Ajker Patrika

সংকটের মধ্যেই জুতার বিশ্বযাত্রা

রোকন উদ্দীন, ঢাকা
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১: ১৩
সংকটের মধ্যেই জুতার বিশ্বযাত্রা
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি জুতার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেই সঙ্গে রপ্তানির পরিমাণও বাড়ছে। চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত চামড়াজাত জুতার রপ্তানি প্রায় ২৪ শতাংশ বেড়েছে, বৈশ্বিক অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ নানা সংকটের মুহূর্তে এটি এই শিল্পের জন্য আশাপ্রদ সাফল্য বটে। কেননা এই জুতা রপ্তানির ওপর ভর করে আগের বছরের প্রায় ১২ শতাংশ তলানি প্রবৃদ্ধি থেকে উন্নতির মাধ্যমে সার্বিকভাবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি গত অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় ৮ শতাংশ বেড়েছে।

এই সাফল্যের পরও রপ্তানির ধারাবাহিকতা রক্ষায় এখনো বিশ্ববাজারে জুতা রপ্তানিতে মোকাবিলা করতে হচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতা। এর প্রভাব পড়েছে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মাসে। অর্থাৎ সাত মাসের প্রবৃদ্ধির বিচারে জুতা রপ্তানি বাড়লেও শুধু একক মাস হিসেবে জানুয়ারিতে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি কমেছে ৯ শতাংশ। এতে চামড়া খাতের সার্বিক রপ্তানি কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ।

একক মাস হিসেবে রপ্তানি আগের তুলনায় সামান্য হ্রাস পাওয়ার পর খাতটির উদ্যোক্তারা ভীষণ উদ্বিগ্ন। তাঁরা মনে করছেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের জুতার জনপ্রিয়তা যখন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন দেশে বিদ্যমান বাস্তবতার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সরকারের প্রণোদনা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এলডব্লিউজি সনদের সীমাবদ্ধতা তো রয়েছেই। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কীভাবে ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় এ খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকেরা।

দেশে প্রচুর চামড়া উৎপাদিত হয়, যার ২৫ শতাংশ স্থানীয় বাজারে ব্যবহৃত হয়, বাকি ৭৫ শতাংশ রপ্তানি করা সম্ভব। তাই সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেওয়া হলে আগামী চার-পাঁচ বছরে এই খাত থেকে রপ্তানি আয় ৫-৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব বলে দাবি খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বাংলাদেশ থেকে সরাসরি প্রক্রিয়াজাত চামড়া, চামড়াজাত পণ্য (যেমন বেল্ট, ব্যাগ, হেড গিয়ার) ও চামড়ার তৈরি জুতা—এ তিন ক্যাটাগরিতে চামড়া খাতের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত চামড়ার বড় রপ্তানি বাজার চীন। এসব চামড়া আংশিক বা সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াজাত অবস্থায় রপ্তানি হয়। এ ছাড়া দেশে তৈরি চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো। ইইউভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বেশি চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয় ইতালিতে। এ ছাড়া জাপান, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চীন, হংকং, ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়ায় উল্লেখযোগ্য চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়।

বিটিএ ও ইপিবির তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১০৩ কোটি ৯১ লাখ ডলার। এর মধ্যে ৫৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার চামড়ার জুতা রপ্তানি থেকে এসেছে। এ ছাড়া ৩৫ কোটি ২৫ লাখ ডলার চামড়াজাত পণ্য, বাকি ১৪ কোটি ২৫ লাখ ডলারের ফিনিশড ও ক্রাস্ট চামড়া রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরে যে পরিমাণ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে, তা ছিল আগের ২০২২-২৩ সালের তুলনায় ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ কম। আগের বছর রপ্তানি হয়েছিল ১১৭ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। আগের বছর চামড়ার তৈরি জুতা রপ্তানি হয়েছিল ৬৯ কোটি ৩২ লাখ ডলার। সে হিসেবে আগের বছরের তুলনায় গত বছর চামড়ার জুতা রপ্তানি ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ কম হয়েছিল।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরুতে চামড়া খাতের রপ্তানি ঘুরে দাঁড়ায়। জানুয়ারি পর্যন্ত ফিনিশড চামড়া, চামড়াজাত পণ্য ও চামড়ার তৈরি জুতা রপ্তানি হয়েছে ৬৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারের, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বেশি। গত বছর জানুয়ারি পর্যন্ত চামড়া খাতের রপ্তানি ছিল ৬১ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ সময় চামড়ার জুতা ছাড়া চামড়া খাতের বাকি দুই শাখায় রপ্তানি কমেছে। জানুয়ারি পর্যন্ত চামড়ার জুতা রপ্তানি হয়েছে ৪০ কোটি ৩৩ লাখ ডলার, যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ২৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি। গত বছর জানুয়ারি পর্যন্ত চামড়ার জুতা রপ্তানি হয়েছিল ৩২ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। আর সরাসরি চামড়া রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ কম।

অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত চামড়াজাত অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১৯ কোটি ১৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ কম, গত বছর এই সময়ে চামড়াজাত অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ২১ কোটি ১৫ লাখ ডলারের।

একক মাস হিসেবে জানুয়ারি মাসে চামড়া, চামড়াজাত পণ্য ও চামড়ার তৈরি জুতা রপ্তানি হয়েছে ৯ কোটি ১৭ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত বছর জানুয়ারি মাসে চামড়া খাতে রপ্তানি হয়েছিল ৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। এ সময় সবচেয়ে বেশি কমেছে চামড়ার জুতা রপ্তানি। জানুয়ারি মাসে চামড়ার জুতা রপ্তানি হয়েছে ৫ কোটি ৭ লাখ ডলার, যা গত বছর ছিল ৫ কোটি ৫৭ লাখ ডলার।

জানুয়ারি মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রক্রিয়াজাত চামড়ার রপ্তানি কমেছে ২ শতাংশ, রপ্তানি হয় ১ কোটি ১২ লাখ ডলার। তবে চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি ২ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়েছে, রপ্তানি হয়েছে ২ কোটি ৯৭ লাখ ডলার।

লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং লেদারেক্স ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার চামড়া খাতের প্রণোদনা তুলে নিয়েছে, এ জন্য হঠাৎ চামড়ার রপ্তানিও কমেছে। এখন সার্বিকভাবে সাত মাসের হিসাবে প্রবৃদ্ধি থাকলেও তা বছর শেষে ধরে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে ঘোরতর সংশয় তৈরি হয়েছে।’

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের সাবেক মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির বিপরীতে বর্তমানে যে নগদ সহায়তার সুবিধা রয়েছে, তা অনেক বেশি। কিছু খাতে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তবে এই সহায়তার বিকল্প কোনো প্রণোদনার ব্যবস্থা না থাকলে ২০২৬ সালে এলডিসি (নিম্ন আয়ের দেশ) থেকে গ্র্যাজুয়েশনের পর এসব খাতের রপ্তানি আয় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও কর্মীদের সাফল্য উদ্‌যাপনে আবুল খায়ের স্টিলের ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইস্পাত উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের স্টিল (একেএস) ৬ ডিসেম্বর তাদের সব কর্মীকে নিয়ে ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। দিনব্যাপী এই উৎসবমুখর ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে দেশের প্রতিটি স্থান থেকে আবুল খায়ের স্টিলের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। নামাজ ও খাবারের বিরতির পর একেএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবার উদ্দেশে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন। বক্তব্যে কোম্পানির সাম্প্রতিক অর্জন ও মাইলফলকগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রড একেএস টিএমটি বি৭০০ সি-আরের সফল উৎপাদন। বিশ্বের দ্রুততম রোলিং মিল স্থাপন। একেএস এবং কাউ ব্র্যান্ড কালার কোটেড স্টিলের মর্যাদাপূর্ণ সুপারব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন।

এই আলোচনায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং কর্মীদের সম্মিলিত সাফল্যের প্রতিচ্ছবিও উঠে আসে।

সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‍্যাফেল ড্র পর্বটি উদ্‌যাপনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কিংবদন্তি শিল্পী জেমসের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ও লেজার শো উপস্থিত সবাইকে মাতিয়ে রাখে।

সমাপনী ভাষণে একেএস পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান হয়। এরপর নৈশভোজ ও ডিজে সেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (৮ ডসিম্বের) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন, শরী’আহ সুপারভাইজরি কাউন্সলিরে সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যাংকের নিট মুনাফা ছাড়া উৎসাহ বোনাস বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

কর ও সঞ্চিতি সংরক্ষণের পর নিট মুনাফা অর্জন না করলে কোনো ব্যাংকই আর উৎসাহ বোনাস দিতে পারবে না। পাশাপাশি মূলধন সংরক্ষণ ঘাটতি, প্রভিশন ঘাটতি বা পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকেই বোনাস দেওয়ার পথও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে আনরিয়েলাইজড বা নগদায়ন না করা আয়ের ভিত্তিতে বোনাস দেওয়া আর্থিক শৃঙ্খলা ও সুশাসনের পরিপন্থী। তাই এখন থেকে শুধু নির্ধারিত নিট মুনাফা অর্জন করতে পারলেই উৎসাহ বোনাস দেওয়ার অনুমতি পাবে ব্যাংকগুলো।

আরও বলা হয়, পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে কোনো ধরনের উৎসাহ বোনাস দেওয়া যাবে না। রেগুলেটরি মূলধন বা প্রভিশনের ঘাটতি থাকলে বোনাস দেওয়া নিষিদ্ধ। প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় পাওয়া ব্যাংকগুলোও সেই সময়কাল মুনাফা হিসাবের ক্ষেত্রে দেখাতে পারবে না। বোনাস প্রদানে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন কর্মসূচির উন্নতি ও খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে দৃশ্যমান সাফল্য বিবেচনায় নিতে হবে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে, যেখানে নিট মুনাফা ছাড়া বোনাস না দেওয়ার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। তবে কোনো ব্যাংক নির্দিষ্ট সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে বিশেষ বোনাসের জন্য আবেদন করতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৩
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভ্যাটব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটাল ও সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক নতুন পর্যায়ে এগোচ্ছে। মাত্র একটি ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধের সুযোগ ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে এবং বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহারও শুরু করেছে।

এনবিআর জানিয়েছে, শিগগির এ পদ্ধতি সারা দেশে চালু করা হবে, যাতে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাটের আওতায় আসে এবং নিবন্ধন ছাড়া আর কেউ ব্যবসা চালাতে না পারে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

মো. আবদুর রহমান বলেন, দেশের বড় একটি অংশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনো ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে। আগামী বছর এমন একটি মেকানিজম চালু করা হবে, যার মাধ্যমে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসার সুযোগ থাকবে না। বর্তমানে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠান ৬ লাখ ৪৪ হাজার; লক্ষ্য আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে তা ৩০ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করা। শুধু চলতি মাসেই ১ লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য—‘সময়মতো নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’—ধরে আগামীকাল বুধবার সারা দেশে ভ্যাট দিবস পালিত হবে। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর চলবে ভ্যাট সপ্তাহ। তবে নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় এ বছরও স্থগিত থাকছে ভ্যাট পুরস্কার।

রিটার্ন জমাদানেও বড় পরিবর্তন আসছে বলে জানান মো. আবদুর রহমান খান। গত অর্থবছরে ১৭ লাখ ই-রিটার্ন জমা পড়লেও চলতি অর্থবছরে তা ৪০ লাখে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জমা পড়েছে ২২ লাখ রিটার্ন। ভ্যাট আদায়েও গতি এসেছে—গত অর্থবছরে মোট রাজস্বের ৩৮ শতাংশ এসেছে ভ্যাট থেকে আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই ভ্যাট আদায় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২২ শতাংশ।

করদাতাদের ঝামেলা কমাতে ই-রিটার্নে ব্যবহৃত ব্যাংকসংক্রান্ত চারটি তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান আবদুর রহমান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করদাতারা মনে করেন, রাজস্ব কর্মকর্তারা এসব তথ্য দেখতে পারবেন—এটি ভুল ধারণা।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে কেন—এ প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বাস্তব প্রয়োজন থেকেই এ লক্ষ্য নির্ধারণ। তবে কারও ওপর হয়রানি বা অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হবে না; মূলত যাঁরা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই কঠোরতা বাড়ানো হবে।

আমদানি করা মোবাইল ফোনে কর কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত; এককভাবে এনবিআর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) মো. আজিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত