Ajker Patrika

‘ধান বেচে উৎপাদন খরচ উঠছে না, হামরা বাঁচমু কী করে’

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও
‘ধান বেচে উৎপাদন খরচ উঠছে না, হামরা বাঁচমু কী করে’

ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন হাটবাজারে উঠতে শুরু করেছে আমন ধান। এবার আমনের বাম্পার ফলন হলেও চাষিদের মুখে হাসি নেই। কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা। 

কৃষকেরা বলছেন, বর্তমানে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়েছে কয়েক গুন বেশি। চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ডিজেল, সার ও কীটনাশকের দাম থেকে শুরু করে শ্রমিকের মজুরি প্রতিটি ক্ষেত্রেই খরচ বেড়েছে। এমন অবস্থায় উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় অন্যদিকে ধানের দাম কম পাওয়ায় এখন বড় অসহায় তাঁরা। 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খোচাবাড়ী বাজারে দৈনিক হাজার হাজার মণ ধান বেচা-কেনা হয়। সেখানে ধান বেচতে আসা কৃষক সাবিরুল ইসলাম বলেন, সরকার ধানের দাম ১ হাজার ২০০ টাকা মণ নির্ধারণ করলেও তাঁদের বেচতে হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়। 

এ হাটে ৭ মণ ধান বিক্রির জন্য এসেছেন কৃষক অরুন কুমার। প্রতি মণ ধান ৮০০ টাকা দরে ৫ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করেন। দামে হতাশ ও নির্বাক হয়ে তিনি বলেন, ‘ধানের বাজার দর এত কম হলে হামরা বাচমু কি করে! ন্যায্য দামটুকু না পাওয়ায় এবারও ঋণ-দেনা পরিশোধ হবে না।’ এ বলে কেঁদে ফেলেন তিনি। 

সদর উপজেলা জগন্নাথপুর এলাকার কৃষক আজগর আলী, মোশারফ হোসেন, আওয়াল শাহসহ ৭ থেকে ৮ জন কৃষক জানান, গত বোরো মৌসুমে এক বিঘা (৫০ শতাংশ) জমিতে বোরো উৎপাদনের খরচ ছিল ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকার মধ্যে। যা এ বছর সেচ, সার, কীটনাশক ও মজুরি বাড়ায় দাঁড়িয়েছে ২৮ থেকে ২৯ হাজার টাকায়। এর মধ্যে ডিজেলের দাম বাড়ায় সেচ খরচ বেড়েছে বিঘা প্রতি প্রায় ১ থেকে দেড় হাজার টাকা। সারের দাম বাড়ায় খরচ বেড়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, ডিজেল ছিল লিটার প্রতি ৮৫ টাকা তা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১২ টাকায়। 

এ ছাড়া বীজ ও কীটনাশক কিনতে হয়েছে চড়া দামে। ধান পরিচর্যা, কাটা শ্রমিকের মজুরি, মাড়াই ও পরিবহনসহ অন্য সব ধরনের খরচও বাড়তি। কয়েক দফায় সবকিছুর দাম বাড়লেও ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না তাঁরা। ধান বিক্রি করতে হচ্ছে উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে। 

হরিপুর আমগাঁও ইউনিয়নের কৃষক জব্বার হোসেন বলেন, ‘৫০ শতক জমিতে এবার খরচ পড়েছে ২৮ থেকে ২৯ হাজার টাকা। ওই জমিতে ধান পেয়েছি ২৫ মণ। বাজারে কাচা ধান প্রতি মণ বিক্রি করেছি ৯০০ টাকা দরে। মোট ২২ হাজার ৫০০ টাকায় ধান বিক্রি করেছি। সে হিসেবে বিঘা প্রতি (৫০ শতক) আমার লোকসান হলো ৬ হাজার ৫০০ টাকা। 

তিনি আরও বলেন, যাঁরা বর্গা নিয়ে জমি চাষ করেন তাঁদের এবার ঋণের জালে ডুবতে হবে। 

পাশের গেদুড়া ইউনিয়নের শফিকুল ইসলাম বলেন, খুচরা পর্যায়ে গতবার পটাশ সার ছিল ৭৫০ এবার ১ হাজার, ইউরিয়া ছিল ১ হাজার ১০০, বর্তমানে ১ হাজার ৩৫০, টিএসপি ১ হাজার ১৫০ এবার ১ হাজার ৩৫০ টাকায় কিনতে হয়েছে। এ ছাড়াও জমিনের পচন রোগসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার কীটনাশকের দাম বেড়েছে প্রায় কয়েক গুণ বেশি। 

দাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে একই এলাকার কৃষক শমসের আলী বলেন, ‘গত বছরও মোটা ধান (কাঁচা) মণ প্রতি পেয়েছি ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এবার ধান আবাদে খরচ বেশি হলেও মণ প্রতি দাম নিয়েছে ৯৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। ধান বিক্রি করে লোকসান হচ্ছে। এবার খরচের তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি, উল্টো কমেছে।’ 

এদিকে চলতি মৌসুমে ধানের দাম ঘোষণা করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এতে ধান ৩০ টাকা, চালের দাম ৪৪ টাকা এবং আতপ চালের দাম ৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে নতুন নির্ধারণ করা এ দামে হতাশার কথা জানিয়েছে কৃষকেরা। তাঁরা বলছেন, বর্তমান দাম অনুযায়ী ধানের দাম কেজি প্রতি নির্ধারিত হয়েছে ৩০ টাকা, যা উৎপাদনের খরচের প্রায় সমান। 

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিখিল চন্দ্র বর্মন বলেন, সরকার চলতি মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের দাম নির্ধারণ করলেও এ জেলায় কত মেট্রিকটন ধান কিনবে এর লক্ষ্যমাত্রা এখনো নির্ধারণ করেনি। তাই সরকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে কবে নাগাদ ধান কেনা হবে তা সুনির্দিষ্ট বলা যাচ্ছে না। 

জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩০ মেট্রিক টন। 

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইমলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বছর আমন ধানের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ধান উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। এখনো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু হলে বাজারে ধানের দর বেড়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুদকের মামলায় খালাস লুৎফর রহমান বাদল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাদলকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।

রমনা থানায় ২০১৭ সালে হওয়া ওই মামলায় দুদক বাদল ও তাঁর স্ত্রী সোমা আলম রহমানের নামে থাকা সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দ করেছিল। ২০২৪ সালের ৩০ আগস্ট এ মামলায় তিনি স্থায়ী জামিন পান। প্রায় এক বছর দুই মাস পর আদালতের রায়ে তিনি পুরোপুরি খালাস পেলেন।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় ২০১৭ সালের ২৮ মে ৫৯ কোটি ৭০ লাখ ৩৪ হাজার ২৯০ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের পরিচালক শেখ আব্দুস সালাম। পরে তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদক কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন মৃধা। ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

রায়ে আদালত পর্যবেক্ষণ দেন, তৎকালীন সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদলের বিরুদ্ধে মামলা করে তাঁকে হয়রানি করেছে। আরাফাত রহমান কোকোর ব্যবসায়িক অংশীদার ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় থাকার কারণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছিলেন তিনি। আদালতের ভাষায়, বিএনপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে আগের সরকার তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে হয়রানি করেছে।

ব্যবসায়ী বাদলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. বোরহান উদ্দীন রায় ঘোষণার পর বলেন, ২০১৭ সালে দুদক তাঁর মক্কেলকে সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নোটিশ পাঠিয়েছিল। সে সময় লুৎফর রহমান বিদেশে থাকায় তাঁর স্ত্রী সোমা আলম রহমান আদালতে সম্পদের বিবরণী দাখিল করেন।

আইনজীবী জানান, আদালতে মোট ৬৭টি দলিল জমা দেওয়া হয়, যেখানে সব স্থাবর সম্পদের তথ্য উল্লেখ ছিল। তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই আগের সরকার মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি খারাপ থাকায় লুৎফর রহমান বাদল তখন দেশে ফিরতে পারেননি। কিন্তু আইনের প্রতি আস্থা রেখে তিনি ফিরে এসে ন্যায়বিচার পেয়েছেন।

আইনজীবীর ভাষায়, লুৎফর রহমান বাদল আশা করছেন, তাঁর বিরুদ্ধে করা অন্যান্য হয়রানিমূলক মামলায়ও তিনি আদালতের কাছ থেকে একইভাবে ন্যায়বিচার পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ছাত্রদল নেতাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় জাহাঙ্গীর আলম (৩০) নামের ছাত্রদলের এক নেতাকে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার কেন্দুয়া–আঠারবাড়ী সড়কের পাশে বড় কালিয়ান এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

জাহাঙ্গীর আলম গন্ডা ইউনিয়ন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। তিনি মরিচপুর এলাকার আজিজুল হকের ছেলে।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম গতকাল সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হন। এর কিছুক্ষণ পর তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। তখন পরিবারের লোকজন তাঁকে খুঁজতে শুরু করেন। একপর্যায়ে রাত ৯টার দিকে স্থানীয় লোকজন কেন্দুয়া–আঠারবাড়ী সড়কের কালিয়ান এলাকায় একটি ইটভাটায় হাত–পা বাঁধা অচেতন অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

জাহাঙ্গীর আলমের চাচাতো ভাই হাসান মিয়া বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর গভীর রাতে জাহাঙ্গীরের জ্ঞান ফিরে আসে। তিনি এখনো কথা বলতে পারছেন না। কীভাবে এমন হলো, তা তিনি এখনো বলতে পারছেন না। তবে আমরা ধারণা করছি, গন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছে। আমার ভাইয়ের বিপক্ষের কিছু লোক তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। তিনি পুরোপুরি সুস্থ হলে তাঁর কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা: আদালতে দায় স্বীকার করে ৩ আসামির জবানবন্দি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেন (২৫) হত্যার ঘটনায় রাজধানীর বংশাল থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার জোবায়েদের ছাত্রী (১৯), তাঁর বন্ধু মো. মাহির রহমান (১৯) ও মাহিরের বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০) দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁরা জবানবন্দি দেন।

বিকেলে বংশাল থানা-পুলিশ তিনজনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার এসআই মো. আশরাফ হোসেন তিনজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার জন্য আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই তিনজনের পরিকল্পনায় জোবায়েদকে হত্যা করা হয় বলে গ্রেপ্তারের পর তাঁরা জানান। তাঁরা আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক।

পরে তিনজনই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান, মাসুম মিয়া ও জুয়েল রানার খাস কামরায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

আসামি মাহির জবানবন্দি দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের কাছে। জোবায়েদের ছাত্রী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া ও আয়লান মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার কাছে জবানবন্দি দেন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তাঁরা জবানবন্দি দেন।

আদালতের বংশাল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জোবায়েদ খুন হওয়ার পর ওই দিন রাতেই তাঁর ছাত্রীকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও শান্তিনগর থেকে অপর দুজনকে আটক করে পুলিশ। আজ সকালে বংশাল থানায় মামলা করেন জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত।

মামলায় জোবায়েদের ছাত্রী, তাঁর বন্ধু মো. মাহির রহমান ও মাহিরের বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লানকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও চার–পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

জবানবন্দিতে যা বলেছেন তিনজন

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর থানা হেফাজতে তাঁদের মুখোমুখি করা হয়। পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তাঁরা হত্যার দায় স্বীকার করেন। পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাঁরা যা বলেছেন, আদালতে সে রকম স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

প্রত্যেকে জবানবন্দিতে বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ড তাঁরা সংঘটিত করেছেন পরিকল্পিতভাবে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে তাঁরা জোবায়েদকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে কিশোরী ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার ৩

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ০১
গ্রেপ্তার তিনজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার তিনজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে কিশোরীকে রেস্টুরেন্টে ধর্ষণের মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে মামলার প্রধান আসামিসহ আরও দুজন পলাতক রয়েছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার জামতৈল গ্রামের আলমের ছেলে মো. আকাশ (২১), নান্নু সরকারের ছেলে মো. আতিক (২৩) এবং কর্ণসুতি গ্রামের জাহাঙ্গীর প্রামাণিকের ছেলে নাজমুল হক নয়ন (২০)।

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার জামতৈল বাজার এলাকা থেকে আকাশ ও আতিককে এবং পরে নাজমুল হক নয়নকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, গত রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কর্ণসুতি গ্রামের এক কিশোরীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে উপজেলার জামতৈল সেন্ট্রাল পার্কসংলগ্ন ‘ডেরা ফাস্ট ফুড অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে’ ধর্ষণ করা হয়। ওই ঘটনায় কিশোরীর মা গতকাল কামারখন্দ থানায় ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত