Ajker Patrika

৫ আগস্ট নোয়াখালীতে থানায় অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ হত্যায় গ্রেপ্তার ৩

নোয়াখালী প্রতিনিধি
৫ আগস্ট নোয়াখালীতে থানায় অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ হত্যায় গ্রেপ্তার ৩

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানায় হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও পুলিশকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে আদালতে আসামিরা নিজেদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল্লাহ আল ফারুক। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নাইম হোসেন (২১), ইমাম হোসেন ইমন (২২) ও নাহিদুল ইসলাম (১৬)। তাঁরা সবাই সোনাইমুড়ী উপজেলার বাসিন্দা।  

এসপি মো. আবদুল্লাহ আল ফারুক জানান, গত ৫ আগস্ট সোনাইমুড়ী থানায় হামলা ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামি নাইম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে তাঁর মোবাইল ফোনের ডায়াল লিস্ট পর্যালোচনা করে আসামি ইমাম হোসেন ওরফে ইমনের হেফাজত থেকে নিহত কনস্টেবলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। 

পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জয়াগ ইউনিয়নের ভাওরকোট এলাকা থেকে ইমাম হোসেন ওরফে ইমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তাঁর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। ওই মোবাইল ফোনে মেসেঞ্জারে জনৈক ওমর ফারুক নামক আইডির ব্যক্তির কাছে পাঠানো ঘটনার দিন পুলিশ হত্যার বিষয়ে ইমনের স্বীকারোক্তিমূলক ভয়েস রেকর্ড পাওয়া যায়। এরপর হামলার ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে থেকে পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে হত্যার সঙ্গে জড়িত নাহিদুল ইসলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

এসপির ভাষায়, নাহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামিরা গত ৫ আগস্ট সোনাইমুড়ী থানায় হামলা ও সংঘাতে জড়িত। বিভিন্ন সময় প্রত্যেকেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গারূপ ধারণ করে পুলিশের কাজে বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশকে মারধর ও গুলি করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম, হত্যা, অগ্নিসংযোগ, চুরি ও সরকারি মালামালের ক্ষতিসাধনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। আসামি নাইম হোসেন, ইমন পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত হন বলে জানান নাহিদুল ইসলাম। 

গ্রেপ্তার আসামি নাইম হোসেন। ছবি: পুলিশপুলিশ জানায়, সোনাইমুড়ী থানায় আক্রমণের পর জীবন রক্ষার্থে পলায়নরত পুলিশদের পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে থানার পেছনে সীমানা প্রাচীরের কাছে অপেক্ষা করেন আসামিরা। পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ ইব্রাহিম নীল রঙের পুলিশের টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় সীমানা প্রাচীরের নিচ দিয়ে টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে বের হওয়ার সময় নাহিদুল ইসলাম তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাধা দেন। এরপর ‘এইতো পুলিশ’ বলে মারধর শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে ইমাম হোসেন ইমন দৌড়ে এসে হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। কনস্টেবল ইব্রাহিম গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অপর আসামিরা একযোগে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর পুরো শরীরে উপর্যুপরি আঘাত করেন। গুরুতর অবস্থা এবং মৃত্যুমুখে জেনেও আসামি নাইম কনস্টেবল মোহাম্মদ ইব্রাহিমের পকেট থেকে তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ও আইডি কার্ড, টাকাসহ মানিব্যাগ নিয়ে নেন। আসামিরা আবার এসে উপর্যুপরি আঘাত করে ইব্রাহিমের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে তাঁকে চার হাত–পা ধরে ঝুলিয়ে রাস্তায় নিয়ে টানাহেঁচড়া করে সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত করে রেলক্রসিংয়ের কাছাকাছি রেখে উল্লাসে মত্ত হন। অপরদিকে, ঘটনার পরে আসামি ইমাম মোবাইল ও টাকার ভাগ চাইলে আসামি নাইম তাঁকে পরে যোগাযোগের মাধ্যমে দেবেন বলে ইমনের মোবাইল নম্বরে নিজ মোবাইল থেকে কল করেন। কিন্তু মোবাইলে ব্যালেন্স না থাকায় আসামি ইমাম হোসেন ইমনের মোবাইলে কল না গেলেও আসামি নাইম হোসেনের উল্লেখিত জব্দকৃত মোবাইলের ডায়াল লিস্টে আসামি ইমনের মোবাইল নম্বরটি থেকে যায়। 

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) আরও বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে পরিকল্পিত হত্যার বিষয়টি স্পষ্ট ও প্রাথমিকভাবে সাক্ষ্য প্রমাণ সংবলিত। আসামিরা আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছিনতাই ও হত্যাচেষ্টার মামলায় চাটমোহর মহিলা দলের দুই নেত্রী গ্রেপ্তার

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার দুই নেত্রী। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার দুই নেত্রী। ছবি: সংগৃহীত

পাবনার চাটমোহরে ছিনতাই ও হত্যাচেষ্টা মামলার পলাতক আসামি হিসেবে উপজেলা মহিলা দলের বহিষ্কৃত দুই নেত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে চাটমোহর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মহিলা দল চাটমোহর উপজেলা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি (বহিষ্কৃত), পৌরসভার মধ্য শালিখা মহল্লার মৃত কোবাদ হোসেনের মেয়ে বুড়ি সরকার (৪২) এবং একই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত), পৌরসভার বালুচর মহল্লার বিএনপি নেতা সেলিম রেজার স্ত্রী রহিমা রেজা (৪৫)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চাটমোহর উপজেলা মহিলা দলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তামান্না আজিজা স্বর্ণা গত ২৩ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে পৌরসভার আফ্রাতপাড়া এলাকায় বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলে পূর্ববিরোধের জেরে রহিমা রেজা ও বুড়ি সরকার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালান। এতে স্বর্ণা আহত হন। পরে তিনি একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে ছিনতাই ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুরুল আলম বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি রহিমা রেজা ও বুড়ি সরকারকে পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশালে যুবকের লাশ হাসপাতালে রেখে পলায়ন, শরীরে পোড়া দাগ, গ্রেপ্তার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশালে যুবকের লাশ হাসপাতালে রেখে পলায়ন, শরীরে পোড়া দাগ, গ্রেপ্তার ৩

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম) কলেজ হাসপাতালে যুবকের মরদেহ রেখে পালিয়ে যান চার তরুণ-তরুণী। বুধবার কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এর আগে নগরীর ভাটারখাল এলাকার জেলা পরিষদ মার্কেটের একটি কক্ষে মো. বেল্লাল (২৮) নামের ওই যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ জানায়, নিহত বেল্লাল বরিশাল সদর উপজেলার পশ্চিম চর আইচা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। নিহত বেল্লালের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। বেল্লালের বাবা শাহ আলম পাঁচজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রামের সিরাজ হাওলাদারের ছেলে রনি হাওলাদার (২৮), মায়া চৌধুরী (২৬) ও সাদিয়া (২৪)। পলাতক দুজন হলেন পলাশপুর বস্তির রিপন রানা এবং চরবাড়িয়া ইউনিয়নের সবুজ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মার্কেটের তৃতীয় তলা থেকে বেল্লালের লাশ সিঁড়ি বেয়ে নামাচ্ছিলেন এক যুবকসহ চার তরুণ-তরুণী। পরে তাঁরা লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে সরে পড়েন। ঘটনাটি জানাজানি হলে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

ভাটারখাল এলাকার বাসিন্দা মো. টিপু বলেন, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন আলোর ভাড়া করা একটি রুমে প্রতিদিন কয়েকজন মদ্যপান করতেন। মঙ্গলবার রাতে মদ্যপানের একপর্যায়ে বেল্লালকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারধরে তাঁর মৃত্যু হলে লাশ সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান তাঁরা।

নিহত ব্যক্তির বাবা শাহ আলম বলেন, ‘আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হোক।’

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। বেল্লালের শরীরে মারধর ও পোড়ার স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। তদন্ত চলছে।’

শেবাচিম হাসপাতালের মর্গ-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বেল্লালের শরীরে পোড়া দাগ আছে। মনে হচ্ছে, তাঁকে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে অর্থ দাবি: রাজনগরে দুজন ভুয়া সাংবাদিক আটক

রাজনগর (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
আটক দুই ভুয়া সাংবাদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক দুই ভুয়া সাংবাদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে স্থানীয় লোকজন। বুধবার সন্ধ্যায় মনসুরনগর ইউনিয়ন থেকে তাঁদের আটক করে পরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

সূত্র জানায়, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজনগর গ্রামের মিরাজ উদ্দিনের ছেলে আরিফুর রহমান (২৮) এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দক্ষিণ কোটালীপাড়া গ্রামের রুকন উদ্দীনের ছেলে তরিকুল ইসলাম (৩৬) নিজেদের একটি জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিক পরিচয় দিতেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে দেখা করে খোঁজখবর নেওয়ার নাম করে তাঁরা আর্থিক সুবিধা চাইছিলেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চেয়ারম্যানদের সন্দেহ হলে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হয়। পরে মনসুরনগর ইউনিয়নে সুযোগ পেয়ে স্থানীয় লোকজন দুজনকে আটক করে।

খবর পেয়ে রাজনগর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের থানায় নিয়ে যায়।

রাজনগর থানার এএসআই হৃদয় বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। দোষী প্রমাণিত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝিনাইদহে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
নিহত শিশু সাইমা আক্তার ছাবা। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু সাইমা আক্তার ছাবা। ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহে পবাহাটি গ্রামে প্রতিবেশীর খাটের নিচ থেকে সাইমা আক্তার ছাবা (৪) নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত ১০টার দিকে পবাহাটি গ্রামের ঈদগাহ পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু ওই গ্রামের ভ্যানচালক মো. সাইদুল ইসলামের মেয়ে। এই ঘটনায় সাইদুল ইসলামের প্রতিবেশী আক্তারুজ্জামান মাসুদের স্ত্রী সান্ত্বনা খাতুনকে (৩২) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সায়মা আক্তার ছাবা সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল। আশপাশের পুকুর, বাড়িসহ সব জায়গায় খুঁজে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। সারা দিন মাইকিং করা হয়েছে। পরে রাতে সাইদুল ইসলামের প্রতিবেশী সান্ত্বনা খাতুনের বাড়ি থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

নিহত শিশুর বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে মেয়ে ঘুম থেকে তুলে আমার মুখে চুমু দেয়। আর বলে আব্বু কাজে যাবা না? আমার জন্য মিষ্টি কিনে আনতে হবে না। তার কথা শুনে আমি দ্রুত উঠে পড়ি। পরে ভ্যান নিয়ে কাজে বের হওয়ার সময় মেয়েকে ভ্যানে চড়িয়ে একটু ঘুরিয়ে নামিয়ে দিই। পরে আমার স্ত্রী ফাতেমাকে বলেছে, আম্মু তুমি ভাত রান্না করো। রান্না শেষে আমাকে ডাক দিয়ো, আমি বাইরে খেলছি। পরে আমার স্ত্রী মেয়েকে ডাক দিয়ে আর পায় না; তখন আমার ছেলে আমাকে জানায় ছাবাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি বাড়িতে এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বাড়ির পাশের বিভিন্ন পুকুরসহ আশপাশের সব জায়গায় খুঁজে কোথাও পাইনি। পরে থানায় জিডি করি, মাইকিং করি। তবু মেয়েকে পাই না। পরে আমি প্রতিবেশী আখতারুজ্জামান মাসুদের বাড়িতে মেয়েকে খুঁজতে গিয়েছিলাম। তখন মাসুদের স্ত্রী আমাকে জানায়, আমার মেয়ে তাদের বাড়িতে যায়নি। আমার সন্দেহ হলো। পাড়ার সবাই আমার মেয়েকে খুঁজছে, কিন্তু মাসুদের স্ত্রী আসছে না, কোনো খোঁজও করছে না। পরে রাতে পুকুরপাড়ে আবারও যাই, সে সময় দেখি মাসুদের স্ত্রী একটি বস্তা নিয়ে কোথায় যাচ্ছে; তখন আমি চিৎকার দিলে সে আবার ঘরে দৌড়ে চলে যায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তার ঘরের খাটের নিচ থেকে আমার মেয়ের লাশ উদ্ধার করে।’

ঝিনাইদহ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ হোসেন বলেন, ‘বাচ্চাটা সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল। রাতে আমরা খবর পাই সাইদুল ইসলামের প্রতিবেশীর বাড়িতে মরদেহ পাওয়া গেছে। ঘটনা কী ঘটেছে এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। খোঁজখবর নিচ্ছি, তদন্ত চলছে। সম্ভাব্য আসামিকে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। মরদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত