Ajker Patrika

টানা আন্দোলনে অচলাবস্থা কারমাইকেল কলেজ

  • গতকাল টানা চতুর্থ দিনের মতো শাটডাউন কর্মসূচি পালন।
  • সমস্যা নিরসনে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হবে।
শিপুল ইসলাম, রংপুর 
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৫, ০৮: ৩৬
রংপুরের কারমাইকেল কলেজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে ক্যাম্পাসে আসেন জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী ও ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম। গতকাল বেলা ১১টার দিকে কলেজের ফটকে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরের কারমাইকেল কলেজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে ক্যাম্পাসে আসেন জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী ও ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম। গতকাল বেলা ১১টার দিকে কলেজের ফটকে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিক্ষা, অবকাঠামো ও প্রশাসনিক সংকটে জর্জরিত রংপুরের কারমাইকেল কলেজে চলছে টানা আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের ৩৭ দফা দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউনে’ বন্ধ হয়ে গেছে ক্লাস, পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম। শতবর্ষ পার করেও উন্নয়নের ছোঁয়া না পাওয়া এই কলেজ এখন রূপ নিয়েছে অবহেলা, বঞ্চনা আর অচলাবস্থার প্রতীকে।

কলেজের প্রশাসনিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কারমাইকেল কলেজে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি। এসব শিক্ষার্থী জন্য সাতটি হল রয়েছে। ছাত্রদের তিনটি হলে সিটের সংখ্যা ৩০০টি ও ছাত্রীদের হলে সিটের সংখ্যা ৬০০টি। হলগুলোয় নেই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। আশির দশকের ফিটনেসবিহীন ৫২ সিটের দুটি বাস দিয়ে চলছে পরিবহন সেবা। রয়েছে শিক্ষকসংকটও। ১৯টি বিভাগে শিক্ষক রয়েছেন ১৮১ জন, পদ শূন্য ৩৯টি। কোনো কোনো বিভাগে মাত্র তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। আটটি ভবনের দুটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে সেগুলোয় পাঠদান চলছে। রয়েছে ক্লাসরুমের ঘাটতিও। ৩০০ একরের কলেজ ক্যাম্পাসের ২ হাজার ২৮৫ বর্গফুট সীমানাপ্রাচীর নেই। দুর্বৃত্ত ও ব্যবসায়ীরা দখল করে নিয়েছে প্রায় চার একর জমি।

গত রোববার থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ২৫ দফা এবং শিক্ষা উপদেষ্টা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে ১২ দফাসহ মোট ৩৭ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। প্রথম দিনে অধ্যক্ষকে কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন ও রেল-সড়কপথ অবরোধ করে সাড়ে তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। গত সোমবার থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। কলেজের অধ্যক্ষ গত মঙ্গলবার ১৪ দফা দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও আন্দোলন চালিয়ে যান তাঁরা। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, শিক্ষা উপদেষ্টা সরাসরি কলেজে এসে আশ্বাস দিলে তবেই আন্দোলন বন্ধ হবে।

গতকাল বুধবার টানা চতুর্থ দিনের মতো শাটডাউন কর্মসূচি পালন করায় ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনের চতুর্থ দিনে শিক্ষার্থীদের কাছে ছুটে যান রংপুরের জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী ও ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম। তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং পরবর্তী সময়ে কলেজ ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন।

কলেজ ক্যাম্পাস পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে দাবিগুলো করেছে, সেগুলো আসলেই যৌক্তিক। একটি হল ১৫ বছর ধরে বন্ধ। সেটি সংস্কার করে দেওয়া হবে। শিক্ষার্থী ও কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হবে। সে কমিটি ঢাকায় গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের সঙ্গে কথা বলে দাবিদাওয়া প্রস্তাব করবেন। সেই অনুযায়ী রোডম্যাপ করে দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’

তবে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য ভিন্ন। আন্দোলনের একজন সমন্বয়কারী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই, কিন্তু তার আগে চাই সমস্যার স্থায়ী সমাধান। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

ঠাকুরগাঁও থেকে রসায়নে মাস্টার্সে ভর্তি হতে আসা আরিফ হোসেন বলেন, ‘রোববার ভর্তি হতে এসে আন্দোলনের কারণে ঘুরে গেছি। আজও ফিরে যাচ্ছি। বৃহস্পতিবার আসার জন্য বলল। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলে এই হয়রানি আমাকে হতে হতো না।’

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক রায়হানুল ইসলাম বলেন, শতবর্ষী হলেও কলেজটি নানা সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত। প্রতিটি বিভাগে কমপক্ষে ১২-১৬ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও সমাজবিজ্ঞান বিভাগে মাত্র চারজন শিক্ষক রয়েছেন। নেই প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট, বাস। এগুলো দ্রুত সমাধান করা দরকার।

কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘২৫-৩০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য আমাদের যে জিনিসগুলো দরকার, সেগুলো নেই। শিক্ষার্থীরা যে দাবি করেছে, তা ন্যায্য। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় সেই বরাদ্দ আমরা পাই না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাড়াশে কীটনাশকের দোকান থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মালপত্র চুরি

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় রাতের আঁধারে সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার মালপত্র খোয়া গেছে মালিকের।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার কাস্তা বাজারে মেসার্স জিসা এন্টারপ্রাইজে এই ঘটনা ঘটে।

দোকানের মালিক জাহাঙ্গীর আলম দাবি করে বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাই। সকালে এসে দেখি দোকানের পেছনের টিন কাটা। দোকান থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার কীটনাশক ও অন্য মালপত্র চুরি হয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘চুরির বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘আমি বিএনপি করে শ ম রেজাউলের আমলে মামলায় জেল খেটেছি। এমনকি আমাকে মেরে ফেলারও চেষ্টা হয়েছে। তবে শেখ হাসিনার আদর্শ ধারণ করে এযাবৎ কাজ করেছি।’ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এমন মন্তব্য করে আবারও আলোচনায় পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বিতর্কিত ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা।

জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে ভাই ও চাচাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে তিনি আগে থেকেই সমালোচিত। অভিযোগ উঠেছে, ওই মামলায় রেহাই পেতে তাঁর ভাই ও চাচা ৫০ হাজার টাকা দিলেও হয়রানি থেকে মুক্তি পাননি। তাঁরা এখনো ভুগছেন সেই ঘর পোড়ানোর মামলায়। বিতর্কিত মন্তব্য করে এখন তিনি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন।

সোহাগ মৃধার চাচা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘ওয়ারিশ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে সোহাগ তার ভাইকে হয়রানি করত। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে চুরির মামলায় ফাঁসায়। পরে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে আমি ও তার ভাই তৈমুর রেজার নামে মামলা দেয়। তখন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েও রেহাই দেয়নি।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আওয়ামী আমলে সোহাগ মৃধা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছিলেন। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানো, সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপকর্মে তিনি জড়িত ছিলেন। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এখন তিনি বিএনপি পরিচয়ে সক্রিয় হয়েছেন।

জানতে চাইলে বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ‘সোহাগ মৃধা কেমন মানুষ, তা সবাই জানে। সে আমার বাবাকেও একসময় হয়রানি করেছে।’

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. ফকরুল আলম বলেন, ‘শুনেছি সোহাগ মৃধা আওয়ামী লীগ করতেন। এখন কীভাবে বিএনপি করলেন জানি না। কেউ নিজেকে বিএনপি বললেই সে বিএনপি হয়ে যায় না। তিনি আমাদের দলের কেউ নন।’

এসব নিয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা বলেন, ‘আমি কাউকে মিথ্যা মামলা দিইনি। আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী। ইউপি সদস্যদের নির্দিষ্ট দল থাকে না—যে সরকার আসে, তার হয়ে কাজ করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাউয়াছড়া বন থেকে টহল দলের সদস্যের লাশ উদ্ধার

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দায়িত্বরত মো. সিরাজ মিয়া (৭০) নামের এক বন টহল দলের (সিপিজি) সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে লাউয়াছড়া বনের শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কের জানকিছড়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত সিরাজ মিয়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার ডলুছড়া এলাকার বাসিন্দা।

পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, সিরাজ মিয়া মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে লাউয়াছড়া বনের জানকিছড়া এলাকায় বন পাহারায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। আজ সকালে খবর পাওয়া যায়, লাউয়াছড়া বনের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ প্রধান সড়কের পাশে সিপিজি ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় তাঁর মরদেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বন বিভাগের সদস্যরা।

জানতে চাইলে লাউয়াছড়া বনের বনবিট কর্মকর্তা মারজুক হোসেন বলেন, ‘নিহত সিরাজ মিয়ার ডিউটি শেষ হয়েছিল ভোর ৫টার দিকে। সকাল ৬টার দিকে খবর পাই, তাঁর মরদেহ সড়কের পাশে পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ডিউটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে কোনো গাড়ির ধাক্কায় তিনি মারা গেছেন। মরদেহের পাশে গ্লাস ভাঙা টুকরো পাওয়া গেছে।’

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি সড়ক দুর্ঘটনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক, এবার সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নথি পাঠানোর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এবার স্কুলের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষা বোর্ডে নথি পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একটি সভার রেজল্যুশনে তিনি এই জালিয়াতি করেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে জমা হওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে ১৯ অক্টোবর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার এই নির্দেশনার বিষয়টি জানা যায়।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (উন্নয়ন) মো. রিদুয়ানুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক গত বছরের ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সভার কার্যবিবরণীর প্রথম ও শেষ পাতা ঠিক রেখে দ্বিতীয় পাতায় আলোচ্যসূচি ৩-এ ‘এমপিওভুক্ত কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও শিটে নাম, বয়স, জন্মতারিখ, ব্যাংক হিসাব নম্বর, পদবি ও বিষয় সংশোধন প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত’ শিরোনামে ভুয়া কার্যবিবরণী তৈরি করা হয়।

এই ভুয়া কার্যবিবরণীতে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (হিসাব ও নেজারত) মোহাম্মদ শাহজাহানের স্বাক্ষর জাল করা হয়। চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি সেই জাল কার্যবিবরণী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেলে পাঠানো হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম নিজেই বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে দোষ স্বীকার করেছেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে।

এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার অনলাইনে ‘ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক, শাস্তির সুপারিশ বোর্ডের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ড থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এখনো চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাঁদের দাবি, এই ধরনের মুখোশধারী অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত