Ajker Patrika

সুবর্ণচরে পিকআপ ভ্যান উল্টে একজন নিহত, আহত ২

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২২, ১৪: ১০
সুবর্ণচরে পিকআপ ভ্যান উল্টে একজন নিহত, আহত ২

নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চর ওয়াপদা ইউনিয়নে পিকআপ ভ্যান উল্টে মো. নাছির (৩৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে ওই ইউনিয়নের সোনাপুর-চেয়ারম্যানঘাট সড়কের সুলতাননগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আরও দুজন গুরুতর আহত হন এবং পিকআপ ভ্যানের নিচে চাপা পড়ে একটি গরু মারা যায়। 

আহত ব্যক্তিরা হলেন কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জামানের ছেলে রুবেল (২০) ও হাতিয়ার পশ্চিম বড় ডেইল এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে রাহাত (২১)। আহতদের ভাষ্যমতে, নিহতের বাড়ি চট্টগ্রামের মহেশখালী এলাকায়। ঘটনার পর তাঁদের সঙ্গে থাকা আরও দুজন পালিয়ে যান। 

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চর জব্বার ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পরিষ্কার বাজার এলাকার ছেরাজুল ও সেলিমের বাড়ি থেকে গরু চোর চক্রের পাঁচজনের একটি দল চারটি গরু পা বেঁধে খড় দিয়ে ঢেকে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল। পিকআপ ভ্যানটি সোনাপুর-চেয়ারম্যানঘাট সড়কের সুলতাননগর এলাকায় পৌঁছালে গাড়ির সামনের চাকা লিক হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় উল্টে যায়। এ সময় পিকআপের নিচে চাপা পড়েন এক ব্যক্তি ও একটি গরু ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ ঘটনায় অপর দুই ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। 

পরে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের নোয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠান। অপর দুই চোর পালিয়ে যায়। 

চর জব্বার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, সম্প্রতি এলাকায় একাধিক গরু চুরি হয়েছে। চোরেরা বিভিন্ন কৌশলে এসব চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পরিষ্কার বাজার এলাকার ছেরাজুল ও সেলিমের চারটি গরু পা বেঁধে খড় দিয়ে ঢেকে চুরি করে নিয়ে পালানোর সময় পিকআপ ভ্যানের চাকা লিক হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গরু চোর সন্দেহভাজন ব্যক্তি মারা যান। 

চর জব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গরু চুরি করার পর টহল পুলিশ দেখে দ্রুতগতিতে পিকআপ ভ্যান নিয়ে পালানোর সময় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। পিকআপ ভ্যানের মধ্যে থাকা চোর চক্রের এক সদস্য নিহত হন। সেখানে গিয়ে তিনটি গরু ও তাঁদের ব্যবহৃত গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। 

ওসি আরও বলেন, আহতদের নোয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ধ্যার পর গ্রামে প্রবেশ করলেই চোর হিসেবে আটকের ঘোষণা

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি 
সন্ধ্যার পর গ্রামে প্রবেশ করলেই চোর হিসেবে আটকের ঘোষণা

রংপুরের মিঠাপুকুরে সন্ধ্যার পর অপরিচিত কেউ গ্রামে প্রবেশ করলেই ‘চোর’ হিসেবে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কাশিপুর জামে মসজিদ কমিটি। সাম্প্রতিক সময়ে গরু চুরি ও মাদক ব্যবসা বেড়ে যাওয়ায় আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

মসজিদের মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাশিপুর গ্রামে বিশেষ করে ইয়াবা বেচাকেনা বেড়ে যাওয়ায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বহিরাগতদের আনাগোনা দেখা যায়। গত বুধবার রাতে গ্রামের আজহারুল ইসলামের গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হওয়ার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মসজিদে অনুষ্ঠিত আলোচনায় মুসল্লিরা বলেন, মাদক বেচাকেনার কারণে গ্রামে অপরাধ বেড়েছে। উঠতি বয়সের তরুণেরা জড়িয়ে পড়ছে মাদকে, ফলে বহিরাগত ব্যক্তিদের যাতায়াতও বাড়ছে। এতে গ্রামের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে।

মসজিদের মুসল্লি আশিকুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিনই বহিরাগত লোকজন আসে। ইয়াবার কারবার চলে। সাম্প্রতিক চুরির ঘটনাও বেড়েছে। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, সন্ধ্যার পর কোনো অচেনা লোককে দেখা গেলে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’

অন্য মুসল্লি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইয়াবা বিক্রির কারণেই বাইরে থেকে লোক আসে। এখন যৌক্তিক কারণ ছাড়া সন্ধ্যার পর গ্রামে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইয়াছিন আলী বলেন, ‘সামাজিক অবক্ষয় ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে বলা হয়েছে। গ্রামের নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘শীত আসায় কুয়াশার সুযোগে ছিঁচকে চোরদের তৎপরতা কিছুটা বেড়েছে। স্থানীয়দের উচিত মাদক কারবারি ও অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করা। তবে কোনো অবস্থাতেই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুবির হলে দুই জুনিয়রের বিরুদ্ধে সিনিয়র শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ

কুবি প্রতিনিধি 
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে দুই জুনিয়র শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এক সিনিয়র শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম হৃদয়ের দাবি, গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি প্রক্টরিয়াল বডির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

দ্বীন ইসলাম ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন বাংলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রোমান মিয়া এবং মো. ইউনূস আলী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলামের একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে তিনি দাবি করেন, ১৯ অক্টোবর হলের ১০৪ নম্বর কক্ষ থেকে ১০৩ নম্বর কক্ষে শিফট হচ্ছিলেন তিনি। এ সময় ১০৩ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী রোমান এবং ইউনূস তাঁর সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেন এবং টেবিল চাপড়ে তাঁকে মারতে আসেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাঁর পোস্টে আরও দাবি করেন, এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০ অক্টোবর হল প্রশাসন রোমান ও ইউনূসকে ডেকে তাঁদের সিট বাতিল করে এবং ২১ তারিখের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। পরবর্তী সময়ে ২২ অক্টোবর হল প্রশাসন থেকে তাঁকে জানানো হয়, রোমান ও ইউনূস হলে থাকবে। এ ছাড়া ২০ অক্টোবর ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের এক শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে হুমকি দেন বলেও অভিযোগ তোলেন দ্বীন ইসলাম। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার অভিযোগ তুলে গতকাল হল প্রভোস্টের মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে একটি অভিযোগ করার কথা জানান দ্বীন ইসলাম।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রোমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। উনি (দ্বীন ইসলাম) হুট করে আমাদের রুমে ওঠেন। তখন আমি জানতে চাই, আমাদের রুমে তো অলরেডি ৮ জন আছে, সেখানে আরও একজন কেন উঠবেন?’ তখন তিনি বলেন, ‘তিনি প্রশাসনের মাধ্যমে উঠেছেন। এরপর আমি বলছি, সবাই তো প্রশাসনের মাধ্যমে ওঠে। তারপর তিনি কিছুই না বলে প্রভোস্ট স্যারের কাছে বিচার দেন। পরদিন প্রভোস্ট স্যার আমাদেরকে ডাকান এবং সব কথা শুনে আমাদের দুজনের হলের সিট বাতিল করে দেন। এরপর সন্ধ্যায় আবার ফোন করে বলের এবারের মতো আমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। পরবর্তী সময়ে আর এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন।’ কোনো দোষ না করলে হল প্রশাসন সিট বাতিল করবে কেন—জানতে চাইলে রোমান বলেন, ‘আমাদের রুমে ৮ জন থাকার পরও আরেকজন কেন উঠবে, সেটা জানতে চাওয়ায় আমার সিট বাতিল করেছিল।’

অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী ইউনূস বলেন, ‘উনি (দ্বীন ইসলাম) যখন আমাদের রুমে আমার পাশের সিটে উঠছেন, তখন ওই সিটে অলরেডি একজন আছে। আমি জানতে চাইলাম, যে অলরেডি আছে তার সঙ্গে কথা বলেছেন কি না? তখন তিনি বলেন, তিনি প্রশাসনের মাধ্যমে উঠেছেন। এরপর আমি বললাম, প্রশাসনের মাধ্যমে উঠলেও এই সিটে যে আছে তার সঙ্গে কথা বলা উচিত। তখন তিনি কিছু না বলে প্রভোস্ট স্যারের কাছে বিচায় দেন। পরদিন প্রভোস্ট স্যার আমাদের সবার কথা শুনে রোমান আর আমার সিট বাতিল করে দেন। পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যায় স্যার আবার ফোন দিয়ে বলেন, আমাদেরকে এবারের মতো ক্ষমা করেছেন। আর যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এবং আমাদেরকে হলে থাকতে বলেন।’ কোনো অপরাধ না করলে হলের সিট বাতিল করা হলো কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আপনি প্রভোস্ট স্যারের সঙ্গে কথা বলেন কেন বাতিল করেছেন।’

অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সিট বাতিল করার বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। প্রক্টর অফিসে একটা অভিযোগ দিয়েছে শুনেছি। আগামী রোববার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল হাকিম বলেন, ‘অভিযোগপত্রটি এখনো আমার হাতে আসেনি। তবে আমি খোঁজখবর নিয়েছি। আগামী রোববার অভিযোগপত্র হাতে পেলে বিষয়টি দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোনামুখী মেলায় রমরমা জুয়া, জানে না পুলিশ

সিরাজগঞ্জ ও কাজীপুর প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের সোনামুখী মেলায় রমরমা জুয়ার আসর। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের সোনামুখী মেলায় রমরমা জুয়ার আসর। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সোনামুখী মেলায় চলছে রমরমা জুয়ার আসর। রাতভর চলে এই জুয়া খেলা, অথচ স্থানীয় পুলিশ বলছে—তারা কিছুই জানে না। তবে জুয়ার আয়োজকেরা দাবি করছেন, ‘সবাইকে ম্যানেজ করেই’ প্রকাশ্যে এমন আয়োজন চলছে।

জানা গেছে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রায় তিন শ বছর ধরে বসে ঐতিহ্যবাহী সোনামুখী মেলা। এবারও জেলা প্রশাসনের অনুমতিতে মেলা বসে, আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) শেষ দিন। শর্ত ছিল—এখানে অশ্লীল নাচ-গান, যাত্রা, সার্কাস, জুয়া বা মাদকসংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম চলবে না। কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে প্রকাশ্যে চলছে জুয়া। তবে অনেকের দাবি, আজ মেলার শেষ দিন হলেও জুয়া খেলা চলতে পারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সোনামুখী উচ্চবিদ্যালয়ের দক্ষিণে নিশি বাড়ি (সোনামুখী শ্মশান ঘাট) এলাকায় বসেছে এই জুয়ার আসর। অন্তত অর্ধশতাধিক জুয়াড়ি সেখানে জুয়া খেলায় মত্ত। বক্সে থাকা পাঁচটি ঘুঁটি নেড়ে ফেলা হয়, তারপর জুয়াড়িরা তাতে টাকা রাখেন। ঘুঁটিতে তাসের হরতন, রুইতন, টেক্কা, চিড়া ইত্যাদি প্রতীক থাকে। চারপাশে ভিড় জমেছে শত শত দর্শকের। সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু হলেও কেউ কেউ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাজি ধরছেন।

স্থানীয় আসাদুল নামের এক জুয়াড়ি বলেন, প্রতিদিন এখানে জুয়ার আসর বসে। রাত ৮টা থেকে ভোর পর্যন্ত চলে। দূরদূরান্ত থেকে লোক আসে। রতন নামের আরও এক ব্যক্তি বলেন, এখানে প্রতি রাতে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়। কেউ লাভ করে, আবার অনেকে নিঃস্ব হয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বাবলু নামের এক ব্যক্তি পুরো আসর নিয়ন্ত্রণ করেন। সিএনজি করে লোকজন আসেন। বাবলুই সব ম্যানেজ করেছেন। এক স্থানীয় নরসুন্দর বলেন, ‘আমরা দেখতে এসেছি। কেউ ৫০০ টাকা দিয়ে ১৫ হাজার জিতছে, আবার কেউ এক রাতে ৬ হাজার টাকায় লস দিচ্ছে।’

জানতে চাইলে জুয়ার আসর নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে পরিচিত কাজীপুর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সোনামুখীর বাসিন্দা বাবলু মিয়া নির্দ্বিধায় বলেন, ‘সবাইকে ম্যানেজ করেছি—থানা-পুলিশ, সাংবাদিক, সবাই। যত দিন পারি, চালাব।’

মেলার ইজারাদার বিএনপি নেতা ফজলুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, ‘মেলায় এমন কোনো ঘটনার কথা জানি না। পুলিশ নিয়মিত টহলে থাকে। খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল, তবে কাউকে আটক করা যায়নি।’

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন, মেলায় জুয়া চালানোর অনুমতি নেই। কেউ চালালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জুয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমরা অবশ্যই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘আপত্তিকর’ অবস্থায় প্রবাসীর বাড়িতে কনস্টেবল, স্থানীয়দের চাপে বিয়ে

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে এক পুলিশ কনস্টেবলকে (৩৪) প্রবাসীর বাড়িতে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে দেয়। আজ শুক্রবার উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিয়ের কাজি মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি বহু লোক। পরে একটা তালাকনামা করা হয়। অর্থাৎ প্রবাসীর স্ত্রীর তাঁর স্বামীকে তালাক দেন। নতুন করে পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে প্রবাসীর স্ত্রীর বিয়ে দিতে চাইলে আমি অস্বীকার যাই। শেষে উপস্থিত জনতার চাপে ছেলে ও মেয়ের স্বাক্ষর নিই কাবিননামায়।’

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল প্রবাসীর বাড়িতে যাতায়াত করেন। এ নিয়ে একাধিকবার প্রবাসীর স্ত্রীকে সতর্ক করেছেন স্থানীয়রা। কিন্তু তিনি অস্বীকার করেছেন এবং এ নিয়ে সবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। এমনকি নিজের শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গেও। প্রবাসীর স্ত্রীর জানান, পুলিশ কনস্টেবল তাঁর আত্মীয় হন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে পাহারা দিয়ে আটকে দেন এলাকাবাসী। তাঁদের উভয়ের সংসারে সন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আতোয়ার রহমান বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। দরজা খুললে দেখি পুলিশ সদস্য লুকিয়ে আছেন ড্রেসিং টেবিলের কাছে। এ সময় ছেলের শরীরে স্যান্ডো গেঞ্জি ছিল।’

মো. শামসুজ্জামান প্রামাণিক তনু নামের এক মধ্যস্থতাকারী বলেন, ‘উভয় পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে প্রবাসীকে তালাক দেন তাঁর স্ত্রী। পরে আটক পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে প্রবাসীর স্ত্রীর বিয়ে দেওয়া হয়। এরপর কনস্টেবল নতুন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে চলে যান।’

এ বিষয়ে কথা হয় সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হাকিম আজাদ এর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ থানায়ও আসেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত