Ajker Patrika

‘আমার পুয়ারে পুলিশে খেনে মারল, অপরাধটা কিতা’

ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৪, ১৮: ১৭
‘আমার পুয়ারে পুলিশে খেনে মারল, অপরাধটা কিতা’

‘জুম্মার নামাজও গেছলা। নামাজ থাকি আর ফিরিয়া আইছইন না। নামাজ থাকি লাশ ওইয়া ফিরল। সখালে নাশতাও ঠিকমতো খাইছলা না আমার পুতে। খবর পাইয়া ইবনেসিনাত গেছি, চাইয়া খইছইন, আমার আম্মা আইছইন। ওউ খইছইন। শেষ খতা। আর ইতাত রক্ত যার। খালি আত দিতাম চাইছি। বেটাইনতে আমারে টানিয়া হরাইলিছইন। জিতা তাখতে আমার পুতরে ছইতাম পারছি না।’

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরের যতরপুরের ভাড়া বাসায় গেলে এসব কথা বলেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন মমতাজ বেগম (৬৭)।

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সিলেটে ১৯ জুলাই শুক্রবার বাদ জুমা বন্দরবাজারে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সাংবাদিক এ টি এম তুরাবের মা মমতাজ বেগম। তুরাব দৈনিক নয়াদিগন্তের সিলেট ব্যুরোর রিপোর্টার ও স্থানীয় দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

ছেলের মৃত্যুর আট দিনেও স্বাভাবিক হতে পারেননি মমতাজ। এমনিতে বয়সজনিত নানা রোগে ভুগছেন তিনি। আদরের ছেলেকে এভাবে হারিয়ে একেবারে ভেঙে পড়েছেন। বারবার বিলাপ করছেন ও মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। বাসায় কেউ গেলেই প্রশ্ন করছেন, ‘আমার পুয়ারে পুলিশে খেনে মারল, আমার পুয়ার অপরাধটা কিতা?’

এ সময় তুরাবের বড় ভাবি তাসলিমা জান্নাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তুরাবরা তিন ভাই, এক বোন। স্বামীর সঙ্গে বোন লন্ডনে থাকেন। যতরপুরের ১০৫ নম্বর বাসার তৃতীয় তলায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকতেন তুরাব। ভাই-বোনদের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি। সবার আদরের তুরাবকে হারিয়ে পরিবারের আলো নিভে গেছে।’

তুরাবের গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ফহেতপুর গ্রামে। ২০২১ সালে মারা গেছেন বাবা মাস্টার আব্দুর রহিম। ২০ জুলাই গ্রামের বাড়িতেই তাঁর দাফন হয়।

পরিবারের সদস্যরা জানায়, মাত্র দুই মাস আগে বিয়ে হয়েছিল এ টি এম তুরাবের। বিয়ের কিছুদিন পর যুক্তরাজ্যে চলে যান তাঁর স্ত্রী তানিয়া ইসলাম। তুরাবকেও সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য দ্রুত প্রক্রিয়া শুরু করেন তানিয়া। কিন্তু তা আর হলো না।

পরিবারের অভিযোগ, সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় তুরাবের মৃত মুখও তাঁর প্রবাসী স্ত্রী দেখতে পারেননি বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। 

তুরাবের বড় ভাই আবুল আহসান মো. আজরফ (জাবুর আহমদ) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত ১৩ মে বিয়ে করেন তুরাব। ৫ জুন তাঁর স্ত্রী তানিয়া ইসলাম লন্ডন চলে যান। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে সেখানে তানিয়া মুষড়ে পড়েছেন। এখনো স্বাভাবিক হননি। কাঁদতে কাঁদতে শেষ।’

জাবুর আহমদ বলেন, ‘তুরাবের মৃত্যুর খবর শুনেই তানিয়া দেশে আসার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফ্লাইটের টিকিট না পাওয়ায় আসতে পারেননি। এমনকি ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় শেষবারের মতো স্বামীর মুখও দেখতে পারেননি।’

তুরাবের স্থানীয় কর্মস্থল দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার এম জে এইচ জামিল বলেন, ‘তুরাব খুবই পরোপকারী ছিলেন। কারও বিপদ-আপদ শুনলে সবার আগে দৌড়ে যেতেন। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতেন। অফিসের সবার সঙ্গে ছিল সুসম্পর্ক। কারও সঙ্গে কোনো দিন মনোমালিন্য হয়নি।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে ১৯ জুলাই শুক্রবার বাদ জুমা নগরের বন্দরবাজার এলাকা থেকে মিছিল বের করেন বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। আচমকাই সেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায় তাঁদের। পুলিশ মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছোড়ে। ওই দিন আরও কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন তুরাব। আচমকা সংঘর্ষ শুরু হলে তৎক্ষণাৎ নিজেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে পারেননি তিনি।

সংঘর্ষ শুরুর কিছুক্ষণ পর সেখানে উপস্থিত সহকর্মীরা দেখেন তুরাব মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন। তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান সহকর্মীরা।

বিয়ের পোশাকে এ টি এম তুরাব। ছবি: সংগৃহীতপরে সেখান থেকে তুরাবকে নগরের সোবহানীঘাট এলাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই দিনই সন্ধ্যায় ইবনে সিনা হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তুরাবের মৃত্যু হয়।

পরদিন ২০ জুলাই ওসমানী হাসপাতালে তুরাবের লাশের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান শামসুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিহতের শরীরে ৯৮টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। গুলিতে তাঁর লিভার ও ফুসফুস আঘাতপ্রাপ্ত হয়। মাথায় ঢিলের আঘাতও ছিল। এ কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।’

এদিকে তুরাব নিহত হওয়ার ঘটনার ছয় দিন পর গত বুধবার রাতে এসএমপির কোতোয়ালি থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন তাঁর ভাই আবুল আহসান মো. আজরফ। এজাহারে তুরাবের মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ী করা হয়। অজ্ঞাতপরিচয় ৮ থেকে ১০ জন পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করে এজাহার দিলে পুলিশ সেটি গ্রহণ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত করেছে।

পুলিশ বলছে, তুরাব কার গুলিতে নিহত হয়েছেন, সেটি নিশ্চিত করে এখনই বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। বন্দরবাজার এলাকায় সংঘর্ষে পুলিশের ওপর হামলা ও তুরাব নিহতের ঘটনায় ২০ জুলাই কোতোয়ালি থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলায় এরই মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

এ বিষয়ে এসএমপির উপকমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘সাংবাদিক তুরাবের মৃত্যুর ঘটনায় আগেই পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছে। নিহতের ভাই জাবুর বাদী হয়ে আরেকটি এজাহার দিয়েছেন। আমরা সেটাও গ্রহণ করেছি। দুটি একসঙ্গে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত ডিআইজি আজবাহার বলেন, এজাহার বা অভিযোগ যে কেউই, যে কারও বিরুদ্ধে করতে পারে। তদন্ত চলছে, পুলিশের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে অবশ্যই আইনানুগ ও বিভাগীয় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে তুরাবের বড় ভাই এজাহার দাখিলকারী আবুল আহসান মো. আজরফ আজকের পত্রিকাকে গত বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘আমরা জিডি করিনি। এজাহার দিয়েছি। শনিবারের মধ্যে মামলা হিসেবে না নিলে আমরা রোববার আদালতে মামলা করব।’ আজ রোববার বিকেলে আজরফ বলেন, ‘তিনি ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেছেন। সন্ধ্যায় ফিরে তুরাবের ঢাকা ও সিলেট অফিস এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৭ বছর পর বেরোবি ছাত্র সংসদ আইনে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন

বেরোবি সংবাদদাতা
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রায় ১৭ বছর পর রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ছাত্র সংসদ আইন অনুমোদিত হয়েছে। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মাধ্যমে এই আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পথে আর কোনো আইনগত বাধা থাকছে না।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক প্রফেসর ড. মো. ইলিয়াস প্রামাণিক বলেন, ‘আজ বিকেলে রাষ্ট্রপতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ আইন অনুমোদন করেছেন। আগামীকাল (মঙ্গলবার) প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এখন আমাদের ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে কোনো বাধা নেই।’

এদিকে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ছাত্র সংসদ আইন অনুমোদনের খবরটি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটাই বেরোবির গণতান্ত্রিক চেতনার নতুন সূচনা।

এর আগে শিক্ষার্থীরা একাধিকবার ছাত্র সংসদের আইন প্রণয়ন, রোডম্যাপ বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন, সংবাদ সম্মেলন, অবস্থান ও আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাবিপ্রবি: অধ্যাপক মুকিত মোকাদ্দেসকে প্রধান করে শাকসুর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা

সিলেট প্রতিনিধি
শাকসু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাকসু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল মুকিত মোকাদ্দেসকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করা হয়েছে। আজ সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী নির্বাচন কমিশনের প্রধানের নাম ঘোষণা করেন।

নির্বাচন কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন অধ্যাপক ড. মো. কামরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. মিছবাহ উদ্দিন, অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ সিদ্দিকী, ড. মো. রিজাউল ইসলাম, অধ্যাপক ড. জি এম রবিউল ইসলাম, অধ্যাপক ড. রেজোয়ান আহমেদ, অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল আলম, অধ্যাপক মো. আব্দুল জলিল, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনযুর-উল-হায়দার, স্থপতি ইফতেখার রহমান, সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রাজিক মিয়া।

এ সময় শিক্ষার্থীরা আগামী বুধবারের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার কথা বলেন। তখন উপাচার্য অধ্যাপক সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশনার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমন্বয় করে অতি শিগগির রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তরা ইপিজেডে ৪ কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নীলফামারী প্রতিনিধি
উত্তরা ইপিজেডে ৪ কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
উত্তরা ইপিজেডে ৪ কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চার কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শ্রমিকেরা। আজ সোমবার ইপিজেডের মূল ফটকের সামনে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ সময় বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শ্রমিকেরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রাপ্য বেতন নিয়মিত পরিশোধ করে না, অতিরিক্ত সময় কাজ করালেও সেই পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। এসব নিয়ে শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নামলে হঠাৎ করে চারটি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জানা যায়, গত শনিবার (২৫ অক্টোবর) থেকে এই চার কারখানার শ্রমিকেরা বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন। এরপর গতকাল রোববার উৎপাদন ব্যাহতসহ বিভিন্ন বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, মেইগো বাংলাদেশ লিমিটেড, ইপিএফ প্রিন্টিং লিমিটেড ও সেকশন সেভেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাঈদ বলেন, ‘খবর পেয়ে ইপিজেড এলাকায় আমরা উপস্থিত হই। শ্রমিকদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’

এ বিষয়ে উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বন্ধ থাকা চারটি কারখানা দ্রুত চালুর চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামালপুরে কাভার্ড ভ্যানচাপায় নিহত বেড়ে ৫

জামালপুর প্রতিনিধি 
জামালপুর সদর উপজেলায় আজ সোমবার দুপুরে কাভার্ড ভ্যানচাপায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জামালপুর সদর উপজেলায় আজ সোমবার দুপুরে কাভার্ড ভ্যানচাপায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুর সদর উপজেলায় কাভার্ড ভ্যানচাপায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচজনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় শিশুসহ চারজন জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার দিকপাইত এলাকায় একটি অটোরিকশাকে চাপা দেয় কাভার্ড ভ্যান।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন সরিষাবাড়ী উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের সানাকুর এলাকার হায়দার আলীর ছেলে অটোরিকশার যাত্রী রাশেদ (৪০), সদর উপজেলার তিতপল্লা ইউনিয়নের নারায়ণপুর এলাকার ময়েজ উদ্দিনের ছেলে চান মিয়া (৬২), উচ্চগ্রাম এলাকার শরিফ আহাম্মেদের স্ত্রী আরিফা খাতুন (২৮) ও অটোরিকশার চালক তিতপল্লা ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর আলম (৪০)। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা এক নারী মারা গেছেন। আরিফা খাতুন জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।

এর আগে বেলা ৩টার দিকে তিনজন নিহতের তথ্য জানিয়েছিল পুলিশ। পরে আরও দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সর্বশেষ সন্ধ্যা ৬টার দিকে জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যু হয়।

আহত ব্যক্তিরা হলো তিতপল্লা ইউনিয়নের নারায়ণপুর এলাকার চান মিয়ার স্ত্রী সন্ধ্যা বেগম (৫০), দিকপাইত এলাকার চান মিয়ার মেয়ে সাদিকা আক্তার (২৫), একই এলাকার বাদশা মিয়ার মেয়ে ফারজানা বেগম (২২) ও সরিষাবাড়ীর মহাদান ইউনিয়নের উচ্চগ্রামের শরিফ আহাম্মেদের ছেলে আরশ (৫)। আহত শিশু আরশ নিহত আরিফা খাতুনের ছেলে বলে জানা গেছে।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুস সাকিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি কাভার্ড ভ্যান বিপরীত থেকে আসা অটোরিকশাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রাশেদ নামের এক যাত্রী নিহত হন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। তাঁদের মধ্যে চারজন মারা গেছেন। বর্তমানে চারজন চিকিৎসাধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত