Ajker Patrika

ভারতের বদলে ব্রাজিল থেকেই সবচেয়ে বেশি তুলা আনছে বাংলাদেশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: পিটিআই
ছবি: পিটিআই

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) শিল্প বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং দেশের মোট রপ্তানি আয় ও জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। তবে তুলা আমদানিতে এই নির্ভরতা দীর্ঘদিন ভারতের ওপর থাকলেও সম্প্রতি বড় পরিবর্তন দেখা গেছে। মার্কিন কৃষি দপ্তর (ইউএসডিএ)-এর সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্রাজিল এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কাঁচা তুলা সরবরাহকারী দেশে পরিণত হয়েছে, যা ভারতের দীর্ঘদিনের আধিপত্যকে খর্ব করেছে।

এই বিষয়ে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ বাজার বছরে (আগস্ট ২০২৪–জুলাই ২০২৫) বাংলাদেশ রেকর্ড ৮.২৮ মিলিয়ন ব্যাল তুলা আমদানি করেছে। এর মধ্যে শুধু ব্রাজিল থেকেই আনা হয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ (১.৯ মিলিয়ন ব্যাল)। এরপরই ছিল ভারতের অবস্থান। বাংলাদেশে আমদানি করা তুলার ১৫ শতাংশ (১.৪ মিলিয়ন ব্যাল) সরবরাহ করেছে ভারত। অথচ মাত্র এক বছর আগেও বাংলাদেশে তুলা সরবরাহকারী দেশগুলোর শীর্ষে ছিল দেশটি। ২০২৩-২৪ অর্থ বাজারে তারা বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ১.৭৯ মিলিয়ন ব্যাল তুলা সরবরাহ করেছিল।

ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে আন্দোলনের জের ধরে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই বাংলাদেশে তুলা রপ্তানিতে ভারতের পিছিয়ে পড়ার ঘটনাটি ঘটেছে। ইউএসডিএ প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। আন্দোলনের সময় বাংলাদেশের সরবরাহ চেইনে সাময়িক ব্যাঘাত ঘটলেও পোশাক খাত দ্রুত স্থিতিশীল হয় এবং তুলা আমদানি ধারা অব্যাহত থাকে।

বাংলাদেশের আরএমজি খাত দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশ এবং জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ জোগান দেয়। দেশের প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক এই শিল্পে কাজ করে। তাই কাঁচামালের বাজারে পরিবর্তন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য তাৎপর্যপূর্ণ।

এদিকে কাঁচা তুলার বাজারে ভারত পিছিয়ে পড়লেও তুলা দিয়ে তৈরি সুতা সরবরাহে ভারত এখনো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অংশীদার। ২০২৪-২৫ বাজার বছরে বাংলাদেশ যে সুতা আমদানি করেছে, তার ৮২ শতাংশই এসেছে ভারত থেকে। আর মাত্র ৭.৫ শতাংশ সুতা পাঠিয়ে এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীন।

বিশেষজ্ঞদের মতে—বাংলাদেশের ভারতীয় সুতা কেনার কারণ হলো দ্রুত সরবরাহ, কম পরিবহন ব্যয় এবং বিদ্যমান ব্যবসায়িক সম্পর্ক। অন্যদিকে তুলার ক্ষেত্রে ব্রাজিলের দাম, মান এবং বৈশ্বিক সরবরাহ ক্ষমতা বাংলাদেশকে তাদের ওপর বেশি নির্ভরশীল করেছে।

আগামী ২০২৫-২৬ বাজার বছরে বাংলাদেশের তুলা আমদানি আরও ১.৪ শতাংশ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মূলত স্থানীয় স্পিনিং শিল্পের উচ্চ চাহিদার কারণেই তুলা আমদানি বাড়ছে। এই পরিবর্তন শুধু বৈশ্বিক বাজার নয়, দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য ভারসাম্যেও নতুন দিক নির্দেশ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...