Ajker Patrika

কৈলাসটিলা-২ থেকে দিনে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৩, ২২: ৪৩
কৈলাসটিলা-২ থেকে দিনে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু 

সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেড (এসজিএফএল) আজ বুধবার রাত থেকে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। এসজিএফএলের অধীন গোলাপগঞ্জের কৈলাসটিলা গ্যাসক্ষেত্রের ২ নম্বর কূপ থেকে এই গ্যাস সরবরাহ করা হবে। কৈলাসটিলা-২ নম্বর কূপে ৫ হাজার ৩০০ কোটি বা ৫৩ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে। গ্যাসের সঙ্গে এই কূপ থেকে উপজাত হিসেবে দৈনিক ৭০ ব্যারেল কনডেনসেট পাওয়া যাবে।

বুধবার সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন এসজিএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কৈলাসটিলা-২ নম্বর কূপে ৫৩ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত আছে। প্রতিদিন ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। তবে এখনো জাতীয় গ্রিডে পাঠানো হয়নি। পরীক্ষা করা হচ্ছে। আশা করা যায়, রাত থেকে জাতীয় গ্রিডে পাঠানো যাবে।’

মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বা সচিব আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বিষয়টি অবগত হয়েছেন, জ্বালানিসচিবকে জানানো সম্ভব হয়নি, উনি মিটিংয়ে আছেন। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকে লিখে আমি জানিয়েছি। আমরা কখন দেব, সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। কারণ, আমাদের একটা প্রস্তুতির বিষয় আছে।’

এর আগে বুধবার বেলা আড়াইটায় শিখা প্রজ্বালনের মাধ্যমে ২০২১ সাল থেকে বন্ধ থাকা কৈলাসটিলা-২ কূপে আনুষ্ঠানিক উত্তোলন শুরু হয়। এই কূপে মজুত থাকা ৫৩ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের আনুমানিক বাজারমূল্য ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর এলএনজি দর বিবেচনায় ৯ হাজার ৯ কোটি টাকা।

এসজিএফএল সূত্র জানায়, গোলাপগঞ্জের কৈলাসটিলা-২ নম্বর কূপ থেকে দীর্ঘদিন গ্যাস উত্তোলন বন্ধ ছিল। জ্বালানির সংকট নিরসনে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে দেশের ৪৬টি কূপ অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের পরিকল্পনা নেয় সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে এসব খননকাজ শেষ হওয়ার কথা। এতে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসজিএফএলের আওতাধীন সিলেটের ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখননের কাজ শুরু হয়। তিনটি পরিত্যক্ত কূপ পুনঃখনন শেষে গত বছর থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। সিলেট-৮, কৈলাসটিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১ কূপ থেকে বর্তমানে দিনে ১১ মিলিয়ন বা ১ কোটি ১০ লাখ ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করছে এসজিএফএল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ জুলাই কৈলাসটিলার পরিত্যক্ত ২ নম্বর কূপ পুনঃখনন শুরু হয়। ১৪ নভেম্বর কূপের ৩ হাজার ২৬২ মিটার নিচে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এসজিএফএলের নিজস্ব অর্থায়নে কৈলাসটিলা-২ কূপের ওয়ার্কওভারে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

এ ছাড়া গত ২৪ জুন এসজিএফএলের আওতাধীন হরিপুরের সিলেট-১০ নম্বর কূপেও পুনঃখনন শুরু হয়। শিগগির এই কূপ থেকে দিনে ১০ মিলিয়ন বা ১ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। একইভাবে রশিদপুর-২ নম্বর কূপ পুনঃখনন শুরুর সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ। শিগগির কাজ শুরু হবে এবং তিন মাসের মধ্যে এ কূপ থেকে দৈনিক দেড় কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।

সব মিলিয়ে এসজিএফএলের আওতাধীন উৎপাদিত কূপের সংখ্যা ১৩। কূপগুলো থেকে প্রতিদিন ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১০০ কোটি টাকা।

১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর আবিষ্কার হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে দেশে ২৮টি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এগুলোর মধ্যে এসজিএফএলের আওতায় আছে ৫টি। সেগুলো হলো হরিপুর গ্যাসফিল্ড, রশিদপুর গ্যাসফিল্ড, ছাতক গ্যাসফিল্ড, কৈলাসটিলা গ্যাসফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাসফিল্ড। এগুলোর মধ্যে ছাতক গ্যাসফিল্ড পরিত্যক্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত