Ajker Patrika

ইভিএমে ধীরগতি, কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন

সাইফুল মাসুম ও ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট থেকে 
আপডেট : ২১ জুন ২০২৩, ১৪: ২৮
Thumbnail image

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে দেখা গেছে। সিসিকের পুরোনো ওয়ার্ডের তুলনায় নতুন যুক্ত হওয়া ১৫ ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়েছে। তবে ইভিএমের ধীরগতির কারণে ভোটাররা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ভোটারদের অভিযোগ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ভোট দিতে পারেননি।

নগরীর ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার জিতু হাসান বলেন, ‘সকাল থেকে তিনিসহ অনেক নারী-পুরুষ ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু ইভিএমের ধীরগতির কারণে ভোট দিতে পারছেন না।’ 

টুকের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দুই ঘণ্টা ধরে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন সোহানা বেগম। তিনি জানান, ভোট দিতে আসা অনেক বয়স্ক নারী দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

ওই ভোটকেন্দ্রের একটি বুথে তালিকাভুক্ত প্রায় ৩৫০ জন ভোটার থাকলেও প্রথম চার ঘণ্টায় ভোট পড়েছে মাত্র ৫৭টি। বুথের পোলিং অফিসার বিথী দেবী জানান, ইভিএমে মানুষের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, তাই দেরি হচ্ছে।

টুকের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল হাসনাত বলেন, ভোটারদের ইভিএমে অভিজ্ঞতা নেই। আর একটা ইভিএম মেশিনে ত্রুটি দেখা গেছে।

নগরীর রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভোটকেন্দ্রে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। লাইনে দাঁড়ানো কয়েকজন ভোটার জানান, সকাল থেকে অপেক্ষা করছেন, কখন ভোট দিতে পারবেন এখনো জানেন না।

রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার পুরুষ ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার জয়দেব দাস বলেন, তাঁর কেন্দ্রে ১ হাজার ৯৫৭ জন ভোটার রয়েছেন। মোটামুটি ভালোই ভোটার উপস্থিতি রয়েছে। তবে মানুষ ইভিএমে অভিজ্ঞতা না থাকায় কিছুটা দেরি হচ্ছে। ওই কেন্দ্রে ৮টা ইভিএম মেশিন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটা সকালে নষ্ট হয়ে গেছে।

ইভিএম মেশিনের সমস্যার কারণে লাঙ্গলের সমর্থকেরা ঠিকমতো ভোট দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। তিনি বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে খবর আসছে লাঙ্গলের ভোটাররা ভোট দিতে পারছে না। ইভিএম মেশিন নষ্ট হওয়ার পর ঠিক করতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যাচ্ছে।

নগরীর ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ভোটকেন্দ্রে কথা হয় নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক মোহাম্মদ মোমিন মিয়ার সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি পাঁচটি কেন্দ্র ঘুরেছি। মানুষের অনেক ভোট দেওয়ার আগ্রহ দেখেছি। তবে ইভিএম টেকনিক্যাল বিষয় তো, না বোঝার কারণে অনেকে ভোগান্তিতে পড়েছেন। ইভিএম সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বাড়ানো দরকার।’

এদিকে সকালে নগরীর শাহজালাল জামিয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসায় ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল ভোট দিয়েছেন আনন্দ নিকেতন কেন্দ্রে।

নির্বাচনে এবার আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীসহ মোট আটজন মেয়র পদপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় মাঠে রয়েছেন সাতজন মেয়র পদপ্রার্থী। অন্যরা হলেন জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল) এবং স্বতন্ত্র মো. আবদুল হানিফ কুটু (ঘোড়া), মো. শাহ জামান মিয়া (বাস), মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট) ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ প্রতীক)।

সিসিক নির্বাচনে নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭২ জন ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত