Ajker Patrika

টিকিট কালেক্টরের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ, ট্রেন আটকে রাখল সহপাঠীরা 

দিনাজপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image

ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী একতা ট্রেনের টিকিট কালেক্টরের বিরুদ্ধে হাবিপ্রবির এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ রোববার রাতে দিনাজপুর স্টেশনে ট্রেন আটকিয়ে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট আলোচনা করে বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। পরে রাত ৯টা ১৪ মিনিটে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি দিনাজপুর স্টেশন ছেড়ে যায়। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের লেভেল-২, সেমিস্টার-১ এর শিক্ষার্থী। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। 

শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ রোববার সকালে তার এক আত্মীয়সহ দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন। যাত্রী দুজন হলেও তাদের কাছে বৈধ টিকিট ছিল একটি। যার নম্বর ছিল চ-২৪। ট্রেনে উঠে তিনি আত্মীয়কে নির্দিষ্ট আসনে বসিয়ে দিয়ে নিজে ‘ঞ’ বগিতে ওঠেন। প্রায় দেড়ঘন্টা পরে টিকিটি কালেক্টর মতিউর রহমান টিকিট দেখতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাক জানান, যাত্রী দুজন হলেও তাদের কাছে একটি টিকিট আছে। মতিউর তার কাছে একজনের ভাড়া চাইলে তিনি বলেন, তার কাছে টাকার স্বল্পতা আছে। ভিড়ের মধ্যে চুরি যাওয়ার ভয়ে টাকা আসনের মধ্যে ব্যাগে রাখা আছে। ভিড়ের কারণে আনতে পারছেন না। পরে টিকিট কালেক্টর তাঁকে টিকিট কাটার জন্য বলতে থাকেন। 

এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একপর্যায়ে বগিতে থাকা এটেনডেন্টসহ তাকে মারধর করে তার মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। প্রায় এক ঘণ্টা পরে রেল পুলিশের সহায়তায় মুঠোফোন ফেরত পেয়ে তিনি ফেসবুকে লাইভে এসে ঘটনার কথা জানিয়ে বিচার দাবি করেন।’ 

দিনাজপুর স্টেশনে ট্রেন আটকিয়ে রাখে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা এদিকে তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা একত্রিত হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে দিনাজপুর স্টেশনে জড়ো হন। রাত সাড়ে ৮টায় একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ালে শিক্ষার্থীরা ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে অবরোধ করেন ও বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ট্রেনের ভেতরে থাকা যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। 

পরে বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী প্রক্টর রবিউল ইসলাম, রুবায়েত আল ফেরদৌস, শামীম হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মমিনুল করিম, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ হোসেন, দিনাজপুর রেলস্টেশনের সুপারিনন্টেন্টে এবিএম জিয়াউর রহমান অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মীমাংসায় বসেন। টিকিট কালেক্টর মতিউর রহমানের এমন আচরণের তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আশ্বাস পেয়ে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। 

দিনাজপুর স্টেশন সুপার এবিএম জিয়াউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যত দূর জানতে পেরেছি ওই শিক্ষার্থীর কাছে বৈধ টিকিট ছিল না। তাকে টিকিট কাটতে বলায় উভয়ের মধ্যে বাক বিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত