Ajker Patrika

সিলেটের ৪ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সহজে মেলে না চিকিৎসাসেবা

শাকিলা ববি, সিলেট
সিলেটের ৪ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সহজে মেলে না চিকিৎসাসেবা

সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের মুদিদোকানি মুজিবুর রহমান। কিছুদিন আগে গভীর রাতে তাঁর ভাবির প্রসবব্যথা উঠলে বিপাকে পড়ে যায় পরিবার। কারণ, গ্রামে যে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র আছে সেখানে প্রসবকালীন সেবার ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়েই গভীর রাতে সিলেট শহরের ওসমানী মেডিকেল কলেজে এনে ভর্তি করান ভাবিকে। 

মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাঝেমধ্যে ডাক্তার আসেন। গ্রামের নারীরা গর্ভকালীন সেবা নিতে পারলেও ডেলিভারি হয় না। যাঁরা কেন্দ্রের দায়িত্বে আছেন, তাঁরাও ঠিক সময়ে আসেন না। দুজন আপা আছেন তাঁরা কখনো ১১টায় আসেন, আবার কখনো ১২টায়। ঘণ্টাখানেক থেকেই আবার চলে যান। এখানকার স্বাস্থ্যসেবা মানে শুধু ভবনটাই আছে। মানুষের সর্দি, জ্বর, কাশি, হাত ভাঙা, পা ভাঙা, ডেলিভারি যাই হোক না কেন শহরেই যেতে হয়।’ 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেট সদর উপজেলার আট ইউনিয়নের মধ্যে টুকেরবাজার, কান্দিগাঁও, মোগলগাঁও, হাটখোলা, জালালাবাদ ইউনিয়নের অবস্থান শহর থেকে বেশ দূরে। দেশের অন্য বিভাগের মতো এখানকার সদর উপজেলায় কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেই। সদর উপজেলা জেলা শহরের কাছাকাছি থাকে, সেই ভাবনা থেকে সেখানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়নি। ফলে বছরের পর বছর স্বাস্থ্যসেবার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সদর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। 

এদিকে, সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলা শহরের মানুষ সরকারি-বেসরকারি—দুই ধরনের পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা পেলেও বঞ্চিত আছে জেলাগুলোর প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ। প্রাকৃতিকভাবে হাওরবেষ্টিত জনপদ বেশি এই বিভাগে। তাই এই অঞ্চলগুলো অনেক দুর্গম। এ জন্য এখানকার মানুষজনের প্রাপ্য স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াও অনেকটাই দুর্লভ। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোথাও হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন থাকলেও সেবা নেই। আবার কোথাও কিছুই নেই। 

বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য (বিডিএইচএস) জরিপ ২০১৭-১৮-এর তথ্যমতে, সিলেটে প্রজনন হার বেশি, শিশুমৃত্যু বেশি। এ ছাড়া সিলেটে খর্বকায় শিশু বেশি, পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ সবচেয়ে কম, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মা ও শিশুসেবা নেওয়ার প্রবণতাও কম এবং শিশুদের টিকাদানের প্রবণতাও কম। 

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার প্রত্যন্ত যোগাযোগবিচ্ছিন্ন সীমান্তঘেঁষা বান্দ্রা গ্রামের শান্তি হাজং বলেন, মধ্যনগরের সঙ্গে যোগাযোগের সড়কটি ভাঙাচোরা হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। কাছে কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায় দুর্গম যোগাযোগবিচ্ছিন্ন সড়ক দিয়ে প্রসূতি মা, শিশু ও বয়স্কদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হয়। যার ফলে সড়কের মধ্যেই অনেক রোগী মারা যায় এবং ডেলিভারিও হয়ে যায়। 
 
হবিগঞ্জ বানিয়াচং উপজেলার বাসিন্দারা ছয় মাস পানি ও ছয় মাস ডাঙায় থাকেন। এখানকার বাসিন্দাদের কেউ অসুস্থ হলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন থাকলেও ডাক্তার এবং প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়া দুঃসহ ব্যাপার। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে হবিগঞ্জ নেওয়া ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসার আর কোনো ব্যবস্থা থাকে না। আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অনেক দূরে। সেখানেও পর্যাপ্ত সেবা পাওয়া যায় না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে অনেকবার কথা বললেও তাঁরা শুধু আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছেন।’ 

শীতকালে মুরাদপুর ইউনিয়নের মানুষকে উপজেলা সদরে আসতে তিনবার নৌকা বদল করে কয়েক কিলোমিটার সড়ক হেঁটে তারপর যানবাহনে উঠতে হয়। গ্রামের নাইম চৌধুরী বলেন, এলাকার পাশে যে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে তাতে কোনো সেবা পাওয়া যায় না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও অনেক দূরে। যোগাযোগব্যবস্থা এতটাই খারাপ যে অনেক প্রসূতিকে জরুরি মুহূর্তে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। 

এ রকম নানা সংকটে জর্জরিত সিলেট বিভাগের চার জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্যব্যবস্থা। স্বাস্থ্য খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেটের স্বাস্থ্য খাত অন্যান্য বিভাগের তুলনায় অনেক পিছিয়ে। চরম জনবলসংকটে ধুঁকছে জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো। 

সিলেট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এই বিভাগে জনসংখ্যা এক কোটি আট লাখের বেশি। এখানে ৯০০ শয্যাবিশিষ্ট সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে। এ ছাড়া ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল আছে একটি, চার জেলায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল আছে একটি করে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে ৩৪ টি, ২০ শয্যাবিশিষ্ট পল্লি স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে তিনটি, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র আছে ২৩৪ টি। 

সারা বিভাগের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ হাজার ২৮৬টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৭৯৫ জন। স্টাফ নার্সের ৮৩টি পদের বিপরীতে কর্মরত ৩৯ জন, সহকারী নার্সের ৮৬টি পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ছয়জন। নার্সিং সুপারভাইজার, মিডওয়াইফারি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্টসহ প্রায় সব পদেই প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেকেরও কম জনবল আছে। 
বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা-সম্পর্কিত নানা তথ্য জানতে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে চার জেলার বিভিন্ন উপজেলা পরিদর্শন করেন এই প্রতিবেদক। সেসব এলাকার শতাধিক মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তাঁদের এলাকার স্বাস্থ্যব্যবস্থার চিত্র। 

জানা গেছে, বিভাগের বেশির ভাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ থেকে ৫০ শয্যা করা হলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, রোগ নির্ণয় যন্ত্রপাতি এবং জনবলের অভাবে রোগীরা পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। 

সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক হিমাংশু লাল রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানকার স্বাস্থ্য খাত অন্য এলাকার তুলনায় পিছিয়ে। জেলা বা উপজেলা সদরের বাসিন্দারা ভালোমানের সেবা নিতে পারলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা দিতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। এসব এলাকায় আমরা মূলত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এই কেন্দ্রগুলোয় আমাদের জনবল বলতে কোনো জায়গায় একজন স্যাকমো আছে, সঙ্গে একজন এফডব্লিউভি, কোনো জায়গায় আয়া, ওয়ার্ডবয় আছে কোনো জায়গায় নেই। কোনো জায়গায় অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট আছে কোনো জায়গায় নাই, নৈশপ্রহরী নেই। এমতাবস্থায়ও আমরা সেবাগুলো নিশ্চিত করছি স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে। ইউনিয়ন পর্যায়ে মা-শিশুকল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে আমরা ২৪ ঘণ্টা ডেলিভারি সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’ 

সিলেটের স্বাস্থ্য খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে সিলেটের উপযোগী পরিকল্পনা করার ওপর গুরুত্ব দেন ডা. হিমাংশু লাল রায়। তিনি বলেন, জনবলসংকটের পাশাপাশি পিছিয়ে থাকার অন্যতম একটি কারণ হলো সিলেটের ভৌগোলিক অবস্থান। জাতীয় পর্যায়ে অন্যান্য জেলাকে নিয়ে যেভাবে পরিকল্পনা নেওয়া হয় সিলেটকে নিয়ে একই ধরনের পরিকল্পনা নিলে চলবে না। সিলেটের জন্য সিলেটের উপযোগী একটি পরিকল্পনা করতে হবে। যেমন সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলাকে একটি কেন্দ্র বানাতে হবে, ধর্মপাশাকে একটি কেন্দ্র বানাতে হবে। প্রত্যন্ত সব অঞ্চলে সেবা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে হবে। 

প্রসঙ্গত, প্রতিবেদনটি বিএনএনআরসির তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য-সাংবাদিকতায় মিডিয়া ফেলোশিপ-এর আওতায় প্রস্তুতকৃত। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিরাপদ সড়কসহ ৫ দফা দাবিতে ফার্মগেটে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নিরাপদ সড়কের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীর ফার্মগেটে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিরাপদ সড়কের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীর ফার্মগেটে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিরাপদ সড়কের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীর ফার্মগেটে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন সরকারি বিজ্ঞান কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। দুদিন আগে ফার্মগেট এলাকায় ট্রাকচাপায় সিফাত নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন কর্মসূচি। সড়ক অবরোধের কারণে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ফার্মগেট মোড়ে অবস্থান নিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেছে। আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলছি।’

সিফাতের মৃত্যুর ঘটনায় ডিসি ইবনে মিজান জানান, ‘ট্রাকচাপায় ফার্মগেটের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী সিফাতের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো—

১. সিফাত হত্যার বিচার এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেওয়ায় প্রশাসনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

২. ফুটপাত দখলমুক্তকরণ: ফুটপাত থেকে সব অবৈধ দোকান, অস্থায়ী স্থাপনা, অননুমোদিত বাজার ও ভবঘুরে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ।

৩. পার্কিং আইন কার্যকর: নো-পার্কিং জোন কঠোরভাবে ঘোষণা ও বাস্তবায়ন।

৪. যানবাহন নিয়ন্ত্রণ: দুর্ঘটনা ও যানজট এড়াতে রেলক্রসিং থেকে গির্জা পর্যন্ত সড়কে অটোরিকশা, ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে।

৫. সড়ক নিরাপত্তা অবকাঠামো উন্নয়ন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে তিনটি স্পিড ব্রেকার, পর্যাপ্ত ল্যাম্পপোস্ট, লেন ডিভাইডার এবং ট্রাফিক আইল্যান্ড স্থাপন।

পুলিশের সঙ্গে আলোচনা সত্ত্বেও দুপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে দাদিকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে নাতি আটক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় সন্দেশ বেওয়া (৮৫) নামের এক বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর নাতি সজিব আলীর (২২) বিরুদ্ধে। উল্লাপাড়া উপজেলার চকবরু ভেংড়ী গ্রামে বুধবার গভীর রাতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত সন্দেশ বেওয়া ওই গ্রামের মৃত নওশের আলীর স্ত্রী এবং আটক সজিব আলী তাঁর (বৃদ্ধার) সন্তান আহমদ আলীর ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুধবার গভীর রাতে সন্দেশ বেওয়ার ঘর থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। পরে পরিবারের সদস্যরা ঘরে গিয়ে সন্দেশ বেওয়ার গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে রাতেই সলঙ্গা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত নাতি সজিব আলীকে আটক করে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আটক যুবক সজিব আলী মাদকাসক্ত এবং মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন।

সলঙ্গা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাসিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহত ব্যক্তির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এএসআই হাসিম আরও জানান, আটক সজিব আলীকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সার্কেল কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এই ঘটনায় এখনো কোনো মামলা করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে চাকরির সুযোগ

চাকরি ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ২ ধরনের পদে ২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। গত ১৬ অক্টোবর এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আগ্রহী প্রার্থীরা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত ঠিকানায় ডাকযোগের মাধ্যমে আবেদনপত্র পাঠাতে পারবেন।

পদের নাম: ডুপ্লিকেটিং মেশিন অপারেটর কাম-দপ্তরি।

পদ সংখ্যা: ১টি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট অথবা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা। ফটোকপি মেশিন চালানোর বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

বেতন: ৮,৮০০–২১,৩১০ টাকা।

পদের নাম: ইলেকট্রিশিয়ান।

পদ সংখ্যা: ১ টি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট অথবা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হতে সনদপ্রাপ্ত হতে হবে।

বেতন: ৮,৮০০–২১,৩১০ টাকা।

আবেদন পদ্ধতি: আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদনপত্রের খামের উপর পদের নাম উল্লেখ করে ‘প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদ, মানিকগঞ্জ’ বরাবরে ডাকযোগে পৌঁছাতে হবে। সরাসরি ও নির্ধারিত তারিখের পরে কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

আবেদনের শেষ সময়: ১৬ নভেম্বর, ২০২৫।

সূত্র: বিজ্ঞপ্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ

গাজীপুর (শ্রীপুর) প্রতিনিধি
আজ দুপুরে উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় কয়েক হাজার শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ দুপুরে উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় কয়েক হাজার শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ‘এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড’ কারখানার শ্রমিকেরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ শুরু করেন।

কারখানার শ্রমিক মনিরা খাতুন বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বর মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ার তারিখ ছিল ১০ অক্টোবর। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষের লোকজন দিই-দিচ্ছি করে দিন পার করছে। আজ বেতন পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু আজও বেতন পরিশোধ করার কোনো সম্ভবনা নেই। পুলিশ আমাদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।’

আরেক শ্রমিক আরিফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের পরিবার আছে, স্ত্রী-সন্তান আছে। বাড়িভাড়া ও মুদিদোকানের বকেয়ার জন্য চরম চাপে আছি। পাওনাদারেরা রীতিমতো চাপ দিচ্ছে টাকা পরিশোধ করতে, নয়তো বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। পেটের দায়েই আমরা রাস্তায় এসেছি। লাঠিপেটা হলেও আমরা টাকা চাই।’

এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘এক মাসের বেতন বকেয়া। আজ পরিশোধের তারিখ ছিল; কিন্তু আজও সম্ভব হচ্ছে না। বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকেরা কাজ ফেলে মহাসড়কে চলে গেছে।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের কয়েকটি তারিখ দিয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পরিশোধের জন্য আজ সর্বশেষ তারিখ ছিল। কিন্তু আজও বেতন পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। এ জন্য সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকেরা কিছুতেই সড়ক ছাড়ছেন না। এ সময় টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত