Ajker Patrika

শিকলে বাঁধা ‘হাতির কড়াই’

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২২, ২০: ০৯
শিকলে বাঁধা ‘হাতির কড়াই’

নীলফামারীর তহশিলদারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হাজি এমদাদুল হক। তাঁর বাড়ির উঠানে শিকলে বাঁধা রয়েছে মস্ত বড় লোহার একটি কড়াই। তাঁর পূর্বপুরুষেরা হাতিকে পানি খাওয়ানোর জন্য এটি ব্যবহার করত বলে জানান তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, কড়াইটি পূর্বপুরুষদের ২০০ বছরের ঐতিহ্য। হাতিকে পানি খাওয়ানোর জন্য এ কড়াইটি ভারত থেকে আনা হয়েছিল। সম্প্রতি কড়াইটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর নিদর্শনের স্বীকৃতিও পেয়েছে।

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের তহশিলদারপাড়ার হাজি এমদাদুল হকের বাড়িতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই কড়াইটি দেখার জন্য আসছেন। শত বছরের স্মৃতিজড়িত লোহার কড়াইটি সংরক্ষণে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ স্থানীয় জেলা প্রশাসনকে অবগত করেছে। কিন্তু এতে আপত্তি তুলেছেন কড়াইটির হাজি এমদাদুল হকের পরিবার। বরং নিজেদের কাছে রেখে এটিকে উন্মুক্ত করে দিতে চান তাঁরা। স্থানীয়রাও কড়াইটি হাতছাড়া করতে চাইছেন না। কড়াই রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেছেন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, লোহার এ কড়াইটি ৭ ফুট ব্যাসের। ওজন প্রায় এক টন। উচ্চতা প্রায় ৭ ফুট। জনশ্রুতি রয়েছে, এটি প্রায় পৌনে ২০০ বছর আগের। সে সময়কার জমিদারবাড়িতে হাতির পানির পাত্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো। 

হাজি এমদাদুল হক পূর্বপুরুষদের স্মৃতিচারণা করে আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রায় ১৭৫ বছর আগে তাঁর বাবার বড় ভাই মরহুম ভুল্ল্যা মামুদ সরকার এটি ভারত থেকে কিনে এনেছিলেন। ভুল্ল্যা মামুদ সরকার তহশিলদার ছিলেন। হাতিকে পানি খাওয়ানোর জন্য তিনি লোহার তৈরি কড়াইটি কেনেন। তাঁদের হাতি না থাকলেও এখনো সেই কড়াইটি ঐতিহ্য বহন করে আসছে। 

এমদাদুল হক আরও বলেন, কড়াইটি সরকারি কিংবা কোনো রাজা-বাদশার কীর্তি নয়, এটা তাঁদের বংশের ঐতিহ্য। এই কড়াইটির নামে এখানে মসজিদ ও মাদ্রাসা রয়েছে। এই এলাকা ‘হাতির কড়াই’ নামে পরিচিত। পুরোনো ঐতিহ্যের হাতির কড়াইটি এখন জাদুঘরে নেওয়ার জন্য এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। 

ভুল্ল্যা মামুদ সরকারের নাতি ইকবাল বিন ইমদাদ আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘বাবার মুখে শুনেছি, এটি হাতির কড়াই। আমার দাদার বাবার দুইটা হাতি ছিল। বাড়ির পাশের দেওনাই নদীতে হাতি দুটোকে পানি খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু পানি খাওয়ার পর নাকি হাতি আর বাড়ি ফিরতে চাইত না। এ কারণে ভারতের শিলিগুড়ি থেকে কড়াইটি কিনে নিয়ে আসেন। পরে ওই কড়াইতে হাতিকে পানি খাওয়ানো হতো। এখন হাতি নেই কিন্তু কড়াইটি আছে।’ 

ইমদাদ আরও বলেন, ‘কড়াইটি ভালোভাবে সংরক্ষণে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। ঝড়বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাতে এটি নষ্ট বা ধ্বংস না হয়, সেটাও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমাদের বংশের কারণে এলাকার নাম তহশিলদারপাড়া। এই নাম ও কড়াইয়ের সঙ্গে আমাদের এবং এলাকার একটা ঐতিহ্য ও স্মৃতি জড়িয়ে আছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর জাদুঘরে রাখার জন্য কড়াইটি চেয়েছিল, কিন্তু এটা তো আমাদের ব্যক্তিগত সম্পদ।’ 

বাড়ির উঠানে শিকলে বাঁধা মস্ত বড় ‘হাতির কড়াই’তহশিলদারপাড়ার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম জানান, ‘এখন হাতি নাই তো কি হইছে? আমাদের এলাকায় হাতির পানি খাওয়ানোর জন্য বড় লোহার কড়াইটা আছে। এই কড়াইটি এখন আমাদের গ্রামের ঐতিহ্য বহন করছে। এখানকার মানুষ যে একসময় হাতি পালন করত, তার প্রমাণ এটি। কড়াইয়ের কারণে এলাকার নামটাও হাতির কড়াই নামে পরিচিতি পেয়েছে। বিভিন্ন লোকজন বিভিন্ন জায়গা থেকে এই হাতির কড়াই দেখার জন্য আসে। এটা এলাকাতেই সংরক্ষণ করলে ভালো হবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হাতির কড়াই সম্পর্কে জানতেও পারবে।’ 

কড়াইটি দেখভালের দায়িত্বে থাকা ইব্রাহীম খলিল জানান, ‘কড়াইটা সব সময় আমি দেখাশোনা করি। ময়লা-আবর্জনা, বৃষ্টির পানি, গাছের পাতা পড়লে তা পরিষ্কার করি। বিভিন্ন জায়গা থেকে এই কড়াইটা দেখার জন্য মানুষ আসছে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে গেলে ধর্মপাল হাতির কড়াই জলঢাকা থানা ঠিকানা বলে থাকি।’ 

রংপুর জাদুঘরের কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কড়াইটি জাদুঘরে সংরক্ষণের বিষয়ে আমাদের প্রধান কার্যালয় থেকে একটা চিঠি এসেছিল। সেই চিঠি নীলফামারী জেলা প্রশাসক বরাবর জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরবর্তী পদক্ষেপ বা করণীয় সম্পর্কে তারা আমাদের কিছু জানায়নি।’ 

কড়াইটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংরক্ষণে কোনো বাধা আছে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘লোহার কড়াইটি ১০০ বছরেরও বেশি পুরোনো। আর ১০০ বছর হলে সেটিকে আমরা প্রত্নতত্ত্ব বস্তু বা সম্পদ বলে থাকি। তখন এসব আর কারও ব্যক্তিগত সম্পদে থাকে না। এটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ হয়ে যায়। এখন ওই কড়াইটিও ব্যক্তিগতভাবে সংরক্ষণের কোনো সুযোগ নেই।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবককে মারধর, হাসপাতালে মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে ধর্ষণের অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আবু হানিফ নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার শাহাদাত হোসেন। নিহত আবু হানিফ (৩০) পেশায় নিরাপত্তাপ্রহরী। তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, দুপুরে ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে এলাকার কয়েকজন যুবক মারধর করেন। বাসা থেকে তুলে নিয়ে খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় তাঁকে মারধর করা হয়।

নিহত ব্যক্তির মেজ বোন রাবেয়া বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে হানিফ বাসায় শুয়ে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলে বাসায় এসেই ভাইয়েরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো বাধা শোনেনি, কী কারণে মারতেছে তা-ও বলেনি। অনেক পরে বলতেছে, সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চাইছে। কিন্তু কোন মেয়ে, কবে তার কিছুই আমরা জানি না।’

নিহত ব্যক্তির ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘শুরু থেকে আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম ডিউটিতে। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক বাসায় ঝামেলা করতেছে। ফোন পাইয়া আমি বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর ওই ছেলেরা আমাকে ধইরা খানপুর জোড়া টাংকির মাঠে নিয়া যায়। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধীরে (হানিফ) ভেতরে বসায়া রাখছে। ১০-১২ জন যুবক পোলাপান ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামে স্থানীয় একজনরে চিনছি। সন্ধ্যায় হানিফ ভাইরে অটোতে তুইলা নিয়ে কোথায় যেন চলে যায়। অনেক পরে আমরা তারে হাসপাতালে পাই।’

হানিফ খানপুরে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর স্ত্রী তিন শিশুসন্তানকে নিয়ে কিছুদিন আগে গ্রামের বাড়িতে গেছেন বলে জানান নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা।

নিহত ব্যক্তির বাবা আবুল কালাম বলেন, ‘আমার ছেলে অপরাধ করলে তারে শাস্তি দিব আইনে। কিন্তু তারে মাইরা ফেলল কোন যুক্তিতে! আমি এর বিচার চাই।’

এই ঘটনার বিস্তারিত জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছির। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণচেষ্টার কোনো অভিযোগ আগে আমাদের থানায় কেউ করেনি। পুলিশ মরদেহ হাসপাতালে পায়। ধর্ষণের আসলেই কোনো চেষ্টা হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জবি ছাত্রদল নেতা হত্যা: বড় ভাইয়ের মামলা, আসামি মাহিরসহ ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা মো. জুবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে বংশাল থানায় মামলা করেন জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত। সকালে আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য জানান লালবাগ জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী।

ডিসি মল্লিক আহসান বলেন, ছাত্রদলের নেতা মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় তাঁর বড় ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এতে মাহিরসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলা এলাকায় টিউশনি করতে গিয়ে খুন হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন। তিনি এক বছর ধরে পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ১৫, নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলা নামে একটি বাড়িতে এক ছাত্রীকে (এইচএসসি শিক্ষার্থী) পড়াতেন। ওই বাড়ির সিঁড়িতেই তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়।

রোববার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে রৌশান ভিলার সিঁড়িতে জোবায়েদের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে রৌশান ভিলা থেকে ওই ছাত্রীকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।

জোবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের ১৫ তম ব্যাচের পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বাসার সামনে জড়ো হন জোবায়েদের সহপাঠী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক, বর্তমান শিক্ষার্থীসহ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। সেখানে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কিছুটা অসামঞ্জস্য দেখা দিতে পারে: শামীম বিন সাঈদী

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
আজ সকালে নেছারাবাদ উপজেলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেন শামীম বিন সাঈদী। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে নেছারাবাদ উপজেলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেন শামীম বিন সাঈদী। ছবি: আজকের পত্রিকা

পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কিছুটা অসামঞ্জস্য দেখা দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পিরোজপুর-২ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী শামীম বিন সাঈদী।

শামীম বিন সাঈদী বলেন, ‘আমরা পূর্ব থেকেই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছি। তবে যেহেতু এটি প্রথমবার, আমার মনে হয় প্রাথমিকভাবে কিছুটা অসামঞ্জস্য দেখা দিতে পারে।’ মঙ্গলবার সকালে নেছারাবাদ উপজেলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এ সময় সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে শামীম বিন সাঈদী বলেন, ‘পিরোজপুর-২ আসনের নেছারাবাদ, ভান্ডারিয়া ও ইন্দুরকানি থেকে কিছু লোককে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে শুনছি। তবে সাদাপোশাকে এসে কাউকে তুলে নেওয়া আমি সমর্থন করি না। কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে পরিচয় প্রকাশ করে এবং নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা উচিত। গ্রেপ্তারের সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাঁর অপরাধ সম্পর্কে অবহিত করা প্রয়োজন। নিরীহ ও নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হলে তা আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করব না।’

উল্লেখ্য, পিরোজপুর-২ (ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ) আসনে এখনো বিএনপি কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। ফলে এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী শামীম বিন সাঈদী এককভাবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন এবং নিয়মিতভাবে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার তিনি নেছারাবাদে গণসংযোগে অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোনো অগ্নিনির্বাপণ যানকে বাধা দেওয়া হয়নি, গুজব ছড়ানো হচ্ছে: বেবিচক চেয়ারম্যান

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ১১
বেবিচক সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক। ছবি: আজকে পত্রিকা
বেবিচক সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক। ছবি: আজকে পত্রিকা

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে দাহ্য পদার্থই আগুনের তীব্রতা বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক। তিনি জানান, দাহ্য পদার্থের উপস্থিতির কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কোনো অগ্নিনির্বাপণ যানকে ঘটনাস্থলে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়নি।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বেবিচক সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আগুন নেভাতে আসা কোনো ফায়ার ভেহিকেলকে বাধা দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন মহল থেকে কিছু গুজব ছড়ানো হচ্ছে, যা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে পরিহার করা উচিত।’

বেবিচক চেয়ারম্যান জানান, আমদানি কুরিয়ার সেকশন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি এখনো নিশ্চিত নয়, তদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো সংস্থা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। নির্ভরযোগ্য তথ্য ছাড়া আমরা কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, ‘দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে কার্গো টার্মিনালে প্রথম ধোঁয়া দেখা যায়। ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের দল যোগ দেয়। সব মিলিয়ে ৪০টির বেশি ফায়ার ফাইটিং ভেহিকল আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগুন লাগার সময় টার্মিনালের ভেতরে কয়েকটি উড়োজাহাজ ছিল। আমরা দ্রুত সেগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হই। উত্তর ও দক্ষিণ উভয় পাশে কাট-অফ মেকানিজম (দাহ্য পদার্থকে আগুন থেকে বিচ্ছিন্ন করা) ব্যবহার করে আগুনের বিস্তার রোধ করা হয়। আল্লাহর রহমতে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।’

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আইকাও স্ট্যান্ডার্ড মেনেই আমাদের সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়। আমাদের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট নিয়মিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং দ্রুত সাড়া দিতে সক্ষম। এবারও তাদের পেশাদারি বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো গেছে।’

তিনি জানান, আগুনের সময় বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় ১৫টি ফ্লাইট অন্য রুটে পাঠানো হয়। পরদিন বিকেল ৪টার মধ্যে আটকে পড়া যাত্রীদের নিজ নিজ গন্তব্যে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত