Ajker Patrika

ছেলের কিডনি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় মাকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২৩, ১৭: ৪৯
ছেলের কিডনি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় মাকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ

রাজশাহীতে ছেলের কিডনি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় এক নারীকে তাঁর স্বামী বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শিল্পী বেগম নামের এই নারী আজ শনিবার দুপুরে নগরীর রেলগেট এলাকায় তাঁর ভাইয়ের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এ নিয়ে বোয়ালিয়া থানায় তিনি একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

শিল্পী বেগমের স্বামীর নাম রওশন আলী খান (৬২)। তিনি স্বামীর চতুর্থ স্ত্রী। রওশন নগরীর দাসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি নগরীর জাহাজঘাট এলাকায় বসবাস করেন। ঈদের আগে শিল্পীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকে তিনি নগরীর পাঁচানিমাঠ এলাকায় মায়ের বাড়িতে থাকছেন। এই বাড়িতে গিয়েও গতকাল সন্ধ্যায় রওশন তাঁকে মারধর করেছেন বলে শিল্পী অভিযোগ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে শিল্পী বলেন, ১১ বছর আগে রওশনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছে। রওশন আকুপাংচার চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তিনি এ চিকিৎসা দিতে গিয়ে এক শিল্পপতির দুটি কিডনিই নষ্ট করে দিয়েছেন। এখন ওই শিল্পপতি তাঁকে কিডনি জোগাড় করে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। টাকার লোভ দেখাচ্ছেন। এ জন্য রওশন তাঁর স্ত্রীর আগের পক্ষের সন্তান অন্তর আলীর (২৪) একটি কিডনি দিতে চাচ্ছেন। এতে রাজি না হওয়ায় নির্যাতন করছেন। সম্প্রতি নিজের মায়ের দেওয়া সব স্বর্ণালংকার খুলে নিয়ে তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন রওশন।

শিল্পী বলেন, ‘নিজের আত্মীয়দের মধ্যে কাউকে কিডনি দিলে সেটা আলাদা কথা। কিন্তু রওশন টাকার বিনিময়ে এক শিল্পপতিকে কিডনি দিতে চাচ্ছেন। ছেলেকে শিল্পপতির কাছ থেকে দামি মোটরসাইকেল, ফ্ল্যাট এবং জুটমিলের মালিকানা নিয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে কিডনি নিতে চাচ্ছেন। এতে রাজি না হওয়ায় মা-ছেলেকেই বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এরপর গতকাল আমার মায়ের বাড়িতে এসেও কিডনি দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছেন। তখনো রাজি না হলে তিনি আমাকে মারধর করেছেন।’ 

শিল্পী দাবি করেন, প্রশিক্ষণের জাল সনদ নিয়ে নগরীর বর্ণালী মোড়ে চেম্বার খুলে আকুপাংচার চিকিৎসা দেন রওশন। তাঁর অপচিকিৎসায় অনেকেই শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় পড়েন। এ কারণে ওই শিল্পপতির কিডনি নষ্ট হয়েছে। এখন ওই শিল্পপতির জন্য কিডনি না দিলে শিল্পীকে সংসারে নেবেন না বলে রওশন জানিয়ে দিয়েছেন। ছেলের কিডনি না দেওয়ার কারণে শিল্পীর সংসার ভেঙে যাচ্ছে। এ জন্য গতকাল সন্ধ্যায় তিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

জানতে চাইলে নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় আমি থানায় ছিলাম না। অভিযোগটি এখনো দেখিনি। সেটি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শিল্পী বেগমের তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রওশন আলী খান। তিনি বলেন, ‘কিডনি বিক্রি করার চেষ্টার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তারা মা ও ছেলে নেশাগ্রস্ত। ফার্মেসি থেকে নেশা করার ওষুধ কিনে খায়। অনেক টাকা বাকি করেছে। ওষুধের দোকানদার বাড়ি পর্যন্ত টাকা চাইতে আসে। আমার মানসম্মান যাচ্ছে। তাই শাসন করা হয়েছে।’

জাল সনদে আকুপাংচার চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলোর তো সরকারি কোনো মেডিকেল কলেজ শিক্ষা দেয় না। একটা সংস্থা প্রশিক্ষণ দেয়, তারপর সনদ দেয়। আমার সেটাই আছে। কেউ সেটা জাল বললে এখন যাচাই করে দেখতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত