Ajker Patrika

সিলেটে সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি লিটনকে অব্যাহতি, অবাঞ্ছিত ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
সিলেটে সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি লিটনকে অব্যাহতি, অবাঞ্ছিত ঘোষণা

যৌন নিপীড়ন ও অশালীন আচরণের অভিযোগে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি আমিনুল ইসলাম লিটনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি পরিষদ ও প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। 

আজ রোববার সন্ধ্যায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সদস্য শাসসুল আলম সেলিম আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জেনে আমরা তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়েছি, তিনি সাড়া দেননি। প্রশাসনিক বা আমাদের কাছে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’ 

আমিনুল ইসলাম লিটন কথাকলি-সিলেট নামের স্থানীয় একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনেরও সভাপতি। তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে অন্য আরেকটি সাংস্কৃতিক দল ‘নগরনাট’। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে কথাকলি-সিলেট ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। 

রোববার দুপুরে নগরনাটের কার্যকরী কমিটির সদস্য অরুপ বাউল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক সময়ে কথাকলি, সিলেটের নাট্যকর্মী আমিনুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক নারী সংস্কৃতিকর্মী যৌন নিপীড়ন ও অশালীন আচরণের অভিযোগ উপস্থাপন করেন। এই অভিযোগগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সচেতন মহল থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।

এসব ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা নগরনাট আমিনুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। আমরা মনে করি, এই ঘটনাগুলোর দায় সিলেটের প্রতিটি নাট্যকর্মী, প্রতিটি নাট্যদল এবং সম্মিলিত নাট্যপরিষদ সিলেট এড়িয়ে যেতে পারে না। যত দিন পর্যন্ত তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন না, তত দিন নগরনাটের সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড থেকে আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।’ 

এদিকে এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ সংস্কৃতিকর্মী আমিনুল হক চৌধুরী লিটনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি বলেন, ‘এসব ষড়যন্ত্র। আমার বিরুদ্ধে আদালতে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া তো দূরের কথা, আজ পর্যন্ত এসব অভিযোগে কোনো মামলাও দায়ের করেনি কেউ।’ 

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কল রেকর্ড তাঁর নয়—এমন দাবি করে লিটন এটিকে ‘কারসাজি’ ভরে আখ্যায়িত করেন। সব ধরনের সাংস্কৃতিক সংগঠন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথাও জানান লিটন। তিনি লেখেন, ‘আমি যত ধরনের সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে জড়িত আছি, সব জায়গা থেকে আপাতত বিরতি নিচ্ছি, কারণ আমি চাই না আমার জন্য আমার কোনো বন্ধু বা সহকর্মী বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ুক।’ 

সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত জানান, ‘এ রকম ঘটনা সিলেটের সংস্কৃতি অঙ্গনের জন্য লজ্জাজনক। সম্মিলিত নাট্য পরিষদ এ বিষয়ে একটি যৌথ সভা করেছে। সভায় সিদ্ধান্তগুলো যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ওনার সংগঠনকে জানানো হবে। আমরা এ রকম ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই আপস করব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চুরি মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কারাগারে

ফেনী প্রতিনিধি
চুরি মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কারাগারে

ফেনীতে গরু চুরির মামলায় দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।  

গ্রেপ্তার আলা উদ্দিন পৌর এলাকার উত্তর শ্রীধরপুর এলাকার মজিবুল হকের ছেলে। তিনি দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

জানা গেছে, ৫ অক্টোবর গভীর রাতে দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের সিলোনিয়া খুশিপুর এলাকায় দুই বাড়ি থেকে ছয়টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। এ ঘটনায় সর্বশেষ ২১ অক্টোবর দিবাগত রাতে পৌর এলাকার উত্তর শ্রীধরপুর এলাকা থেকে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

গ্রেপ্তার আলা উদ্দিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে ভিন্নমতের রাজনীতি করার কারণে বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হয়েছিলেন। ওই মামলাগুলোয় জামিনে আছেন। বর্তমানে প্রতিহিংসা করে তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলক এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’

দাগনভূঞা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, যদি এ ঘটনা সত্য হয়, তাহলে তা দলের জন্য বিব্রতকর। ঘটনার সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে যদি তিনি জড়িত থাকেন, অবশ্যই তাঁর বিচার হোক। আইন সবার জন্য সমান। এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতাদের অবহিত করা হবে।   

এ ব্যাপারে দাগনভূঞা থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, গরু চুরির মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দাগনভূঞা ও কোম্পানীগঞ্জ থানায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, তাঁর পক্ষে সবাই কাজ করব: আরিফুল হক চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
সিলেটে পদযাত্রায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে পদযাত্রায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার প্রচারের মধ্য দিয়ে সিলেট-১ আসনে ধানের শীষের পক্ষে পদযাত্রা করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।

বুধবার (২২ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে জোহরের নামাজের পর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে তিনি এই প্রচার শুরু করেন।

আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমার নেতা তারেক রহমান বলেছেন, তৃণমূলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করবেন। অনেকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এখনো কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের মনোনয়ন বোর্ড বসে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করবে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরিফ বলেন, ‘৪৭ বছর ধরে আমি দলের সঙ্গে আছি। সব সময় দলের সিদ্ধান্ত মেনে এসেছি। কখনো দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করিনি। আর উনিও (তারেক রহমান) বলেছেন, জনগণের ভালোবাসা, জনগণের সম্পৃক্ততা যাঁর সঙ্গে থাকবে, তিনি তাঁকে নমিনেশন দেবেন। আজকে দেখুন, শুধু প্রচার অভিযানে হাজার হাজার মানুষ চলে এসেছেন।’

পদযাত্রায় সিলেটের বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ অংশ নেন। এ সময় অনেকে ধানের শীষ হাতে নিয়ে প্রচারণায় অংশ নেন। রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে আরিফুল হক চৌধুরীকে স্বাগত জানান অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুলিশের বলা ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’ নিয়ে প্রশ্ন জোবায়েদের শিক্ষকের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বুধবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনে শিক্ষক সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বুধবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনে শিক্ষক সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’ বলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সংবাদ সম্মেলন থেকে ত্রিভুজ প্রেমের গল্পের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু জোবায়েদের সম্পর্কে তার শিক্ষক ও সহপাঠীরা যতটুকু জানে, তাতে এই ধরনের মন্তব্য তার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়। তা ছাড়া জোবায়েদ যদি প্রেমই করত, তাহলে তো তাকে আর মেয়ের পরিবার টিউশনিতেই রাখত না।’

বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আজকের পত্রিকাকে এসব কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। এর আগে বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে ভাষাশহীদ রফিক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির সংবাদ সম্মেলনের নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টর, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ছাত্রদল ও অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং জোবায়েদের আইনজীবী মো. ইশতিয়াক হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনার দ্বিতীয় দিনে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা হলেন বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৮), মাহির রহমান (১৯) ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)। এরপর মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো নজরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বর্ষাকে পড়াতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে জোবায়েদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে বর্ষার সঙ্গে মাহিরের পূর্ববর্তী সম্পর্ক ছিল। এটা মূলত ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’। এর জেরে মাহির ও আয়লান মিলে বর্ষার সহযোগিতায় হত্যা করেন জোবায়েদকে।

পুলিশের এই বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন বলেন, ‘আমাদের কিছু কিছু বিষয় নিয়ে সংশয় আছে, প্রশ্ন আছে। জোবায়েদকে হত্যার আগে তার ছাত্রী বর্ষা তাকে কল দিয়ে জিজ্ঞাসা করে, সে কখন আসতেছে, কতটুকু এসেছে এবং তার আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়, পরে তার লোকেশন চেক করে। বিষয়টা স্বীকারোক্তি দিয়েছিল ছাত্রী বর্ষা। সেটি এজাহারের প্রথম সূত্র হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটি কেন বাদ দেওয়া হলো? সেটা কি ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, নাকি পরে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেটা আমাদের প্রথম প্রশ্ন।’

ডিএমপির বক্তব্য অনুযায়ী, মাহিরকে বর্ষা বলেছিলেন, জোবায়েদকে না সরালে তিনি ‘মাহিরের হতে পারবেন না’। এরপর এক মাস আগে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

পুলিশের দেওয়া ঘটনার বর্ণনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন। তিনি বলেন, ‘জোবায়েদকে আক্রোশে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি, আক্রোশে হত্যা করলে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। কিন্তু পুলিশ বলল, এক আঘাতেই হত্যা করা হয়েছে জোবায়েদকে। এটা তো পেশাদার হত্যাকারী ছাড়া কেউ করতে পারার কথা নয়। তাহলে আমাদের প্রশ্ন পেশাদার হত্যাকারী দিয়ে হত্যা করিয়ে অন্যদের ফাঁসানো হয়েছে কি? এ ছাড়া মাহিরের উচ্চতা ও জোবায়েদের উচ্চতায় অনেক তফাত। জোবায়েদ মাহিরের থেকে অনেক লম্বা, সে (মাহির) তার (জোবায়েদ) গলা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারার কথা নয়। সে জায়গা থেকে হত্যা করা সম্ভব কি?’

তিনি আরও বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দুজন ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে। একজন কালো টি-শার্ট পরিহিত, আরেকজন লাল টি-শার্ট পরিধান করা ছিল। এই দুজনই কি গ্রেপ্তার হওয়া দুজন কি না, আমরা কীভাবে নিশ্চিত হব? সংশ্লিষ্ট প্রশাসন পর্যাপ্ত প্রমাণ জব্দ করেছে কি না, সেটা আমরা জানতে চাই।’

পুলিশের বিবরণের আরেকটি অংশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই অধ্যাপক বলেন, ‘অভিযুক্ত বার্জিস শাবনাম বর্ষার মা-বাবার জবানবন্দি নেওয়া প্রয়োজন ছিল, হত্যার সময় বাসায় তাঁরা উপস্থিত ছিলেন। যদি তাঁরা এ ঘটনায় সমর্থন দিয়ে থাকেন, তাঁদেরও তো এই মামলার আসামি হওয়ার কথা। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার কাছ থেকে জবানবন্দি নেওয়ার বিষয়েও পুলিশ স্পষ্ট কিছু জানায়নি।’

এদিকে জোবায়েদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সেখান থেকেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সমাবেশে পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু সাইদ মো. রিপন রউফ বলেন, ‘গতকাল পুলিশের কর্মকর্তারা যেভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁরা যেভাবে হাসাহাসি করেছেন, তাতে মনে হয় না, তাঁরা একটি হত্যার বিবরণ দিচ্ছেন। তাঁরা কোনোভাবেই দায়িত্বশীল আচরণ করেননি।’

জোবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কা, নিহত ২

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মিজানুর রহমান ও শিহাব আলী নামের দুই যুবক মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ইমন আলী নামের আরও এক যুবক।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের কেন্দুল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুকোমল চন্দ্র দেবনাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত যুবকেরা হলেন সদর উপজেলার মাঝপাড়ার তাজেবুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান (২২) ও ধীনগর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে শিহাব আলী (২০)।

আহত যুবক হলেন আমনুরা কলোনির শফিকুল ইসলামের ছেলে ইমন আলী।

সুকোমল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, আজ বেলা পৌনে ৩টার দিকে একই মোটরসাইকেলে তিন যুবক ঝিলিমবাজার থেকে গোদাগাড়ীর দিকে যাচ্ছিলেন। পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি একটি কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে গুরুতর আহত তিনজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান মিজানুর। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিহাব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত