Ajker Patrika

পাবনা বক্ষব্যাধি হাসপাতাল: জীর্ণ হাসপাতালের ছাদে চলে মাদকের আড্ডা

পাবনা প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চিকিৎসক ও জনবলসংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাবনার একমাত্র বক্ষব্যাধি হাসপাতালের কার্যক্রম। ছয় দশকের পুরোনো হাসপাতালটিতে বেশির ভাগ পদই শূন্য। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। অন্যদিকে নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালের ছাদে চলে মাদকসেবীদের আড্ডা। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন নার্সসহ নারী কর্মীরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬২ সালে পাবনা শহরের শালগাড়িয়া এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় ২০ শয্যার পাবনা বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। এখানে প্রতিদিন গড়ে ১০০ রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। জেলার একমাত্র বক্ষব্যাধি হাসপাতালটিতে পাঁচ চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছেন মাত্র দুজন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নার্স ও ওয়ার্ডবয়সহ প্রায় সব পদে জনবল ঘাটতি। এ ছাড়া টেকনিশিয়ানের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না হাসপাতালের এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন। শুধু কফ ছাড়া প্যাথলজিক্যাল কোনো পরীক্ষার সুযোগ নেই হাসপাতালটিতে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবাপ্রত্যাশীরা।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা সদর উপজেলার মালিগাছা গ্রামের বাসিন্দা মামুন হোসেন বলেন, ‘সকাল ৯টায় এসেছি, এখন ১১টা বাজে। তবু ডাক্তার আসেনি। আমরা চাই, এখানে ডাক্তারের সংখ্যা বাড়ানো হোক। মানুষ ভালো চিকিৎসা পাক।’

চাটমোহর থেকে আসা গৃহবধূ সালমা খাতুন বলেন, ‘অনেকক্ষণ হলো এসেছি। কিন্তু দেরি হচ্ছে ডাক্তার দেখাতে। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে গরমের মধ্যে এত সময় অপেক্ষা করা কঠিন। ডাক্তার কম, তাই অনেক সময় লাগছে রোগী দেখতে।’

সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বেশির ভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখানে হয় না। বাইরে থেকে করতে হয়। এখানে সময় কম লাগত, সাশ্রয় হতো। গরিব মানুষ উপকৃত হতো, কিন্তু সেটা থেকে বঞ্চিত আমরা।’

এদিকে হাসপাতালটিতে দায়িত্ব পালনে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নার্সরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক নার্স জানান, ‘এখানে বহিরাগত ব্যক্তিদের আনাগোনা বেশি। রাতে নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হয়। বহিরাগত ব্যক্তিরা হাসপাতালের ছাদে আড্ডা দেয়, মাদকদ্রব্য সেবন করে। এ নিয়ে খুব ভয়ে থাকতে হয়।’

এ বিষয়ে পাবনা বক্ষব্যাধি হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মো. মকলেছুর রহমান বলেন, ‘এখানে পাঁচটি পদের মধ্যে মাত্র দুজন ডাক্তার আছেন। তাঁদেরও অসুখবিসুখে ছুটি নিতে হয়। এ ছাড়া অন্যান্য পদেও জনবলসংকট রয়েছে। যে কারণে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখেছি। এখনো কাজ হয়নি।’

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সব জায়গাতেই কিছু না কিছু চিকিৎসকের সংকট আছে। তবে বর্তমান সরকার দক্ষ জনবল নিয়োগের যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটা হলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতির যে সমস্যা রয়েছে, সেটি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত