Ajker Patrika

সরকারি কর্মসৃজন প্রকল্প চালু থাকায় শ্রমিক সংকটে দিশেহারা ও  ক্ষুব্ধ কৃষকেরা

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

রংপুরের বদরগঞ্জে শ্রমিক সংকটের কারণে বোরো ধান ঘরে তুলতে না পেরে চিন্তিত কৃষকেরা। গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ টাকা দিয়েও মিলছে না শ্রমিক। কয়েক দিনের বৃষ্টি ও বাতাসে অনেকের পাকা ধান গাছ জমিতে শুয়ে পড়েছে। এখনো আবহাওয়া খারাপ। এমতাবস্থায় শ্রমিক সংকটের জন্য কৃষকেরা দায়ী করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে।

কৃষকদের অভিযোগ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর থেকে উপজেলায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। ওই প্রকল্পে অনেকই শ্রমিকই মাটি কাটার কাজ করছে। প্রকল্প চালু না করলে এই শ্রমিকেরা ধান কাটতো। 

আমরুলবাড়ি গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান বলেন, আমার চার বিঘা জমির ধান পাকছে। আবহাওয়া খারাপ। প্রায়দিন ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। পাকা ধান জমিতে শুয়ে পড়েছে। কাটার জন্য শ্রমিক পাচ্ছি না। বেশি দিন জমিতে থাকলে ধান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ 

রামকৃষ্ণপুর মধ্যপাড়া গ্রামের কৃষক আলা উদ্দিন বলেন, ‘সাত দিন আগে জমির ধান পেকেছে। কয়েক দিন ধরে শ্রমিক খুঁজেও পাইনি। আমার তিন বিঘা জমির ধান টাকার জন্য শ্রমিকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ১৮ হাজার টাকা।’ 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ৯ মে এ উপজেলায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এতে ১ হাজার ৫৭১ জন শ্রমিক সকাল নয়টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাটি কাটার কাজ করছে। এর মধ্যে এক হাজার ৮৩ জন পুরুষ, অন্যরা নারী শ্রমিক। 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই কর্মসূচি চালু না করলে প্রকল্পের টাকা ফেরত যেত।’ 

কিছুটা শ্রমিক সংকট রয়েছে উল্লেখ করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা মো. জোবাইদুর রহমান বলেন, ‘এই সময়ে কর্মসৃজন প্রকল্প চালু করা ঠিক হয়নি। কৃষকদের কথা চিন্তা করে আপাতত কর্মসৃজন বন্ধ রাখতে প্রশাসনকে অনুরোধ করা হবে। কিছু ধান গাছ জমিতে পড়ে গেছে। আবহাওয়া খারাপ থাকায় অনেক কৃষক ধান কাটা মাড়াই করছেন না।’ 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শতকরা ১৫ ভাগ জমির ধান ঘরে উঠেছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ বলেন, ‘কৃষকের স্বার্থটাই আগে দেখতে হবে। যদি কর্মসৃজন চালু থাকায় শ্রমিক সংকট হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত