Ajker Patrika

দ্রুততম সময়ের মধ্যে জরুরি সংস্কার শেষে নির্বাচনের দাবি: সিজিএস সংলাপে বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
Thumbnail image
সিলেটে সিজিএসের সংলাপে অতিথি ও বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দ্রুততম সময়ের মধ্যে জরুরি সংস্কার সম্পন্ন করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন সিলেটের জনগণ। আজ শনিবার সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে এ দাবি ওঠে।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সিজিএস দেশের প্রতিটি বিভাগে ধারাবাহিক সংলাপের আয়োজন করছে। সিলেটের সংলাপে সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংলাপে অংশ নেন রাজনৈতিক দল, শিক্ষক, আইনজীবী, উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যমকর্মী, ছাত্র প্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বারবার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছেন। তবে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থে সেই আন্দোলনের স্পিরিট নষ্ট করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে সংস্কার আগে, নাকি নির্বাচন আগে হওয়া উচিত, তা নিয়ে রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে।’

সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদুল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘সংবিধানে মৌলিক অধিকারগুলো চিহ্নিত করে তা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি আইন, বিচার ও শাসন বিভাগকে আলাদা ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে সংবিধান থাকলেও কখনোই সাংবিধানিক শাসন ছিল না। ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়ন করলেও ১৯৭৫-এ এসে সংবিধান সংশোধন করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সেই সংবিধানের মূল স্পিরিটকে নষ্ট করে ফেলা হয়।’

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান প্রায় ১৫ বছরের আন্দোলনের ফসল। আমরা চাই, এ বছরের মধ্যেই নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক।’

মহানগর বিএনপির সভাপতি রেজাউল হাসান লোদী বলেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য বিএনপি ৩১ দফা ঘোষণা করেছে। এটি বাস্তবায়িত হলে আগামী ৫০ বছরের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।’

সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া উচিত। এ ছাড়াও সবার আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা উচিত। এ সরকার বেশি দিন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চাইলে তারা মানুষের সমর্থন হারাবে।’

সিলেটে সিজিএসের সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে সিজিএসের সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি আব্দুল করিম কিম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা চালু করতে হবে এবং নির্বাচনে ‘না ভোট’ ব্যবস্থার পুনঃ প্রবর্তন করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র মালেকা খাতুন সারা বলেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক সমতা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে এডকোর নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ হলেও আমরা বাঙালি নই, আমাদের নিজস্ব পরিচয় রয়েছে। জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী বাংলাদেশে বসবাসকারী আদিবাসীদেরকে তাদের পরিচয়ের স্বীকৃতি নিশ্চিতে করতে হবে।’

সিজিএস আয়োজিত সংলাপে জাতীয় নাগরিক কমিটি, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিস, সিপিবি, বাসদ, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা মতামত দেন। তাঁরা সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত