Ajker Patrika

মৃত সন্তান প্রসবের পর প্রসূতির মৃত্যু, চিকিৎসায় ঘাটতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
মৃত সন্তান প্রসবের পর প্রসূতির মৃত্যু, চিকিৎসায় ঘাটতির অভিযোগ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এক প্রসূতি নারীর ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির ১৪ ঘণ্টা পর মৃত বাচ্চা প্রসব শেষে ওই নারীর মৃত্যু হয়।

এর আগে ওই রোগী বেসরকারি একটি ডায়াগনস্টিক ল্যাবের চিকিৎসক ডা. অর্পিতা বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। এ ঘটনায় ওই নারীর মৃত্যুর দায়ী নিতে চাচ্ছে না কেউ।

মারা যাওয়া নারীর নাম মোসা. কুলসুম (২৫)। তিনি কুয়াকাটার লতাচাপালী ইউনিয়নের মিসরিপাড়া গ্রামের দোকানদার জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের স্ত্রী।

কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জে এইচ খান লেলিন বলেন, রোগী কুলসুমের নবজাতকের বয়স হয়েছিল ৩১ সপ্তাহ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পেটে বাচ্চাটি মারা যায়। গত ২ জুন (রোববার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রোগী কুলসুম হাসপাতালে ভর্তি হন। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে তিনি মারা যান। তার আগে মৃত বাচ্চা ডেলিভারি হয় সকাল ৯টায়।

তিনি জানান, জরুরি বিভাগের ডাক্তার যে চিকিৎসা দেওয়ার তাই দিয়েছেন। এর আগে তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অপির্ত রায় দেখেছেন। ডা. অর্পিতা বেসরকারি চিকিৎসক হলেও ডক্টরস কোয়ার্টারেই থাকেন।

কুলসুমের স্বামী জাহাঙ্গির বিশ্বাস বলেন, বেসরকারি ল্যাবের চিকিৎসক অর্পিতা নরমাল ডেলিভারি করাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সের কাছে পাঠান। আর সেখানকার চিকিৎসক লেলিন কেন রোগীকে আগেভাগে আনা হয়নি এ নিয়ে বকাঝকা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ৫ বছরের ছেলেটা মা হারা হয়েছে।’

জানতে চাইলে কলাপাড়া সাউথ পপুলার ডায়াগনস্টিক ল্যাবের চিকিৎসক অর্পিতা রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, কুলসুমের আলট্রাসনোগ্রাফি করে দেখেন পেটের বাচ্চা মারা গেছে। এরপর রেফার্ড করেন কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রোগীটি সুস্থ অবস্থায় হেঁটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেছেন। এরপর হাসপাতালের ভেতর ১৩-১৪ ঘণ্টা কি হয়েছে তা তিনি জানেন না।

ডা. অর্পিতা বলেন, ‘ওই রোগী কার দায়িত্বে ছিল, কি চিকিৎসা হলো আপনার এসবের খোঁজ নিন। হেঁটে যাওয়া রোগী কেন মৃত্যু হলো, এর বিচার আমিও চাই।’

তবে কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ডা. অর্পিতার উচিত ছিল রোগীকে জেলা শহরে পাঠানো। কিন্তু বিভিন্ন সময় ডা. অর্পিতা কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স দিয়ে রোগীদের অবৈধভাবে ডেলিভারি করান। এমনকি অর্পিতার স্বামী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিব) নেতা হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডক্টরস কোয়ার্টার দখল করে আছেন, কিন্তু ভাড়া দেন না। এ নিয়ে নোটিশও দেওয়া হয়েছে।’

কিন্তু ডা. অর্পিতা দাবি করেছেন, তাঁর স্বামী ডা. অনুপ কুমার রায় এ হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। তাঁরা ১৪ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে কোয়ার্টারে থাকেন। নার্স দিয়ে ডেলিভারি করানোর তথ্য সত্য নয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, মৃত বাচ্চা প্রসবের পরে কুলসুম ভাত খেয়েছে। পরে শ্বাসকষ্ট উঠে মারা যায়। ডেলিভারির পরে তার ফুসফুসের সমস্যা হতে পারে। তবে কী কারণে মৃত্যু হলো তা নিশ্চিত হতে হলে ময়নাতদন্ত করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ