Ajker Patrika

সাম্প্রদায়িক হামলা, লুটপাট বন্ধের দাবি রাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের

রাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১৮: ০৫
সাম্প্রদায়িক হামলা, লুটপাট বন্ধের দাবি রাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, লুটপাট ও হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষক নেটওয়ার্ক। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

‘সুরক্ষা, সাম্য, ন্যায়বিচার সবার জন্য। লুটপাট, সাম্প্রদায়িক হামলাসহ সব সহিংসতা রুখে দিন’ ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে সংগঠনটির বিভিন্ন সদস্য বক্তব্য দেন। 

কর্মসূচিতে ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী বলেন, তরুণ প্রজন্ম এক রক্তাক্ত লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এই জায়গায় এসেছে। মানুষের ক্ষোভ, নানান ধরনের দলীয় বিদ্বেষ কিন্তু আমাদের সামনের প্রজন্ম যেন এটা থেকে একদম দূরে থাকে এবং শক্ত হাতে প্রতিহত করতে পারে। আমরা মানুষ, আমরা দিন শেষে একজনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, আদিবাসী—সবার সঙ্গে থাকব। আমরা সকল প্রজন্মের সমন্বয়ে এগিয়ে যাব। এই যে হামলাগুলো হচ্ছে, এটা দেখে আমরা ভালো নেই। একদিকে আমরা যে গণ-অভ্যুত্থান দেখলাম, তরুণেরা তাদের জীবন দিয়ে যে অভ্যুত্থান এনে দিয়েছে, এটা এখন ধরে রাখা আমাদের দায়িত্ব।’ 

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার বলেন, ‘আগে যেটা ছিল, সেগুলোর যদি পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে কোনো কিছুই সম্ভব হবে না। কারণ, এই রাষ্ট্রের মাথা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে পচে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে ক্লাস নেওয়া পর্যন্ত এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে অনিয়ম নেই। আপনারা যাঁরা এই আন্দোলনে আছেন, নতুন এই বাংলাদেশ গড়ার জন্য অসংখ্য কাজ। কারও ঘর ভাঙা আমাদের কাজ না। এগুলোর জন্য বিচার হবে, সেই বিচারিক ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা আসল কথাটা বলিনি, আমরা প্রকৃতির কথা বলিনি, আমরা উন্নয়নের কথা বলেছি এবং এই উন্নয়নের কথা বলে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে এখানকার ঠিকাদারেরা। যেগুলোর দিকে নজর দিতে হবে, যেটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’

ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক আলী রেজা বলেন, ‘আমরা জানি, কোনো রকম ট্রানজিশনে, যেকোনো রকম বিপ্লব, অভ্যুত্থান সংঘটিত হলে কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু আমাদের মাথায় রাখতে হবে, আমাদের তরুণ নেতারা প্রয়োজনে যেভাবে বুক পেতে দিয়েছে, তারা বয়সে যতই নবীন হোক, তাদের প্রতি সম্মান দেখানোর সময় এসেছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের সুযোগ দেওয়ার সময় এসেছে। তাদের মতামতে রাষ্ট্র পরিচালনার সময় এসেছে। তাদের সম্মান জানাতে হলে সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। আর বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে কোনো রকম লুটতরাজ যেন না হয়। আমি সংখ্যালঘু বলতে চাই না, যেন কোনো ধর্মের মানুষের ওপর বাংলাদেশের জনগণ আঘাত না করে, সেই নিশ্চয়তা আমাদের-আপনাদের দিতে হবে। এই বাংলাদেশকে সকলের বাংলাদেশ হিসেবে পরিচিত করার চেষ্টা করতে হবে।’ 

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এখন আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময়। কাল দেশের অনেক জায়গায় হামলা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিজ দায়িত্বে অনেক জায়গায় নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করেছে। সেনাবাহিনী এখনো আমাদের সহযোগিতা করছে না, তারা বিভিন্ন গেমের মধ্যে আছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশটা আমাদের সবার। তাই সবাই মিলেই দাঁড়াতে হবে।’ 

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে গতকাল সোমবার পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এরপর অনেক স্থানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত