Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁওয়ের রামদাড়া নদীর পুরোনো সেতু ঝুঁকিপূর্ণ, আতঙ্কে হাজারো মানুষ

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও 
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ২৪
চার দশকের পুরোনো সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চার দশকের পুরোনো সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব বেগুনবাড়ী নতুনপাড়া গ্রামের রামদাড়া নদীর ওপর নির্মিত প্রায় চার দশকের পুরোনো একটি সেতু এখন এলাকাবাসীর আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেতুটি নড়বড়ে হয়ে পড়ায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে হাজারো মানুষ। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

১৯৮০-র দশকে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে সেতুটি মূলত হেঁটে পারাপারের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে যানবাহন চলাচল করায় এর কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেতুর পাটাতন খসে পড়েছে এবং বড় কোনো গাড়ি উঠলেই এটি থরথর করে কেঁপে ওঠে।

এলাকার ব্যবসায়ী মাঈনুদ্দিন বলেন, ‘সেতুর অবস্থা খুবই ভয়াবহ। বড় গাড়ি উঠলে মনে হয় এখনই ভেঙে পড়বে। দ্রুত একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’ ভ্যানচালক রাব্বানী জানান, একসঙ্গে দুটি ভ্যান চলাচল করা সম্ভব হয় না। একটি ভ্যান উঠলে অন্যটিকে নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

এই সেতুর পূর্ব পাশে দুটি বিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে এটি পার হয় শিক্ষার্থীরা। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হামিম, রাইসুল ও জমিরুল জানায়, তারা প্রতিদিন মনে ভয় থাকে, সেতুটি ভেঙে নদীতে পড়ে যায় কি না। এখানে নতুন ব্রিজ খুব দরকার বলে তারা মনে করে।

কৃষিপ্রধান এই এলাকায় ভারী যান চলাচল বন্ধ থাকায় কৃষকদের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। স্থানীয় কৃষকদের ধান, ভুট্টা, সরিষা, পাটসহ উৎপাদিত ফসল রিকশাভ্যানে করে বাজারে নিতে হচ্ছে, এতে সময় ও খরচ দুটোই বাড়ছে।

চার দশকের পুরোনো সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চার দশকের পুরোনো সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কৃষক মনসুর আলী বলেন, ‘ফসল নিয়ে সেতুতে উঠতে ভয় লাগে। ধান কাটার আধুনিক যন্ত্র (হারভেস্টার মেশিন) এই সেতু দিয়ে পার করা যায় না, তাই নদীর তলদেশ দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। এতে সময় ও শ্রম অনেক বেশি লাগে।’

আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে গেলে আমাদের ফসলও নদীতে পড়তে পারে। এখন বড় কোনো গাড়ি উঠলেই সেতু কেঁপে ওঠে। দ্রুত নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণ করা না হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।’

এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রকৌশলী মাবুদ হোসেন বলেন, ‘সেতুটি হাঁটার জন্য নির্মিত হয়েছিল, এখন এটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত