Ajker Patrika

মুগদা থেকে রাবি ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার, সহপাঠীদের মানববন্ধন

ঢামেক প্রতিবেদক ও রাজশাহী প্রতিনিধি
মুগদা থেকে রাবি ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার, সহপাঠীদের মানববন্ধন

রাজধানীর মুগদা মানিকনগর এলাকার একটি বাসা থেকে গতকাল সোমবার রাতে ছন্দা রায় (২৬) নামের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থনীতি বিভাগ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছেন। মাত্র তিন মাস আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। 

মুগদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌসী আক্তার বলেন, সোমবার রাতে খবর পেয়ে মুগদার ওই বাসা থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় সে ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে ঝুলছিল। ওই বাসায় স্বামী স্ত্রী বসবাস করত। স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা। ঘটনার সময় স্বামী অফিসে ছিল। তবে ফাঁসির কারণ জানা যায়নি। মরদেহের ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ছন্দার বড় বোন দীপা রানী জানান, তাদের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল থানার রাউতনগর গ্রামে। তার বোন ছন্দা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগ থেকে মাস্টার্সে পরীক্ষা দিয়েছিল। এরপর গত ৮ জুলাই পারিবারিকভাবে দিনাজপুর পার্বতীপুরের বাসিন্দা বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক উত্তম কিমার রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়। তিন বোনের মধ্যে ছন্দা ছিল ছোট। ছন্দা একটা চিরকুট লিখে গেছে। তাতে লেখা আছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’ তবে ছন্দা আত্মহত্যা করার মেয়ে নয়। কেন সে আত্মহত্যা করবে? আত্মহত্যা করার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। 

এদিকে আজ মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ছন্দা রায়ের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাবেদুল ইসলাম মনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ছন্দার সহপাঠীরা বলেন, ছন্দা সদা হাস্যোজ্জ্বল একজন মেয়ে ছিলেন। তিন মাস আগেই তার পছন্দে বিয়ে হয়েছে। তার এমন মৃত্যু কেউ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘মরদেহ দেখে মনে হয়নি ছন্দা আত্মহত্যা করেছেন। তার মরদেহ দেখে মনে হয়েছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে ছন্দা তার পরিবারকে জানিয়েছেন, তার বিবাহিত জীবন ভালো যাচ্ছে না। ছন্দার স্বামী কখনো মানসিকভাবে সাপোর্ট করতেন না এবং সব সময় সন্দেহ করতেন। তাই আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার মৃত্যুর রহস্য জানতে চাই।’ 

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, ছন্দা রাষ্ট্রের সম্পদ ছিল। সে খুবই মেধাবী ও হাস্যোজ্জ্বল ছিল। সে সবেমাত্র মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়েছে। কিছুদিন পরেই তার ফলাফল প্রকাশ হবে। সে এভাবে কখনোই আত্মহত্যা করতে পারে না। তাই এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিরসরাইয়ে ইয়াবাসহ যুবদল নেতা গ্রেপ্তার

মিরসরাই (প্রতিনিধি) চট্টগ্রাম
গ্রেপ্তারকৃত যুবদল নেতা ছালাউদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তারকৃত যুবদল নেতা ছালাউদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ১০০টি ইয়াবা বড়িসহ এক যুবদল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের ভোরবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ছালাউদ্দিন সাহেরখালী ইউনিয়নের উত্তর সাহেরখালী মোল্লাপাড়ার মহিউদ্দিনের ছেলে। তিনি একই ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন।

জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর থেকে ছালাউদ্দিন এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত।

ছালাউদ্দিন ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে সাহেরখালী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মো. নুর উদ্দিন বলেন, কেউ যদি অপরাধ কর্মকাণ্ড করে থাকেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। এটার দায় সংগঠন বহন করবে না।

এ বিষয়ে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, শুক্রবার রাতে উপজেলার ভোরবাজার থেকে ছালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে ১০০ ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দিয়ে আজ শনিবার সকালে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশালে অস্ত্র, মাদক ও ২০ লক্ষাধিক টাকাসহ নারী গ্রেপ্তার, স্বামী পলাতক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
অস্ত্র, মাদকসহ গ্রেপ্তার নারী। ছবি: সংগৃহীত
অস্ত্র, মাদকসহ গ্রেপ্তার নারী। ছবি: সংগৃহীত

বরিশালে দেশীয় অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য এবং নগদ ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৫১০ টাকাসহ এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) কাউনিয়া থানা। এই ঘটনায় অভিযুক্ত নারীর স্বামী পলাতক রয়েছেন। শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে বিএমপি পুলিশের মিডিয়া সেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিএমপি মিডিয়া সেল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে কাউনিয়া থানাধীন বিসিসি ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসআই মো. রাশিক মুরাদ অভির নেতৃত্বে একটি বিশেষ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিল্পী বেগমের (৩৮) একতলা টিনশেড বাড়িতে এই অভিযান পরিচালনা করে।

এ সময় মাদক বিক্রির ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৫১০ টাকা, ৯টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ১০২টি ইয়াবা ট্যাবলেট, ৫০ গ্রাম গাঁজা এবং ২৫০ মিলিলিটার মদ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিল্পী বেগমকে গ্রেপ্তার করে। তবে গ্রেপ্তার শিল্পী বেগমের স্বামী মো. সুমন হাওলাদার ওরফে মান্না সুমন (৪২) পলাতক রয়েছেন।

বিএমপির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় কাউনিয়া থানায় শিল্পী বেগম এবং তাঁর পলাতক স্বামীর বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক সুমন হাওলাদারের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কালকিনিতে সন্ত্রাসবিরোধী মামলার আসামি তাঁতী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

মাদারীপুর, প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার তাঁতী লীগের নেতা রেজাউল ফরাজী। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার তাঁতী লীগের নেতা রেজাউল ফরাজী। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুরের কালকিনিতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় উপজেলা তাঁতী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) গভীর রাতে কালকিনি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর রাজদী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম রেজাউল ফরাজী। তিনি ওই গ্রামের ছত্তার ফরাজীর ছেলে এবং কালকিনি উপজেলা তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচিত।

কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ২৪ সেপ্টেম্বর কালকিনির সাহেবরামপুরে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেছিল। সেই মামলায় রেজাউল ফরাজীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।

ওসি আরও বলেন, ‘মামলার পর থেকে তাঁকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছিল। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘চড়ুইভাতি’র বিনিময়ে আগাম ভুট্টা রোপণ করছে ফুলবাড়ীর খুদে কৃষকের দল

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর ও দাদপুর এলাকায় প্রস্তুতকৃত জমিতে খুদে কৃষকেরা ভুট্টা রোপণ করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর ও দাদপুর এলাকায় প্রস্তুতকৃত জমিতে খুদে কৃষকেরা ভুট্টা রোপণ করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের শস্যভান্ডার খ্যাত ফুলবাড়ীতে শুরু হয়েছে আগাম জাতের ভুট্টা রোপণ, তবে শ্রমিক-সংকটে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন চাষিরা। একদল উদ্যমী খুদে কৃষক চড়ুইভাতির বিনিময়ে ভুট্টা রোপণে এগিয়ে আসায় দূর হয়েছে শ্রমিক-সংকট।

নদীর তীর, ধঞ্চে ও পাট কাটার পর প্রস্তুত করা জমিতে এখন চলছে ভুট্টা রোপণের কাজ। ভুট্টা চাষ সাধারণত সারা বছর করা গেলেও ভালো দাম পেতে অনেক কৃষক অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আগাম জাতের ভুট্টা রোপণ করেন। কিন্তু এই আগাম রোপণে শ্রমিক-সংকট, বীজ ও সারের ঊর্ধ্বগতি এবং বৈরী আবহাওয়া—নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হচ্ছিল চাষিদের।

ভুট্টা রোপণের কাজ সাধারণত সকাল ও বিকেল—নির্দিষ্ট এই দুই সময়ে করতে হয়। শুধু অল্প সময়ের কাজের জন্য প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক পাওয়া কঠিন, আবার তাঁদের মজুরিও অনেক বেশি। এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে স্কুলপড়ুয়া শিশু-কিশোরদের কয়েকটি দল।

জানা যায়, ১০-১৫ জনের এই খুদে কৃষকের দল স্কুল ছুটির দিন বা স্কুলে যাওয়ার আগে-পরে ভুট্টা রোপণ করে দিচ্ছে। এতে একদিকে কৃষকের শ্রমিক-সংকট দূর হচ্ছে, অন্যদিকে শিশু-কিশোরেরা কৃষিকাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। এই কাজের বিনিময়ে পুরো দলকে চড়ুইভাতির মাধ্যমে পিকনিক খাওয়ানো হয় এবং তাদের স্কুলের টিফিনের জন্য কিছু বাড়তি টাকাও দেওয়া হয়।

শুক্রবার বিকেলে উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর ও দাদপুর এলাকায় দেখা যায়, প্রস্তুতকৃত জমিতে সারি সারি হয়ে একদল খুদে কৃষক ভুট্টা রোপণ করছে। তাদের দলে রয়েছে একজন সরদার। সরদার মূলত কার জমিতে ভুট্টা রোপণ করবে তা ঠিক করে। কোনো জমিতে ভুট্টা রোপণ করতে হলে আগে সরদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। পাটের সুতলিতে ১৫ ইঞ্চি পরপর লাল রং করে বীজ রোপণের দূরত্ব ঠিক করা হয়েছে। দেড় হাত পরপর সুতলি ধরে ভুট্টার লাইনের দূরত্ব ঠিক করছে সরদার। অন্য সদস্যরা পাশাপাশি সারবদ্ধ হয়ে সুতলিতে দেওয়া লাল দাগের নিচে বীজ রোপণ করছে। এভাবে এক বিঘা জমি মাত্র এক ঘণ্টায় রোপণ করছে। শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এবং বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভুট্টা রোপণ করে তারা। এই সময়ে ৪-৫ বিঘা জমি রোপণ করতে পারে। অন্যান্য দিন সকালে দুই ঘণ্টা ও বিকেলে দুই ঘণ্টা ভুট্টা রোপণ করে তারা।

খুদে কৃষক সিয়াম, আকাশ, মাহিম, রিফাতের ভাষ্য, ‘আমরা লেখাপড়ার পাশাপাশি ভুট্টা রোপণ করি। জমির মালিক আমাদেরকে সকালে হোটেলে খিচুড়ি খাওয়ান। এ ছাড়াও ৫০-১০০ টাকা করে দেন। যা দিয়ে আমাদের স্কুলের টিফিনের টাকা হয়ে যায়। ভুট্টা রোপণ শেষ হলে বড়সড় চড়ুইভাতির আয়োজন করেন। আমাদের মূল আকর্ষণ ওই চড়ুইভাতি। অল্প সময়ের কাজ বলে মা-বাবা কিছু বলে না। কোনো কাজই ছোট নয়, আমাদেরও অভিজ্ঞতা হলো।’

কথা হয় ভুট্টাচাষি মামুনুর রশিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছোট যমুনা নদীর তীরে প্রতিবছর ১৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করি। আগাম ভুট্টা ভালো দামে বিক্রি হয়। কিন্তু এ সময় শ্রমিক-সংকট থাকায় প্রতিবেশী খুদে কৃষকেরা ভুট্টা রোপণে সাহায্য করে। এতে শ্রমিক-সংকট দূর হয়, ভুট্টা রোপণে খরচ কমে। সবাই মিলেমিশে চড়ুইভাতি করি। চড়ুইভাতিতে অনেক ছেলেমেয়ের মা-বাবাও অংশগ্রহণ করে, এতে অনেক আনন্দ হয়। পাশাপাশি বাড়তি অল্প কিছু টাকা পায়, তা দিয়ে তাদের স্কুলের টিফিন খরচ হয়ে যায়।’

দাদপুর এলাকার শামিম হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সময়ে শ্রমিক পাওয়া অনেক কঠিন। তাই স্কুল ছুটির দিনে প্রতিবেশী ভাই-ভাতিজাদের দিয়ে ১ বিঘা জমির ভুট্টা লাগিয়েছি। এতে তারা ছোট থেকে কৃষিকাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা পেল। তাদেরকে পিকনিকের খরচ করে দিয়েছি। ওরা ওদের মতো করে চড়ুইভাতি করে আনন্দ করেছে।’

অভিভাবকেরা বলেন, ‘বর্তমান সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির যুগে প্রায় ছেলেমেয়েরা ইন্টারনেট আর মোবাইলে আসক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন ভুলে যাচ্ছে। এর কুফলে আনেকের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ছে। তার চেয়ে ছুটির দিনে অবসর সময়ে যে সময় খেলাধুলা করে, সে সময় কৃষিকাজে সহযোগিতা করছে। এ ছাড়া সকলে মিলে একসঙ্গে চড়ুইভাতি করে আনন্দ-উল্লাস করছে। এতে কৃষিকাজের বাস্তব অভিজ্ঞতার পাশাপাশি একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ফুলবাড়ী উপজেলায় এবার ৪ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভুট্টা মূলত সারা বছরই চাষ করা যায়। তবে উপযুক্ত সময় হচ্ছে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত। ভুট্টা রোপণের যান্ত্রিকীকরণ এখনো সহজলভ্য না হওয়ায় শ্রমিক-সংকট থাকতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত