আসিফ সালেহ

একটি দেশের আর্থসামাজিক বা সামগ্রিক উন্নয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে প্রায় পাঁচ দশক ধরে কাজ করে চলেছে ব্র্যাক।
ব্র্যাকের সৃষ্টি স্বাধীনতা-পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের স্বপ্ন নিয়ে। বাংলাদেশ ও ব্র্যাক একেবারেই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আজ ব্র্যাক যে এতটা বিস্তৃত, সুবিন্যস্ত, তার বড় কারণ—আমরা সব সময় দেশ ও মানুষের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচিগুলো সাজিয়েছি। যুগের সঙ্গে মানুষের সমস্যার যে রকম পরিবর্তন হয়েছে, চাহিদারও রূপান্তর ঘটেছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলতেন, মানুষের সমস্যা সব সময়ই থাকবে, তাই মানুষকে কেন্দ্র করেই তার মোকাবিলার পথ খুঁজতে হবে। তাই ব্র্যাক যে সমাধানগুলো নিয়ে আসে তা খুবই বাস্তবানুগ, প্রয়োগযোগ্য এবং সফলভাবে কার্যকর। গত শতকের সত্তরের দশকে আমাদের মনোযোগ ছিল দারিদ্র্য দূরীকরণে। আশির দশকে ছিল টিকাদান কর্মসূচি এবং মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু কমানো। নব্বইয়ের দশকে ছিল শিক্ষা, মেয়েদের শিক্ষায় এগিয়ে নিয়ে আসা। এ রকম বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন বিষয় বড় করেছি।
এখন হাতে নিয়েছি তরুণ প্রজন্মের আত্মোন্নয়নের কাজ। এখন দেখছি যে তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে ব্র্যাককে বড় পরিসরে কাজ করতে হবে। আগামী দশকগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তন প্রাধান্য পাবে। এখানে কোনো মডেল তৈরি করা যায় কি না, সেটি নিয়ে কাজ করব। মোদ্দা কথা হলো, স্যার ফজলে হাসান আবেদ তাঁর মূল্যবোধগুলো আমাদের সংগঠন-প্রতিষ্ঠানে দিয়ে গেছেন; পাশাপাশি আমাদের কিছু পন্থা শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। এগুলোকে শক্ত খুঁটি হিসেবে ধরে নতুন নতুন ক্ষেত্রে আমরা আগামী দিনগুলোয় কাজ করব।
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনের কার্যক্রম সরকারের বিকল্প নয়, বরং অবশ্যই সহায়ক। সরকারকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সহায়তা করার লক্ষ্যে ব্র্যাক ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে চার লাখ পরিবারকে অতি দারিদ্র্য থেকে দূরে রাখার লক্ষ্য নিয়েছিল। এই লক্ষ্যমাত্রা একই সময়ের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার ২১ দশমিক ৪ শতাংশ।
পরিসংখ্যান বলে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল বা গত চার বছরে ব্র্যাক ৩ লাখ ১৪ হাজার ২১৭টি পরিবারকে অতি দারিদ্র্য জয়ে সক্ষম করে তুলেছে। ২০১৬ সালে গৃহীত পাঁচ বছরের কৌশলগত পরিকল্পনায় ব্র্যাক আটটি কর্মসূচির মাধ্যমে এসডিজি অর্জনে তার করণীয় নির্ধারণ করে। এগুলো হচ্ছে চরম দারিদ্র্য দূর করা, আর্থিক ক্ষমতায়ন, শোভন কাজের জন্য নিয়োগযোগ্য দক্ষতা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, জেন্ডার সমতা, শিক্ষার মান উন্নয়ন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ও উন্নত পুষ্টি এবং দরিদ্রবান্ধব নগর উন্নয়ন। ব্র্যাক এখন দেশের সবচেয়ে নিম্নবিত্ত ও বঞ্চিত নারী-পুরুষের ভেতরের দুই কোটি মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ সব সময়ই বলতেন, বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত ও চাহিদা অনুসারে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সেবা পৌঁছে দিতে হবে। সে অনুযায়ী ব্র্যাকের কর্মকৌশল নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ব্র্যাক ছাড়া অনেক এনজিওই বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর। এই সেক্টর দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের জায়গা। বিদেশি সাহায্য কমে যাওয়ায় এরা হুমকির মুখে পড়েছে বলে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নকাজও ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে এসে বেসরকারি উন্নয়নচিন্তায় পরিবর্তন প্রয়োজন আছে। তবে মোটাদাগে বলতে গেলে যত দ্রুত পরিবর্তন আসা উচিত, তত তাড়াতাড়ি আসছে না। এখানে নেতৃত্বের অভাব আছে। এটা পরিবর্তন করা জরুরি। আগামী দশকে বা পরবর্তী সময়ে আমাদের কাজটা হবে, মূলত যেসব নতুন ধরনের সমস্যা আবির্ভূত হচ্ছে, সেগুলো মোকাবিলা করা। যদি বলি শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের কথা, তাহলে দেখব এসব সেবার জন্য মানুষের বড় অংশ যাচ্ছে বেসরকারি খাতের কাছে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ কম, কিন্তু মানসম্মত সেবা পাচ্ছে না, সে কারণে মানুষ ব্যক্তি খাতে যাচ্ছে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার একেকটা মর্মান্তিক গল্প শুনছি। এ জায়গায় সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ দরকার। এটা মুনাফাতাড়িত নয়। এখানে চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের কাছে ভালো সেবা পৌঁছে দেওয়া।
এ সেবার জন্য মানুষ টাকা দিতে রাজি। এ অর্থ দিয়ে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান ধরে রাখতে পারব। এ রকম অনেক সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজের পেছনে আরও উদ্যোগ যুক্ত হওয়া উচিত। সামগ্রিকভাবে এনজিও খাতকে সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে। আশার দিক হলো, তরুণেরা সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ নিয়ে ভাবছেন। উদ্যোগও নিয়েছেন। একটা উদাহরণ দিই। আমাদের ছোট একটা সাহায্য নিয়ে কাজ শুরু করেছিল ভূমিজ নামে একটি সংগঠন, যারা পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করে। তারা এনজিও নয়। তারা এটাকে একটা সামাজিক ব্যবসা হিসেবেই দেখছে। এসব জায়গায় কোনো ব্যক্তি খাত আসবে না। এখানে আসলে কোনো মুনাফা নেই। মুনাফা পেতে অনেক বছর লাগবে। এ কাজ করতে গিয়ে ভূমিজ হয়তো কিছু অনুদান পাচ্ছে। অনুদানের ওপর তাদের একটা কর দিতে হচ্ছে। যেহেতু তারা এনজিও নয়। তারা কিছু জায়গায় মেইনটেন্যান্সের কাজ নিচ্ছে, পাবলিক টয়লেট করে দিচ্ছে। কিছু জায়গায় বাজার সমিতির সঙ্গে কথা বলে টয়লেটগুলো উন্নত করছে। এখানে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও ব্যবসা—দুটো মিলে তরুণ প্রজন্মের সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে। এসব জায়গায় অনেক সুযোগ রয়েছে। তরুণেরা এগিয়ে এলে ব্র্যাক যেমন তাঁদের সহায়তা করবে, সরকারেরও সহায়তা করা উচিত। এখানেই বড় ভবিষ্যৎ আছে, যেখানে সামাজিক সমস্যাগুলো মোকাবিলা হবে, অর্থায়নেরও চিন্তা করতে হবে না, সরকারও মনে করতে পারবে যে এটা যেহেতু মুনাফাতাড়িত নয়, সেহেতু জনগণের কল্যাণও নিশ্চিত হবে।
আগামী ১০ বছরে আমরা ব্র্যাককে একটি স্থবির সংগঠন হিসেবে দেখতে চাই না, যেটি আমাদের প্রতিষ্ঠাতাও চাইতেন না। আমরা দেখতে চাই ব্র্যাক হবে একটি গতিশীল সংস্থা, যেটি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। আকারে বড় হলেও এটি যেন দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। এর সামষ্টিক নেতৃত্ব আছে। এটি কোনো ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল নয়। এখানে নতুন মানদণ্ড তৈরির একটা সংস্কৃতি আছে। সবচেয়ে বড় কথা, মানুষ যাতে মনে করতে পারে, ব্র্যাক সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে আসতে পারে। আমরা যদি উদ্ভাবনগুলো নিয়ে আসতে পারি। সেগুলো যদি আমরা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে পারি, আমার কাছে মনে হয়, সেটি হবে সবচেয়ে বড় সাফল্য।
তবে আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছা, তরুণদের নিয়ে অনেক বেশি কাজ করব। তারুণ্যের সুবিধা আমরা আর বেশি দিন পাব না। ২০৩৩ সাল পর্যন্ত থাকবে। প্রযুক্তি, কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি বাড়ানোসহ নানা কারণে এখন তরুণদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। আমি মনে করি, তরুণেরা যাতে মনে করেন, ব্র্যাক তাঁদের সংগঠন। তাঁদের ধারণাগুলো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, তাঁদের জন্য কাজ করে। ব্র্যাক তরুণদের প্রিয় একটা সংগঠন যেন হতে পারে।
শেষটায় বলতে চাই, আমাদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে শিক্ষায়। আমরা প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে অনেক কাজ করেছি। আমাদের আসলে কাজ করতে হবে মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে। বর্ধিষ্ণু অর্থনীতিতে মানসম্পন্ন মাধ্যমিক শিক্ষার ব্যাপক প্রয়োজন ও চাহিদা আছে। এখানে আমাদের ভয়াবহ দুরবস্থা। বেশির ভাগই বেসরকারি বিদ্যালয়ের ওপর নির্ভরশীল। সবকিছু দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। একটা ডিগ্রি নেব, চাকরিতে ঢুকব, চাকরি শেষে অবসর নেব। ক্যারিয়ারের শুরুতে একটা টানেলের মধ্যে ঢুকব, রিটায়ারমেন্ট করে টানেল থেকে বের হব—ওই ধারণা পুরোপুরি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। আপনার একজীবনে তিন-চার রকমের ক্যারিয়ার হবে। আপনি হয়তো পার্টটাইম এখানে-ওখানে কাজ করবেন। ২০১০ থেকে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ঢের পরিবর্তন হয়েছে এবং পরিবর্তনের গতিটা ক্রমেই বাড়ছে। টেকনিক্যাল স্কিলের চেয়ে লার্নিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি কত দ্রুত শিখতে পারছি, কত দ্রুত অভিযোজন করতে পারছি। এর মূলটা হবে প্রথম ১২ বছরের শিক্ষায়—প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে। ভিত্তি ঠিক না হলে পিছিয়ে পড়তে হবে। একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে বিশ্লেষণ সক্ষমতা, যোগাযোগ দক্ষতা এবং সফট স্কিলস খুব দরকার। এসব জায়গায় কাজ হচ্ছে না। এখন সরকার নতুন একটা শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করছে। আমরা আশা করছি, এ পাঠ্যক্রমে এসব বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকবে।
বর্তমান অর্থনীতিতে অনেক ধরনের কাজের সুযোগ আছে। যেহেতু বাংলাদেশ বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে অনেক বেশি সংযুক্ত। সে কারণেও বিকল্প উপায়গুলো অনুসন্ধান করা জরুরি। পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সমন্বয় করা গেলে অনেক দূর যাওয়া যাবে। বাংলাদেশের বড় শক্তি হলো বিশাল জনসংখ্যা। এ জনসংখ্যা যদি কিছুটা দক্ষ হয়, তাহলে ২০৪১ সালে আমরা উন্নত দেশে উন্নীত হতে পারব। আমার কাছে এখন উন্নত দেশ হওয়ার চেয়ে বড় বিষয় হলো, আমরা যেন মধ্যম আয়ের ফাঁদে না পড়ি। এ জায়গায় মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশই কিন্তু আটকে গেছে। বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, অনেক মানুষ আছে। আগামী দিনগুলোয় আমাদের দেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদাগুলো অনেক বাড়বে। অভ্যন্তরীণ বাজার অনেক বড় হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার উপযোগী জনগোষ্ঠীকে গড়ে তুলতে পারলে আমরা বিশ্ববাজারের দিকেও এগোতে পারব।
আসিফ সালেহ, নির্বাহী পরিচালক, ব্র্যাক

একটি দেশের আর্থসামাজিক বা সামগ্রিক উন্নয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে প্রায় পাঁচ দশক ধরে কাজ করে চলেছে ব্র্যাক।
ব্র্যাকের সৃষ্টি স্বাধীনতা-পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের স্বপ্ন নিয়ে। বাংলাদেশ ও ব্র্যাক একেবারেই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আজ ব্র্যাক যে এতটা বিস্তৃত, সুবিন্যস্ত, তার বড় কারণ—আমরা সব সময় দেশ ও মানুষের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচিগুলো সাজিয়েছি। যুগের সঙ্গে মানুষের সমস্যার যে রকম পরিবর্তন হয়েছে, চাহিদারও রূপান্তর ঘটেছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলতেন, মানুষের সমস্যা সব সময়ই থাকবে, তাই মানুষকে কেন্দ্র করেই তার মোকাবিলার পথ খুঁজতে হবে। তাই ব্র্যাক যে সমাধানগুলো নিয়ে আসে তা খুবই বাস্তবানুগ, প্রয়োগযোগ্য এবং সফলভাবে কার্যকর। গত শতকের সত্তরের দশকে আমাদের মনোযোগ ছিল দারিদ্র্য দূরীকরণে। আশির দশকে ছিল টিকাদান কর্মসূচি এবং মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু কমানো। নব্বইয়ের দশকে ছিল শিক্ষা, মেয়েদের শিক্ষায় এগিয়ে নিয়ে আসা। এ রকম বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন বিষয় বড় করেছি।
এখন হাতে নিয়েছি তরুণ প্রজন্মের আত্মোন্নয়নের কাজ। এখন দেখছি যে তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে ব্র্যাককে বড় পরিসরে কাজ করতে হবে। আগামী দশকগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তন প্রাধান্য পাবে। এখানে কোনো মডেল তৈরি করা যায় কি না, সেটি নিয়ে কাজ করব। মোদ্দা কথা হলো, স্যার ফজলে হাসান আবেদ তাঁর মূল্যবোধগুলো আমাদের সংগঠন-প্রতিষ্ঠানে দিয়ে গেছেন; পাশাপাশি আমাদের কিছু পন্থা শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। এগুলোকে শক্ত খুঁটি হিসেবে ধরে নতুন নতুন ক্ষেত্রে আমরা আগামী দিনগুলোয় কাজ করব।
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনের কার্যক্রম সরকারের বিকল্প নয়, বরং অবশ্যই সহায়ক। সরকারকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সহায়তা করার লক্ষ্যে ব্র্যাক ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে চার লাখ পরিবারকে অতি দারিদ্র্য থেকে দূরে রাখার লক্ষ্য নিয়েছিল। এই লক্ষ্যমাত্রা একই সময়ের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার ২১ দশমিক ৪ শতাংশ।
পরিসংখ্যান বলে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল বা গত চার বছরে ব্র্যাক ৩ লাখ ১৪ হাজার ২১৭টি পরিবারকে অতি দারিদ্র্য জয়ে সক্ষম করে তুলেছে। ২০১৬ সালে গৃহীত পাঁচ বছরের কৌশলগত পরিকল্পনায় ব্র্যাক আটটি কর্মসূচির মাধ্যমে এসডিজি অর্জনে তার করণীয় নির্ধারণ করে। এগুলো হচ্ছে চরম দারিদ্র্য দূর করা, আর্থিক ক্ষমতায়ন, শোভন কাজের জন্য নিয়োগযোগ্য দক্ষতা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, জেন্ডার সমতা, শিক্ষার মান উন্নয়ন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ও উন্নত পুষ্টি এবং দরিদ্রবান্ধব নগর উন্নয়ন। ব্র্যাক এখন দেশের সবচেয়ে নিম্নবিত্ত ও বঞ্চিত নারী-পুরুষের ভেতরের দুই কোটি মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ সব সময়ই বলতেন, বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত ও চাহিদা অনুসারে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সেবা পৌঁছে দিতে হবে। সে অনুযায়ী ব্র্যাকের কর্মকৌশল নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ব্র্যাক ছাড়া অনেক এনজিওই বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর। এই সেক্টর দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের জায়গা। বিদেশি সাহায্য কমে যাওয়ায় এরা হুমকির মুখে পড়েছে বলে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নকাজও ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে এসে বেসরকারি উন্নয়নচিন্তায় পরিবর্তন প্রয়োজন আছে। তবে মোটাদাগে বলতে গেলে যত দ্রুত পরিবর্তন আসা উচিত, তত তাড়াতাড়ি আসছে না। এখানে নেতৃত্বের অভাব আছে। এটা পরিবর্তন করা জরুরি। আগামী দশকে বা পরবর্তী সময়ে আমাদের কাজটা হবে, মূলত যেসব নতুন ধরনের সমস্যা আবির্ভূত হচ্ছে, সেগুলো মোকাবিলা করা। যদি বলি শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের কথা, তাহলে দেখব এসব সেবার জন্য মানুষের বড় অংশ যাচ্ছে বেসরকারি খাতের কাছে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ কম, কিন্তু মানসম্মত সেবা পাচ্ছে না, সে কারণে মানুষ ব্যক্তি খাতে যাচ্ছে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার একেকটা মর্মান্তিক গল্প শুনছি। এ জায়গায় সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ দরকার। এটা মুনাফাতাড়িত নয়। এখানে চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের কাছে ভালো সেবা পৌঁছে দেওয়া।
এ সেবার জন্য মানুষ টাকা দিতে রাজি। এ অর্থ দিয়ে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান ধরে রাখতে পারব। এ রকম অনেক সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজের পেছনে আরও উদ্যোগ যুক্ত হওয়া উচিত। সামগ্রিকভাবে এনজিও খাতকে সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে। আশার দিক হলো, তরুণেরা সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ নিয়ে ভাবছেন। উদ্যোগও নিয়েছেন। একটা উদাহরণ দিই। আমাদের ছোট একটা সাহায্য নিয়ে কাজ শুরু করেছিল ভূমিজ নামে একটি সংগঠন, যারা পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করে। তারা এনজিও নয়। তারা এটাকে একটা সামাজিক ব্যবসা হিসেবেই দেখছে। এসব জায়গায় কোনো ব্যক্তি খাত আসবে না। এখানে আসলে কোনো মুনাফা নেই। মুনাফা পেতে অনেক বছর লাগবে। এ কাজ করতে গিয়ে ভূমিজ হয়তো কিছু অনুদান পাচ্ছে। অনুদানের ওপর তাদের একটা কর দিতে হচ্ছে। যেহেতু তারা এনজিও নয়। তারা কিছু জায়গায় মেইনটেন্যান্সের কাজ নিচ্ছে, পাবলিক টয়লেট করে দিচ্ছে। কিছু জায়গায় বাজার সমিতির সঙ্গে কথা বলে টয়লেটগুলো উন্নত করছে। এখানে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও ব্যবসা—দুটো মিলে তরুণ প্রজন্মের সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে। এসব জায়গায় অনেক সুযোগ রয়েছে। তরুণেরা এগিয়ে এলে ব্র্যাক যেমন তাঁদের সহায়তা করবে, সরকারেরও সহায়তা করা উচিত। এখানেই বড় ভবিষ্যৎ আছে, যেখানে সামাজিক সমস্যাগুলো মোকাবিলা হবে, অর্থায়নেরও চিন্তা করতে হবে না, সরকারও মনে করতে পারবে যে এটা যেহেতু মুনাফাতাড়িত নয়, সেহেতু জনগণের কল্যাণও নিশ্চিত হবে।
আগামী ১০ বছরে আমরা ব্র্যাককে একটি স্থবির সংগঠন হিসেবে দেখতে চাই না, যেটি আমাদের প্রতিষ্ঠাতাও চাইতেন না। আমরা দেখতে চাই ব্র্যাক হবে একটি গতিশীল সংস্থা, যেটি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। আকারে বড় হলেও এটি যেন দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। এর সামষ্টিক নেতৃত্ব আছে। এটি কোনো ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল নয়। এখানে নতুন মানদণ্ড তৈরির একটা সংস্কৃতি আছে। সবচেয়ে বড় কথা, মানুষ যাতে মনে করতে পারে, ব্র্যাক সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে আসতে পারে। আমরা যদি উদ্ভাবনগুলো নিয়ে আসতে পারি। সেগুলো যদি আমরা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে পারি, আমার কাছে মনে হয়, সেটি হবে সবচেয়ে বড় সাফল্য।
তবে আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছা, তরুণদের নিয়ে অনেক বেশি কাজ করব। তারুণ্যের সুবিধা আমরা আর বেশি দিন পাব না। ২০৩৩ সাল পর্যন্ত থাকবে। প্রযুক্তি, কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি বাড়ানোসহ নানা কারণে এখন তরুণদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। আমি মনে করি, তরুণেরা যাতে মনে করেন, ব্র্যাক তাঁদের সংগঠন। তাঁদের ধারণাগুলো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, তাঁদের জন্য কাজ করে। ব্র্যাক তরুণদের প্রিয় একটা সংগঠন যেন হতে পারে।
শেষটায় বলতে চাই, আমাদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে শিক্ষায়। আমরা প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে অনেক কাজ করেছি। আমাদের আসলে কাজ করতে হবে মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে। বর্ধিষ্ণু অর্থনীতিতে মানসম্পন্ন মাধ্যমিক শিক্ষার ব্যাপক প্রয়োজন ও চাহিদা আছে। এখানে আমাদের ভয়াবহ দুরবস্থা। বেশির ভাগই বেসরকারি বিদ্যালয়ের ওপর নির্ভরশীল। সবকিছু দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। একটা ডিগ্রি নেব, চাকরিতে ঢুকব, চাকরি শেষে অবসর নেব। ক্যারিয়ারের শুরুতে একটা টানেলের মধ্যে ঢুকব, রিটায়ারমেন্ট করে টানেল থেকে বের হব—ওই ধারণা পুরোপুরি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। আপনার একজীবনে তিন-চার রকমের ক্যারিয়ার হবে। আপনি হয়তো পার্টটাইম এখানে-ওখানে কাজ করবেন। ২০১০ থেকে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ঢের পরিবর্তন হয়েছে এবং পরিবর্তনের গতিটা ক্রমেই বাড়ছে। টেকনিক্যাল স্কিলের চেয়ে লার্নিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি কত দ্রুত শিখতে পারছি, কত দ্রুত অভিযোজন করতে পারছি। এর মূলটা হবে প্রথম ১২ বছরের শিক্ষায়—প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে। ভিত্তি ঠিক না হলে পিছিয়ে পড়তে হবে। একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে বিশ্লেষণ সক্ষমতা, যোগাযোগ দক্ষতা এবং সফট স্কিলস খুব দরকার। এসব জায়গায় কাজ হচ্ছে না। এখন সরকার নতুন একটা শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করছে। আমরা আশা করছি, এ পাঠ্যক্রমে এসব বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকবে।
বর্তমান অর্থনীতিতে অনেক ধরনের কাজের সুযোগ আছে। যেহেতু বাংলাদেশ বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে অনেক বেশি সংযুক্ত। সে কারণেও বিকল্প উপায়গুলো অনুসন্ধান করা জরুরি। পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সমন্বয় করা গেলে অনেক দূর যাওয়া যাবে। বাংলাদেশের বড় শক্তি হলো বিশাল জনসংখ্যা। এ জনসংখ্যা যদি কিছুটা দক্ষ হয়, তাহলে ২০৪১ সালে আমরা উন্নত দেশে উন্নীত হতে পারব। আমার কাছে এখন উন্নত দেশ হওয়ার চেয়ে বড় বিষয় হলো, আমরা যেন মধ্যম আয়ের ফাঁদে না পড়ি। এ জায়গায় মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশই কিন্তু আটকে গেছে। বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, অনেক মানুষ আছে। আগামী দিনগুলোয় আমাদের দেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদাগুলো অনেক বাড়বে। অভ্যন্তরীণ বাজার অনেক বড় হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার উপযোগী জনগোষ্ঠীকে গড়ে তুলতে পারলে আমরা বিশ্ববাজারের দিকেও এগোতে পারব।
আসিফ সালেহ, নির্বাহী পরিচালক, ব্র্যাক
আসিফ সালেহ

একটি দেশের আর্থসামাজিক বা সামগ্রিক উন্নয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে প্রায় পাঁচ দশক ধরে কাজ করে চলেছে ব্র্যাক।
ব্র্যাকের সৃষ্টি স্বাধীনতা-পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের স্বপ্ন নিয়ে। বাংলাদেশ ও ব্র্যাক একেবারেই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আজ ব্র্যাক যে এতটা বিস্তৃত, সুবিন্যস্ত, তার বড় কারণ—আমরা সব সময় দেশ ও মানুষের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচিগুলো সাজিয়েছি। যুগের সঙ্গে মানুষের সমস্যার যে রকম পরিবর্তন হয়েছে, চাহিদারও রূপান্তর ঘটেছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলতেন, মানুষের সমস্যা সব সময়ই থাকবে, তাই মানুষকে কেন্দ্র করেই তার মোকাবিলার পথ খুঁজতে হবে। তাই ব্র্যাক যে সমাধানগুলো নিয়ে আসে তা খুবই বাস্তবানুগ, প্রয়োগযোগ্য এবং সফলভাবে কার্যকর। গত শতকের সত্তরের দশকে আমাদের মনোযোগ ছিল দারিদ্র্য দূরীকরণে। আশির দশকে ছিল টিকাদান কর্মসূচি এবং মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু কমানো। নব্বইয়ের দশকে ছিল শিক্ষা, মেয়েদের শিক্ষায় এগিয়ে নিয়ে আসা। এ রকম বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন বিষয় বড় করেছি।
এখন হাতে নিয়েছি তরুণ প্রজন্মের আত্মোন্নয়নের কাজ। এখন দেখছি যে তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে ব্র্যাককে বড় পরিসরে কাজ করতে হবে। আগামী দশকগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তন প্রাধান্য পাবে। এখানে কোনো মডেল তৈরি করা যায় কি না, সেটি নিয়ে কাজ করব। মোদ্দা কথা হলো, স্যার ফজলে হাসান আবেদ তাঁর মূল্যবোধগুলো আমাদের সংগঠন-প্রতিষ্ঠানে দিয়ে গেছেন; পাশাপাশি আমাদের কিছু পন্থা শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। এগুলোকে শক্ত খুঁটি হিসেবে ধরে নতুন নতুন ক্ষেত্রে আমরা আগামী দিনগুলোয় কাজ করব।
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনের কার্যক্রম সরকারের বিকল্প নয়, বরং অবশ্যই সহায়ক। সরকারকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সহায়তা করার লক্ষ্যে ব্র্যাক ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে চার লাখ পরিবারকে অতি দারিদ্র্য থেকে দূরে রাখার লক্ষ্য নিয়েছিল। এই লক্ষ্যমাত্রা একই সময়ের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার ২১ দশমিক ৪ শতাংশ।
পরিসংখ্যান বলে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল বা গত চার বছরে ব্র্যাক ৩ লাখ ১৪ হাজার ২১৭টি পরিবারকে অতি দারিদ্র্য জয়ে সক্ষম করে তুলেছে। ২০১৬ সালে গৃহীত পাঁচ বছরের কৌশলগত পরিকল্পনায় ব্র্যাক আটটি কর্মসূচির মাধ্যমে এসডিজি অর্জনে তার করণীয় নির্ধারণ করে। এগুলো হচ্ছে চরম দারিদ্র্য দূর করা, আর্থিক ক্ষমতায়ন, শোভন কাজের জন্য নিয়োগযোগ্য দক্ষতা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, জেন্ডার সমতা, শিক্ষার মান উন্নয়ন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ও উন্নত পুষ্টি এবং দরিদ্রবান্ধব নগর উন্নয়ন। ব্র্যাক এখন দেশের সবচেয়ে নিম্নবিত্ত ও বঞ্চিত নারী-পুরুষের ভেতরের দুই কোটি মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ সব সময়ই বলতেন, বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত ও চাহিদা অনুসারে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সেবা পৌঁছে দিতে হবে। সে অনুযায়ী ব্র্যাকের কর্মকৌশল নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ব্র্যাক ছাড়া অনেক এনজিওই বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর। এই সেক্টর দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের জায়গা। বিদেশি সাহায্য কমে যাওয়ায় এরা হুমকির মুখে পড়েছে বলে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নকাজও ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে এসে বেসরকারি উন্নয়নচিন্তায় পরিবর্তন প্রয়োজন আছে। তবে মোটাদাগে বলতে গেলে যত দ্রুত পরিবর্তন আসা উচিত, তত তাড়াতাড়ি আসছে না। এখানে নেতৃত্বের অভাব আছে। এটা পরিবর্তন করা জরুরি। আগামী দশকে বা পরবর্তী সময়ে আমাদের কাজটা হবে, মূলত যেসব নতুন ধরনের সমস্যা আবির্ভূত হচ্ছে, সেগুলো মোকাবিলা করা। যদি বলি শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের কথা, তাহলে দেখব এসব সেবার জন্য মানুষের বড় অংশ যাচ্ছে বেসরকারি খাতের কাছে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ কম, কিন্তু মানসম্মত সেবা পাচ্ছে না, সে কারণে মানুষ ব্যক্তি খাতে যাচ্ছে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার একেকটা মর্মান্তিক গল্প শুনছি। এ জায়গায় সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ দরকার। এটা মুনাফাতাড়িত নয়। এখানে চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের কাছে ভালো সেবা পৌঁছে দেওয়া।
এ সেবার জন্য মানুষ টাকা দিতে রাজি। এ অর্থ দিয়ে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান ধরে রাখতে পারব। এ রকম অনেক সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজের পেছনে আরও উদ্যোগ যুক্ত হওয়া উচিত। সামগ্রিকভাবে এনজিও খাতকে সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে। আশার দিক হলো, তরুণেরা সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ নিয়ে ভাবছেন। উদ্যোগও নিয়েছেন। একটা উদাহরণ দিই। আমাদের ছোট একটা সাহায্য নিয়ে কাজ শুরু করেছিল ভূমিজ নামে একটি সংগঠন, যারা পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করে। তারা এনজিও নয়। তারা এটাকে একটা সামাজিক ব্যবসা হিসেবেই দেখছে। এসব জায়গায় কোনো ব্যক্তি খাত আসবে না। এখানে আসলে কোনো মুনাফা নেই। মুনাফা পেতে অনেক বছর লাগবে। এ কাজ করতে গিয়ে ভূমিজ হয়তো কিছু অনুদান পাচ্ছে। অনুদানের ওপর তাদের একটা কর দিতে হচ্ছে। যেহেতু তারা এনজিও নয়। তারা কিছু জায়গায় মেইনটেন্যান্সের কাজ নিচ্ছে, পাবলিক টয়লেট করে দিচ্ছে। কিছু জায়গায় বাজার সমিতির সঙ্গে কথা বলে টয়লেটগুলো উন্নত করছে। এখানে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও ব্যবসা—দুটো মিলে তরুণ প্রজন্মের সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে। এসব জায়গায় অনেক সুযোগ রয়েছে। তরুণেরা এগিয়ে এলে ব্র্যাক যেমন তাঁদের সহায়তা করবে, সরকারেরও সহায়তা করা উচিত। এখানেই বড় ভবিষ্যৎ আছে, যেখানে সামাজিক সমস্যাগুলো মোকাবিলা হবে, অর্থায়নেরও চিন্তা করতে হবে না, সরকারও মনে করতে পারবে যে এটা যেহেতু মুনাফাতাড়িত নয়, সেহেতু জনগণের কল্যাণও নিশ্চিত হবে।
আগামী ১০ বছরে আমরা ব্র্যাককে একটি স্থবির সংগঠন হিসেবে দেখতে চাই না, যেটি আমাদের প্রতিষ্ঠাতাও চাইতেন না। আমরা দেখতে চাই ব্র্যাক হবে একটি গতিশীল সংস্থা, যেটি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। আকারে বড় হলেও এটি যেন দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। এর সামষ্টিক নেতৃত্ব আছে। এটি কোনো ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল নয়। এখানে নতুন মানদণ্ড তৈরির একটা সংস্কৃতি আছে। সবচেয়ে বড় কথা, মানুষ যাতে মনে করতে পারে, ব্র্যাক সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে আসতে পারে। আমরা যদি উদ্ভাবনগুলো নিয়ে আসতে পারি। সেগুলো যদি আমরা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে পারি, আমার কাছে মনে হয়, সেটি হবে সবচেয়ে বড় সাফল্য।
তবে আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছা, তরুণদের নিয়ে অনেক বেশি কাজ করব। তারুণ্যের সুবিধা আমরা আর বেশি দিন পাব না। ২০৩৩ সাল পর্যন্ত থাকবে। প্রযুক্তি, কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি বাড়ানোসহ নানা কারণে এখন তরুণদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। আমি মনে করি, তরুণেরা যাতে মনে করেন, ব্র্যাক তাঁদের সংগঠন। তাঁদের ধারণাগুলো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, তাঁদের জন্য কাজ করে। ব্র্যাক তরুণদের প্রিয় একটা সংগঠন যেন হতে পারে।
শেষটায় বলতে চাই, আমাদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে শিক্ষায়। আমরা প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে অনেক কাজ করেছি। আমাদের আসলে কাজ করতে হবে মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে। বর্ধিষ্ণু অর্থনীতিতে মানসম্পন্ন মাধ্যমিক শিক্ষার ব্যাপক প্রয়োজন ও চাহিদা আছে। এখানে আমাদের ভয়াবহ দুরবস্থা। বেশির ভাগই বেসরকারি বিদ্যালয়ের ওপর নির্ভরশীল। সবকিছু দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। একটা ডিগ্রি নেব, চাকরিতে ঢুকব, চাকরি শেষে অবসর নেব। ক্যারিয়ারের শুরুতে একটা টানেলের মধ্যে ঢুকব, রিটায়ারমেন্ট করে টানেল থেকে বের হব—ওই ধারণা পুরোপুরি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। আপনার একজীবনে তিন-চার রকমের ক্যারিয়ার হবে। আপনি হয়তো পার্টটাইম এখানে-ওখানে কাজ করবেন। ২০১০ থেকে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ঢের পরিবর্তন হয়েছে এবং পরিবর্তনের গতিটা ক্রমেই বাড়ছে। টেকনিক্যাল স্কিলের চেয়ে লার্নিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি কত দ্রুত শিখতে পারছি, কত দ্রুত অভিযোজন করতে পারছি। এর মূলটা হবে প্রথম ১২ বছরের শিক্ষায়—প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে। ভিত্তি ঠিক না হলে পিছিয়ে পড়তে হবে। একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে বিশ্লেষণ সক্ষমতা, যোগাযোগ দক্ষতা এবং সফট স্কিলস খুব দরকার। এসব জায়গায় কাজ হচ্ছে না। এখন সরকার নতুন একটা শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করছে। আমরা আশা করছি, এ পাঠ্যক্রমে এসব বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকবে।
বর্তমান অর্থনীতিতে অনেক ধরনের কাজের সুযোগ আছে। যেহেতু বাংলাদেশ বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে অনেক বেশি সংযুক্ত। সে কারণেও বিকল্প উপায়গুলো অনুসন্ধান করা জরুরি। পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সমন্বয় করা গেলে অনেক দূর যাওয়া যাবে। বাংলাদেশের বড় শক্তি হলো বিশাল জনসংখ্যা। এ জনসংখ্যা যদি কিছুটা দক্ষ হয়, তাহলে ২০৪১ সালে আমরা উন্নত দেশে উন্নীত হতে পারব। আমার কাছে এখন উন্নত দেশ হওয়ার চেয়ে বড় বিষয় হলো, আমরা যেন মধ্যম আয়ের ফাঁদে না পড়ি। এ জায়গায় মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশই কিন্তু আটকে গেছে। বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, অনেক মানুষ আছে। আগামী দিনগুলোয় আমাদের দেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদাগুলো অনেক বাড়বে। অভ্যন্তরীণ বাজার অনেক বড় হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার উপযোগী জনগোষ্ঠীকে গড়ে তুলতে পারলে আমরা বিশ্ববাজারের দিকেও এগোতে পারব।
আসিফ সালেহ, নির্বাহী পরিচালক, ব্র্যাক

একটি দেশের আর্থসামাজিক বা সামগ্রিক উন্নয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে প্রায় পাঁচ দশক ধরে কাজ করে চলেছে ব্র্যাক।
ব্র্যাকের সৃষ্টি স্বাধীনতা-পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের স্বপ্ন নিয়ে। বাংলাদেশ ও ব্র্যাক একেবারেই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আজ ব্র্যাক যে এতটা বিস্তৃত, সুবিন্যস্ত, তার বড় কারণ—আমরা সব সময় দেশ ও মানুষের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচিগুলো সাজিয়েছি। যুগের সঙ্গে মানুষের সমস্যার যে রকম পরিবর্তন হয়েছে, চাহিদারও রূপান্তর ঘটেছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলতেন, মানুষের সমস্যা সব সময়ই থাকবে, তাই মানুষকে কেন্দ্র করেই তার মোকাবিলার পথ খুঁজতে হবে। তাই ব্র্যাক যে সমাধানগুলো নিয়ে আসে তা খুবই বাস্তবানুগ, প্রয়োগযোগ্য এবং সফলভাবে কার্যকর। গত শতকের সত্তরের দশকে আমাদের মনোযোগ ছিল দারিদ্র্য দূরীকরণে। আশির দশকে ছিল টিকাদান কর্মসূচি এবং মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু কমানো। নব্বইয়ের দশকে ছিল শিক্ষা, মেয়েদের শিক্ষায় এগিয়ে নিয়ে আসা। এ রকম বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন বিষয় বড় করেছি।
এখন হাতে নিয়েছি তরুণ প্রজন্মের আত্মোন্নয়নের কাজ। এখন দেখছি যে তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে ব্র্যাককে বড় পরিসরে কাজ করতে হবে। আগামী দশকগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তন প্রাধান্য পাবে। এখানে কোনো মডেল তৈরি করা যায় কি না, সেটি নিয়ে কাজ করব। মোদ্দা কথা হলো, স্যার ফজলে হাসান আবেদ তাঁর মূল্যবোধগুলো আমাদের সংগঠন-প্রতিষ্ঠানে দিয়ে গেছেন; পাশাপাশি আমাদের কিছু পন্থা শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। এগুলোকে শক্ত খুঁটি হিসেবে ধরে নতুন নতুন ক্ষেত্রে আমরা আগামী দিনগুলোয় কাজ করব।
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনের কার্যক্রম সরকারের বিকল্প নয়, বরং অবশ্যই সহায়ক। সরকারকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সহায়তা করার লক্ষ্যে ব্র্যাক ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে চার লাখ পরিবারকে অতি দারিদ্র্য থেকে দূরে রাখার লক্ষ্য নিয়েছিল। এই লক্ষ্যমাত্রা একই সময়ের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার ২১ দশমিক ৪ শতাংশ।
পরিসংখ্যান বলে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল বা গত চার বছরে ব্র্যাক ৩ লাখ ১৪ হাজার ২১৭টি পরিবারকে অতি দারিদ্র্য জয়ে সক্ষম করে তুলেছে। ২০১৬ সালে গৃহীত পাঁচ বছরের কৌশলগত পরিকল্পনায় ব্র্যাক আটটি কর্মসূচির মাধ্যমে এসডিজি অর্জনে তার করণীয় নির্ধারণ করে। এগুলো হচ্ছে চরম দারিদ্র্য দূর করা, আর্থিক ক্ষমতায়ন, শোভন কাজের জন্য নিয়োগযোগ্য দক্ষতা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, জেন্ডার সমতা, শিক্ষার মান উন্নয়ন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ও উন্নত পুষ্টি এবং দরিদ্রবান্ধব নগর উন্নয়ন। ব্র্যাক এখন দেশের সবচেয়ে নিম্নবিত্ত ও বঞ্চিত নারী-পুরুষের ভেতরের দুই কোটি মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ সব সময়ই বলতেন, বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত ও চাহিদা অনুসারে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সেবা পৌঁছে দিতে হবে। সে অনুযায়ী ব্র্যাকের কর্মকৌশল নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ব্র্যাক ছাড়া অনেক এনজিওই বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর। এই সেক্টর দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের জায়গা। বিদেশি সাহায্য কমে যাওয়ায় এরা হুমকির মুখে পড়েছে বলে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নকাজও ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে এসে বেসরকারি উন্নয়নচিন্তায় পরিবর্তন প্রয়োজন আছে। তবে মোটাদাগে বলতে গেলে যত দ্রুত পরিবর্তন আসা উচিত, তত তাড়াতাড়ি আসছে না। এখানে নেতৃত্বের অভাব আছে। এটা পরিবর্তন করা জরুরি। আগামী দশকে বা পরবর্তী সময়ে আমাদের কাজটা হবে, মূলত যেসব নতুন ধরনের সমস্যা আবির্ভূত হচ্ছে, সেগুলো মোকাবিলা করা। যদি বলি শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের কথা, তাহলে দেখব এসব সেবার জন্য মানুষের বড় অংশ যাচ্ছে বেসরকারি খাতের কাছে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ কম, কিন্তু মানসম্মত সেবা পাচ্ছে না, সে কারণে মানুষ ব্যক্তি খাতে যাচ্ছে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার একেকটা মর্মান্তিক গল্প শুনছি। এ জায়গায় সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ দরকার। এটা মুনাফাতাড়িত নয়। এখানে চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের কাছে ভালো সেবা পৌঁছে দেওয়া।
এ সেবার জন্য মানুষ টাকা দিতে রাজি। এ অর্থ দিয়ে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান ধরে রাখতে পারব। এ রকম অনেক সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজের পেছনে আরও উদ্যোগ যুক্ত হওয়া উচিত। সামগ্রিকভাবে এনজিও খাতকে সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে। আশার দিক হলো, তরুণেরা সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ নিয়ে ভাবছেন। উদ্যোগও নিয়েছেন। একটা উদাহরণ দিই। আমাদের ছোট একটা সাহায্য নিয়ে কাজ শুরু করেছিল ভূমিজ নামে একটি সংগঠন, যারা পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করে। তারা এনজিও নয়। তারা এটাকে একটা সামাজিক ব্যবসা হিসেবেই দেখছে। এসব জায়গায় কোনো ব্যক্তি খাত আসবে না। এখানে আসলে কোনো মুনাফা নেই। মুনাফা পেতে অনেক বছর লাগবে। এ কাজ করতে গিয়ে ভূমিজ হয়তো কিছু অনুদান পাচ্ছে। অনুদানের ওপর তাদের একটা কর দিতে হচ্ছে। যেহেতু তারা এনজিও নয়। তারা কিছু জায়গায় মেইনটেন্যান্সের কাজ নিচ্ছে, পাবলিক টয়লেট করে দিচ্ছে। কিছু জায়গায় বাজার সমিতির সঙ্গে কথা বলে টয়লেটগুলো উন্নত করছে। এখানে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও ব্যবসা—দুটো মিলে তরুণ প্রজন্মের সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে। এসব জায়গায় অনেক সুযোগ রয়েছে। তরুণেরা এগিয়ে এলে ব্র্যাক যেমন তাঁদের সহায়তা করবে, সরকারেরও সহায়তা করা উচিত। এখানেই বড় ভবিষ্যৎ আছে, যেখানে সামাজিক সমস্যাগুলো মোকাবিলা হবে, অর্থায়নেরও চিন্তা করতে হবে না, সরকারও মনে করতে পারবে যে এটা যেহেতু মুনাফাতাড়িত নয়, সেহেতু জনগণের কল্যাণও নিশ্চিত হবে।
আগামী ১০ বছরে আমরা ব্র্যাককে একটি স্থবির সংগঠন হিসেবে দেখতে চাই না, যেটি আমাদের প্রতিষ্ঠাতাও চাইতেন না। আমরা দেখতে চাই ব্র্যাক হবে একটি গতিশীল সংস্থা, যেটি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। আকারে বড় হলেও এটি যেন দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। এর সামষ্টিক নেতৃত্ব আছে। এটি কোনো ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল নয়। এখানে নতুন মানদণ্ড তৈরির একটা সংস্কৃতি আছে। সবচেয়ে বড় কথা, মানুষ যাতে মনে করতে পারে, ব্র্যাক সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে আসতে পারে। আমরা যদি উদ্ভাবনগুলো নিয়ে আসতে পারি। সেগুলো যদি আমরা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে পারি, আমার কাছে মনে হয়, সেটি হবে সবচেয়ে বড় সাফল্য।
তবে আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছা, তরুণদের নিয়ে অনেক বেশি কাজ করব। তারুণ্যের সুবিধা আমরা আর বেশি দিন পাব না। ২০৩৩ সাল পর্যন্ত থাকবে। প্রযুক্তি, কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি বাড়ানোসহ নানা কারণে এখন তরুণদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। আমি মনে করি, তরুণেরা যাতে মনে করেন, ব্র্যাক তাঁদের সংগঠন। তাঁদের ধারণাগুলো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, তাঁদের জন্য কাজ করে। ব্র্যাক তরুণদের প্রিয় একটা সংগঠন যেন হতে পারে।
শেষটায় বলতে চাই, আমাদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে শিক্ষায়। আমরা প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে অনেক কাজ করেছি। আমাদের আসলে কাজ করতে হবে মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে। বর্ধিষ্ণু অর্থনীতিতে মানসম্পন্ন মাধ্যমিক শিক্ষার ব্যাপক প্রয়োজন ও চাহিদা আছে। এখানে আমাদের ভয়াবহ দুরবস্থা। বেশির ভাগই বেসরকারি বিদ্যালয়ের ওপর নির্ভরশীল। সবকিছু দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। একটা ডিগ্রি নেব, চাকরিতে ঢুকব, চাকরি শেষে অবসর নেব। ক্যারিয়ারের শুরুতে একটা টানেলের মধ্যে ঢুকব, রিটায়ারমেন্ট করে টানেল থেকে বের হব—ওই ধারণা পুরোপুরি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। আপনার একজীবনে তিন-চার রকমের ক্যারিয়ার হবে। আপনি হয়তো পার্টটাইম এখানে-ওখানে কাজ করবেন। ২০১০ থেকে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ঢের পরিবর্তন হয়েছে এবং পরিবর্তনের গতিটা ক্রমেই বাড়ছে। টেকনিক্যাল স্কিলের চেয়ে লার্নিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি কত দ্রুত শিখতে পারছি, কত দ্রুত অভিযোজন করতে পারছি। এর মূলটা হবে প্রথম ১২ বছরের শিক্ষায়—প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে। ভিত্তি ঠিক না হলে পিছিয়ে পড়তে হবে। একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে বিশ্লেষণ সক্ষমতা, যোগাযোগ দক্ষতা এবং সফট স্কিলস খুব দরকার। এসব জায়গায় কাজ হচ্ছে না। এখন সরকার নতুন একটা শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করছে। আমরা আশা করছি, এ পাঠ্যক্রমে এসব বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকবে।
বর্তমান অর্থনীতিতে অনেক ধরনের কাজের সুযোগ আছে। যেহেতু বাংলাদেশ বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে অনেক বেশি সংযুক্ত। সে কারণেও বিকল্প উপায়গুলো অনুসন্ধান করা জরুরি। পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সমন্বয় করা গেলে অনেক দূর যাওয়া যাবে। বাংলাদেশের বড় শক্তি হলো বিশাল জনসংখ্যা। এ জনসংখ্যা যদি কিছুটা দক্ষ হয়, তাহলে ২০৪১ সালে আমরা উন্নত দেশে উন্নীত হতে পারব। আমার কাছে এখন উন্নত দেশ হওয়ার চেয়ে বড় বিষয় হলো, আমরা যেন মধ্যম আয়ের ফাঁদে না পড়ি। এ জায়গায় মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশই কিন্তু আটকে গেছে। বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, অনেক মানুষ আছে। আগামী দিনগুলোয় আমাদের দেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদাগুলো অনেক বাড়বে। অভ্যন্তরীণ বাজার অনেক বড় হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার উপযোগী জনগোষ্ঠীকে গড়ে তুলতে পারলে আমরা বিশ্ববাজারের দিকেও এগোতে পারব।
আসিফ সালেহ, নির্বাহী পরিচালক, ব্র্যাক

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

একটি দেশের আর্থসামাজিক বা সামগ্রিক উন্নয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে প্রায় পাঁচ দশক ধরে কাজ করে চলেছে ব্র্যাক।
২৭ জুন ২০২২
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

একটি দেশের আর্থসামাজিক বা সামগ্রিক উন্নয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে প্রায় পাঁচ দশক ধরে কাজ করে চলেছে ব্র্যাক।
২৭ জুন ২০২২
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

একটি দেশের আর্থসামাজিক বা সামগ্রিক উন্নয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে প্রায় পাঁচ দশক ধরে কাজ করে চলেছে ব্র্যাক।
২৭ জুন ২০২২
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

একটি দেশের আর্থসামাজিক বা সামগ্রিক উন্নয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে প্রায় পাঁচ দশক ধরে কাজ করে চলেছে ব্র্যাক।
২৭ জুন ২০২২
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫