Ajker Patrika

রাজশাহীতে গাছ কাটার মচ্ছব

  • প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কাটা পড়ছে ২ হাজার ৩২৩টি গাছ।
  • ওয়াসা জমি অধিগ্রহণ করলে ২২২টি গাছ রক্ষা করা সম্ভব।
  • ১ হাজার ৮৫৩টি গাছ কেটে নতুন গাছ লাগাতে চায় রামেবি।
 রিমন রহমান, রাজশাহী
রাজশাহীতে ওয়াসার প্রকল্পের জন্য কাটা হচ্ছে গাছ। জেলার পবা উপজেলার আন্ধারকৌঠা এলাকায়।	ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে ওয়াসার প্রকল্পের জন্য কাটা হচ্ছে গাছ। জেলার পবা উপজেলার আন্ধারকৌঠা এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে গাছ কাটার ‘মহোৎসব’ শুরু হয়েছে। তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কাটা পড়ছে ২ হাজার ৩২৩টি গাছ। ইতিমধ্যে এক প্রকল্পের ৪১৮টি গাছ কাটা শুরু হয়েছে। দ্রুত অন্য দুই প্রকল্প বাস্তবায়নে বাকি গাছগুলো কাটা শুরু হবে। গাছ কেটে এমন উন্নয়নে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে রাজশাহীর পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো।

নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৮৫৩টি গাছ কাটতে চায় রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) নতুন পাইপলাইন স্থাপনের জন্য ৪১৮টি গাছ কাটছে সড়ক বিভাগ। আর ৫২টি গাছ কাটার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে রাজশাহী সার্কিট হাউস সম্প্রসারণে।

এভাবে নির্বিচারে পুরোনো গাছ কেটে ফেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সবুজ সংহতির সদস্য আতিকুর রহমান বলেন, ‘রাজশাহী চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার শহর। এখানে দিনে দিনে গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বড় গাছ কমে যাওয়ায় পাখিও কমে যাচ্ছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সার্কিট হাউসে এখনকার তিনতলা ভবনের পাশে একটি ছয়তলা ভবন, একটি চারতলা ব্যারাক এবং একটি একতলা কিচেন নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ। এ জন্য জায়গা ফাঁকা করতে ৫২টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সম্প্রতি গাছগুলো মাত্র ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গাছ কাটা শুরু হয়নি। এই গাছ না কাটার বিষয়ে সম্প্রতি পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা গণপূর্তে গিয়ে অনুরোধ করেছেন।

এদিকে জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার পদ্মা নদী থেকে রাজশাহী নগরে পানি আনার জন্য রাজশাহী ওয়াসা ৪ হাজার ৬২ কোটি টাকার ‘পানি শোধনাগার’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ জন্য বসাতে হচ্ছে ২৬ কিলোমিটার নতুন পাইপলাইন। সওজ নগরের কাশিয়াডাঙ্গা থেকে পশ্চিমে নতুন কসবা, কসবা গোরস্তান হয়ে এইচবিবি রাস্তার পাশ পর্যন্ত ডান দিকের (উত্তর পাশের) থাকা কড়ই, মেহগনি, আকাশমণিসহ নানা প্রজাতির ৩০৬টি গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। মহাসড়কটি আগে সবুজে ঢাকা থাকলেও প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা এখন ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।

এ ছাড়া একই প্রকল্পের জন্য গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী এলাকায় ১১২টি গাছ নিলামের আগেই কেটে ফেলা হয়েছে। ওয়াসা এসব গাছ কেটে সওজের কাছে জমা দিয়েছে। সওজ ৩০৬টি গাছ নিলাম করার সময় একটি লটে এই গাছগুলোও রেখেছে। মোট ১৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকায় ৪১৮টি গাছ সম্প্রতি নিলামে বিক্রি করা হয়। এখন ৮৪টি গাছ কাটার কাজ চলছে।

গত বুধবার পবার আন্ধারকৌঠা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, একপাশে থাকা সারি সারি গাছ কেটে মহাসড়কের পাশেই ফেলে রাখা হয়েছে। গাছ কাটার কারণে এলাকার আগের চিত্রই বদলে গেছে। আন্ধারকৌঠা এলাকার বাসিন্দা আহসান হাবিব বলেন, ‘আগে গাছগুলো সুন্দর ছায়া দিত। এখন পুরো এলাকা ফাঁকা হয়ে গেল। ছোট-বড় গাছ যা আছে, সবই কেটে নেওয়া হচ্ছে। এভাবে গাছ কেটে ফেলা উচিত হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী সওজ বিভাগের নির্বাহী বৃক্ষপালনবিদ মীর মুকুট মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘ওয়াসা যখন প্রকল্প গ্রহণ করে, তখন ভূমি অধিগ্রহণের কোনো বাজেট রাখা হয়নি। ওয়াসা যদি এখনো জমি অধিগ্রহণ করে, তাহলে এখনো চার লটের বাকি ২২২টি গাছ রক্ষার সুযোগ আছে। এগুলোর কার্যাদেশ হয়নি।’

এ বিষয়ে কথা বলতে রাজশাহী ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী পারভেজ মামুদকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তিনি ওয়াসার ওই প্রকল্পের পরিচালক হিসেবেও কাজ করছেন।

এদিকে গাছ কাটার বিষয়ে বেশ তাড়াহুড়ো করছে রামেবি কর্তৃপক্ষ। শহরসংলগ্ন বাজেসিলিন্দা মৌজায় অধিগ্রহণ করা ২০৫ বিঘার সবুজ ও নির্মল পরিবেশে গড়ে তোলা হচ্ছে স্থায়ী ক্যাম্পাস। এতে ব্যয় হবে ২ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। সম্প্রতি দরপত্র ছাড়াই ক্যাম্পাস থেকে সহস্রাধিক গাছ কেটে নিয়ে যায় একটি চক্র। এ নিয়ে তদন্ত চলছে।

সেই তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই গত ২৫ সেপ্টেম্বর নতুন করে গাছ কাটার দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে গাছখেকো চক্রের ফেলে যাওয়া কিছু গাছসহ মোট ১ হাজার ৮৫৩টি গাছ বিক্রির তালিকায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৮৯টি আম এবং ৬৮৯টি মেহগনি গাছ রয়েছে।

অবৈধভাবে গাছ কাটার তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই নতুন গাছ কাটার উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রামেবির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোহা. জাওয়াদুল হক গতকাল দুপুরে বলেন, ‘সবার মতামত নিয়ে গাছ কাটছি। ক্যাম্পাসে ৪৯ শতাংশ গ্রিন জোন থাকবে। আমরা যে ১ হাজার ৮৫৩টি গাছ কাটছি, তার বদলে প্রায় ২ হাজার ৩০০ গাছ লাগাব।’

তবে গাছ কাটার ক্ষেত্রে প্রকৌশলীদের দূরদর্শিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। রাজশাহী পরিবেশ আন্দোলন ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব নাজমুল হোসেন রাজু বলেন, ‘প্রকৌশলীরা পরিবেশবান্ধব চিন্তা করছেন না। তাঁরা পুরোনো গাছ কেটে নতুন গাছ লাগানোর কথা বলছেন। কিন্তু পুরোনো গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় যে প্রভাব রাখবে, নতুন ছোট গাছ তো তা পারবে না। তাই গাছ রেখে প্রকৌশলবিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে কাজ করা যায়, সেটা ভাবতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন:

বাসা থেকে জিনিসপত্র চুরির সময় ধস্তাধস্তিকালে মা-মেয়েকে খুন করেন আয়েশা: পুলিশ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০১
বাসা থেকে জিনিসপত্র চুরির সময় ধস্তাধস্তিকালে মা-মেয়েকে খুন করেন আয়েশা: পুলিশ

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার গৃহকর্মী আয়েশা আক্তার (২০) চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, বাসা থেকে জিনিসপত্র চুরির সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তিনি গৃহকর্তার স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন।

আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়ারচর এলাকা থেকে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ আয়েশাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি নরসিংদীর সলিমগঞ্জ এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে। হত্যাকাণ্ডের পর নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়ারচর এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন এই তরুণী।

নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের অভিযানে তাঁর স্বামী জামাল সিকদার রাব্বিকেও আটক করা হয়েছে। জামাল ওই এলাকার জাকির সিকদারের ছেলে। জামাল ও আয়েশা ঢাকায় থাকেন। মা-মেয়ের হত্যাকাণ্ডের পরে তাঁরা বাড়িতে আসেন।

অভিযানে অংশ নেওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল ইসলাম মাসুম সাংবাদিকদের বলেন, গৃহকর্তার বাসা থেকে কিছু মালামাল চুরি করার পর সেখানে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় আয়েশা আক্তার ছুরিকাঘাত করে গৃহকর্তার স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যা করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা হয়।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি এসব কথা বলেন।

অভিযানে তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুনও ছিলেন। পরে আয়েশাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন পুলিশ সদস্যরা।

এর আগে গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ হয় স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজনীতিবিদদের মধ্যে গুণগত পরিবর্তন না এলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নেতৃত্ব সংকটে পড়বে: লক্ষ্মীপুরে এ্যানি

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৮
আজ সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা দলের উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা দলের উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে গুণগত পরিবর্তন না এলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নেতৃত্ব সংকটে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের গুণগত পরিবর্তন হয়নি, গুণগত পরিবর্তন করতে হবে। তা না হলে সমাজের মানুষ যাবে কোথায়? কে তাদের নেতা হবে? কে নেতৃত্ব দেবে? একটি অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।’ আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা দলের উঠান বৈঠকে বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

এ্যানি অভিযোগ করে বলেন, গত ১৭ বছরে ‘অত্যাচার–নির্যাতনের’ কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আজ মৃত্যুর মুখোমুখী। তাঁর দাবি, মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছিল এবং ‘যে খাবার তিনি খেতেন, তাতে বিষ মেশানো হয়েছিল’। তিনি আরও বলেন, সুস্থ মানুষ জেলে গিয়েছিলেন, অসুস্থ হয়ে বের হয়েছেন। এর জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। আল্লাহ জানেন কবে সুস্থ হয়ে তিনি ফিরে আসবেন। তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক, এটাই এখন সবার প্রত্যাশা। এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী দুই–চার দিন বা ১০ দিনের মধ্যে তারেক রহমান দেশে ফিরবেন, নির্বাচনে অংশ নেবেন এবং দেশের নেতৃত্ব দেবেন।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, এবারের নির্বাচন আগের মতো নয়। ‘একটি অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে নির্বাচন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বেঁচে থাকা মানে দেশের গণতন্ত্রের ভিত্তি আরও শক্তিশালী থাকা। তিনি বিএনপির মনোবল ও সাহস।

এ্যানি মহিলা দলের নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের নারীরা দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দেশ বদলে গেছে। দেশ এখন আর আগের জায়গায় নেই। বাসায় বসে আয় করার সুযোগ রয়েছে। তাই আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে নারীদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। তাই আপনাদের অধিকার বুঝে নেওয়ার সময় এসেছে। অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখন অনেক সহজ হয়েছে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে এ্যানি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনা, স্বাধীনতার নেতৃত্ব, যুদ্ধের মাঠে লড়াই—এসব কারণে জিয়াউর রহমান মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। একইভাবে বেগম জিয়াও মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাবুদ্দিন সাবু, বাফুফের সহসভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, জেলা বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান, লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম লিটন, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা আক্তার সুমি ভূঁইয়া প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শখের হাঁসটি ধরে নিয়ে গেলেন এনজিও কর্মীরা

 আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৯
টিএমএসএসের অফিসের মেঝেতে রাখা হাঁস। ছবি: আজকের পত্রিকা
টিএমএসএসের অফিসের মেঝেতে রাখা হাঁস। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় কিস্তির টাকা না পেয়ে এক নারীর বাড়ি থেকে একটি চিনাহাঁস ধরে নিয়ে গেছেন এনজিও কর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ওই নারী জানিয়েছেন, তাঁর স্কুলপড়ুয়া মেয়ে শখ করে হাঁসটি পালত।

হাঁসটির মালিক ফুল্লশ্রী গ্রামের মো. মুরাদ হোসেনের স্ত্রী হাফিজা খানম। অভিযোগ উঠেছে, কিস্তির টাকা না পেয়ে ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) নামের একটি এনজিওর কর্মীরা তাঁর বাড়ি থেকে হাঁসটি নিয়ে যান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাফিজা টিএমএসএসের সদস্য। ওই এনজিও থেকে চলতি বছরের শুরুর দিকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ২৫০ টাকা করে নিয়মিত কিস্তি দিয়ে আসছিলেন তিনি। গতকাল বিকেলে কিস্তির টাকা তুলতে হাফিজার বাড়িতে যান ওই এনজিওর মাঠকর্মী ফিরোজ খানসহ দুজন। হাফিজা আগামী সপ্তাহে কিস্তির টাকা পরিশোধ করে দেবেন বলে তাঁদের চলে যেতে অনুরোধ জানান। কিন্তু ফিরোজ খান কিস্তির টাকা না নিয়ে হাফিজার বাড়ি থেকে যাবেন না বলে অনড় থাকেন। এ সময় ফিরোজ খান হাফিজার উঠানে থাকা হাঁস-মুরগি দেখে টাকার পরিবর্তে হাঁস দাবি করেন। হাফিজা তাতে অসম্মতি জানিয়ে পাশের বাড়িতে চলে যান। এই ফাঁকে এনজিওর কর্মীরা হাফিজার বাড়ি থেকে একটি চিনাহাঁস ধরে নিয়ে যান।

এ ব্যাপারে হাফিজা খানম বলেন, ‘সর্বশেষ একটি কিস্তির টাকা আগামী সপ্তাহে পরিশোধ করার কথা বলছি। কিন্তু এনজিওর মাঠকর্মীরা আমার বাড়ির উঠান থেকে ধাওয়া করে বড় একটি চিনাহাঁস ধরে নিয়ে যায়। তখন আমি বাড়ি ছিলাম না। ওই হাঁসটির দাম পনেরো শ-ষোলো শ টাকার মতো হবে। আমার মেয়ের পালা শখের হাঁসটি ফেরত চাই।’

উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজল দাসগুপ্ত বলেন, কিস্তির টাকার পরিবর্তে ঋণগ্রহীতার বাড়ি থেকে কোনো জিনিস আনার বৈধতা নেই। সদস্যের বাড়ি থেকে হাঁস আনার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। টিএমএসএস এনজিও আগৈলঝাড়া উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের আওতাভুক্ত নয়।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তপন বিশ্বাস বলেন, ‘এই এনজিওটি আমার উপজেলার আওতাভুক্ত নয়। তারা কীভাবে এই উপজেলায় কাজ করে আমার জানা নেই। কিস্তির টাকার পরিবর্তে হাঁস আনার বিষয়টি অবৈধ।’

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে টিএমএসএস এনজিওর মাঠকর্মী ফিরোজ খান হাফিজা খানমের বাড়ি থেকে হাঁস ধরে আনার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, কিস্তির টাকার পরিবর্তে ৮০০ টাকা দাম ধরে হাঁস আনা হয়েছে।

এ ব্যাপারে টিএমএসএস এনজিওর ম্যানেজার মো. রাজেক ইসলাম বলেন, ‘ঋণগ্রহীতা হাফিজা খানম হাঁস বিক্রি করে পরে টাকা দেবে। আমার এনজিওর মাঠকর্মী দাম ধরে কিনে আনলে অপরাধের কিছু নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হজের খরচ ১০০ ডলার কমাতে বিমানকে চিঠি দিয়েছে সরকার: ধর্ম উপদেষ্টা

নাটোর প্রতিনিধি
আজ সকালে নাটোরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে নাটোরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘২০২৩ সালে হাজিদের আনা-নেওয়ার জন্য বিমানভাড়া ছিল ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা। ২০২৪ সালে আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর বিমানভাড়া ২৭ হাজার টাকা কমানো হয়েছে। বর্তমানে ১ লাখ ৫৪ হাজার টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে আরও ১০০ ডলার কমানোর জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। আসন্ন হজ মৌসুমে কোনো সিন্ডিকেটকে পাত্তা দেওয়া হবে না।’

আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে নাটোর জেলা মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন খালিদ হোসেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘সৌদি সরকারের অনুরোধে গত বছরের তুলনায় এবার হজে গমন-ইচ্ছুকদের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। যারা ১০-১২টি রোগে আক্রান্ত তাঁদের হজে পাঠানো হবে না। আমরা চাচ্ছি, স্বচ্ছ এবং ট্রান্সপারেন্ট ব্যক্তিদের হজে পাঠাতে।’

এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়াহাব প্রমুখ।

পরে উপদেষ্টা নাটোর সদর উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। প্রতিটি মডেল মসজিদ নির্মাণে জেলা পর্যায়ে ১৮ কোটি এবং উপজেলা পর্যায়ে ১৪ কোটি টাকা খরচ করছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত