Ajker Patrika

তারাগঞ্জে সমন্বয়কের বিরুদ্ধে চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ, কর্মবিরতি

রংপুর প্রতিনিধি
তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসককে মারধরের প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসক-কর্মচারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসককে মারধরের প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসক-কর্মচারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত এক অন্তঃসত্ত্বা চিকিৎসককে মারধরের প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসক ও কর্মচারীরা। আজ শনিবার সকাল থেকে কর্মবিরতি চলছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে সেবাপ্রত্যাশীরা।

অভিযোগ উঠেছে তারাগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ সরকার তূর্য (২২) ও তাওরাত (২৪) ওই চিকিৎসককে মারধর করেন। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার রাতে তারাগঞ্জ থানায় ওই দুই সমন্বয়কসহ অজ্ঞাত চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী চিকিৎসক।

হাসপাতাল ও থানায় দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাধারানী মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আতাউর রহমান বুকে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক সাবরিনা (৩০) ওই রোগীকে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হিসেবে চিকিৎসাসেবা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এরপর তিনি অন্য রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত হন। এ সময় রোগী আতাউর রহমানের ছেলে তাহমিদ সরকার তূর্যসহ চার-পাঁচজন চিকিৎসক মৌকে অকথ্য ভাষা গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানে বাধা দেন। চিকিৎসকের শরীরে আঘাত করেন। এ ঘটনায় চিকিৎসক সাবরিনা সমন্বয়ক তূর্য ও তাওরাতসহ অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনের নামের বিরুদ্ধে তারাগঞ্জ থানা অভিযোগ দেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

মারধরের শিকার চিকিৎসক সাবরিনা বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই তারা সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে আমার ওপর হামলা করেছে। আমার গায়ে হাত তুলেছে। রোগী আতাউর রহমানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রের্ফাড করি। আমি ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ ঘটনার পর শারীরিক ও মানসিকভাবে অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়ি, নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছি।’

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার অনির্বাণ মল্লিক বলেন, ‘চিকিৎসকের ওপর হামলাকারীর বিচার ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে নিশ্চিত করার দাবিতে কর্মবিরতি চলছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সমন্বয়ক তাহমিদ সরকার তূর্য বলেন, ‘আমি আসার আগেই আমার বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তিনি ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। ওই চিকিৎসককে আমার বাবাকে দেখার জন্য বারবার অনুরোধ করছিলাম। তিনি না শুনে উল্টো আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে একটু কথা-কাটাকাটি হয়েছে। গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।’

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

রংপুর জেলা সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা বলেন, ‘চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনা শুনে হাসপাতালে এসেছি। রোগীদের যাতে দুর্ভোগ না হয়, সে জন্য চিকিৎসকদের চিকিৎসাসেবা চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত