আনিছুর লাডলা, লালমনিরহাট
তিস্তা ও ধরলা নদীবেষ্টিত জেলা লালমনিরহাট। লালমনিরহাট জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে শত শত হেক্টর জমির বাদামখেত। গত মাসে ১৫ দিনের ব্যবধানে পরপর দুটি বন্যা হওয়ায় পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে লালমনিরহাটের চরাঞ্চলের কৃষকের খেতের বাদাম। ফলে উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না বাদামচাষিরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা তিস্তা আর ধরলা নদী। তিস্তা নদী জেলার দক্ষিণ দিয়ে পাঁচটি উপজেলার বুক চিড়ে বয়ে চলেছে আর খরস্রোতা ধরলা জেলার সদর উপজেলার উত্তর-পূর্ব দিক দিয়ে বয়ে চলেছে। সব মিলে নদী দুটি দুই দিক দিয়ে জেলার সীমান্তকে আগলে রেখেছে। বর্ষা মৌসুমে ধরলা আর তিস্তার খরস্রোতে প্রতিবছর গৃহহারা হচ্ছে শত শত পরিবার। ভিটেমাটি আর চাষাবাদের ফসলি জমি হারিয়ে আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে দুই নদীর তীরবর্তী মানুষ। বর্ষা শেষে শুষ্ক মৌসুমে মাঠের পর মাঠ বালুচরে পরিণত হয়।
কৃষকেরা জানান, জেলাজুড়ে প্রায় ৩৬টি চরাঞ্চল রয়েছে নদীর বুকে। শুষ্ক মৌসুমে কঠোর পরিশ্রম করে ধু ধু বালুর ওপর সবুজ ফসলে চরাঞ্চল ভরে তোলেন চাষিরা। শুষ্ক মৌসুমের এই স্বল্প সময়ে চাষাবাদের আয়ে চলে চরাঞ্চলের মানুষের সারা বছরের সংসার। কেউ ঋণ করে আবার কেউ বাকিতে বীজ, সার, কীটনাশক ক্রয় করে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করেন। ফসল উঠে গেলে ঋণ ও দোকানের পাওনা পরিশোধ করে বাকি সময়টুকু বিকল্প পেশায় আয়-রোজগার করে সংসারের চাকা সচল রাখেন।
কিন্তু এ বছর ঘটেছে উল্টো। ধু ধু বালুর ওপর হঠাৎ বন্যার আঘাত লাগে তিস্তাপাড়ে। আগাম বন্যায় অনেক ফসল ঘরে তুলতে পারেননি চরাঞ্চলের চাষিরা। এ ছাড়া শীতকালীন ফসল আলু, মিষ্টিকুমড়া, ভুট্টা, সবজি ও তামাক নষ্ট হয়েছে শিলাবৃষ্টিতে। পেঁয়াজ, রসুন, মরিচসহ বিভিন্ন সবজি চৈত্র মাসের আগাম বন্যায় ডুবে নষ্ট হয়েছে। বাকি ছিল চরাঞ্চলের বাদাম। সেই বাদামও চলতি মাসের টানা বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। সব মিলে এ বছর চরাঞ্চলের চাষিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
এ বছর শুষ্ক মৌসুমের কোনো ফসলই ঘরে তুলতে পারেননি চাষিরা। ফলে চলতি বছর ঋণ ও বাকিতে কেনা বীজ, সার ও কীটনাশকের টাকাও পরিশোধ করতে পারেননি অনেকে। শুষ্ক মৌসুমের ফসল রাখেন বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন সময়ের সম্বল হিসেবে। সেটাও এ বছর সঞ্চিত রাখতে পারেননি চাষিরা। ফলে নদীপাড়ের কৃষকের মাঝে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর গোকুণ্ডা গ্রামের বাদামচাষি আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘চরের বালু জমিতে কম খরচে অধিক মুনাফা পেতে বাদাম চাষের জুড়ি নেই। প্রতি ২৭ শতাংশ জমিতে বাদাম চাষে খরচ পড়ে মাত্র ৪ হাজার টাকা। আর বাদাম উৎপাদন হয় চার-পাঁচ মণ, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রতি মণ সাড়ে ৪ হাজার টাকা। গেল বছরও শুষ্ক মৌসুমের বিভিন্ন ফসল বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা পেয়েছি। এ বছর উৎপাদন খরচও পেলাম না। সব নষ্ট হয়েছে শিলাবৃষ্টি আর আগাম বন্যায়।’
একই এলাকার চাষি আবু হাসান জানান, ‘এক একর জমিতে বাদাম চাষ করেছি। কিছুদিন পরেই বাদাম ঘরে তুলতে পারতাম। এরই মধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে সব। পানি কমে যাওয়ায় কিছু বাদাম ডুবে ডুবে তুলেছি, যা আবার অঙ্কুরোদগম হতে শুরু করেছে। কিছু বাদাম পচে নষ্ট হচ্ছে। বেশির ভাগই বন্যায় বালুচাপা পড়ে নষ্ট হয়েছে। এবার লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠবে না। ঋণ আর বাকিতে কেনা সার-বীজের টাকা পরিশোধ নিয়ে পড়েছি বিপাকে।’
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের আমতলা এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘অন্যের দুই দোন (২৭ শতাংশে এক দোন) জমি বর্গা নিয়ে বাদাম আবাদ করেছিলাম। বন্যায় সব ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া বাদাম কিছু তুলতে পেরেছি। বাকিগুলো পলি পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।’
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মতিয়ার রহমান জানান, এ বছর চরাঞ্চলের কোনো কৃষক লাভবান হতে পারেননি। প্রতিটি ফসল শিলাবৃষ্টি আর বন্যায় নষ্ট হয়েছে। চরাঞ্চলজুড়ে কৃষক পরিবারে রয়েছে হাহাকার। খাদ্যের ঘাটতিসহ আর্থিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ। এসব মানুষকে পুনর্বাসনের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান মুকুল জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলায় গেল বন্যায় ৩৮৩ হেক্টর ফসলি জমি ডুবে ছিল, যার মধ্যে ২০১ হেক্টর জমির বাদাম, আউশ ধান, ভুট্টা, পাট ও আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৮ হাজার ৩০০ চাষিকে পুনর্বাসনের বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
তিস্তা ও ধরলা নদীবেষ্টিত জেলা লালমনিরহাট। লালমনিরহাট জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে শত শত হেক্টর জমির বাদামখেত। গত মাসে ১৫ দিনের ব্যবধানে পরপর দুটি বন্যা হওয়ায় পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে লালমনিরহাটের চরাঞ্চলের কৃষকের খেতের বাদাম। ফলে উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না বাদামচাষিরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা তিস্তা আর ধরলা নদী। তিস্তা নদী জেলার দক্ষিণ দিয়ে পাঁচটি উপজেলার বুক চিড়ে বয়ে চলেছে আর খরস্রোতা ধরলা জেলার সদর উপজেলার উত্তর-পূর্ব দিক দিয়ে বয়ে চলেছে। সব মিলে নদী দুটি দুই দিক দিয়ে জেলার সীমান্তকে আগলে রেখেছে। বর্ষা মৌসুমে ধরলা আর তিস্তার খরস্রোতে প্রতিবছর গৃহহারা হচ্ছে শত শত পরিবার। ভিটেমাটি আর চাষাবাদের ফসলি জমি হারিয়ে আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে দুই নদীর তীরবর্তী মানুষ। বর্ষা শেষে শুষ্ক মৌসুমে মাঠের পর মাঠ বালুচরে পরিণত হয়।
কৃষকেরা জানান, জেলাজুড়ে প্রায় ৩৬টি চরাঞ্চল রয়েছে নদীর বুকে। শুষ্ক মৌসুমে কঠোর পরিশ্রম করে ধু ধু বালুর ওপর সবুজ ফসলে চরাঞ্চল ভরে তোলেন চাষিরা। শুষ্ক মৌসুমের এই স্বল্প সময়ে চাষাবাদের আয়ে চলে চরাঞ্চলের মানুষের সারা বছরের সংসার। কেউ ঋণ করে আবার কেউ বাকিতে বীজ, সার, কীটনাশক ক্রয় করে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করেন। ফসল উঠে গেলে ঋণ ও দোকানের পাওনা পরিশোধ করে বাকি সময়টুকু বিকল্প পেশায় আয়-রোজগার করে সংসারের চাকা সচল রাখেন।
কিন্তু এ বছর ঘটেছে উল্টো। ধু ধু বালুর ওপর হঠাৎ বন্যার আঘাত লাগে তিস্তাপাড়ে। আগাম বন্যায় অনেক ফসল ঘরে তুলতে পারেননি চরাঞ্চলের চাষিরা। এ ছাড়া শীতকালীন ফসল আলু, মিষ্টিকুমড়া, ভুট্টা, সবজি ও তামাক নষ্ট হয়েছে শিলাবৃষ্টিতে। পেঁয়াজ, রসুন, মরিচসহ বিভিন্ন সবজি চৈত্র মাসের আগাম বন্যায় ডুবে নষ্ট হয়েছে। বাকি ছিল চরাঞ্চলের বাদাম। সেই বাদামও চলতি মাসের টানা বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। সব মিলে এ বছর চরাঞ্চলের চাষিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
এ বছর শুষ্ক মৌসুমের কোনো ফসলই ঘরে তুলতে পারেননি চাষিরা। ফলে চলতি বছর ঋণ ও বাকিতে কেনা বীজ, সার ও কীটনাশকের টাকাও পরিশোধ করতে পারেননি অনেকে। শুষ্ক মৌসুমের ফসল রাখেন বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন সময়ের সম্বল হিসেবে। সেটাও এ বছর সঞ্চিত রাখতে পারেননি চাষিরা। ফলে নদীপাড়ের কৃষকের মাঝে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর গোকুণ্ডা গ্রামের বাদামচাষি আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘চরের বালু জমিতে কম খরচে অধিক মুনাফা পেতে বাদাম চাষের জুড়ি নেই। প্রতি ২৭ শতাংশ জমিতে বাদাম চাষে খরচ পড়ে মাত্র ৪ হাজার টাকা। আর বাদাম উৎপাদন হয় চার-পাঁচ মণ, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রতি মণ সাড়ে ৪ হাজার টাকা। গেল বছরও শুষ্ক মৌসুমের বিভিন্ন ফসল বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা পেয়েছি। এ বছর উৎপাদন খরচও পেলাম না। সব নষ্ট হয়েছে শিলাবৃষ্টি আর আগাম বন্যায়।’
একই এলাকার চাষি আবু হাসান জানান, ‘এক একর জমিতে বাদাম চাষ করেছি। কিছুদিন পরেই বাদাম ঘরে তুলতে পারতাম। এরই মধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে সব। পানি কমে যাওয়ায় কিছু বাদাম ডুবে ডুবে তুলেছি, যা আবার অঙ্কুরোদগম হতে শুরু করেছে। কিছু বাদাম পচে নষ্ট হচ্ছে। বেশির ভাগই বন্যায় বালুচাপা পড়ে নষ্ট হয়েছে। এবার লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠবে না। ঋণ আর বাকিতে কেনা সার-বীজের টাকা পরিশোধ নিয়ে পড়েছি বিপাকে।’
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের আমতলা এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘অন্যের দুই দোন (২৭ শতাংশে এক দোন) জমি বর্গা নিয়ে বাদাম আবাদ করেছিলাম। বন্যায় সব ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া বাদাম কিছু তুলতে পেরেছি। বাকিগুলো পলি পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।’
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মতিয়ার রহমান জানান, এ বছর চরাঞ্চলের কোনো কৃষক লাভবান হতে পারেননি। প্রতিটি ফসল শিলাবৃষ্টি আর বন্যায় নষ্ট হয়েছে। চরাঞ্চলজুড়ে কৃষক পরিবারে রয়েছে হাহাকার। খাদ্যের ঘাটতিসহ আর্থিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ। এসব মানুষকে পুনর্বাসনের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান মুকুল জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলায় গেল বন্যায় ৩৮৩ হেক্টর ফসলি জমি ডুবে ছিল, যার মধ্যে ২০১ হেক্টর জমির বাদাম, আউশ ধান, ভুট্টা, পাট ও আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৮ হাজার ৩০০ চাষিকে পুনর্বাসনের বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
ঘন কুয়াশার কারণে প্রায় ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় দুই পথের উভয় প্রান্তে আটকা পড়ে অ্যাম্বুলেন্স, ব্যক্তিগত গাড়ি, যাত্রীবাহী বাসসহ দুই শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক।
১৭ মিনিট আগেরংপুরে ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একই স্থানে একে একে ছয়টি পরিবহন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে প্রাণহানির কোনো ঘটনা না ঘটলেও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহনগুলোর মধ্যে তিনটি যাত্রীবাহী বাসসহ ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান রয়েছে। গাড়িগুলো ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে...
১৯ মিনিট আগেচট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে বাসে-ট্রাকে করে মানুষ মাহফিলে আসতে থাকে। বিকেল ৪টা নাগাদ প্যারেড ময়দানের আশপাশের রাস্তাঘাট লোকারণ্য হয়ে যায়, বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। প্যারেড ময়দানসংলগ্ন চকবাজার তেলিপট্টি মোড় থেকে এক্সেস রোড, অলিখাঁ মোড় থেকে গণি বেকারির মোড় পর্যন্ত যানচলাচল সীমিত হয়ে পড়ে।
৩৫ মিনিট আগেমাঝনদীতে আটকা পড়া এসব ফেরিতে ১৫টির মতো যাত্রীবাহী বাস আছে। এসব বাসের যাত্রীরা কনকনে শীতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এদিকে পাটুরিয়া ঘাটে ৩০টির মতো যাত্রীবাহী বাস এবং শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়েছে।
১ ঘণ্টা আগে