নজরুল ইসলাম

১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর অতি দ্রুত বাংলাদেশের সমাজকাঠামো বদলে যেতে থাকে। গ্রামীণ সমাজ অবশ্য বেশ কিছুদিন অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। গ্রামীণ অভিজাত ধনীরা ক্রমে শহরে অভিবাসী হয়, গ্রামের সম্পদ নিজ দখলে রেখেই। গ্রামে দারিদ্র্য প্রকটভাবেই বিদ্যমান থাকে। পরিবর্তন আসতে শুরু করে আশির দশকের পর মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যত্র প্রবাসী কর্মসংস্থানের সুযোগের হাত ধরে। গ্রামবাংলার প্রায় এক কোটি তরুণ গত চার দশকে প্রবাসী কর্মী হয়েছে এবং তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স গ্রামীণ অর্থনীতি ও সমাজ অনেকটাই বদলে দিয়েছে। ওরা বাংলাদেশের নতুন গ্রামীণ সমাজ। প্রায় একই কালপর্বে ঢাকা ও চট্টগ্রামে রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্প গড়ে ওঠায় লাখ লাখ গ্রামীণ তরুণী শহরে অভিবাসী হয়, তাদের অর্জিত আয়ে পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন হতে থাকে। এতে দরিদ্র শ্রেণি নিম্নমধ্যবিত্ত হওয়ার সুযোগ পায়। তা ছাড়া, গত পাঁচ দশকে সরকারি উদ্যোগে গৃহীত নানা উন্নয়ন পদক্ষেপ গ্রামীণ সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে হাজার হাজার দেশি-বিদেশি এনজিও উন্নয়ন তৎপরতা দেখায়, তারও যথেষ্ট প্রভাব ছিল সমাজ বদলে; বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নে ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণে।
সরকারি উদ্যোগ ও প্রণোদনায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, নানা রকম উৎপাদনশীল কর্মে বিনিয়োগ, শিক্ষা বিস্তারে দর্শনীয় বিনিয়োগ, নারীশিক্ষায় বিনিয়োগ, আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে ব্যাপক সহায়তা ইত্যাদি গ্রামীণ সমাজকাঠামোতে পরিবর্তন আনছে। শ্রেণিকাঠামো পরিবর্তন হচ্ছে, নতুন মধ্যবিত্ত গড়ে উঠছে। আগের বিত্তহীন দরিদ্ররাও এখন নিজেদের অধিকার সম্পর্কে অধিকতর সচেতন। অবশ্য এসব সত্ত্বেও ধর্মীয় শিক্ষা, মাদ্রাসা, মক্তব—এদের প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে; সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পশ্চাৎ-মুখিতা প্রবল শক্তি অর্জন করেছে। সাধারণ মানুষের পোশাকে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে, বিশেষ করে নারীদের পোশাকে। ‘থ্রিপিস’, বোরকা ও হিজাবের ব্যবহার বেড়েছে। শহরের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত পুরুষদের পোশাকে প্যান্ট-শার্টের প্রাধান্য, বাঙালিয়ানায় ভক্তদের পরিধেয় পাজামা-পাঞ্জাবি, ইসলামি ধর্মশিক্ষা অনুসারী পুরুষের পোশাকে পাজামা-পাঞ্জাবি-টুপির প্রাধান্য। পোশাকে রাজনৈতিক আদর্শেরও প্রতিফলন দেখা যায়।
গ্রামের বিত্তবান ও প্রভাবশালী মহল মূলত এখনো ভূমিমালিক, কৃষি উপকরণের মালিক, গ্রামীণ ব্যবসা ও নানা রকম শিল্পকারখানার মালিক ও ঠিকাদার, পরিবহনমালিক, রাজনৈতিক দলের নেতা বা জ্যেষ্ঠ কর্মী। এরাই গ্রামীণ মধ্যবিত্ত ও বিত্তবান। রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতারা সমাজপতি। উপজেলা পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সব সরকারি কর্মকর্তাও সমাজে প্রভাবশালী। স্থানীয় উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকদেরও কেউ কেউ সামাজিক সম্মান পেয়ে থাকেন।
গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে অতি দ্রুত নগরায়ণ ঘটেছে। ১৯৭১ সালের ৭ শতাংশ থেকে ২০২১ সালে ৩৬ শতাংশের মতো। নগরীয় জনসংখ্যার আকার বেড়েছে ৫ মিলিয়ন থেকে ৬০ মিলিয়নে। শহরে সমাজকাঠামো পরিবর্তিত হয়েছে, হচ্ছে। শুরুর অতি ক্ষুদ্র আকারের উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি এখন বেশ স্ফীত। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ নিম্নবিত্ত, ৫০ শতাংশ মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্তের অংশও প্রায় শতকরা ১০ ভাগ। এদের মধ্যে কিছু আবার অতি ধনী। বাংলাদেশের অতি ধনীরা কেউ কেউ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডেও অতি ধনী। এদের ধনসম্পদের হিসাব সরকারের কাছেও অজানা। তবে মধ্যবিত্তের আকার-আয়তন বৃদ্ধি জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নমধ্যবিত্তদের অর্থনৈতিক অবস্থার কিছু উন্নতি হলেও নিম্নবিত্তদের জীবনমানে তুলনামূলক উন্নতি লক্ষ করা যায় না।
বাংলাদেশে নগরীয় সমাজকাঠামো বোঝার একটি উপায় রাজধানীর মানুষদের সমাজকাঠামো বোঝা, কেননা এদের সম্পর্কে কিছু না কিছু গবেষণা-সমীক্ষা-পর্যবেক্ষণ দেখা যায়। অবশ্য মহানগর ঢাকার সামাজিক কাঠামো দেশের অন্যান্য শহরের পরিস্থিতি থেকে কিছুটা ভিন্ন। ঢাকার প্রভাবশালী উচ্চবিত্তরা অনেকে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক এবং তা কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক প্রজন্মেই সম্ভব হয়েছে। নানা সূত্রে, নানা মাধ্যমে, নানা উপায়ে এদের বিত্ত অর্জন। এরা নানাভাবে সরকারি সহযোগিতা কাজে লাগিয়েছে। এদের কেউ কেউ উচ্চশিক্ষিত, আবার অনেকেই তা নয়। তবে এরা অধিকাংশই খুব উদ্যোগী ও বুদ্ধিমান। এদের অনেকে শিল্পকারখানার মালিক, পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্যোক্তা, ব্যাংকের মালিক, ব্যবসা-বাণিজ্যের মালিক ও অন্যান্য সম্পদের মালিক। কেউ কেউ নানা কিছুর মালিকানার সঙ্গে টিভি, প্রিন্ট মিডিয়া ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মালিক, উদ্যোক্তা। এদের অনেকের রাজধানীর অদূরে বৃহৎ পরিসরে বাগানবাড়ি বা রিসোর্ট আছে। কারও কারও বিদেশে ‘সেকেন্ড হোম’ আছে। কেউ কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সব মিলিয়ে এরা প্রচণ্ড ক্ষমতাবান। এদের সন্তানেরা অনেকেই প্রবাসী। মধ্যবিত্তরা, কিছু সম্পদের মালিক হলেও অনেকে যুগপৎ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ও মূলত পেশাজীবী। উচ্চমধ্যবিত্তদের কারও কারও সন্তান পাশ্চাত্যমুখী, অনেকেই নিজ মেধায়। সাধারণ মধ্যবিত্তরা নিজেদের পারিবারিক সুখ-শাস্তি, সন্তানদের শিক্ষাদান ও ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার চিন্তায় সময় দিয়ে থাকে। বেশির ভাগ ভাড়া বাড়িতে থাকেন। দরিদ্র শ্রেণি নিজেদের সংসার পরিচালনায় সবটুকু সময় ব্যয় করে। অনেকেই খুব দরিদ্র। জীবিকা অর্জনের বাইরে অন্য চিন্তার সময় পায় না। বড় একটি পরিবার এক কক্ষের বস্তি বাড়িতে জীবন কাটায়।
বাংলাদেশের সমাজ উদার, পরধর্মসহিষ্ণু এমন মনে করা হতো। সম্ভবত এ ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সমাজ একাধারে পরমতসহিষ্ণু ও গণতান্ত্রিক, পাশাপাশি বিপুল সংখ্যায় মধ্যযুগীয় ধর্মাশ্রয়ী ও ধর্মান্ধ এবং অগণতান্ত্রিক। পাশাপাশি সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ ধর্মাচারীগণ নিরীহ জীবনাচারী। বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী শিক্ষিত তরুণেরা দেশপ্রেমিক, আধুনিক ও উদার। এরা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক তৎপরতার চেয়ে সাংস্কৃতিক বিকাশে অধিক উৎসাহী। ধর্মীয়ভাবে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান নিয়ে বাংলাদেশের সমাজ। এ দেশের আদিতম নৃগোষ্ঠীর কোনো কোনো গোষ্ঠী সাঁওতাল, শবর ইত্যাদি এখনো জীবন্ত মানবগোষ্ঠী। ভাষা বিচারে, বাংলাদেশের অভ্যুদয় মূলত ভাষাকেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে, বর্তমানে ১৭ কোটি বাংলাদেশির ৯৯ শতাংশের মাতৃভাষা বাংলা, ভাষার কারণেই তারা বাঙালি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বেশ কিছু ভাষা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত ও সম্মানিত। রাষ্ট্রীয় পরিচয়ে এ দেশের সব ভাষাভাষীরাই ‘বাংলাদেশি’। বৃহত্তর পরিসরে বাংলাদেশের সমাজকাঠামোর আলোচনায় বলা যায়, বঙ্গবন্ধু-মানসপ্রসূত দেশের যে সংবিধান, তাতে অন্যতম মূলনীতি ছিল সমাজতন্ত্র, স্বাধীন বাংলাদেশের পাঁচ দশকে এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রায় পুরোপুরি পুঁজিবাদী ব্যবস্থা। এর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে এসেছে সমাজে প্রকট বৈষম্য, দুর্নীতিসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক গুণ। একাত্তর-পরবর্তী ‘সবাই গরিব’ পরিস্থিতি থেকে এখন অতি অল্প কিছু অতি ধনী, কিছু ধনী, একটি স্ফীতকায় মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও বিপুলসংখ্যক দরিদ্র। তবে এখনকার দরিদ্র আর একাত্তর-পরবর্তী দরিদ্রের আয় ও জীবন-মানে কিছুটা হলেও পার্থক্য রয়েছে, প্রায় প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কের হাতে একটি মোবাইল ফোন আছে। এখন গ্রামীণ দরিদ্রের কন্যা-শিশুরা সবাই বিদ্যালয়ে যায়, বিশেষত সরকারি উপবৃত্তি পেয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে। নগর-দরিদ্র শিশুরা এতটা ভাগ্যবান নয়, তারা অনেকে শিশুশ্রম বিনিয়োগ করে, বাস করে বস্তিতে। ২০২০-২০২১-এ চলমান কোভিড মহামারি বাংলাদেশের বিরাজমান ধনী-গরিব বৈষম্য আরও প্রকট করে তুলেছে। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্রদের অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশে নারীর অবস্থা ও অবস্থান সব ক্ষেত্রে একই মাত্রার না হলেও প্রশংসনীয়। নারী অধিকার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্জন এখনো অনেক বাকি। পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার কারণে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত নয়। তা সত্ত্বেও সামাজিকভাবে দেশে শিক্ষার হার ও নারীর কর্মসংস্থান সুযোগ বাড়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেকটাই কমেছে। তবে এই হার হ্রাস পাওয়া তুলনামূলকভাবে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিতেই অধিক বাস্তব।
বাংলাদেশের সমকালীন সমাজের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ অবশ্যই এর যুবসমাজ। সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনে, সামাজিক ন্যায্যতা দাবির আন্দোলনে, কর্মক্ষেত্রে ও আয় উপার্জনে দেশের বস্ত্রশিল্প বা প্রবাসে শ্রম বিনিয়োগে ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রেই যুবসমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য ইতিবাচক অবদানের পাশাপাশি যুব সম্প্রদায়ের এক অংশ সমাজ ও আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডেও জড়িত হয়ে পড়ে। এমনকি কিশোর শ্রেণির মধ্যেও অস্থিরতা ও সহিংসতার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের তরুণ ও যুবসমাজ আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রকৌশল-প্রযুক্তি গ্রহণ করে নিজেদেরকে এবং সমাজ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা অনেকটাই বিশ্বায়িত।
বাংলাদেশের সমাজে খুব বড় মাপের যে পরিবর্তন হয়েছে, তা হলো বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে যে শক্তি বা আদর্শ সবচেয়ে বেশি কাজ করেছিল অর্থাৎ ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয়তাবাদ বলতে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদই’ বুঝতেন। এক অশুভ শক্তির হাতে তাঁর মৃত্যুর পর ফৌজি শাসনামলে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বাংলাদেশি’ জাতীয়তাবাদ।
বর্তমান বাংলাদেশ আভিধানিক অর্থে গণতান্ত্রিক সমাজ নয়, আবার একেবারে হৃদয়হীন সমাজও নয়।
বিশ্বের বৃহৎ উন্নয়নশীল ‘গণতান্ত্রিক’ সমাজে অথবা বৃহৎ উন্নত ‘গণতান্ত্রিক’ সমাজে যে ধরনের ধর্মীয় ও বর্ণবাদী উন্মত্ততা দেখা যায়, সে তুলনায় বাংলাদেশের সমাজ এখনো কিছুটা মানবিক, যদিও রাজনৈতিক স্বার্থে মাঝেমধ্যে কিছু মানুষ পাশবিক আচরণ করতে দ্বিধা করে না। বাংলাদেশে আদর্শের ভিত্তিতে নানা রাজনৈতিক দলের, বস্তুত অসংখ্য দলের অস্তিত্ব রয়েছে।
বাংলাদেশে ৫২ বছরের ইতিহাসে রাজনৈতিক ধারা বেশ মিশ্র অভিজ্ঞতার। প্রথম সাড়ে তিন বছর ছিল নির্বাচিত গণতান্ত্রিক শাসন, পরবর্তী পনেরো বছর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা সামরিক শাসকদের কর্তৃত্বাধীন, ১৯৯১ সাল থেকে আবার নির্বাচিত গণতান্ত্রিক শক্তির শাসনাধীন, মাঝে দুই বছর (২০০৭-২০০৮) সামরিক পৃষ্ঠপোষকতার তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ন্ত্রিত শাসন, ২০০৯-এর শুরু থেকে নির্বাচিত যথাযথ গণতান্ত্রিক সরকারের শাসন, অতঃপর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা করায়ত্তে রাখা শাসন, যা বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং এক বিশেষ ঘরানার ‘বিশিষ্ট নাগরিকদের’ বিবেচনায় ‘কর্তৃত্ববাদী শাসন’, ক্ষমতাসীনদের ভাষায় ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র’। ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিভিন্ন খাতের সামাজিক উন্নয়ন ইত্যাদি অবশ্যই দৃশ্যমান ও আন্তর্জাতিকভাবে উচ্চ প্রশংসিত, তবে প্রশ্ন থাকে সুশাসনের ঘাটতি নিয়ে, দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে, নৈতিকতা ও মানবিকতার অবক্ষয় নিয়ে, নাগরিক অধিকারের অভাব নিয়ে।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; নগর-পরিকল্পনাবিদ

১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর অতি দ্রুত বাংলাদেশের সমাজকাঠামো বদলে যেতে থাকে। গ্রামীণ সমাজ অবশ্য বেশ কিছুদিন অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। গ্রামীণ অভিজাত ধনীরা ক্রমে শহরে অভিবাসী হয়, গ্রামের সম্পদ নিজ দখলে রেখেই। গ্রামে দারিদ্র্য প্রকটভাবেই বিদ্যমান থাকে। পরিবর্তন আসতে শুরু করে আশির দশকের পর মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যত্র প্রবাসী কর্মসংস্থানের সুযোগের হাত ধরে। গ্রামবাংলার প্রায় এক কোটি তরুণ গত চার দশকে প্রবাসী কর্মী হয়েছে এবং তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স গ্রামীণ অর্থনীতি ও সমাজ অনেকটাই বদলে দিয়েছে। ওরা বাংলাদেশের নতুন গ্রামীণ সমাজ। প্রায় একই কালপর্বে ঢাকা ও চট্টগ্রামে রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্প গড়ে ওঠায় লাখ লাখ গ্রামীণ তরুণী শহরে অভিবাসী হয়, তাদের অর্জিত আয়ে পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন হতে থাকে। এতে দরিদ্র শ্রেণি নিম্নমধ্যবিত্ত হওয়ার সুযোগ পায়। তা ছাড়া, গত পাঁচ দশকে সরকারি উদ্যোগে গৃহীত নানা উন্নয়ন পদক্ষেপ গ্রামীণ সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে হাজার হাজার দেশি-বিদেশি এনজিও উন্নয়ন তৎপরতা দেখায়, তারও যথেষ্ট প্রভাব ছিল সমাজ বদলে; বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নে ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণে।
সরকারি উদ্যোগ ও প্রণোদনায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, নানা রকম উৎপাদনশীল কর্মে বিনিয়োগ, শিক্ষা বিস্তারে দর্শনীয় বিনিয়োগ, নারীশিক্ষায় বিনিয়োগ, আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে ব্যাপক সহায়তা ইত্যাদি গ্রামীণ সমাজকাঠামোতে পরিবর্তন আনছে। শ্রেণিকাঠামো পরিবর্তন হচ্ছে, নতুন মধ্যবিত্ত গড়ে উঠছে। আগের বিত্তহীন দরিদ্ররাও এখন নিজেদের অধিকার সম্পর্কে অধিকতর সচেতন। অবশ্য এসব সত্ত্বেও ধর্মীয় শিক্ষা, মাদ্রাসা, মক্তব—এদের প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে; সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পশ্চাৎ-মুখিতা প্রবল শক্তি অর্জন করেছে। সাধারণ মানুষের পোশাকে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে, বিশেষ করে নারীদের পোশাকে। ‘থ্রিপিস’, বোরকা ও হিজাবের ব্যবহার বেড়েছে। শহরের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত পুরুষদের পোশাকে প্যান্ট-শার্টের প্রাধান্য, বাঙালিয়ানায় ভক্তদের পরিধেয় পাজামা-পাঞ্জাবি, ইসলামি ধর্মশিক্ষা অনুসারী পুরুষের পোশাকে পাজামা-পাঞ্জাবি-টুপির প্রাধান্য। পোশাকে রাজনৈতিক আদর্শেরও প্রতিফলন দেখা যায়।
গ্রামের বিত্তবান ও প্রভাবশালী মহল মূলত এখনো ভূমিমালিক, কৃষি উপকরণের মালিক, গ্রামীণ ব্যবসা ও নানা রকম শিল্পকারখানার মালিক ও ঠিকাদার, পরিবহনমালিক, রাজনৈতিক দলের নেতা বা জ্যেষ্ঠ কর্মী। এরাই গ্রামীণ মধ্যবিত্ত ও বিত্তবান। রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতারা সমাজপতি। উপজেলা পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সব সরকারি কর্মকর্তাও সমাজে প্রভাবশালী। স্থানীয় উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকদেরও কেউ কেউ সামাজিক সম্মান পেয়ে থাকেন।
গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে অতি দ্রুত নগরায়ণ ঘটেছে। ১৯৭১ সালের ৭ শতাংশ থেকে ২০২১ সালে ৩৬ শতাংশের মতো। নগরীয় জনসংখ্যার আকার বেড়েছে ৫ মিলিয়ন থেকে ৬০ মিলিয়নে। শহরে সমাজকাঠামো পরিবর্তিত হয়েছে, হচ্ছে। শুরুর অতি ক্ষুদ্র আকারের উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি এখন বেশ স্ফীত। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ নিম্নবিত্ত, ৫০ শতাংশ মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্তের অংশও প্রায় শতকরা ১০ ভাগ। এদের মধ্যে কিছু আবার অতি ধনী। বাংলাদেশের অতি ধনীরা কেউ কেউ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডেও অতি ধনী। এদের ধনসম্পদের হিসাব সরকারের কাছেও অজানা। তবে মধ্যবিত্তের আকার-আয়তন বৃদ্ধি জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নমধ্যবিত্তদের অর্থনৈতিক অবস্থার কিছু উন্নতি হলেও নিম্নবিত্তদের জীবনমানে তুলনামূলক উন্নতি লক্ষ করা যায় না।
বাংলাদেশে নগরীয় সমাজকাঠামো বোঝার একটি উপায় রাজধানীর মানুষদের সমাজকাঠামো বোঝা, কেননা এদের সম্পর্কে কিছু না কিছু গবেষণা-সমীক্ষা-পর্যবেক্ষণ দেখা যায়। অবশ্য মহানগর ঢাকার সামাজিক কাঠামো দেশের অন্যান্য শহরের পরিস্থিতি থেকে কিছুটা ভিন্ন। ঢাকার প্রভাবশালী উচ্চবিত্তরা অনেকে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক এবং তা কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক প্রজন্মেই সম্ভব হয়েছে। নানা সূত্রে, নানা মাধ্যমে, নানা উপায়ে এদের বিত্ত অর্জন। এরা নানাভাবে সরকারি সহযোগিতা কাজে লাগিয়েছে। এদের কেউ কেউ উচ্চশিক্ষিত, আবার অনেকেই তা নয়। তবে এরা অধিকাংশই খুব উদ্যোগী ও বুদ্ধিমান। এদের অনেকে শিল্পকারখানার মালিক, পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্যোক্তা, ব্যাংকের মালিক, ব্যবসা-বাণিজ্যের মালিক ও অন্যান্য সম্পদের মালিক। কেউ কেউ নানা কিছুর মালিকানার সঙ্গে টিভি, প্রিন্ট মিডিয়া ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মালিক, উদ্যোক্তা। এদের অনেকের রাজধানীর অদূরে বৃহৎ পরিসরে বাগানবাড়ি বা রিসোর্ট আছে। কারও কারও বিদেশে ‘সেকেন্ড হোম’ আছে। কেউ কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সব মিলিয়ে এরা প্রচণ্ড ক্ষমতাবান। এদের সন্তানেরা অনেকেই প্রবাসী। মধ্যবিত্তরা, কিছু সম্পদের মালিক হলেও অনেকে যুগপৎ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ও মূলত পেশাজীবী। উচ্চমধ্যবিত্তদের কারও কারও সন্তান পাশ্চাত্যমুখী, অনেকেই নিজ মেধায়। সাধারণ মধ্যবিত্তরা নিজেদের পারিবারিক সুখ-শাস্তি, সন্তানদের শিক্ষাদান ও ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার চিন্তায় সময় দিয়ে থাকে। বেশির ভাগ ভাড়া বাড়িতে থাকেন। দরিদ্র শ্রেণি নিজেদের সংসার পরিচালনায় সবটুকু সময় ব্যয় করে। অনেকেই খুব দরিদ্র। জীবিকা অর্জনের বাইরে অন্য চিন্তার সময় পায় না। বড় একটি পরিবার এক কক্ষের বস্তি বাড়িতে জীবন কাটায়।
বাংলাদেশের সমাজ উদার, পরধর্মসহিষ্ণু এমন মনে করা হতো। সম্ভবত এ ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সমাজ একাধারে পরমতসহিষ্ণু ও গণতান্ত্রিক, পাশাপাশি বিপুল সংখ্যায় মধ্যযুগীয় ধর্মাশ্রয়ী ও ধর্মান্ধ এবং অগণতান্ত্রিক। পাশাপাশি সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ ধর্মাচারীগণ নিরীহ জীবনাচারী। বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী শিক্ষিত তরুণেরা দেশপ্রেমিক, আধুনিক ও উদার। এরা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক তৎপরতার চেয়ে সাংস্কৃতিক বিকাশে অধিক উৎসাহী। ধর্মীয়ভাবে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান নিয়ে বাংলাদেশের সমাজ। এ দেশের আদিতম নৃগোষ্ঠীর কোনো কোনো গোষ্ঠী সাঁওতাল, শবর ইত্যাদি এখনো জীবন্ত মানবগোষ্ঠী। ভাষা বিচারে, বাংলাদেশের অভ্যুদয় মূলত ভাষাকেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে, বর্তমানে ১৭ কোটি বাংলাদেশির ৯৯ শতাংশের মাতৃভাষা বাংলা, ভাষার কারণেই তারা বাঙালি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বেশ কিছু ভাষা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত ও সম্মানিত। রাষ্ট্রীয় পরিচয়ে এ দেশের সব ভাষাভাষীরাই ‘বাংলাদেশি’। বৃহত্তর পরিসরে বাংলাদেশের সমাজকাঠামোর আলোচনায় বলা যায়, বঙ্গবন্ধু-মানসপ্রসূত দেশের যে সংবিধান, তাতে অন্যতম মূলনীতি ছিল সমাজতন্ত্র, স্বাধীন বাংলাদেশের পাঁচ দশকে এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রায় পুরোপুরি পুঁজিবাদী ব্যবস্থা। এর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে এসেছে সমাজে প্রকট বৈষম্য, দুর্নীতিসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক গুণ। একাত্তর-পরবর্তী ‘সবাই গরিব’ পরিস্থিতি থেকে এখন অতি অল্প কিছু অতি ধনী, কিছু ধনী, একটি স্ফীতকায় মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও বিপুলসংখ্যক দরিদ্র। তবে এখনকার দরিদ্র আর একাত্তর-পরবর্তী দরিদ্রের আয় ও জীবন-মানে কিছুটা হলেও পার্থক্য রয়েছে, প্রায় প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কের হাতে একটি মোবাইল ফোন আছে। এখন গ্রামীণ দরিদ্রের কন্যা-শিশুরা সবাই বিদ্যালয়ে যায়, বিশেষত সরকারি উপবৃত্তি পেয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে। নগর-দরিদ্র শিশুরা এতটা ভাগ্যবান নয়, তারা অনেকে শিশুশ্রম বিনিয়োগ করে, বাস করে বস্তিতে। ২০২০-২০২১-এ চলমান কোভিড মহামারি বাংলাদেশের বিরাজমান ধনী-গরিব বৈষম্য আরও প্রকট করে তুলেছে। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্রদের অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশে নারীর অবস্থা ও অবস্থান সব ক্ষেত্রে একই মাত্রার না হলেও প্রশংসনীয়। নারী অধিকার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্জন এখনো অনেক বাকি। পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার কারণে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত নয়। তা সত্ত্বেও সামাজিকভাবে দেশে শিক্ষার হার ও নারীর কর্মসংস্থান সুযোগ বাড়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেকটাই কমেছে। তবে এই হার হ্রাস পাওয়া তুলনামূলকভাবে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিতেই অধিক বাস্তব।
বাংলাদেশের সমকালীন সমাজের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ অবশ্যই এর যুবসমাজ। সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনে, সামাজিক ন্যায্যতা দাবির আন্দোলনে, কর্মক্ষেত্রে ও আয় উপার্জনে দেশের বস্ত্রশিল্প বা প্রবাসে শ্রম বিনিয়োগে ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রেই যুবসমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য ইতিবাচক অবদানের পাশাপাশি যুব সম্প্রদায়ের এক অংশ সমাজ ও আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডেও জড়িত হয়ে পড়ে। এমনকি কিশোর শ্রেণির মধ্যেও অস্থিরতা ও সহিংসতার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের তরুণ ও যুবসমাজ আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রকৌশল-প্রযুক্তি গ্রহণ করে নিজেদেরকে এবং সমাজ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা অনেকটাই বিশ্বায়িত।
বাংলাদেশের সমাজে খুব বড় মাপের যে পরিবর্তন হয়েছে, তা হলো বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে যে শক্তি বা আদর্শ সবচেয়ে বেশি কাজ করেছিল অর্থাৎ ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয়তাবাদ বলতে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদই’ বুঝতেন। এক অশুভ শক্তির হাতে তাঁর মৃত্যুর পর ফৌজি শাসনামলে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বাংলাদেশি’ জাতীয়তাবাদ।
বর্তমান বাংলাদেশ আভিধানিক অর্থে গণতান্ত্রিক সমাজ নয়, আবার একেবারে হৃদয়হীন সমাজও নয়।
বিশ্বের বৃহৎ উন্নয়নশীল ‘গণতান্ত্রিক’ সমাজে অথবা বৃহৎ উন্নত ‘গণতান্ত্রিক’ সমাজে যে ধরনের ধর্মীয় ও বর্ণবাদী উন্মত্ততা দেখা যায়, সে তুলনায় বাংলাদেশের সমাজ এখনো কিছুটা মানবিক, যদিও রাজনৈতিক স্বার্থে মাঝেমধ্যে কিছু মানুষ পাশবিক আচরণ করতে দ্বিধা করে না। বাংলাদেশে আদর্শের ভিত্তিতে নানা রাজনৈতিক দলের, বস্তুত অসংখ্য দলের অস্তিত্ব রয়েছে।
বাংলাদেশে ৫২ বছরের ইতিহাসে রাজনৈতিক ধারা বেশ মিশ্র অভিজ্ঞতার। প্রথম সাড়ে তিন বছর ছিল নির্বাচিত গণতান্ত্রিক শাসন, পরবর্তী পনেরো বছর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা সামরিক শাসকদের কর্তৃত্বাধীন, ১৯৯১ সাল থেকে আবার নির্বাচিত গণতান্ত্রিক শক্তির শাসনাধীন, মাঝে দুই বছর (২০০৭-২০০৮) সামরিক পৃষ্ঠপোষকতার তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ন্ত্রিত শাসন, ২০০৯-এর শুরু থেকে নির্বাচিত যথাযথ গণতান্ত্রিক সরকারের শাসন, অতঃপর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা করায়ত্তে রাখা শাসন, যা বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং এক বিশেষ ঘরানার ‘বিশিষ্ট নাগরিকদের’ বিবেচনায় ‘কর্তৃত্ববাদী শাসন’, ক্ষমতাসীনদের ভাষায় ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র’। ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিভিন্ন খাতের সামাজিক উন্নয়ন ইত্যাদি অবশ্যই দৃশ্যমান ও আন্তর্জাতিকভাবে উচ্চ প্রশংসিত, তবে প্রশ্ন থাকে সুশাসনের ঘাটতি নিয়ে, দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে, নৈতিকতা ও মানবিকতার অবক্ষয় নিয়ে, নাগরিক অধিকারের অভাব নিয়ে।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; নগর-পরিকল্পনাবিদ
নজরুল ইসলাম

১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর অতি দ্রুত বাংলাদেশের সমাজকাঠামো বদলে যেতে থাকে। গ্রামীণ সমাজ অবশ্য বেশ কিছুদিন অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। গ্রামীণ অভিজাত ধনীরা ক্রমে শহরে অভিবাসী হয়, গ্রামের সম্পদ নিজ দখলে রেখেই। গ্রামে দারিদ্র্য প্রকটভাবেই বিদ্যমান থাকে। পরিবর্তন আসতে শুরু করে আশির দশকের পর মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যত্র প্রবাসী কর্মসংস্থানের সুযোগের হাত ধরে। গ্রামবাংলার প্রায় এক কোটি তরুণ গত চার দশকে প্রবাসী কর্মী হয়েছে এবং তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স গ্রামীণ অর্থনীতি ও সমাজ অনেকটাই বদলে দিয়েছে। ওরা বাংলাদেশের নতুন গ্রামীণ সমাজ। প্রায় একই কালপর্বে ঢাকা ও চট্টগ্রামে রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্প গড়ে ওঠায় লাখ লাখ গ্রামীণ তরুণী শহরে অভিবাসী হয়, তাদের অর্জিত আয়ে পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন হতে থাকে। এতে দরিদ্র শ্রেণি নিম্নমধ্যবিত্ত হওয়ার সুযোগ পায়। তা ছাড়া, গত পাঁচ দশকে সরকারি উদ্যোগে গৃহীত নানা উন্নয়ন পদক্ষেপ গ্রামীণ সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে হাজার হাজার দেশি-বিদেশি এনজিও উন্নয়ন তৎপরতা দেখায়, তারও যথেষ্ট প্রভাব ছিল সমাজ বদলে; বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নে ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণে।
সরকারি উদ্যোগ ও প্রণোদনায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, নানা রকম উৎপাদনশীল কর্মে বিনিয়োগ, শিক্ষা বিস্তারে দর্শনীয় বিনিয়োগ, নারীশিক্ষায় বিনিয়োগ, আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে ব্যাপক সহায়তা ইত্যাদি গ্রামীণ সমাজকাঠামোতে পরিবর্তন আনছে। শ্রেণিকাঠামো পরিবর্তন হচ্ছে, নতুন মধ্যবিত্ত গড়ে উঠছে। আগের বিত্তহীন দরিদ্ররাও এখন নিজেদের অধিকার সম্পর্কে অধিকতর সচেতন। অবশ্য এসব সত্ত্বেও ধর্মীয় শিক্ষা, মাদ্রাসা, মক্তব—এদের প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে; সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পশ্চাৎ-মুখিতা প্রবল শক্তি অর্জন করেছে। সাধারণ মানুষের পোশাকে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে, বিশেষ করে নারীদের পোশাকে। ‘থ্রিপিস’, বোরকা ও হিজাবের ব্যবহার বেড়েছে। শহরের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত পুরুষদের পোশাকে প্যান্ট-শার্টের প্রাধান্য, বাঙালিয়ানায় ভক্তদের পরিধেয় পাজামা-পাঞ্জাবি, ইসলামি ধর্মশিক্ষা অনুসারী পুরুষের পোশাকে পাজামা-পাঞ্জাবি-টুপির প্রাধান্য। পোশাকে রাজনৈতিক আদর্শেরও প্রতিফলন দেখা যায়।
গ্রামের বিত্তবান ও প্রভাবশালী মহল মূলত এখনো ভূমিমালিক, কৃষি উপকরণের মালিক, গ্রামীণ ব্যবসা ও নানা রকম শিল্পকারখানার মালিক ও ঠিকাদার, পরিবহনমালিক, রাজনৈতিক দলের নেতা বা জ্যেষ্ঠ কর্মী। এরাই গ্রামীণ মধ্যবিত্ত ও বিত্তবান। রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতারা সমাজপতি। উপজেলা পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সব সরকারি কর্মকর্তাও সমাজে প্রভাবশালী। স্থানীয় উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকদেরও কেউ কেউ সামাজিক সম্মান পেয়ে থাকেন।
গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে অতি দ্রুত নগরায়ণ ঘটেছে। ১৯৭১ সালের ৭ শতাংশ থেকে ২০২১ সালে ৩৬ শতাংশের মতো। নগরীয় জনসংখ্যার আকার বেড়েছে ৫ মিলিয়ন থেকে ৬০ মিলিয়নে। শহরে সমাজকাঠামো পরিবর্তিত হয়েছে, হচ্ছে। শুরুর অতি ক্ষুদ্র আকারের উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি এখন বেশ স্ফীত। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ নিম্নবিত্ত, ৫০ শতাংশ মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্তের অংশও প্রায় শতকরা ১০ ভাগ। এদের মধ্যে কিছু আবার অতি ধনী। বাংলাদেশের অতি ধনীরা কেউ কেউ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডেও অতি ধনী। এদের ধনসম্পদের হিসাব সরকারের কাছেও অজানা। তবে মধ্যবিত্তের আকার-আয়তন বৃদ্ধি জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নমধ্যবিত্তদের অর্থনৈতিক অবস্থার কিছু উন্নতি হলেও নিম্নবিত্তদের জীবনমানে তুলনামূলক উন্নতি লক্ষ করা যায় না।
বাংলাদেশে নগরীয় সমাজকাঠামো বোঝার একটি উপায় রাজধানীর মানুষদের সমাজকাঠামো বোঝা, কেননা এদের সম্পর্কে কিছু না কিছু গবেষণা-সমীক্ষা-পর্যবেক্ষণ দেখা যায়। অবশ্য মহানগর ঢাকার সামাজিক কাঠামো দেশের অন্যান্য শহরের পরিস্থিতি থেকে কিছুটা ভিন্ন। ঢাকার প্রভাবশালী উচ্চবিত্তরা অনেকে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক এবং তা কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক প্রজন্মেই সম্ভব হয়েছে। নানা সূত্রে, নানা মাধ্যমে, নানা উপায়ে এদের বিত্ত অর্জন। এরা নানাভাবে সরকারি সহযোগিতা কাজে লাগিয়েছে। এদের কেউ কেউ উচ্চশিক্ষিত, আবার অনেকেই তা নয়। তবে এরা অধিকাংশই খুব উদ্যোগী ও বুদ্ধিমান। এদের অনেকে শিল্পকারখানার মালিক, পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্যোক্তা, ব্যাংকের মালিক, ব্যবসা-বাণিজ্যের মালিক ও অন্যান্য সম্পদের মালিক। কেউ কেউ নানা কিছুর মালিকানার সঙ্গে টিভি, প্রিন্ট মিডিয়া ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মালিক, উদ্যোক্তা। এদের অনেকের রাজধানীর অদূরে বৃহৎ পরিসরে বাগানবাড়ি বা রিসোর্ট আছে। কারও কারও বিদেশে ‘সেকেন্ড হোম’ আছে। কেউ কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সব মিলিয়ে এরা প্রচণ্ড ক্ষমতাবান। এদের সন্তানেরা অনেকেই প্রবাসী। মধ্যবিত্তরা, কিছু সম্পদের মালিক হলেও অনেকে যুগপৎ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ও মূলত পেশাজীবী। উচ্চমধ্যবিত্তদের কারও কারও সন্তান পাশ্চাত্যমুখী, অনেকেই নিজ মেধায়। সাধারণ মধ্যবিত্তরা নিজেদের পারিবারিক সুখ-শাস্তি, সন্তানদের শিক্ষাদান ও ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার চিন্তায় সময় দিয়ে থাকে। বেশির ভাগ ভাড়া বাড়িতে থাকেন। দরিদ্র শ্রেণি নিজেদের সংসার পরিচালনায় সবটুকু সময় ব্যয় করে। অনেকেই খুব দরিদ্র। জীবিকা অর্জনের বাইরে অন্য চিন্তার সময় পায় না। বড় একটি পরিবার এক কক্ষের বস্তি বাড়িতে জীবন কাটায়।
বাংলাদেশের সমাজ উদার, পরধর্মসহিষ্ণু এমন মনে করা হতো। সম্ভবত এ ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সমাজ একাধারে পরমতসহিষ্ণু ও গণতান্ত্রিক, পাশাপাশি বিপুল সংখ্যায় মধ্যযুগীয় ধর্মাশ্রয়ী ও ধর্মান্ধ এবং অগণতান্ত্রিক। পাশাপাশি সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ ধর্মাচারীগণ নিরীহ জীবনাচারী। বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী শিক্ষিত তরুণেরা দেশপ্রেমিক, আধুনিক ও উদার। এরা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক তৎপরতার চেয়ে সাংস্কৃতিক বিকাশে অধিক উৎসাহী। ধর্মীয়ভাবে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান নিয়ে বাংলাদেশের সমাজ। এ দেশের আদিতম নৃগোষ্ঠীর কোনো কোনো গোষ্ঠী সাঁওতাল, শবর ইত্যাদি এখনো জীবন্ত মানবগোষ্ঠী। ভাষা বিচারে, বাংলাদেশের অভ্যুদয় মূলত ভাষাকেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে, বর্তমানে ১৭ কোটি বাংলাদেশির ৯৯ শতাংশের মাতৃভাষা বাংলা, ভাষার কারণেই তারা বাঙালি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বেশ কিছু ভাষা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত ও সম্মানিত। রাষ্ট্রীয় পরিচয়ে এ দেশের সব ভাষাভাষীরাই ‘বাংলাদেশি’। বৃহত্তর পরিসরে বাংলাদেশের সমাজকাঠামোর আলোচনায় বলা যায়, বঙ্গবন্ধু-মানসপ্রসূত দেশের যে সংবিধান, তাতে অন্যতম মূলনীতি ছিল সমাজতন্ত্র, স্বাধীন বাংলাদেশের পাঁচ দশকে এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রায় পুরোপুরি পুঁজিবাদী ব্যবস্থা। এর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে এসেছে সমাজে প্রকট বৈষম্য, দুর্নীতিসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক গুণ। একাত্তর-পরবর্তী ‘সবাই গরিব’ পরিস্থিতি থেকে এখন অতি অল্প কিছু অতি ধনী, কিছু ধনী, একটি স্ফীতকায় মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও বিপুলসংখ্যক দরিদ্র। তবে এখনকার দরিদ্র আর একাত্তর-পরবর্তী দরিদ্রের আয় ও জীবন-মানে কিছুটা হলেও পার্থক্য রয়েছে, প্রায় প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কের হাতে একটি মোবাইল ফোন আছে। এখন গ্রামীণ দরিদ্রের কন্যা-শিশুরা সবাই বিদ্যালয়ে যায়, বিশেষত সরকারি উপবৃত্তি পেয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে। নগর-দরিদ্র শিশুরা এতটা ভাগ্যবান নয়, তারা অনেকে শিশুশ্রম বিনিয়োগ করে, বাস করে বস্তিতে। ২০২০-২০২১-এ চলমান কোভিড মহামারি বাংলাদেশের বিরাজমান ধনী-গরিব বৈষম্য আরও প্রকট করে তুলেছে। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্রদের অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশে নারীর অবস্থা ও অবস্থান সব ক্ষেত্রে একই মাত্রার না হলেও প্রশংসনীয়। নারী অধিকার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্জন এখনো অনেক বাকি। পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার কারণে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত নয়। তা সত্ত্বেও সামাজিকভাবে দেশে শিক্ষার হার ও নারীর কর্মসংস্থান সুযোগ বাড়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেকটাই কমেছে। তবে এই হার হ্রাস পাওয়া তুলনামূলকভাবে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিতেই অধিক বাস্তব।
বাংলাদেশের সমকালীন সমাজের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ অবশ্যই এর যুবসমাজ। সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনে, সামাজিক ন্যায্যতা দাবির আন্দোলনে, কর্মক্ষেত্রে ও আয় উপার্জনে দেশের বস্ত্রশিল্প বা প্রবাসে শ্রম বিনিয়োগে ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রেই যুবসমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য ইতিবাচক অবদানের পাশাপাশি যুব সম্প্রদায়ের এক অংশ সমাজ ও আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডেও জড়িত হয়ে পড়ে। এমনকি কিশোর শ্রেণির মধ্যেও অস্থিরতা ও সহিংসতার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের তরুণ ও যুবসমাজ আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রকৌশল-প্রযুক্তি গ্রহণ করে নিজেদেরকে এবং সমাজ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা অনেকটাই বিশ্বায়িত।
বাংলাদেশের সমাজে খুব বড় মাপের যে পরিবর্তন হয়েছে, তা হলো বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে যে শক্তি বা আদর্শ সবচেয়ে বেশি কাজ করেছিল অর্থাৎ ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয়তাবাদ বলতে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদই’ বুঝতেন। এক অশুভ শক্তির হাতে তাঁর মৃত্যুর পর ফৌজি শাসনামলে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বাংলাদেশি’ জাতীয়তাবাদ।
বর্তমান বাংলাদেশ আভিধানিক অর্থে গণতান্ত্রিক সমাজ নয়, আবার একেবারে হৃদয়হীন সমাজও নয়।
বিশ্বের বৃহৎ উন্নয়নশীল ‘গণতান্ত্রিক’ সমাজে অথবা বৃহৎ উন্নত ‘গণতান্ত্রিক’ সমাজে যে ধরনের ধর্মীয় ও বর্ণবাদী উন্মত্ততা দেখা যায়, সে তুলনায় বাংলাদেশের সমাজ এখনো কিছুটা মানবিক, যদিও রাজনৈতিক স্বার্থে মাঝেমধ্যে কিছু মানুষ পাশবিক আচরণ করতে দ্বিধা করে না। বাংলাদেশে আদর্শের ভিত্তিতে নানা রাজনৈতিক দলের, বস্তুত অসংখ্য দলের অস্তিত্ব রয়েছে।
বাংলাদেশে ৫২ বছরের ইতিহাসে রাজনৈতিক ধারা বেশ মিশ্র অভিজ্ঞতার। প্রথম সাড়ে তিন বছর ছিল নির্বাচিত গণতান্ত্রিক শাসন, পরবর্তী পনেরো বছর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা সামরিক শাসকদের কর্তৃত্বাধীন, ১৯৯১ সাল থেকে আবার নির্বাচিত গণতান্ত্রিক শক্তির শাসনাধীন, মাঝে দুই বছর (২০০৭-২০০৮) সামরিক পৃষ্ঠপোষকতার তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ন্ত্রিত শাসন, ২০০৯-এর শুরু থেকে নির্বাচিত যথাযথ গণতান্ত্রিক সরকারের শাসন, অতঃপর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা করায়ত্তে রাখা শাসন, যা বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং এক বিশেষ ঘরানার ‘বিশিষ্ট নাগরিকদের’ বিবেচনায় ‘কর্তৃত্ববাদী শাসন’, ক্ষমতাসীনদের ভাষায় ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র’। ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিভিন্ন খাতের সামাজিক উন্নয়ন ইত্যাদি অবশ্যই দৃশ্যমান ও আন্তর্জাতিকভাবে উচ্চ প্রশংসিত, তবে প্রশ্ন থাকে সুশাসনের ঘাটতি নিয়ে, দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে, নৈতিকতা ও মানবিকতার অবক্ষয় নিয়ে, নাগরিক অধিকারের অভাব নিয়ে।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; নগর-পরিকল্পনাবিদ

১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর অতি দ্রুত বাংলাদেশের সমাজকাঠামো বদলে যেতে থাকে। গ্রামীণ সমাজ অবশ্য বেশ কিছুদিন অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। গ্রামীণ অভিজাত ধনীরা ক্রমে শহরে অভিবাসী হয়, গ্রামের সম্পদ নিজ দখলে রেখেই। গ্রামে দারিদ্র্য প্রকটভাবেই বিদ্যমান থাকে। পরিবর্তন আসতে শুরু করে আশির দশকের পর মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যত্র প্রবাসী কর্মসংস্থানের সুযোগের হাত ধরে। গ্রামবাংলার প্রায় এক কোটি তরুণ গত চার দশকে প্রবাসী কর্মী হয়েছে এবং তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স গ্রামীণ অর্থনীতি ও সমাজ অনেকটাই বদলে দিয়েছে। ওরা বাংলাদেশের নতুন গ্রামীণ সমাজ। প্রায় একই কালপর্বে ঢাকা ও চট্টগ্রামে রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্প গড়ে ওঠায় লাখ লাখ গ্রামীণ তরুণী শহরে অভিবাসী হয়, তাদের অর্জিত আয়ে পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন হতে থাকে। এতে দরিদ্র শ্রেণি নিম্নমধ্যবিত্ত হওয়ার সুযোগ পায়। তা ছাড়া, গত পাঁচ দশকে সরকারি উদ্যোগে গৃহীত নানা উন্নয়ন পদক্ষেপ গ্রামীণ সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে হাজার হাজার দেশি-বিদেশি এনজিও উন্নয়ন তৎপরতা দেখায়, তারও যথেষ্ট প্রভাব ছিল সমাজ বদলে; বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নে ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণে।
সরকারি উদ্যোগ ও প্রণোদনায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, নানা রকম উৎপাদনশীল কর্মে বিনিয়োগ, শিক্ষা বিস্তারে দর্শনীয় বিনিয়োগ, নারীশিক্ষায় বিনিয়োগ, আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে ব্যাপক সহায়তা ইত্যাদি গ্রামীণ সমাজকাঠামোতে পরিবর্তন আনছে। শ্রেণিকাঠামো পরিবর্তন হচ্ছে, নতুন মধ্যবিত্ত গড়ে উঠছে। আগের বিত্তহীন দরিদ্ররাও এখন নিজেদের অধিকার সম্পর্কে অধিকতর সচেতন। অবশ্য এসব সত্ত্বেও ধর্মীয় শিক্ষা, মাদ্রাসা, মক্তব—এদের প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে; সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পশ্চাৎ-মুখিতা প্রবল শক্তি অর্জন করেছে। সাধারণ মানুষের পোশাকে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে, বিশেষ করে নারীদের পোশাকে। ‘থ্রিপিস’, বোরকা ও হিজাবের ব্যবহার বেড়েছে। শহরের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত পুরুষদের পোশাকে প্যান্ট-শার্টের প্রাধান্য, বাঙালিয়ানায় ভক্তদের পরিধেয় পাজামা-পাঞ্জাবি, ইসলামি ধর্মশিক্ষা অনুসারী পুরুষের পোশাকে পাজামা-পাঞ্জাবি-টুপির প্রাধান্য। পোশাকে রাজনৈতিক আদর্শেরও প্রতিফলন দেখা যায়।
গ্রামের বিত্তবান ও প্রভাবশালী মহল মূলত এখনো ভূমিমালিক, কৃষি উপকরণের মালিক, গ্রামীণ ব্যবসা ও নানা রকম শিল্পকারখানার মালিক ও ঠিকাদার, পরিবহনমালিক, রাজনৈতিক দলের নেতা বা জ্যেষ্ঠ কর্মী। এরাই গ্রামীণ মধ্যবিত্ত ও বিত্তবান। রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতারা সমাজপতি। উপজেলা পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সব সরকারি কর্মকর্তাও সমাজে প্রভাবশালী। স্থানীয় উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকদেরও কেউ কেউ সামাজিক সম্মান পেয়ে থাকেন।
গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশে অতি দ্রুত নগরায়ণ ঘটেছে। ১৯৭১ সালের ৭ শতাংশ থেকে ২০২১ সালে ৩৬ শতাংশের মতো। নগরীয় জনসংখ্যার আকার বেড়েছে ৫ মিলিয়ন থেকে ৬০ মিলিয়নে। শহরে সমাজকাঠামো পরিবর্তিত হয়েছে, হচ্ছে। শুরুর অতি ক্ষুদ্র আকারের উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি এখন বেশ স্ফীত। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ নিম্নবিত্ত, ৫০ শতাংশ মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্তের অংশও প্রায় শতকরা ১০ ভাগ। এদের মধ্যে কিছু আবার অতি ধনী। বাংলাদেশের অতি ধনীরা কেউ কেউ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডেও অতি ধনী। এদের ধনসম্পদের হিসাব সরকারের কাছেও অজানা। তবে মধ্যবিত্তের আকার-আয়তন বৃদ্ধি জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নমধ্যবিত্তদের অর্থনৈতিক অবস্থার কিছু উন্নতি হলেও নিম্নবিত্তদের জীবনমানে তুলনামূলক উন্নতি লক্ষ করা যায় না।
বাংলাদেশে নগরীয় সমাজকাঠামো বোঝার একটি উপায় রাজধানীর মানুষদের সমাজকাঠামো বোঝা, কেননা এদের সম্পর্কে কিছু না কিছু গবেষণা-সমীক্ষা-পর্যবেক্ষণ দেখা যায়। অবশ্য মহানগর ঢাকার সামাজিক কাঠামো দেশের অন্যান্য শহরের পরিস্থিতি থেকে কিছুটা ভিন্ন। ঢাকার প্রভাবশালী উচ্চবিত্তরা অনেকে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক এবং তা কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক প্রজন্মেই সম্ভব হয়েছে। নানা সূত্রে, নানা মাধ্যমে, নানা উপায়ে এদের বিত্ত অর্জন। এরা নানাভাবে সরকারি সহযোগিতা কাজে লাগিয়েছে। এদের কেউ কেউ উচ্চশিক্ষিত, আবার অনেকেই তা নয়। তবে এরা অধিকাংশই খুব উদ্যোগী ও বুদ্ধিমান। এদের অনেকে শিল্পকারখানার মালিক, পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্যোক্তা, ব্যাংকের মালিক, ব্যবসা-বাণিজ্যের মালিক ও অন্যান্য সম্পদের মালিক। কেউ কেউ নানা কিছুর মালিকানার সঙ্গে টিভি, প্রিন্ট মিডিয়া ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মালিক, উদ্যোক্তা। এদের অনেকের রাজধানীর অদূরে বৃহৎ পরিসরে বাগানবাড়ি বা রিসোর্ট আছে। কারও কারও বিদেশে ‘সেকেন্ড হোম’ আছে। কেউ কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সব মিলিয়ে এরা প্রচণ্ড ক্ষমতাবান। এদের সন্তানেরা অনেকেই প্রবাসী। মধ্যবিত্তরা, কিছু সম্পদের মালিক হলেও অনেকে যুগপৎ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ও মূলত পেশাজীবী। উচ্চমধ্যবিত্তদের কারও কারও সন্তান পাশ্চাত্যমুখী, অনেকেই নিজ মেধায়। সাধারণ মধ্যবিত্তরা নিজেদের পারিবারিক সুখ-শাস্তি, সন্তানদের শিক্ষাদান ও ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার চিন্তায় সময় দিয়ে থাকে। বেশির ভাগ ভাড়া বাড়িতে থাকেন। দরিদ্র শ্রেণি নিজেদের সংসার পরিচালনায় সবটুকু সময় ব্যয় করে। অনেকেই খুব দরিদ্র। জীবিকা অর্জনের বাইরে অন্য চিন্তার সময় পায় না। বড় একটি পরিবার এক কক্ষের বস্তি বাড়িতে জীবন কাটায়।
বাংলাদেশের সমাজ উদার, পরধর্মসহিষ্ণু এমন মনে করা হতো। সম্ভবত এ ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সমাজ একাধারে পরমতসহিষ্ণু ও গণতান্ত্রিক, পাশাপাশি বিপুল সংখ্যায় মধ্যযুগীয় ধর্মাশ্রয়ী ও ধর্মান্ধ এবং অগণতান্ত্রিক। পাশাপাশি সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ ধর্মাচারীগণ নিরীহ জীবনাচারী। বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী শিক্ষিত তরুণেরা দেশপ্রেমিক, আধুনিক ও উদার। এরা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক তৎপরতার চেয়ে সাংস্কৃতিক বিকাশে অধিক উৎসাহী। ধর্মীয়ভাবে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান নিয়ে বাংলাদেশের সমাজ। এ দেশের আদিতম নৃগোষ্ঠীর কোনো কোনো গোষ্ঠী সাঁওতাল, শবর ইত্যাদি এখনো জীবন্ত মানবগোষ্ঠী। ভাষা বিচারে, বাংলাদেশের অভ্যুদয় মূলত ভাষাকেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে, বর্তমানে ১৭ কোটি বাংলাদেশির ৯৯ শতাংশের মাতৃভাষা বাংলা, ভাষার কারণেই তারা বাঙালি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বেশ কিছু ভাষা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত ও সম্মানিত। রাষ্ট্রীয় পরিচয়ে এ দেশের সব ভাষাভাষীরাই ‘বাংলাদেশি’। বৃহত্তর পরিসরে বাংলাদেশের সমাজকাঠামোর আলোচনায় বলা যায়, বঙ্গবন্ধু-মানসপ্রসূত দেশের যে সংবিধান, তাতে অন্যতম মূলনীতি ছিল সমাজতন্ত্র, স্বাধীন বাংলাদেশের পাঁচ দশকে এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রায় পুরোপুরি পুঁজিবাদী ব্যবস্থা। এর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে এসেছে সমাজে প্রকট বৈষম্য, দুর্নীতিসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক গুণ। একাত্তর-পরবর্তী ‘সবাই গরিব’ পরিস্থিতি থেকে এখন অতি অল্প কিছু অতি ধনী, কিছু ধনী, একটি স্ফীতকায় মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও বিপুলসংখ্যক দরিদ্র। তবে এখনকার দরিদ্র আর একাত্তর-পরবর্তী দরিদ্রের আয় ও জীবন-মানে কিছুটা হলেও পার্থক্য রয়েছে, প্রায় প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কের হাতে একটি মোবাইল ফোন আছে। এখন গ্রামীণ দরিদ্রের কন্যা-শিশুরা সবাই বিদ্যালয়ে যায়, বিশেষত সরকারি উপবৃত্তি পেয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে। নগর-দরিদ্র শিশুরা এতটা ভাগ্যবান নয়, তারা অনেকে শিশুশ্রম বিনিয়োগ করে, বাস করে বস্তিতে। ২০২০-২০২১-এ চলমান কোভিড মহামারি বাংলাদেশের বিরাজমান ধনী-গরিব বৈষম্য আরও প্রকট করে তুলেছে। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্রদের অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশে নারীর অবস্থা ও অবস্থান সব ক্ষেত্রে একই মাত্রার না হলেও প্রশংসনীয়। নারী অধিকার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্জন এখনো অনেক বাকি। পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার কারণে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত নয়। তা সত্ত্বেও সামাজিকভাবে দেশে শিক্ষার হার ও নারীর কর্মসংস্থান সুযোগ বাড়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেকটাই কমেছে। তবে এই হার হ্রাস পাওয়া তুলনামূলকভাবে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিতেই অধিক বাস্তব।
বাংলাদেশের সমকালীন সমাজের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ অবশ্যই এর যুবসমাজ। সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনে, সামাজিক ন্যায্যতা দাবির আন্দোলনে, কর্মক্ষেত্রে ও আয় উপার্জনে দেশের বস্ত্রশিল্প বা প্রবাসে শ্রম বিনিয়োগে ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রেই যুবসমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য ইতিবাচক অবদানের পাশাপাশি যুব সম্প্রদায়ের এক অংশ সমাজ ও আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডেও জড়িত হয়ে পড়ে। এমনকি কিশোর শ্রেণির মধ্যেও অস্থিরতা ও সহিংসতার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের তরুণ ও যুবসমাজ আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রকৌশল-প্রযুক্তি গ্রহণ করে নিজেদেরকে এবং সমাজ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা অনেকটাই বিশ্বায়িত।
বাংলাদেশের সমাজে খুব বড় মাপের যে পরিবর্তন হয়েছে, তা হলো বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে যে শক্তি বা আদর্শ সবচেয়ে বেশি কাজ করেছিল অর্থাৎ ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয়তাবাদ বলতে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদই’ বুঝতেন। এক অশুভ শক্তির হাতে তাঁর মৃত্যুর পর ফৌজি শাসনামলে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বাংলাদেশি’ জাতীয়তাবাদ।
বর্তমান বাংলাদেশ আভিধানিক অর্থে গণতান্ত্রিক সমাজ নয়, আবার একেবারে হৃদয়হীন সমাজও নয়।
বিশ্বের বৃহৎ উন্নয়নশীল ‘গণতান্ত্রিক’ সমাজে অথবা বৃহৎ উন্নত ‘গণতান্ত্রিক’ সমাজে যে ধরনের ধর্মীয় ও বর্ণবাদী উন্মত্ততা দেখা যায়, সে তুলনায় বাংলাদেশের সমাজ এখনো কিছুটা মানবিক, যদিও রাজনৈতিক স্বার্থে মাঝেমধ্যে কিছু মানুষ পাশবিক আচরণ করতে দ্বিধা করে না। বাংলাদেশে আদর্শের ভিত্তিতে নানা রাজনৈতিক দলের, বস্তুত অসংখ্য দলের অস্তিত্ব রয়েছে।
বাংলাদেশে ৫২ বছরের ইতিহাসে রাজনৈতিক ধারা বেশ মিশ্র অভিজ্ঞতার। প্রথম সাড়ে তিন বছর ছিল নির্বাচিত গণতান্ত্রিক শাসন, পরবর্তী পনেরো বছর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা সামরিক শাসকদের কর্তৃত্বাধীন, ১৯৯১ সাল থেকে আবার নির্বাচিত গণতান্ত্রিক শক্তির শাসনাধীন, মাঝে দুই বছর (২০০৭-২০০৮) সামরিক পৃষ্ঠপোষকতার তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ন্ত্রিত শাসন, ২০০৯-এর শুরু থেকে নির্বাচিত যথাযথ গণতান্ত্রিক সরকারের শাসন, অতঃপর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা করায়ত্তে রাখা শাসন, যা বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং এক বিশেষ ঘরানার ‘বিশিষ্ট নাগরিকদের’ বিবেচনায় ‘কর্তৃত্ববাদী শাসন’, ক্ষমতাসীনদের ভাষায় ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র’। ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিভিন্ন খাতের সামাজিক উন্নয়ন ইত্যাদি অবশ্যই দৃশ্যমান ও আন্তর্জাতিকভাবে উচ্চ প্রশংসিত, তবে প্রশ্ন থাকে সুশাসনের ঘাটতি নিয়ে, দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে, নৈতিকতা ও মানবিকতার অবক্ষয় নিয়ে, নাগরিক অধিকারের অভাব নিয়ে।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; নগর-পরিকল্পনাবিদ

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর অতি দ্রুত বাংলাদেশের সমাজকাঠামো বদলে যেতে থাকে। গ্রামীণ সমাজ অবশ্য বেশ কিছুদিন অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। গ্রামীণ অভিজাত ধনীরা ক্রমে শহরে অভিবাসী হয়, গ্রামের সম্পদ নিজ দখলে রেখেই। গ্রামে দারিদ্র্য প্রকটভাবেই বিদ্যমান থাকে। পরিবর্তন আসতে শুরু করে
২৫ জুলাই ২০২৩
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর অতি দ্রুত বাংলাদেশের সমাজকাঠামো বদলে যেতে থাকে। গ্রামীণ সমাজ অবশ্য বেশ কিছুদিন অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। গ্রামীণ অভিজাত ধনীরা ক্রমে শহরে অভিবাসী হয়, গ্রামের সম্পদ নিজ দখলে রেখেই। গ্রামে দারিদ্র্য প্রকটভাবেই বিদ্যমান থাকে। পরিবর্তন আসতে শুরু করে
২৫ জুলাই ২০২৩
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর অতি দ্রুত বাংলাদেশের সমাজকাঠামো বদলে যেতে থাকে। গ্রামীণ সমাজ অবশ্য বেশ কিছুদিন অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। গ্রামীণ অভিজাত ধনীরা ক্রমে শহরে অভিবাসী হয়, গ্রামের সম্পদ নিজ দখলে রেখেই। গ্রামে দারিদ্র্য প্রকটভাবেই বিদ্যমান থাকে। পরিবর্তন আসতে শুরু করে
২৫ জুলাই ২০২৩
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর অতি দ্রুত বাংলাদেশের সমাজকাঠামো বদলে যেতে থাকে। গ্রামীণ সমাজ অবশ্য বেশ কিছুদিন অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। গ্রামীণ অভিজাত ধনীরা ক্রমে শহরে অভিবাসী হয়, গ্রামের সম্পদ নিজ দখলে রেখেই। গ্রামে দারিদ্র্য প্রকটভাবেই বিদ্যমান থাকে। পরিবর্তন আসতে শুরু করে
২৫ জুলাই ২০২৩
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫