি প্রকল্প’। কৃষি মন্ত্রণালয়ের নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘গ্রামীণ মাটির রাস্তাসমূহ টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ডকরণ (এইচবিবি)’ প্রকল্পের মেয়াদ তৃতীয়বার বাড়ানো হয়েছে। ৩ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকার প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১০৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকায়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। তৃতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘জলবায়ু-সহনশীল জীবনমান উন্নয়ন’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। এই বিভাগের চতুর্থ প্রকল্প হলো ‘খুলনা বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প’ (তৃতীয় সংশোধন)। ২ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকায় শুরু হওয়া প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।

ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ৫টি প্রকল্পে উঠছে। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জামালপুর শহরের নগর স্থাপত্যের পুনঃসংস্কার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উন্নয়ন (তৃতীয় সংশোধন) প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৮ কোটি টাকা। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ৫ নম্বর জোনের অভ্যন্তরীণ রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘উত্তরা লেক উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) ষষ্ঠবার মেয়াদ বৃদ্ধি’ প্রকল্পটির ব্যয় ৯০ কোটি টাকা। ব্যয় ব্যতিরেকে সময় বাড়ছে ২০২৬ সালে জুন পর্যন্ত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ভবন নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬১ কোটি টাকা। ২০২৬ সালের জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘কিশোরগঞ্জ-পাকুন্দিয়া, মির্জাপুর-টোক জেলা মহাসড়ককে যথাযথ মানে উন্নীতকরণ (প্রথম সংশোধিত) চতুর্থবার মেয়াদ বৃদ্ধি’ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

শিল্প ও শক্তি বিভাগের রয়েছে ২টি প্রকল্প। এর মধ্যে ‘বিএসটিআই পদার্থ ও রসায়ন পরীক্ষার ল্যাবরেটরির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন’ প্রকল্প। শিল্প মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫২ কোটি টাকা। অপর প্রকল্প হলো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ‘ঘোড়াশাল তৃতীয় ইউনিট রি-পাওয়ারিং প্রকল্প (দ্বিতীয় সংশোধিত) চতুর্থবার মেয়াদ বৃদ্ধি’ প্রকল্প। ২ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে।

এ ছাড়া আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ১টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির নাম হলো মানসিক হাসপাতালকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, পাবনা। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন প্রকাশ

প্রকল্প থেকে নজর সরাতে বিবিএসকে পরামর্শ

  • অতিমাত্রার প্রকল্পে মাঠপর্যায়ের জরিপ কার্যক্রম দুর্বল হয়েছে।
  • রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ডেটার নির্ভরযোগ্যতা কমাচ্ছে।
  • ব্যুরোর বাজেট ব্যবস্থায় অদক্ষতা ও অপচয় বেড়েছে।
  • জনবল বৃদ্ধি ও কাঠামো সংস্কার প্রস্তাব।
  • স্বাধীন ও আধুনিক পরিসংখ্যান সংস্থা গঠনের সুপারিশ
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ০২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মূল দায়িত্ব হলো নিয়মিত ও নিরপেক্ষ পরিসংখ্যান প্রণয়ন করা। তবে সংস্থাটি বর্তমানে অতিমাত্রায় প্রকল্পনির্ভর ও সদর দপ্তরকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। এর ফলে মাঠপর্যায়ের জরিপ কার্যক্রম দুর্বল হয়েছে, তথ্য সংগ্রহ ও যাচাইয়ের মান কমেছে এবং বিবিএস ধীরে ধীরে তার মূল দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর বিবিএসকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে এমনই চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল পরিসংখ্যান দিবস উপলক্ষে বিবিএস আয়োজিত অনুষ্ঠানে টাস্কফোর্সের এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

পরিসংখ্যান ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ (এসআইডি) চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল আট সদস্যের একটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞ টাস্কফোর্স গঠন করে। তাদের দায়িত্ব ছিল বিবিএসের মান, স্বচ্ছতা, জরিপের পদ্ধতি এবং সাংগঠনিক সক্ষমতা পর্যালোচনা করে সংস্কারের প্রস্তাব তৈরি করা।

স্বাধীন টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বিবিএসকে শক্তিশালী করার জন্য নীতিগত কিছু সুপারিশও করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সংস্থাকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপমুক্ত রেখে একটি আধুনিক ও স্বতন্ত্র জাতীয় সংস্থায় রূপান্তর করার সময় এসেছে। এর অংশ হিসেবে সংস্থার নাম পরিবর্তন করে ‘স্ট্যাটিসটিকস বাংলাদেশ (স্ট্যাটবিডি)’ করার প্রস্তাব এসেছে। প্রধানকে চিফ স্ট্যাটিসটিশিয়ান বা প্রধান পরিসংখ্যানবিদের মর্যাদা দেওয়ার সুপারিশ রাখা হয়েছে। জনবলসংকট মোকাবিলায় বর্তমান আটটি উইং ১৬টিতে বৃদ্ধি, উপজেলা পর্যায়ে ৪৩৭টি নতুন পদ সৃষ্টি এবং ক্যাডার ও নন-ক্যাডার একীভূত করে পরিসংখ্যানবিদদের জন্য অভিন্ন পেশাগত কাঠামো গঠনের কথাও বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা, জটিল আমলাতান্ত্রিক কাঠামো এবং বহিরাগত অর্থায়ননির্ভর প্রকল্পের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা বিবিএসের তথ্য প্রকাশের সংস্কৃতিকে বিলম্বিত ও বিকৃত করেছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্থা এমন প্রকল্পনির্ভর সংস্কৃতিতে আবদ্ধ থাকায় প্রাতিষ্ঠানিক স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়েছে, অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে এবং সদর দপ্তরকেন্দ্রিক কর্মপদ্ধতির কারণে মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমও দুর্বল হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০০৬-০৭ অর্থবছরে তহবিলের অনিশ্চয়তার কারণে বিবিএস দাতানির্ভর হয়ে পড়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই নির্ভরতা প্রকল্পনির্ভর সংস্কৃতিতে রূপ নেয়। এর ফলে ‘ডেটা সাইলো’ তৈরি হয়েছে, বহিরাগতভাবে চাপানো পদ্ধতি চালু হয়েছে এবং ব্যুরোর বাজেট ব্যবস্থায় অদক্ষতা ও অপচয় বেড়েছে।

টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বিবিএসকে আধুনিক, পেশাদার ও স্বাধীন জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থায় রূপ দিতে হলে প্রকল্পনির্ভরতা কাটিয়ে একটি স্থায়ী কাঠামো গঠন ও নীতিগত সংস্কার অপরিহার্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিবিএস রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারি পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এমন তথ্য প্রকাশে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক প্রভাব থাকার ফলে ডেটার নির্ভরযোগ্যতা ও সময়োপযোগিতা ব্যাহত হচ্ছে। টাস্কফোর্স জানিয়েছে, একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা (এনএসও) আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনার মূল ভিত্তি। এটি সরকারের প্রমাণভিত্তিক নীতিনির্ধারণ, জবাবদিহি, সম্পদের কার্যকর বরাদ্দ এবং সামাজিক আলোচনার স্বচ্ছ ও সচল প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর আস্থা তখনই তৈরি হবে, যখন তা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, পেশাদার ও স্বচ্ছভাবে তৈরি হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত