আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
সরকার কর ও শুল্কছাড়ের মাধ্যমে বাজারে পণ্যের দাম কমানোর চেষ্টা করলেও তা কার্যত সাধারণ ভোক্তার দামের বোঝা কমাতে পারেনি। গত অর্থবছরে ভোজ্যতেল, মোবাইল ফোন, পোলট্রি, ফ্রিজ, এসি উৎপাদনের উপকরণসহ বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে। সরকারের যুক্তি ছিল, এতে ভোক্তারা কম দামে পণ্য পাবে। তবে বাস্তবে তা হয়নি। এই বিপুল পরিমাণ কর ও শুল্কছাড়ের সুবিধা কার্যত ব্যবসায়ী পর্যায়েই পকেটস্থ হচ্ছে এবং সেই পকেট ফুঁড়ে তা পৌঁছায়নি সাধারণ মানুষের কাছে। ফলে বছরজুড়েই ভোক্তাকে পণ্য ও সেবার বিপরীতে দিতে হয়েছে উচ্চমূল্য। চলতি অর্থবছরেও জনসম্পৃক্ত বেশ কিছু খাতে অনুরূপ সুবিধা বহাল রয়েছে। কিন্তু বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। জিনিসপত্রের যে পড়তি দাম প্রায়ই দৃশ্যমান হচ্ছে, সেটি মূলত মৌসুমি সুফলেরই অংশ, কর-শুল্কছাড়ের নয়।
এনবিআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজস্ব আদায়ের বড় ঘাটতির মধ্যেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৫৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ছাড় দিয়েছে সরকার, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। অথচ এই সময়ে রাজস্বের সংশোধিত মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম অর্জন হয়েছে ৯২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা।
অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজস্ব আদায়ে ভরাডুবির মধ্যেও এই বিপুল পরিমাণ শুল্কছাড় রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থসংকট আরও তীব্রতর করছে। অন্যদিকে ভোক্তাসংশ্লিষ্টরা দাবি তুলেছেন, এই শুল্কছাড়ের বেশির ভাগ সুফলই ভোক্তাপর্যায়ে পৌঁছায়নি।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোবাইল ফোন খাতে ২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তবে মোবাইল ফোন খাতে দেওয়া এই ছাড়ের পরও দাম কমেনি। পোলট্রিশিল্পে ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকার ছাড়ের পরও ডিম-মুরগির দাম বেড়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘সরকার যত ছাড় দেবে, বাজারে সিন্ডিকেট তত শক্তিশালী হবে। বড় করপোরেট কোম্পানিগুলো ছাড় নেয়, একই সঙ্গে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে ছোট খামারিরা টিকে থাকতে পারছেন না।’
ফ্রিজ ও এসি উৎপাদনের উপকরণে ৭১৪ কোটি টাকার ছাড়ের পরও দাম বেড়েছে। মিনিস্টার ফ্রিজের প্রকৌশলী মনিরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব উপকরণে ছাড় নেই, আবার ভ্যাট বেড়েছে, তাই ভোক্তার পক্ষে সুবিধা পাওয়া সম্ভব হয়নি।’
একইভাবে, এনবিআরের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভোজ্যতেল আমদানিতে ২ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা, টেক্সটাইল খাতে ১ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) ৯০৫ কোটি টাকা, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানিকে ৪৪৭ কোটি টাকা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা, ত্রাণসামগ্রী খাতে ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা, শিল্পের কাঁচামালে ২ হাজার ২৮ কোটি টাকা, মূলধনি যন্ত্রপাতিতে ৮ হাজার ৩৩ কোটি টাকা এবং প্রজ্ঞাপন ও অন্যান্য সুবিধা খাতে প্রায় ৭ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে।
কতটা শুল্কছাড়ের সুবিধা পাচ্ছে ভোক্তা—জানতে চাইলে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘বিপুল এই করছাড়ের ফল ভোক্তার কাছে যথাযথভাবে পৌঁছায়নি। কারণ, ব্যবসায়ীরা প্রথমে তাঁদের লাভ নিশ্চিত করেন, ভোক্তার স্বার্থ পরে আসে। মূলত এটি হয় না দুর্বল আইনের শাসন ও কঠোর নজরদারির অভাবে।’
করছাড়ে জিডিপির ক্ষতি: এদিকে এনবিআরের এক অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় দেখা গেছে, করছাড় ও স্বল্প করহার জিডিপির সঙ্গে রাজস্বের অনুপাত ২ দশমিক ২৮ শতাংশ কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ এখনো রাজস্ব-জিডিপি অনুপাতে দুই অঙ্কে যেতে পারছে না।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ লাখ ১১ হাজার ৯০০ কোটি টাকায়।
সরকার কর ও শুল্কছাড়ের মাধ্যমে বাজারে পণ্যের দাম কমানোর চেষ্টা করলেও তা কার্যত সাধারণ ভোক্তার দামের বোঝা কমাতে পারেনি। গত অর্থবছরে ভোজ্যতেল, মোবাইল ফোন, পোলট্রি, ফ্রিজ, এসি উৎপাদনের উপকরণসহ বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে। সরকারের যুক্তি ছিল, এতে ভোক্তারা কম দামে পণ্য পাবে। তবে বাস্তবে তা হয়নি। এই বিপুল পরিমাণ কর ও শুল্কছাড়ের সুবিধা কার্যত ব্যবসায়ী পর্যায়েই পকেটস্থ হচ্ছে এবং সেই পকেট ফুঁড়ে তা পৌঁছায়নি সাধারণ মানুষের কাছে। ফলে বছরজুড়েই ভোক্তাকে পণ্য ও সেবার বিপরীতে দিতে হয়েছে উচ্চমূল্য। চলতি অর্থবছরেও জনসম্পৃক্ত বেশ কিছু খাতে অনুরূপ সুবিধা বহাল রয়েছে। কিন্তু বাজারে এর কোনো প্রভাব নেই। জিনিসপত্রের যে পড়তি দাম প্রায়ই দৃশ্যমান হচ্ছে, সেটি মূলত মৌসুমি সুফলেরই অংশ, কর-শুল্কছাড়ের নয়।
এনবিআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজস্ব আদায়ের বড় ঘাটতির মধ্যেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৫৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ছাড় দিয়েছে সরকার, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। অথচ এই সময়ে রাজস্বের সংশোধিত মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম অর্জন হয়েছে ৯২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা।
অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজস্ব আদায়ে ভরাডুবির মধ্যেও এই বিপুল পরিমাণ শুল্কছাড় রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থসংকট আরও তীব্রতর করছে। অন্যদিকে ভোক্তাসংশ্লিষ্টরা দাবি তুলেছেন, এই শুল্কছাড়ের বেশির ভাগ সুফলই ভোক্তাপর্যায়ে পৌঁছায়নি।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোবাইল ফোন খাতে ২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তবে মোবাইল ফোন খাতে দেওয়া এই ছাড়ের পরও দাম কমেনি। পোলট্রিশিল্পে ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকার ছাড়ের পরও ডিম-মুরগির দাম বেড়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘সরকার যত ছাড় দেবে, বাজারে সিন্ডিকেট তত শক্তিশালী হবে। বড় করপোরেট কোম্পানিগুলো ছাড় নেয়, একই সঙ্গে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে ছোট খামারিরা টিকে থাকতে পারছেন না।’
ফ্রিজ ও এসি উৎপাদনের উপকরণে ৭১৪ কোটি টাকার ছাড়ের পরও দাম বেড়েছে। মিনিস্টার ফ্রিজের প্রকৌশলী মনিরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব উপকরণে ছাড় নেই, আবার ভ্যাট বেড়েছে, তাই ভোক্তার পক্ষে সুবিধা পাওয়া সম্ভব হয়নি।’
একইভাবে, এনবিআরের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভোজ্যতেল আমদানিতে ২ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা, টেক্সটাইল খাতে ১ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) ৯০৫ কোটি টাকা, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানিকে ৪৪৭ কোটি টাকা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা, ত্রাণসামগ্রী খাতে ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা, শিল্পের কাঁচামালে ২ হাজার ২৮ কোটি টাকা, মূলধনি যন্ত্রপাতিতে ৮ হাজার ৩৩ কোটি টাকা এবং প্রজ্ঞাপন ও অন্যান্য সুবিধা খাতে প্রায় ৭ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে।
কতটা শুল্কছাড়ের সুবিধা পাচ্ছে ভোক্তা—জানতে চাইলে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘বিপুল এই করছাড়ের ফল ভোক্তার কাছে যথাযথভাবে পৌঁছায়নি। কারণ, ব্যবসায়ীরা প্রথমে তাঁদের লাভ নিশ্চিত করেন, ভোক্তার স্বার্থ পরে আসে। মূলত এটি হয় না দুর্বল আইনের শাসন ও কঠোর নজরদারির অভাবে।’
করছাড়ে জিডিপির ক্ষতি: এদিকে এনবিআরের এক অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় দেখা গেছে, করছাড় ও স্বল্প করহার জিডিপির সঙ্গে রাজস্বের অনুপাত ২ দশমিক ২৮ শতাংশ কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ এখনো রাজস্ব-জিডিপি অনুপাতে দুই অঙ্কে যেতে পারছে না।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ লাখ ১১ হাজার ৯০০ কোটি টাকায়।
ব্যবসায়ীদের তীব্র বিরোধিতার মধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দরে বহুল আলোচিত বর্ধিত মাশুল কার্যকর হয়েছে। বুধবার থেকে এই নতুন হার অনুযায়ী বন্দর ফি আদায় শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ও মুখপাত্র ওমর ফারুক। তিনি জানান, গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত ১২টার পর থেকে বন্দরে অবস্থানরত জাহাজ...
১ ঘণ্টা আগেউপদেষ্টা বলেন, প্রায় ১০০ কোটি টাকার ফান্ড দিয়ে জেডিপিসির মাধ্যমে প্রায় ১ হাজার ৬ জন উদ্যোক্তার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে চেষ্টা করছি বাজারে পাটের একটা সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আনতে। পাটের স্কয়ার মিটার, মাইলেজের পরিধি বাড়াতে গবেষণার দরকার। র্যাপিং (মোড়ক) উপকরণ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পাটের বিশাল বাজার আছে।
৭ ঘণ্টা আগেসিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড এবং মেটলাইফ বাংলাদেশের মধ্যে সম্প্রতি একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে মেটলাইফ বাংলাদেশের নির্দিষ্ট গ্রাহকেরা উপভোগ করতে পারবেন সিঙ্গার বাংলাদেশের নির্বাচিত পণ্যের ওপর বিশেষ ছাড় এবং এক্সক্লুসিভ সুবিধা।
১১ ঘণ্টা আগেদেশে ব্যাংক খাতের এক অদ্ভুত বৈপরীত্য বিরাজ করছে। বড় ঋণখেলাপিরা কয়েক শ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা ফেরত না দিলেও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অন্যদিকে ছোট ঋণের জন্য গরিব কৃষক কিংবা সাধারণ মানুষ সামান্য দেরি বা কয়েক শ টাকার ঘাটতি হলে কঠোর হয়রানির শিকার হন; এমনকি হাতকড়া...
১ দিন আগে