Ajker Patrika

নাটোরে পেটের অসুখে ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ১৪৭

  • এক রাতেই একটি ওয়ার্ডের প্রায় দেড় শ জন অসুস্থ হয়ে পড়ে।
  • তাদের মধ্যে পুরুষ ৬৬ জন, মহিলা ৫৫ জন ও ২৬ শিশু রয়েছে।
নাটোর প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮: ১৩
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে পেটের অসুখ নিয়ে ভর্তি রোগীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে পেটের অসুখ নিয়ে ভর্তি রোগীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪৭ জন হঠাৎ পেটের অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৬ জন পুরুষ, ৫৫ নারী এবং ২৬ শিশু রয়েছে। এ ঘটনায় নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডকে ডায়রিয়া রোগীদের জন্য নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। ডায়রিয়া, পেটব্যথা ও বমি নিয়ে পৌরসভার একটি ওয়ার্ডের প্রায় দেড় শ রোগী হাসপাতালে ভর্তির ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, পৌরসভার সরবরাহ লাইনের পানি পানের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনার কারণ জানতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়। ঘটনা তদন্তে আইসিডিডিআরবির প্রতিনিধিদলও কাজ করবে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর নাটোর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাউতলা এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়ির প্রায় ৩০ জন বাসিন্দার কেউ কেউ হঠাৎ ডায়রিয়া, পেটেব্যথা ও বমি ভাব অনুভব করে। প্রাথমিক অবস্থায় তারা স্যালাইন, পেটব্যথা কমানোর সহজপ্রাপ্য ওষুধসহ বেশ কয়েক ধরনের ওষুধ সেবন করে। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় মধ্যরাত থেকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হতে শুরু করে। এরপর গতকাল বুধবার সকাল থেকে একই ওয়ার্ডের কাঁঠালবাড়ি, ঘোড়াগাছা ও ডোমপাড়া এলাকার শতাধিক মানুষ একই সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, মঙ্গলবার বিকেলে পৌরসভার সরবরাহ পানি পানের পর তারা হঠাৎ পেটে ব্যথা অনুভব করে। তারপর থেকে ডায়রিয়া, শরীরের রগ ও পেশিতে টানসহ বিভিন্ন সমস্যা অনুভব করতে থাকে।

আমেনা খাতুন নামের এক রোগীর স্বজন জানান, তিনি বাবা ও ভাইকে হাসপাতালে এনেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে দুজনই পেটে

তীব্র ব্যথা অনুভব করছিলেন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করা অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে। রবিউল ইসলাম নামের এক রোগী বলেন, বিকেল থেকে শরীর দুর্বল লাগছিল। সন্ধ্যায় পানি পানের পর পেটব্যথা ও ডায়রিয়া শুরু হয়।

নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘পানিবাহিত কারণই শুধু নয়, গত তিন দিনের টানা গরমে ডিহাইড্রেশনের কারণেও এমন বিপর্যয় ঘটে থাকতে পারে। আমরা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সদের ছুটি বাতিল করে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি রোগীদের সুস্থ করতে।’

জেলা সিভিল সার্জন মুক্তাদির আরেফিন বলন, ‘সবারই পানিবাহিত রোগের উপসর্গ আছে। ‘বিষয়টি নিশ্চিতে আমরা আইসিডিডিআরবির সহায়তা চেয়েছি।’ সিভিল সার্জন জানান, আইসিডিডিআরবির একটি দল নাটোরে এসে পানি পরীক্ষা করে কারণ জানাবে।

নাটোর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হক বলেন, ‘পৌরসভার সরবরাহ করা পানি একই ধরনের কয়েকটি ট্যাংক থেকে ৯টি ওয়ার্ডের সব এলাকায় সরবরাহ করা হয়। তবে ঘটনা ঘটেছে মাত্র একটি ওয়ার্ডের কিছু এলাকায়। ওই এলাকার সরবরাহ লাইনে কোনো ত্রুটির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে আমরা বলেছি। তাদের পরামর্শে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পৌর কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে জনগণের সমস্যা সমাধানে কাজ করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত