Ajker Patrika

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সরকারি বীজ বাইরে বিক্রির অভিযোগ

  • প্রণোদনার ধানের বীজ সরানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
  • ১০ কেজির বস্তা কেটে সরানো হয় ৫০ কেজি ওজনের বস্তায়।
আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর) 
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭: ৩২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সরকারি প্রণোদনার ধানের বীজ অন্যত্র বিক্রির জন্য সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলামের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া কৃষি অফিসের গুদাম (স্টোররুম) থেকে ধানের বীজ সরানোর একটি ভিডিও আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে।

ভিডিওতে দেখা গেছে, উপজেলা কৃষি অফিসের স্টোররুমে থাকা ১০ কেজি ওজনের একাধিক ধানের বীজের বস্তা কেটে ৫০ কেজির বস্তায় ভরছেন দুই কর্মচারী। ওই কর্মচারীরা হলেন পরিছন্নতাকর্মী কামরুজ্জামান ও অফিস সহায়ক আশরাফুজ্জামান।

এ সময় এক ব্যক্তি মোবাইলে তাঁদের ধানের বীজগুলো বস্তায় ভরার ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিওর অপর প্রান্তের এক ব্যক্তি এসব বীজ বস্তায় ভরার বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচ্ছন্নতাকর্মী কামরুজ্জামান বলেন, ‘কৃষি অফিসার আমাদেরকে এসব ধান বস্তায় ভরতে বলেছেন।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিডিওর ঘটনাটি ২২ আগস্টের। কৃষি অফিসের নিরাপত্তাকর্মী মমিনুর ইসলামের দাবি, তিনি ওই ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিলেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি গত ২৮ আগস্ট ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’ মমিনুর বলেন, ‘কৃষি অফিসার লোকাল ধান কিনে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেন এবং বিএডিসির ১০ কেজির ধানবীজের বস্তা কেটে ৫০ কেজির বস্তায় ভরে অফিসের কর্মচারীদের দিয়ে চুপিসারে বিক্রি করেন। এসব বীজ বস্তায় ভরার সময় আমি ভিডিও করায় কৃষি অফিসার আমাকে এখান থেকে বদলি করিয়েছেন।’

মমিনুর আরও বলেন, ‘কৃষি অফিসার বাফার গুদাম থেকে সার পরিবহনের সময় ট্রাকের ভাড়া বাবদ কম টাকা পরিশোধ করলেও বিলের খাতায় বেশি দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন। এমনকি সরকারি বরাদ্দের সার কৃষককে না দিয়ে বিক্রি করে দেন। চরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য বরাদ্দ চর প্রকল্পের অর্থ ভুয়া তালিকা ও আমার নাম ব্যবহার করে উঠিয়ে নিয়েছেন কৃষি অফিসার। আমার ছোট ভাই মিজানুর রহমানকে মাশরুম চাষে প্রশিক্ষণের জন্য সুপারিশ করেছিলেন কৃষি অফিসার। ঘুষ না দেওয়ায় আমার ভাইকে বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে এক নারীকে সেই মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণে ঢাকায় পাঠান। আমি এই ভিডিও ধারণ করার পর থেকে কৃষি অফিসার শাহিনুর ইসলাম রাগ করে আমাকে ২৪ ঘণ্টা ডিউটিতে রেখে দোষ খুঁজতেন। পরে কোনো ফাঁক না পেয়ে গত ২৭ তারিখে (আগস্ট) আমাকে বিনা অপরাধে শোকজ নোটিশ ও বদলির আদেশ জারি করেন। এমনকি যেদিন এসব ধান চোরাইভাবে বিক্রি করে নিয়ে যাবে, এ সময় স্থানীয় কিছু সাংবাদিক বিষয়টি ধরে ফেলেন। পরে আমার কাছ থেকে জোর করে কৃষি অফিসার ৫ হাজার টাকা নিয়ে তাঁদের ম্যানেজ করেন।’

এ বিষয়ে পরিছন্নতাকর্মী কামরুজ্জামান বলেন, ‘স্যার ভুল করে বেশি বীজ কিনে ফেলেছিলেন। এ জন্য সেগুলো বস্তায় ভরা হয়েছে।’ বীজগুলো ৫০ কেজির বস্তায় ভরে কী করা হয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘আমি যা-ই করি না কেন, কৃষক কি প্রণোদনা কম পেয়েছে? যদি কৃষক প্রণোদনা কম পায়, তাহলে আমাকে বলেন। আর মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণে ওর (মমিনুর) ভাইয়ের নাম দেওয়া হয়েছিল, সে যায়নি, তাই আমরা অন্য কাউকে পাঠিয়েছি।’ মমিনুরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ও কী অভিযোগ করবে। ওর বিরুদ্ধে তো অফিস থেকে আমি ব্যবস্থা নিয়েছি।’

ইউএনও মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হবে।’

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বদলি চাকরির অংশ। কৃষি কর্মকর্তার বিষয়ে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক নির্যাতনের মামলায় কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন কারাগারে

শিবিরের বট আইডির অ্যাটাক আমিও কম খাই নাই: শিবির প্যানেলের প্রার্থী জুমা

পাকিস্তানকে সমর্থন করায় ভারত এসসিওর সদস্যপদ আটকে দেয়: আজারবাইজান

মার্কিন পণ্যে ভারতের শূন্য শুল্কের প্রস্তাব, তবু রাশিয়ার তেলেই জ্বলছেন ট্রাম্প

চার্টার্ড ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসছে আরও একদল বাংলাদেশি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত