Ajker Patrika

অংশীদারত্ব নিয়েই গাছ কাটা শুরু করেছে প্রাণ

  • গত কয়েক দিনে শতাধিক গাছ কেটেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
  • গাছ কাটার অনুমতি নেওয়া হয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
  • গাছ কাটা বন্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৫, ০১: ২৬
কেটে রাখা হয়েছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের গাছ। অভিযোগ রয়েছে, অংশীদারত্ব নেওয়ার পর এসব গাছ কেটেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কেটে রাখা হয়েছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের গাছ। অভিযোগ রয়েছে, অংশীদারত্ব নেওয়ার পর এসব গাছ কেটেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের স্বত্ব লাভের পরই গাছ কাটতে শুরু করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজশাহীর বিশিষ্টজনেরা। গতকাল সোমবার সকালে এই কারখানার সামনে তাঁরা মানববন্ধন করেছেন। গাছ রক্ষার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহীর নওদাপাড়ায় ১৯৭৪ সালে স্থাপিত রাজশাহী টেক্সটাইল মিল ১৯৭৯ সালে উৎপাদনে যায়। ১৯৭৮ সালে ভারত থেকে ১২ কোটি টাকায় যন্ত্রপাতি এনে কারখানা স্থাপন করা হয়েছিল। ২০০৩ সালের ৩০ জুন গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে দেড় হাজার শ্রমিককে বিদায় জানিয়ে মিলটি বন্ধ করা হয়। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি) জানিয়েছে, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডকে পিপিপির আওতায় রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে গত বছরের ২৭ নভেম্বর চুক্তি হয়। এরপর তারা বুঝে নেয় গত ১ ডিসেম্বর।

বরেন্দ্র রাজশাহীর কাছ থেকে এককালীন ৬ কোটি টাকা নিয়েছে বিটিএমসি। এ ছাড়া পুরোনো মেশিনও প্রতিষ্ঠানটি কিনেছে। বরেন্দ্র রাজশাহীর কাছে বিক্রির আগে কারখানার যন্ত্রপাতির বাজারদর ছিল ৩ কোটি ৬২ লাখ ৩১ হাজার টাকা। মিলের ২৫ দশমিক ৯৮ একর জমি ও অন্যান্য স্থাপনা ব্যবহারের জন্য প্রতি মাসে সাড়ে ১২ লাখ টাকা দেবে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি প্রয়োজনমতো স্থাপনাও করতে পারবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে মিলের ভেতরে নানা প্রজাতির গাছ কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। বাকি গাছগুলোও কাটার প্রক্রিয়া চলছে।

গাছ কাটার বিষয়ে বিটিএমসির পিপিপি প্রকল্পগুলোর পরিচালক ও প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা কাজী ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘বরেন্দ্র রাজশাহীকে সবকিছুই দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে এখন ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হবে। নতুন নতুন শেড হবে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এসবের জন্য গাছগুলো কাটার প্রয়োজন পড়বে।’

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শরীফ উদ্দীন গতকাল রোববার সকালে টেক্সটাইল মিলে গেলে গাছ কাটার কথা স্বীকার করেন। তবে ভেতরে যেতে দেননি। তিনি দাবি করেন, রাস্তা করার জন্য ২০-২৫টি গাছ কাটা হয়েছে।

এদিকে, গত ২৮ জানুয়ারি এক রিটের চূড়ান্ত শুনানিতে হাইকোর্ট গাছ কাটার ক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছেন। তবে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শরীফ উদ্দীন অনুমতি না নেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, ‘এটা করা উচিত ছিল।’

গাছ কাটা প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলার সভাপতি আহেমদ সফিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা যে এসডিজি সই করেছি, সেখানে পরিষ্কার বলা আছে, পরিবেশ রক্ষা করেই উন্নয়ন করতে হবে। গাছ রেখেই উন্নয়ন হচ্ছে বিভিন্ন দেশে, আমাদের দেশেও হচ্ছে। শিল্পকলকারখানা যা-ই করুক, গাছ কাটা মেনে নেওয়া যায় না। যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের শাস্তি হওয়া দরকার।’

এদিকে কারখানায় এলাকায় গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয় বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম ও সবুজ সংহতি রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে। সেখানে বক্তারা বলেন, ‘প্রাকৃতিক পরিবেশ আচ্ছাদিত সবুজায়নে ভরা ছিল রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস। কয়েক দিনে সেখানে কয়েক শ গাছ নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে এবং বিশাল আকৃতির পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে। এসব বন্ধ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনা যাঁকে ঢাকায় ‘হত্যা করলেন’, তিনি ময়মনসিংহে জীবিত!

নগদে স্ত্রীর চাকরি, স্বার্থের সংঘাতে জড়ালেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক মুর্শেদ

জীবিত ভাইকে জুলাই আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলায় সাক্ষীও দুই ভাই, নেপথ্যে যা জানা গেল

যুক্তরাষ্ট্রে সি চিন পিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কারের দাবি, হঠাৎ কেন এই বিতর্ক

গোয়েন্দা রিপোর্টকে ‘অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা’র মোড়কে উপস্থাপন করা হচ্ছে: এনসিপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত