ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
‘ঘর-দুয়ার ভাইঙ্গা গেছে। সবের কাপড়-চোপড়সহ সবতা ভাসাইয়া লইয়া গেছে। এখন থাকার ওই জায়গা নাই। দেবরের ভাঙ্গাছাঙ্গা একটা ঘরে এককাপড়ে আছি। বাচ্চারার কাপড়ই কিনে দিতাম পাররাম না। জামাই অসুস্থ, ওষুধ কিনার ট্যাখাও নাই। এই অবস্থা আমরার কি আর ঈদ আছে?’
গতকাল শুক্রবার এভাবেই নিঃস্ব হওয়ার বর্ণনা দিচ্ছিলেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের নতুন জীবনপুর (গাছঘর) গ্রামের রোজিনা বেগম।
বানভাসি রোজিনা জানান, এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তাঁদের সংসার। বর্ষায় মাছ শিকার করে বিক্রি, আর শুকনো মৌসুমে যা পান, তা দিয়েই চলে সংসার। এর মধ্যে ইসলাম উদ্দিন নানা রোগে আক্রান্ত। একদিন কাজ করলে তিন দিন বসে থাকতে হয়।
তবু খেয়ে না খেয়ে কোনো রকম চলছিল তাঁদের সংসার। গত ১৫ জুন ঘরে পানি উঠলে স্থানীয় দয়ারবাজারের একটি বস্তিতে আশ্রয় নেন তাঁরা। ১৪ দিন পর বাড়িতে ফিরে দেখেন সব শেষ। মাথা গোঁজার ঠাঁই ঘরটিও দুমড়েমুচড়ে পড়ে আছে। ছেলে-মেয়ে ও নিজেদের কাপড়-চোপড় কিছুই নাই। দেবর নুর উদ্দিন ঢাকায় থাকেন। বর্তমানের দেবরের আধো ভাঙা ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে স্বামীও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
রোজিনার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। যেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই, কাপড়-চোপড়, খাবারসহ কিছুই নাই সেখানে ঈদের আনন্দ বলতে কিছুই নেই তাঁদের।
শুধু রোজিনা নন; আশপাশের রাজনগর, চন্দ্রনগর, মেঘারগাও, ঢালারপাড়, সাতাল, বালুচর, মোস্তফানগর রাজনগর, লড়ং, রাধানগর, খায়েরগাও, চানপুর, শিমুলতলা নোয়াগাঁও সহ বেশ কয়েকটি গ্রামবাসীর একই অবস্থা। এসব এলাকায় এখনো পানিবন্দী অনেক মানুষ।
রাত পোহালেই মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। করোনা মহামারির পর প্রথম কোরবানির ঈদ এটি। সারা দেশে বিরাজ করছে ঈদের আমেজ। কিন্তু এ আমেজের কোনো ছিটেফোঁটাও লাগেনি বন্যাকবলিত সিলেটের মানুষের মনে।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিন কোম্পানীগঞ্জের পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, বন্যায় রাস্তা ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা একবারে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক রাস্তাঘাট এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। এলাকার মানুষের যোগাযোগের ভরসা নৌকা।
গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত জেলার ২৯৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন প্রায় ২২ হাজার বানভাসি মানুষ। সরকারি হিসেবে ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৩টি পরিবারের ক্ষতিগ্রস্ত ২৯ লাখ ৯৯ হাজার ৪৩৩ জন মানুষ। ৪০ হাজার ৯১টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। তিন সপ্তাহের বেশি সময় জেলার অধিকাংশ এলাকার মানুষ বানের পানিতে ভাসছেন। চোখের পলকে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে কয়েক হাজার পরিবার।
জেলার বেশির ভাগ জনপদে এখনো থইথই করছে বন্যার পানি।
ফলে ঈদের আমেজ অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে তাঁদের কাছে। আনন্দের বদলে ভোগান্তির ঘোলা জলে হাবুডুবু খাচ্ছেন হাওর এবং সুরমা-কুশিয়ারাপাড়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষ।
কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং বলেন, ‘উপজেলার ৩ হাজার ৭০০-এর বেশি পরিবারে বাড়িঘর আংশিক ভেঙে গেছে পানির স্রোতে। আর ৪৩টি পরিবারের ঘর একেবারেই ভেঙে গেছে। প্রতি ইউনিয়নে ৫০টি পরিবারকে আমরা ঘর মেরামতের জন্য ১০ হাজার করে টাকা দিচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফ বিতরণ করা হচ্ছে। ঈদে বন্যাকবলিত মানুষকে নিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করা হবে।’
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বন্যার্তদের আমরা সেমাই, লাচ্ছি সহ ঈদ সামগ্রী দিচ্ছি। যেখানে যেখানে সম্ভব রান্না করা খাবারও পাঠানো হবে।
যারা বাসা-বাড়িতে ফিরেছেন তাদের মাঝে ভিজিএফ বিতরণ করা হচ্ছে। বন্যাকবলিত মানুষকে ত্রাণ, নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পর্যায় থেকে ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ঈদ আনন্দ উদ্যাপনের জন্য সরকারিভাবে সহায়তা কার্যক্রম চলছে।’
‘ঘর-দুয়ার ভাইঙ্গা গেছে। সবের কাপড়-চোপড়সহ সবতা ভাসাইয়া লইয়া গেছে। এখন থাকার ওই জায়গা নাই। দেবরের ভাঙ্গাছাঙ্গা একটা ঘরে এককাপড়ে আছি। বাচ্চারার কাপড়ই কিনে দিতাম পাররাম না। জামাই অসুস্থ, ওষুধ কিনার ট্যাখাও নাই। এই অবস্থা আমরার কি আর ঈদ আছে?’
গতকাল শুক্রবার এভাবেই নিঃস্ব হওয়ার বর্ণনা দিচ্ছিলেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের নতুন জীবনপুর (গাছঘর) গ্রামের রোজিনা বেগম।
বানভাসি রোজিনা জানান, এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তাঁদের সংসার। বর্ষায় মাছ শিকার করে বিক্রি, আর শুকনো মৌসুমে যা পান, তা দিয়েই চলে সংসার। এর মধ্যে ইসলাম উদ্দিন নানা রোগে আক্রান্ত। একদিন কাজ করলে তিন দিন বসে থাকতে হয়।
তবু খেয়ে না খেয়ে কোনো রকম চলছিল তাঁদের সংসার। গত ১৫ জুন ঘরে পানি উঠলে স্থানীয় দয়ারবাজারের একটি বস্তিতে আশ্রয় নেন তাঁরা। ১৪ দিন পর বাড়িতে ফিরে দেখেন সব শেষ। মাথা গোঁজার ঠাঁই ঘরটিও দুমড়েমুচড়ে পড়ে আছে। ছেলে-মেয়ে ও নিজেদের কাপড়-চোপড় কিছুই নাই। দেবর নুর উদ্দিন ঢাকায় থাকেন। বর্তমানের দেবরের আধো ভাঙা ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে স্বামীও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
রোজিনার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। যেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই, কাপড়-চোপড়, খাবারসহ কিছুই নাই সেখানে ঈদের আনন্দ বলতে কিছুই নেই তাঁদের।
শুধু রোজিনা নন; আশপাশের রাজনগর, চন্দ্রনগর, মেঘারগাও, ঢালারপাড়, সাতাল, বালুচর, মোস্তফানগর রাজনগর, লড়ং, রাধানগর, খায়েরগাও, চানপুর, শিমুলতলা নোয়াগাঁও সহ বেশ কয়েকটি গ্রামবাসীর একই অবস্থা। এসব এলাকায় এখনো পানিবন্দী অনেক মানুষ।
রাত পোহালেই মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। করোনা মহামারির পর প্রথম কোরবানির ঈদ এটি। সারা দেশে বিরাজ করছে ঈদের আমেজ। কিন্তু এ আমেজের কোনো ছিটেফোঁটাও লাগেনি বন্যাকবলিত সিলেটের মানুষের মনে।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিন কোম্পানীগঞ্জের পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, বন্যায় রাস্তা ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা একবারে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক রাস্তাঘাট এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। এলাকার মানুষের যোগাযোগের ভরসা নৌকা।
গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত জেলার ২৯৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন প্রায় ২২ হাজার বানভাসি মানুষ। সরকারি হিসেবে ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৩টি পরিবারের ক্ষতিগ্রস্ত ২৯ লাখ ৯৯ হাজার ৪৩৩ জন মানুষ। ৪০ হাজার ৯১টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। তিন সপ্তাহের বেশি সময় জেলার অধিকাংশ এলাকার মানুষ বানের পানিতে ভাসছেন। চোখের পলকে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে কয়েক হাজার পরিবার।
জেলার বেশির ভাগ জনপদে এখনো থইথই করছে বন্যার পানি।
ফলে ঈদের আমেজ অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে তাঁদের কাছে। আনন্দের বদলে ভোগান্তির ঘোলা জলে হাবুডুবু খাচ্ছেন হাওর এবং সুরমা-কুশিয়ারাপাড়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষ।
কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং বলেন, ‘উপজেলার ৩ হাজার ৭০০-এর বেশি পরিবারে বাড়িঘর আংশিক ভেঙে গেছে পানির স্রোতে। আর ৪৩টি পরিবারের ঘর একেবারেই ভেঙে গেছে। প্রতি ইউনিয়নে ৫০টি পরিবারকে আমরা ঘর মেরামতের জন্য ১০ হাজার করে টাকা দিচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফ বিতরণ করা হচ্ছে। ঈদে বন্যাকবলিত মানুষকে নিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করা হবে।’
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বন্যার্তদের আমরা সেমাই, লাচ্ছি সহ ঈদ সামগ্রী দিচ্ছি। যেখানে যেখানে সম্ভব রান্না করা খাবারও পাঠানো হবে।
যারা বাসা-বাড়িতে ফিরেছেন তাদের মাঝে ভিজিএফ বিতরণ করা হচ্ছে। বন্যাকবলিত মানুষকে ত্রাণ, নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পর্যায় থেকে ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ঈদ আনন্দ উদ্যাপনের জন্য সরকারিভাবে সহায়তা কার্যক্রম চলছে।’
সিলেটের বিশ্বনাথে সড়কের পাশ থেকে এক ব্যক্তির রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তাঁর নাম-পরিচয় শনাক্ত হয়নি। বয়স আনুমানিক ৩২ বলে পুলিশ জানিয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের বাওনপুর-ধনপুর পীরের বাজার এলাকায় সড়কের পাশে ওই ব্যক্তির লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন।
১৬ মিনিট আগেরাজধানীতে অপরাধ দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে সহায়তার জন্য অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে ৪২৬ জন ‘সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা’ নিয়োগ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। প্রশিক্ষণ ছাড়াই তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দেওয়ায় তাঁদের অনেকে নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে জানেন না।
৭ ঘণ্টা আগেনতুন করে অচলাবস্থা দেখা দিল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হলে আজ সোমবার বেলা ৩টা থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
৭ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করার জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ৩৬টি খাল ঘিরে বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা বরাদ্দে শুরু করা এ প্রকল্পের আকার এখন ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা।
৭ ঘণ্টা আগে