Ajker Patrika

সুনামগঞ্জের ৫ আসনের চারটিতেই নৌকার জয়, একটিতে স্বতন্ত্র

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের ৫ আসনের চারটিতেই নৌকার জয়, একটিতে স্বতন্ত্র

সুনামগঞ্জের পাঁচটি নির্বাচনী আসনের বেসরকারি ফলাফলে চারটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। আর একটিতে জয়ী হয়েছেন কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী। জেলার পাঁচ আসনে মোট ৪১ দশমিক ৯৮ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে। মোট ভোট দিয়েছেন ৮ লাখ ৬ হাজার ৯০৭ জন। 

সুনামগঞ্জ-১: (ধর্মপাশা, মধ্যনগর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার (নৌকা প্রতীক) বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। গতকাল রোববার রাতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। 

নৌকা প্রতীকে রনজিত সরকার মোট ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৭১। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন (কেটলী প্রতীক) পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৩১১ ভোট এবং ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিম আহমদ ৪৬ হাজার ৭৪৭ ভোট পেয়েছেন। অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নবাব সালেহ পেয়েছেন ১৪৬ ভোট, আব্দুল মান্নান তালুকদার পেয়েছেন ৩১২ ভোট, আশরাফ আলী ৩৭৯ ভোট, মো. জাহানূর রশিদ ৮১ ভোট ও হারিছ মিয়া ৭৩২ ভোট পেয়েছেন। 

সুনামগঞ্জ-২: (দিরাই-শাল্লা) আসনে কাঁচি প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা। তিনি পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৭৭৫ ভোট। তাঁর নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল-আমিন চৌধুরী) নৌকা প্রতীকে ৫৮ হাজার ৬৭২ ভোট পেয়েছেন। 

এ আসনটি থেকে অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মধ্যে কবুতর প্রতীক নিয়ে গণতন্ত্রী পার্টির মিহির রঞ্জন দাস পেয়েছেন ২৪৯ ভোট এবং আওয়ামী লীগের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান ঈগল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬৮ ভোট। এ আসনটিতে ভোট কাস্ট হয়েছে ৪১ দশমিক ৩২ শতাংশ। 

সুনামগঞ্জ-৩: (শান্তিগঞ্জ-জগন্নাথপুর) আসনে ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৯৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তাঁর নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরী পেয়েছেন মাত্র ৪ হাজার ৯৫ ভোট। 

সুনামগঞ্জ-৪: জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের কেন্দ্রের ফলাফলের ভিত্তিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে ড. মোহাম্মদ সাদিক পেয়েছেন ৯০ হাজার ৩৫২ ভোট এবং তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ পেয়েছেন ৩১ হাজার ৭১৮ ভোট। 

এ আসন থেকে অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে এনামুল কবির ইমন ১২৬ ভোট, বিএনএম পার্টির দেওয়ান শামছুল আবেদীন পেয়েছেন ১৮৭ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. দিলোয়ার পেয়েছেন ৪০০ ভোট, আওয়ামী লীগের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবারক হোসেন পেয়েছেন ১ হাজার ৪৭৭ ভোট। এ আসনটিতে ভোট কাস্ট হয়েছে ৩৬.৩৫ শতাংশ। 

সুনামগঞ্জ-৫: (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনে মহিবুর রহমান মানিক ১ লাখ ১৯ হাজার ৪০৩ ভোট নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থীর শামীম চৌধুরীর পেয়েছেন ৯১ হাজার ৮৮৮ ভোট। এ ছাড়া নির্বাচনে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আইয়ুব করম আলী ৫৬৯ ভোট, আবু সালেহ ৩০৭ ভোট, মনির উদ্দিন ২০৪ ভোট, আজিজুল হক ৩৬১ ভোট, আশরাফ হোসেন ৫৯ ভোট, নাজমুল হুদা হিমেল ৮২২ ভোট, আব্দুল জলিল ১৬৪ ভোট পেয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সড়কে পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশি, অতঃপর ছিনতাই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর-আড্ডা জেলা সড়কে পুলিশ পরিচয়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে তল্লাশির নামে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নেয়ামতপুর থেকে কানসাট যাওয়ার পথে রহনপুর-আড্ডা সড়কের নজরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় চার ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই সড়কে সন্ধ্যার পর প্রায়ই অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা দেখা যায়, যা নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এ ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ভুক্তভোগী মোটরসাইকেলচালকের নাম রাব্বি হোসেন রাজা। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার বিশ্বনাথপুর গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে।

জানতে চাইলে রাব্বি বলেন, ‘আমি নেয়ামতপুর থেকে কানসাট যাচ্ছিলাম। নজরপুর ব্রিজের কাছে পৌঁছালে চার ব্যক্তি আমাকে থামায়। তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তল্লাশি শুরু করে এবং আমার দুটি মোবাইল নিয়ে নেয়। মোবাইল ফেরত চাইলে তারা হুমকি দিয়ে বলে—“চলে যা, না হলে তোকে নিয়ে যাব।” এরপর তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।’

এ বিষয়ে গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওদুদ আলম বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ পাইনি। অনেক সময় মাদকদ্রব্য ব্যবসায়ী বা আনসার-ভিডিপি সদস্যরাও পুলিশ পরিচয় দেয়। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’ ওসি আরও বলেন, ‘এখন একটি খেলায় আছি। ভুক্তভোগীকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ধ্যার পর গ্রামে প্রবেশ করলেই চোর হিসেবে আটকের ঘোষণা

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি 
সন্ধ্যার পর গ্রামে প্রবেশ করলেই চোর হিসেবে আটকের ঘোষণা

রংপুরের মিঠাপুকুরে সন্ধ্যার পর অপরিচিত কেউ গ্রামে প্রবেশ করলেই ‘চোর’ হিসেবে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কাশিপুর জামে মসজিদ কমিটি। সাম্প্রতিক সময়ে গরু চুরি ও মাদক ব্যবসা বেড়ে যাওয়ায় আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

মসজিদের মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাশিপুর গ্রামে বিশেষ করে ইয়াবা বেচাকেনা বেড়ে যাওয়ায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বহিরাগতদের আনাগোনা দেখা যায়। গত বুধবার রাতে গ্রামের আজহারুল ইসলামের গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হওয়ার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মসজিদে অনুষ্ঠিত আলোচনায় মুসল্লিরা বলেন, মাদক বেচাকেনার কারণে গ্রামে অপরাধ বেড়েছে। উঠতি বয়সের তরুণেরা জড়িয়ে পড়ছে মাদকে, ফলে বহিরাগত ব্যক্তিদের যাতায়াতও বাড়ছে। এতে গ্রামের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে।

মসজিদের মুসল্লি আশিকুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিনই বহিরাগত লোকজন আসে। ইয়াবার কারবার চলে। সাম্প্রতিক চুরির ঘটনাও বেড়েছে। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, সন্ধ্যার পর কোনো অচেনা লোককে দেখা গেলে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’

অন্য মুসল্লি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইয়াবা বিক্রির কারণেই বাইরে থেকে লোক আসে। এখন যৌক্তিক কারণ ছাড়া সন্ধ্যার পর গ্রামে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইয়াছিন আলী বলেন, ‘সামাজিক অবক্ষয় ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে বলা হয়েছে। গ্রামের নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘শীত আসায় কুয়াশার সুযোগে ছিঁচকে চোরদের তৎপরতা কিছুটা বেড়েছে। স্থানীয়দের উচিত মাদক কারবারি ও অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করা। তবে কোনো অবস্থাতেই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুবির হলে দুই জুনিয়রের বিরুদ্ধে সিনিয়র শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ

কুবি প্রতিনিধি 
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে দুই জুনিয়র শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এক সিনিয়র শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম হৃদয়ের দাবি, গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি প্রক্টরিয়াল বডির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

দ্বীন ইসলাম ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন বাংলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রোমান মিয়া এবং মো. ইউনূস আলী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলামের একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে তিনি দাবি করেন, ১৯ অক্টোবর হলের ১০৪ নম্বর কক্ষ থেকে ১০৩ নম্বর কক্ষে শিফট হচ্ছিলেন তিনি। এ সময় ১০৩ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী রোমান এবং ইউনূস তাঁর সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেন এবং টেবিল চাপড়ে তাঁকে মারতে আসেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাঁর পোস্টে আরও দাবি করেন, এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০ অক্টোবর হল প্রশাসন রোমান ও ইউনূসকে ডেকে তাঁদের সিট বাতিল করে এবং ২১ তারিখের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। পরবর্তী সময়ে ২২ অক্টোবর হল প্রশাসন থেকে তাঁকে জানানো হয়, রোমান ও ইউনূস হলে থাকবে। এ ছাড়া ২০ অক্টোবর ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের এক শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে হুমকি দেন বলেও অভিযোগ তোলেন দ্বীন ইসলাম। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার অভিযোগ তুলে গতকাল হল প্রভোস্টের মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে একটি অভিযোগ করার কথা জানান দ্বীন ইসলাম।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রোমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। উনি (দ্বীন ইসলাম) হুট করে আমাদের রুমে ওঠেন। তখন আমি জানতে চাই, আমাদের রুমে তো অলরেডি ৮ জন আছে, সেখানে আরও একজন কেন উঠবেন?’ তখন তিনি বলেন, ‘তিনি প্রশাসনের মাধ্যমে উঠেছেন। এরপর আমি বলছি, সবাই তো প্রশাসনের মাধ্যমে ওঠে। তারপর তিনি কিছুই না বলে প্রভোস্ট স্যারের কাছে বিচার দেন। পরদিন প্রভোস্ট স্যার আমাদেরকে ডাকান এবং সব কথা শুনে আমাদের দুজনের হলের সিট বাতিল করে দেন। এরপর সন্ধ্যায় আবার ফোন করে বলের এবারের মতো আমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। পরবর্তী সময়ে আর এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন।’ কোনো দোষ না করলে হল প্রশাসন সিট বাতিল করবে কেন—জানতে চাইলে রোমান বলেন, ‘আমাদের রুমে ৮ জন থাকার পরও আরেকজন কেন উঠবে, সেটা জানতে চাওয়ায় আমার সিট বাতিল করেছিল।’

অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী ইউনূস বলেন, ‘উনি (দ্বীন ইসলাম) যখন আমাদের রুমে আমার পাশের সিটে উঠছেন, তখন ওই সিটে অলরেডি একজন আছে। আমি জানতে চাইলাম, যে অলরেডি আছে তার সঙ্গে কথা বলেছেন কি না? তখন তিনি বলেন, তিনি প্রশাসনের মাধ্যমে উঠেছেন। এরপর আমি বললাম, প্রশাসনের মাধ্যমে উঠলেও এই সিটে যে আছে তার সঙ্গে কথা বলা উচিত। তখন তিনি কিছু না বলে প্রভোস্ট স্যারের কাছে বিচায় দেন। পরদিন প্রভোস্ট স্যার আমাদের সবার কথা শুনে রোমান আর আমার সিট বাতিল করে দেন। পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যায় স্যার আবার ফোন দিয়ে বলেন, আমাদেরকে এবারের মতো ক্ষমা করেছেন। আর যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এবং আমাদেরকে হলে থাকতে বলেন।’ কোনো অপরাধ না করলে হলের সিট বাতিল করা হলো কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আপনি প্রভোস্ট স্যারের সঙ্গে কথা বলেন কেন বাতিল করেছেন।’

অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সিট বাতিল করার বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। প্রক্টর অফিসে একটা অভিযোগ দিয়েছে শুনেছি। আগামী রোববার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল হাকিম বলেন, ‘অভিযোগপত্রটি এখনো আমার হাতে আসেনি। তবে আমি খোঁজখবর নিয়েছি। আগামী রোববার অভিযোগপত্র হাতে পেলে বিষয়টি দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোনামুখী মেলায় রমরমা জুয়া, জানে না পুলিশ

সিরাজগঞ্জ ও কাজীপুর প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের সোনামুখী মেলায় রমরমা জুয়ার আসর। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের সোনামুখী মেলায় রমরমা জুয়ার আসর। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সোনামুখী মেলায় চলছে রমরমা জুয়ার আসর। রাতভর চলে এই জুয়া খেলা, অথচ স্থানীয় পুলিশ বলছে—তারা কিছুই জানে না। তবে জুয়ার আয়োজকেরা দাবি করছেন, ‘সবাইকে ম্যানেজ করেই’ প্রকাশ্যে এমন আয়োজন চলছে।

জানা গেছে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রায় তিন শ বছর ধরে বসে ঐতিহ্যবাহী সোনামুখী মেলা। এবারও জেলা প্রশাসনের অনুমতিতে মেলা বসে, আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) শেষ দিন। শর্ত ছিল—এখানে অশ্লীল নাচ-গান, যাত্রা, সার্কাস, জুয়া বা মাদকসংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম চলবে না। কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে প্রকাশ্যে চলছে জুয়া। তবে অনেকের দাবি, আজ মেলার শেষ দিন হলেও জুয়া খেলা চলতে পারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সোনামুখী উচ্চবিদ্যালয়ের দক্ষিণে নিশি বাড়ি (সোনামুখী শ্মশান ঘাট) এলাকায় বসেছে এই জুয়ার আসর। অন্তত অর্ধশতাধিক জুয়াড়ি সেখানে জুয়া খেলায় মত্ত। বক্সে থাকা পাঁচটি ঘুঁটি নেড়ে ফেলা হয়, তারপর জুয়াড়িরা তাতে টাকা রাখেন। ঘুঁটিতে তাসের হরতন, রুইতন, টেক্কা, চিড়া ইত্যাদি প্রতীক থাকে। চারপাশে ভিড় জমেছে শত শত দর্শকের। সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু হলেও কেউ কেউ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাজি ধরছেন।

স্থানীয় আসাদুল নামের এক জুয়াড়ি বলেন, প্রতিদিন এখানে জুয়ার আসর বসে। রাত ৮টা থেকে ভোর পর্যন্ত চলে। দূরদূরান্ত থেকে লোক আসে। রতন নামের আরও এক ব্যক্তি বলেন, এখানে প্রতি রাতে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়। কেউ লাভ করে, আবার অনেকে নিঃস্ব হয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বাবলু নামের এক ব্যক্তি পুরো আসর নিয়ন্ত্রণ করেন। সিএনজি করে লোকজন আসেন। বাবলুই সব ম্যানেজ করেছেন। এক স্থানীয় নরসুন্দর বলেন, ‘আমরা দেখতে এসেছি। কেউ ৫০০ টাকা দিয়ে ১৫ হাজার জিতছে, আবার কেউ এক রাতে ৬ হাজার টাকায় লস দিচ্ছে।’

জানতে চাইলে জুয়ার আসর নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে পরিচিত কাজীপুর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সোনামুখীর বাসিন্দা বাবলু মিয়া নির্দ্বিধায় বলেন, ‘সবাইকে ম্যানেজ করেছি—থানা-পুলিশ, সাংবাদিক, সবাই। যত দিন পারি, চালাব।’

মেলার ইজারাদার বিএনপি নেতা ফজলুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, ‘মেলায় এমন কোনো ঘটনার কথা জানি না। পুলিশ নিয়মিত টহলে থাকে। খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল, তবে কাউকে আটক করা যায়নি।’

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন, মেলায় জুয়া চালানোর অনুমতি নেই। কেউ চালালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জুয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমরা অবশ্যই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত