Ajker Patrika

রেল ইঞ্জিনের সংকটে আসছে না তেল

  • আগস্টে চাহিদা ছিল আড়াই কোটি লিটার, সরবরাহ ৩০ লাখ লিটার।
  • জ্বালানি তেল না থাকায় ফাঁকা পড়ে আছে ডিপোগুলো।
  • খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় কমিশনারকে চিঠি দিয়েও কাজ হয়নি।
শিপুল ইসলাম, রংপুর 
রেল ইঞ্জিনের সংকটে আসছে না তেল

চট্টগ্রাম থেকে রংপুরের তিনটি ডিপোতে নিয়মিত তেল সরবরাহ না হওয়ায় রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় তীব্র জ্বালানি তেল সংকটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে রেলওয়ের ইঞ্জিন সংকটকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

রংপুরে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ডিপো থেকে রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারীতে তেল সরবরাহ হয়ে থাকে। গত আগস্ট মাসে যেখানে মাসিক চাহিদা আড়াই কোটি লিটার, সেখানে সরবরাহ হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ লিটার। ছয় মাস ধরে এ অবস্থা চলে আসছে। ফলে তিন ডিপোর অধীনে থাকা পেট্রলপাম্পের মালিক ও এজেন্টদের চাহিদামতো তেল সরবরাহ করা হচ্ছে না।

পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানান, রেলওয়ের পর্যাপ্ত ইঞ্জিন না থাকায় চট্টগ্রাম থেকে তেলবাহী ওয়াগন সময়মতো ছাড়তে পারছে না। ফলে রংপুর ডিপোগুলো প্রায় ফাঁকা পড়ে আছে।

রংপুর জেলা পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আজিজুর ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘পাঁচ মাস ধরে চাহিদার তুলনায় অনেক কম তেল আসছে রংপুরের ডিপোতে। রংপুর থেকে আমরা তেল পাচ্ছি না। আমরা চাই, আগের মতো নিয়মিত এখানে তেল সরবরাহ হোক। এভাবে তেল আসা বন্ধ থাকলে কৃষি, কলকারখানা থেকে শুরু করে সব খাতে মারাত্মকভাবে প্রভাব পড়বে।’

রংপুর নগরীর চারতলা মোড় এলাকার মিজান ফিলিং স্টেশনের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, ‘রংপুরের ডিপো থেকে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। ট্রেনের ওয়াগনে করে তেল না আসায় তেলের সংকট রয়েছে। আমরা চট্টগ্রাম, পার্বতীপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে তেল নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এতে করে আমাদের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রংপুর ডিপো থেকে তেল পেলে খরচ অনেক কম হতো।’

নগরীর ফিলিং স্টেশনের মালিক মঞ্জুর আজাদ বলেন, রংপুর ডিপোতে তেল না থাকায় পার্বতীপুর ও বাঘাবাড়ী থেকে তেল আনতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে এবং সিরিয়াল মেনে তেল সংগ্রহ করতে দু-তিন দিন সময় লাগছে। এতে শুধু ব্যবসায়ী নয়; কৃষি ও পরিবহন খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এদিকে জ্বালানি তেল পর্যাপ্ত না আসায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এই খাতের শ্রমিকেরা। এ প্রসঙ্গে রংপুর ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলাউল মিয়া লাল্লু বলেন, ‘ডিপোতে তেল না থাকায় ছয় শতাধিক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাদের জীবন এখন সংকটে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি। কোনো কাজ হয়নি। দ্রুত নিয়মিত সরবরাহ না হলে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’

রংপুরে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন রংপুর জেলার পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর এবং রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এতেও কোনো কাজ হয়নি।

জানতে চাইলে মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপোর ইনচার্জ জাকির হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমাদের পর্যাপ্ত তেল রয়েছে। সেখান থেকে তেল পাঠাতে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে, লোকোমোটিভ ইঞ্জিনের কারণে তেল পাঠাতে পারছে না। আমাদের মাসে ২৫ লাখ লিটার চাহিদা থাকলেও আমরা পাচ্ছি ৫ লাখ লিটার। এ সংকট নিরসনের জন্য হেড অফিস থেকে ডিজিএম, জিএম স্যাররা রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। রেল থেকে ইঞ্জিন সংকটের কথাই বলা হচ্ছে।’

পদ্মার পেট্রোলিয়াম ডিপোর ইনচার্জ আমিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দুটি ইঞ্জিন ছিল। আগে মাসে ৮ থেকে ১০ বার তেল আসত। দুটি থেকে একটি করল, তাতেও ৪ থেকে ৫ বার তেল আসত। কিন্তু সেই ইঞ্জিনও কেটে নিয়ে গেছে; যার কারণে এই গ্যাপ হয়েছে। রংপুরে তিন ডিপো মিলে প্রায় আড়াই কোটি লিটার তেলের চাহিদা। কিন্তু আমরা পাচ্ছি ৩০ লাখ লিটারের মতো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হেরোইনসহ দুই মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
হেরোইনসহ গ্রেপ্তার দুই মাদক কারবারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
হেরোইনসহ গ্রেপ্তার দুই মাদক কারবারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ৫০০ গ্রাম হেরোইনসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌরসভার কুঠিপাড়া এলাকার পদ্মা নদীর ধারে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ শুক্রবার সকালে জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজন হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বকচর গ্রামের গোলাম মোস্তফা (৪৬) ও আব্দুর বশির (৪০)।

পুলিশ জানায়, তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি প্যাকেটে রাখা ৫০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে। এর বাজারমূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, গ্রেপ্তার দুজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সীমান্ত এলাকা থেকে মাদক এনে সরবরাহের কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। আজ তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সড়কে পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশি, অতঃপর ছিনতাই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর-আড্ডা জেলা সড়কে পুলিশ পরিচয়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে তল্লাশির নামে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নেয়ামতপুর থেকে কানসাট যাওয়ার পথে রহনপুর-আড্ডা সড়কের নজরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় চার ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই সড়কে সন্ধ্যার পর প্রায়ই অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা দেখা যায়, যা নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এ ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ভুক্তভোগী মোটরসাইকেলচালকের নাম রাব্বি হোসেন রাজা। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার বিশ্বনাথপুর গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে।

জানতে চাইলে রাব্বি বলেন, ‘আমি নেয়ামতপুর থেকে কানসাট যাচ্ছিলাম। নজরপুর ব্রিজের কাছে পৌঁছালে চার ব্যক্তি আমাকে থামায়। তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তল্লাশি শুরু করে এবং আমার দুটি মোবাইল নিয়ে নেয়। মোবাইল ফেরত চাইলে তারা হুমকি দিয়ে বলে—“চলে যা, না হলে তোকে নিয়ে যাব।” এরপর তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।’

এ বিষয়ে গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওদুদ আলম বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ পাইনি। অনেক সময় মাদকদ্রব্য ব্যবসায়ী বা আনসার-ভিডিপি সদস্যরাও পুলিশ পরিচয় দেয়। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’ ওসি আরও বলেন, ‘এখন একটি খেলায় আছি। ভুক্তভোগীকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ধ্যার পর গ্রামে প্রবেশ করলেই চোর হিসেবে আটকের ঘোষণা

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি 
সন্ধ্যার পর গ্রামে প্রবেশ করলেই চোর হিসেবে আটকের ঘোষণা

রংপুরের মিঠাপুকুরে সন্ধ্যার পর অপরিচিত কেউ গ্রামে প্রবেশ করলেই ‘চোর’ হিসেবে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কাশিপুর জামে মসজিদ কমিটি। সাম্প্রতিক সময়ে গরু চুরি ও মাদক ব্যবসা বেড়ে যাওয়ায় আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

মসজিদের মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাশিপুর গ্রামে বিশেষ করে ইয়াবা বেচাকেনা বেড়ে যাওয়ায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বহিরাগতদের আনাগোনা দেখা যায়। গত বুধবার রাতে গ্রামের আজহারুল ইসলামের গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হওয়ার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মসজিদে অনুষ্ঠিত আলোচনায় মুসল্লিরা বলেন, মাদক বেচাকেনার কারণে গ্রামে অপরাধ বেড়েছে। উঠতি বয়সের তরুণেরা জড়িয়ে পড়ছে মাদকে, ফলে বহিরাগত ব্যক্তিদের যাতায়াতও বাড়ছে। এতে গ্রামের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে।

মসজিদের মুসল্লি আশিকুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিনই বহিরাগত লোকজন আসে। ইয়াবার কারবার চলে। সাম্প্রতিক চুরির ঘটনাও বেড়েছে। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, সন্ধ্যার পর কোনো অচেনা লোককে দেখা গেলে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’

অন্য মুসল্লি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইয়াবা বিক্রির কারণেই বাইরে থেকে লোক আসে। এখন যৌক্তিক কারণ ছাড়া সন্ধ্যার পর গ্রামে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইয়াছিন আলী বলেন, ‘সামাজিক অবক্ষয় ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে বলা হয়েছে। গ্রামের নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘শীত আসায় কুয়াশার সুযোগে ছিঁচকে চোরদের তৎপরতা কিছুটা বেড়েছে। স্থানীয়দের উচিত মাদক কারবারি ও অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করা। তবে কোনো অবস্থাতেই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুবির হলে দুই জুনিয়রের বিরুদ্ধে সিনিয়র শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ

কুবি প্রতিনিধি 
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে দুই জুনিয়র শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এক সিনিয়র শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম হৃদয়ের দাবি, গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি প্রক্টরিয়াল বডির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

দ্বীন ইসলাম ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন বাংলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রোমান মিয়া এবং মো. ইউনূস আলী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলামের একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে তিনি দাবি করেন, ১৯ অক্টোবর হলের ১০৪ নম্বর কক্ষ থেকে ১০৩ নম্বর কক্ষে শিফট হচ্ছিলেন তিনি। এ সময় ১০৩ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী রোমান এবং ইউনূস তাঁর সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেন এবং টেবিল চাপড়ে তাঁকে মারতে আসেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাঁর পোস্টে আরও দাবি করেন, এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০ অক্টোবর হল প্রশাসন রোমান ও ইউনূসকে ডেকে তাঁদের সিট বাতিল করে এবং ২১ তারিখের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। পরবর্তী সময়ে ২২ অক্টোবর হল প্রশাসন থেকে তাঁকে জানানো হয়, রোমান ও ইউনূস হলে থাকবে। এ ছাড়া ২০ অক্টোবর ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের এক শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে হুমকি দেন বলেও অভিযোগ তোলেন দ্বীন ইসলাম। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার অভিযোগ তুলে গতকাল হল প্রভোস্টের মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে একটি অভিযোগ করার কথা জানান দ্বীন ইসলাম।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রোমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। উনি (দ্বীন ইসলাম) হুট করে আমাদের রুমে ওঠেন। তখন আমি জানতে চাই, আমাদের রুমে তো অলরেডি ৮ জন আছে, সেখানে আরও একজন কেন উঠবেন?’ তখন তিনি বলেন, ‘তিনি প্রশাসনের মাধ্যমে উঠেছেন। এরপর আমি বলছি, সবাই তো প্রশাসনের মাধ্যমে ওঠে। তারপর তিনি কিছুই না বলে প্রভোস্ট স্যারের কাছে বিচার দেন। পরদিন প্রভোস্ট স্যার আমাদেরকে ডাকান এবং সব কথা শুনে আমাদের দুজনের হলের সিট বাতিল করে দেন। এরপর সন্ধ্যায় আবার ফোন করে বলের এবারের মতো আমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। পরবর্তী সময়ে আর এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন।’ কোনো দোষ না করলে হল প্রশাসন সিট বাতিল করবে কেন—জানতে চাইলে রোমান বলেন, ‘আমাদের রুমে ৮ জন থাকার পরও আরেকজন কেন উঠবে, সেটা জানতে চাওয়ায় আমার সিট বাতিল করেছিল।’

অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী ইউনূস বলেন, ‘উনি (দ্বীন ইসলাম) যখন আমাদের রুমে আমার পাশের সিটে উঠছেন, তখন ওই সিটে অলরেডি একজন আছে। আমি জানতে চাইলাম, যে অলরেডি আছে তার সঙ্গে কথা বলেছেন কি না? তখন তিনি বলেন, তিনি প্রশাসনের মাধ্যমে উঠেছেন। এরপর আমি বললাম, প্রশাসনের মাধ্যমে উঠলেও এই সিটে যে আছে তার সঙ্গে কথা বলা উচিত। তখন তিনি কিছু না বলে প্রভোস্ট স্যারের কাছে বিচায় দেন। পরদিন প্রভোস্ট স্যার আমাদের সবার কথা শুনে রোমান আর আমার সিট বাতিল করে দেন। পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যায় স্যার আবার ফোন দিয়ে বলেন, আমাদেরকে এবারের মতো ক্ষমা করেছেন। আর যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এবং আমাদেরকে হলে থাকতে বলেন।’ কোনো অপরাধ না করলে হলের সিট বাতিল করা হলো কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আপনি প্রভোস্ট স্যারের সঙ্গে কথা বলেন কেন বাতিল করেছেন।’

অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সিট বাতিল করার বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। প্রক্টর অফিসে একটা অভিযোগ দিয়েছে শুনেছি। আগামী রোববার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল হাকিম বলেন, ‘অভিযোগপত্রটি এখনো আমার হাতে আসেনি। তবে আমি খোঁজখবর নিয়েছি। আগামী রোববার অভিযোগপত্র হাতে পেলে বিষয়টি দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত