Ajker Patrika

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: রংপুরে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আরও ১৬ নেতার পদত্যাগ

রংপুর প্রতিনিধি
কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা আদায় ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির ১৬ নেতা-কর্মীর পদত্যাগ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা আদায় ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির ১৬ নেতা-কর্মীর পদত্যাগ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা আদায় ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে কমিটি দুটির ১৬ নেতা পদত্যাগ করেছেন। আজ রোববার রাত ৮টায় রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তাঁরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

পদত্যাগকারীদের অভিযোগ, কমিটির কয়েকজন শীর্ষ নেতা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। এতে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তাঁরা। এসব বিষয়ে ওই নেতাদের কাছে সংগঠনের সদস্যরা জানতে চাইলেও শীর্ষ নেতারা কোনো জবাব দেননি। তাঁরা সংগঠনের সম্মান ক্ষুণ্ন করেছেন। ১৬ জনের সঙ্গে এ সময় প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার ঘোষণা আরও অর্ধশতাধিক কর্মী।

পদত্যাগকারীরা হলেন মহানগর কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব সিয়াম আহসান আয়ান, সংগঠক আদনান সামির, মাহদী হাসান অনিক, রাতুল, এনায়েত রাব্বি, সদস্য আরাফাত সানি আপন, আল শামস সিয়াম, আল আমিন, সীমান্ত হোসেন, মোজাহিদ, আল তানজীল আহসান ও জেলা কমিটির সদস্য মুবতাসিম ফুয়াদ সাদিদ, জুনাইদ ইসলাম সাদিদ, সৃজন সাহ, মাহতাব হোসেন আবির ও সাওম মাহমুদ সিরাজ।

এর আগে ১৫ মে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ ও সদস্যসচিব আশফাক আহমেদ জামিলের বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা আদায় ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন মাহমুদুর রহমান লিওন নামের এক সদস্য।

পদত্যাগপত্রে তাঁরা লিখেন, ‘রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবসহ কিছু নেতার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এবং তার সপক্ষে পাওয়া প্রমাণ আমাদের আন্দোলনের মূল চেতনা ও আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এই গুটিকয়েক নেতার অপকর্মের দায় আমরা যারা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গেছি, তাদের ওপরও বর্তায়—যা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও অপমানজনক।’

এ সময় মহানগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আয়ান হাসান অভিযোগ করেন বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশের মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছিল, কিন্তু আমরা সেই বিশ্বাস রাখতে পারিনি। মহানগর ও জেলা কমিটির নেতারা টেন্ডার-বাণিজ্য, জমির দালালি, মামলা-বাণিজ্য ও মেলায় জুয়ার আসর থেকে চাঁদা আদায়সহ নানা অপকর্ম করছে।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘জেলা মহানগর কমিটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে এসে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে।’

জানতে চাইলে পদত্যাগকারী জেলা কমিটির সদস্য মাহতাব হোসেন আবির বলেন, ‘দুই মাস আগে নগরীর ঘাঘট এলাকায় অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলায় হাউজি জুয়ার আসর বসানো হয়। সেখান থেকে জেলা ও মহানগর কমিটি নেতারা ১৪ লাখ টাকা চাঁদা নেন। এ ছাড়া রংপুর সিটি করপোরেশনে ২৫ জনকে নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকার নিয়োগ-বাণিজ্য করেছেন।’ এর আগে গত বছর বন্যার সময় বন্যার্তদের জন্য তোলা ত্রাণের ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তোলেন তিনি।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার। আগামীকাল সংবাদ সম্মেলন করে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট করা হবে।’

এ বিষয়ে মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বলেন, ‘কোনো ধরনের অপকর্মের সঙ্গে আমি জড়িত নই। তারা যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ করে, তাহলে প্রমাণ হাজির করুক। অবশ্যই কারও না কারও স্বার্থে আঘাত লেগেছে—এ জন্য এমনটা হতে পারে। এটা নিয়ে সবার সঙ্গে বসে আলোচনা করে লিখিত বক্তব্য জানানো হবে।’

এর আগে গত বছরের ২৪ নভেম্বর রাতে ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতিকে আহ্বায়ক ও রহমত আলীকে সদস্যসচিব করে ১১২ সদস্যের মহানগর কমিটি এবং ইমরান আহমেদকে আহ্বায়ক ও ডা. আশফাক আহমেদ জামিলকে সদস্যসচিব করে ১৫৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সারজিসের পোস্টে কমেন্ট করে বরখাস্ত মৎস্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী

‘৩ শর্তে’ সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুতদের বিক্ষোভ স্থগিত

আলটিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই আসতে পারে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের ঘোষণা

ভারতের সঙ্গে টক্কর দিলে বাঁচতে পারবে না বাংলাদেশ: বিজেপি নেতা

চিরকুটে শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত