জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
টানা চাপের পর একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফিরেছে দেশের পণ্যবাজারে। ডলার সংকট যখন অর্থনীতির সব খাতে টানাপোড়েন তৈরি করেছিল, তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক নীতিগত পদক্ষেপ আর বৈদেশিক আয়ের ঊর্ধ্বমুখী ধারার কল্যাণে সেই সংকটের গ্রাফ এখন অনেকটাই পড়তির দিকে। এরই ফল হিসেবে পণ্য আমদানির গতি বাড়ছে, এলসি খোলার হার ছুঁয়েছে নতুন মাত্রা আর বাজারে ফিরে এসেছে সরবরাহের স্থিতি।
বিশেষ করে ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে সরবরাহ বেড়েছে চোখে পড়ার মতো, যার প্রভাব পড়েছে দামেও। এবার রমজানেও তার প্রমাণ মিলেছে। অর্থাৎ সরবরাহ বাড়ায় দেশে একটা স্বস্তিকর রমজান পার হয়েছে বহুদিন পর। ব্যবসায়ীদের ভাষায়, একসময় যেসব পণ্য জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছিল, এখন সেগুলোতে বাজার ভরপুর, নেই কোনো ঘাটতির ছোঁয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারিতে আমদানির জন্য ৬ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে—যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। একই সময়ে নিষ্পত্তিও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের চেয়ে ২০ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। এই গতি শুধু একটি মাসেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং বছরের শুরু থেকেই এর ছাপ স্পষ্ট। প্রথম দুই মাসেই আমদানি এলসি ছুঁয়েছে ১২ বিলিয়ন ডলার।
এই প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে ভোগ্যপণ্যের জন্য খোলা এলসির পরিমাণ ৪৭১ কোটি ৮৮ লাখ ডলার—যা আগের বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।
চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রইসের কর্ণধার ইলিয়াস উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডলার সংকটে শুধু বিলাসী পণ্য নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেও বড় বাধা তৈরি হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি অনেক বদলেছে। ডলারের দর কিছুটা কমেছে, সরবরাহও আগের চেয়ে অনেক বেশি। এতে আগের চেয়ে একই ডলারে বেশি পণ্য আনা যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাজারেও সরবরাহ বেড়েছে, দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
এ রকম একটি চক্রাকার ইতিবাচক গতিধারা তৈরি হয়েছে, যেখানে ডলারপ্রবাহ বাড়ায় এলসি খোলা বাড়ছে, আমদানি বাড়ছে, বাজারে পণ্যের জোগান বাড়ছে, ফলে মূল্যস্ফীতি কমছে—অবশেষে ভোক্তাদের কাঁধে চাপ কিছুটা কমছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ডলারের জোগান স্থিতিশীল করতে নির্দিষ্ট কিছু নীতি গ্রহণ করেছি। এখন সেই ফল পাওয়া যাচ্ছে। পণ্যের আমদানি ও নিষ্পত্তি বাড়ায় সরবরাহে স্বস্তি এসেছে। এই ধারা বজায় থাকলে মূল্যস্ফীতিও আর তেমন চাপ তৈরি করবে না।’
এমন পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে আরও কিছু কাঠামোগত কারণ। এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে রিজার্ভের ওপর চাপ কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা হ্রাস পাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরেছে। আমদানির শর্তগুলো শিথিল হওয়ায় উদ্যোক্তারা এখন আগের চেয়ে বেশি সক্রিয়। এরই প্রভাব পড়েছে বাজারে।’
ট্যারিফ কমিশনের তথ্য বলছে, চলতি বছর রোজার বাজার ঘিরে যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি ছিল—তার অনেকগুলোর আমদানিতে বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটেছে। যেমন—এ বছর খোলা খেজুরের এলসি ৮৬ হাজার টন, যেখানে গত বছর ছিল মাত্র ৪৮ হাজার টন। ছোলা ও মসুর ডালের ক্ষেত্রেও বৃদ্ধি যথাক্রমে ৬০ ও ২১ শতাংশ। অপরিশোধিত চিনির আমদানি কিছুটা স্থির থাকলেও মোট পরিমাণে তা ৮ লাখ টন ছাড়িয়েছে।
ট্যারিফ কমিশনের উপপ্রধান মাহমুদুল হাসান বললেন, ‘এবার শুল্কছাড় ও এলসি কার্যক্রম সহজ হওয়ায় পণ্য সরবরাহে বড় কোনো সংকট দেখা যায়নি। বরং এখন যে গতি আছে, তা সামনের দিনগুলোতে আরও উন্নত হবে বলে আশা করা যায়।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলে এবং বৈদেশিক আয়ের প্রবাহ জোরালো থাকলে এমন গতি শুধু ভোগ্যপণ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না—ব্যাপকভাবে সামগ্রিক অর্থনীতিতে এটি নতুন আশার বার্তা হয়ে উঠতে পারে।
টানা চাপের পর একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফিরেছে দেশের পণ্যবাজারে। ডলার সংকট যখন অর্থনীতির সব খাতে টানাপোড়েন তৈরি করেছিল, তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক নীতিগত পদক্ষেপ আর বৈদেশিক আয়ের ঊর্ধ্বমুখী ধারার কল্যাণে সেই সংকটের গ্রাফ এখন অনেকটাই পড়তির দিকে। এরই ফল হিসেবে পণ্য আমদানির গতি বাড়ছে, এলসি খোলার হার ছুঁয়েছে নতুন মাত্রা আর বাজারে ফিরে এসেছে সরবরাহের স্থিতি।
বিশেষ করে ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে সরবরাহ বেড়েছে চোখে পড়ার মতো, যার প্রভাব পড়েছে দামেও। এবার রমজানেও তার প্রমাণ মিলেছে। অর্থাৎ সরবরাহ বাড়ায় দেশে একটা স্বস্তিকর রমজান পার হয়েছে বহুদিন পর। ব্যবসায়ীদের ভাষায়, একসময় যেসব পণ্য জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছিল, এখন সেগুলোতে বাজার ভরপুর, নেই কোনো ঘাটতির ছোঁয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারিতে আমদানির জন্য ৬ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে—যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। একই সময়ে নিষ্পত্তিও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের চেয়ে ২০ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। এই গতি শুধু একটি মাসেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং বছরের শুরু থেকেই এর ছাপ স্পষ্ট। প্রথম দুই মাসেই আমদানি এলসি ছুঁয়েছে ১২ বিলিয়ন ডলার।
এই প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে ভোগ্যপণ্যের জন্য খোলা এলসির পরিমাণ ৪৭১ কোটি ৮৮ লাখ ডলার—যা আগের বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।
চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রইসের কর্ণধার ইলিয়াস উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডলার সংকটে শুধু বিলাসী পণ্য নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেও বড় বাধা তৈরি হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি অনেক বদলেছে। ডলারের দর কিছুটা কমেছে, সরবরাহও আগের চেয়ে অনেক বেশি। এতে আগের চেয়ে একই ডলারে বেশি পণ্য আনা যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাজারেও সরবরাহ বেড়েছে, দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
এ রকম একটি চক্রাকার ইতিবাচক গতিধারা তৈরি হয়েছে, যেখানে ডলারপ্রবাহ বাড়ায় এলসি খোলা বাড়ছে, আমদানি বাড়ছে, বাজারে পণ্যের জোগান বাড়ছে, ফলে মূল্যস্ফীতি কমছে—অবশেষে ভোক্তাদের কাঁধে চাপ কিছুটা কমছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ডলারের জোগান স্থিতিশীল করতে নির্দিষ্ট কিছু নীতি গ্রহণ করেছি। এখন সেই ফল পাওয়া যাচ্ছে। পণ্যের আমদানি ও নিষ্পত্তি বাড়ায় সরবরাহে স্বস্তি এসেছে। এই ধারা বজায় থাকলে মূল্যস্ফীতিও আর তেমন চাপ তৈরি করবে না।’
এমন পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে আরও কিছু কাঠামোগত কারণ। এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে রিজার্ভের ওপর চাপ কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা হ্রাস পাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরেছে। আমদানির শর্তগুলো শিথিল হওয়ায় উদ্যোক্তারা এখন আগের চেয়ে বেশি সক্রিয়। এরই প্রভাব পড়েছে বাজারে।’
ট্যারিফ কমিশনের তথ্য বলছে, চলতি বছর রোজার বাজার ঘিরে যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি ছিল—তার অনেকগুলোর আমদানিতে বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটেছে। যেমন—এ বছর খোলা খেজুরের এলসি ৮৬ হাজার টন, যেখানে গত বছর ছিল মাত্র ৪৮ হাজার টন। ছোলা ও মসুর ডালের ক্ষেত্রেও বৃদ্ধি যথাক্রমে ৬০ ও ২১ শতাংশ। অপরিশোধিত চিনির আমদানি কিছুটা স্থির থাকলেও মোট পরিমাণে তা ৮ লাখ টন ছাড়িয়েছে।
ট্যারিফ কমিশনের উপপ্রধান মাহমুদুল হাসান বললেন, ‘এবার শুল্কছাড় ও এলসি কার্যক্রম সহজ হওয়ায় পণ্য সরবরাহে বড় কোনো সংকট দেখা যায়নি। বরং এখন যে গতি আছে, তা সামনের দিনগুলোতে আরও উন্নত হবে বলে আশা করা যায়।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলে এবং বৈদেশিক আয়ের প্রবাহ জোরালো থাকলে এমন গতি শুধু ভোগ্যপণ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না—ব্যাপকভাবে সামগ্রিক অর্থনীতিতে এটি নতুন আশার বার্তা হয়ে উঠতে পারে।
বেনাপোল কাস্টম হাউস থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। যা গত অর্থবছরের চাইতে ১ হাজার ৬৬৫ কোটা টাকা বেশি। এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছিল ৭ হাজার ২১ কোটি ৫১ লাখ।
২ ঘণ্টা আগেআজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ও একনেকের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
৩ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপে ভারসাম্য রক্ষা ও বাংলাদেশকে অনুকূল অবস্থানে আনার লক্ষ্যে ২৫টি বোয়িং বিমানের অর্ডার, ৭ লাখ টন গম, এলএনজি, তুলা, ওষুধ, মূলধনী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক কাঁচামাল ও কৃষিজ পণ্য আমদানির ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় ইতিবাচক আবহ তৈরির চেষ্টায় নেমেছে ঢাকা।
৪ ঘণ্টা আগেরাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায় কারখানা বন্ধ ও বিক্রি কমে যাওয়ার কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের (বিএটিবিসি) মুনাফায় ধস নেমেছে। আগের বছরের তুলনায় চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কোম্পানিটির মুনাফা কমে পাঁচ ভাগের এক
৫ ঘণ্টা আগে