Ajker Patrika

বেরোবি ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগ চেয়ে কুশপুত্তলিকা দাহ 

রংপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. অধ্যাপক হাসিবুর রশিদ ও প্রক্টর শরিফুল ইসলামের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের পদত্যাগের দাবি তুলে নানা স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা।

আজ বুধবার বিকেলে নব নির্মিত প্রধান ফটকের শিক্ষার্থীদের নতুন নামকরণ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শহীদ আবু সাঈদ গেটের’ সামনে তাদের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেই পুলিশ আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করেছে। ভিসি ও প্রক্টর কোনো দায়দায়িত্ব পালন করেননি। তাঁরা ছাত্রদের পাশে দাঁড়ায়নি। উল্টো তাঁরা ক্যাম্পাসে পুলিশ ও ছাত্রলীগকে আশ্রয় দিয়েছে। এ হত্যার দায় তাঁদেরকে নিতে হবে। তাঁদের দায়িত্বহীনতার কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদের রক্ত ঝরেছে। অবিলম্বে ভিসি ও প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন তাঁরা।

এর আগে আবু সাঈদের হত্যার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অযোগ্য আখ্যা দিয়ে ভিসিসহ সবার পদত্যাগের দাবি জানান তাঁরা। মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের নাম ‘শহীদ আবু সাঈদ গেট’ ও পার্ক মোড় এলাকাকে ‘শহীদ আবু সাঈদ চত্বর’ নাম ঘোষণা দিয়ে নাম ফলক সাঁটিয়ে দেন।

পরে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আহসানুল জাব্বার।

দাবিগুলো হলো—কোটার যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে। নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগ করতে হবে। অবিলম্বে হত্যাকারী পুলিশ এবং নির্বিচারে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। নিহত আবু সাঈদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটকে ‘শহীদ আবু সাঈদ তোরণ’ নামে নামকরণ করতে হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ত্রাস ও দখলদারিমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত কর।

উল্লেখ, আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বেরোবির কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন তিনি। এ জন্য সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত মিছিল বেরোবির দ্বিতীয় গেটে পৌঁছালে সেখানে পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেয়। এর একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে। এ সময় পুলিশ-ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ বাধে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা কিছুটা পিছু হটলে আবু সাঈদ সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং গুলিবিদ্ধ হন। সহপাঠীরা তাঁকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা জানান তিনি হাসপাতালে পৌঁছানোর আগে মারা যান।

আজ বুধবার সকাল রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বামনপুর গ্রামের বাড়িতে আবু সাঈদের লাশ দাফন করা হয়। সেখানে তাঁর জানাজায় মানুষের ঢল নামে। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে তাঁর লাশ মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। এ সময় হাজারো মানুষ আবু সাঈদের লাশ দেখার জন্য তাঁর বাড়িতে অপেক্ষায় ছিলেন। মরদেহ গ্রামে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত