Ajker Patrika

ধারদেনায় চিকিৎসা চলছে গুলিতে পা হারানো আকাশের

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
ধারদেনায় চিকিৎসা চলছে গুলিতে পা হারানো আকাশের

পরিবারের হাল ধরতে কিশোর বয়স থেকেই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মিষ্টির দোকানে সেলসম্যানের কাজ নেন মো. আকাশ মিয়া (১৯)। গত ২০ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে কাজ ফেলে সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন তিনি।

আন্দোলন দমাতে পুলিশ বেপরোয়াভাবে টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি শুরু করলে অগণিত আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হয় তাঁর চোখের সামনেই। হতাহত হয় অনেকে। হতাহতদের রিকশা-ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি আন্দোলন চলমান রাখেন আকাশসহ অন্যরা।

পুলিশ শক্তি প্রয়োগ বাড়িয়ে দিলে একপর্যায়ে টিকতে না পেরে দৌড়ে গিয়ে নিজের মিষ্টির দোকানে ঢুকে শাটার লাগিয়ে দেন। তাতেও রক্ষা হয়নি। পুলিশ শাটার ভেঙে দোকানে ঢুকে আকাশের বুকে শটগান ঠেকিয়ে গুলি চালাতে উদ্যত হয়। তবে পরিস্থিতি বুঝে শটগানের নল নিচের দিকে ঠেলে দেন তিনি। এতে তার হাঁটুর ওপরে লাগে গুলিটি।

পুলিশ চলে গেলে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে কাছের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করা হলেও গ্রেপ্তার হয়রানির ভয়ে সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। লুকিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে দুদিন চিকিৎসার পর ২৩ জুলাই রাতের আঁধারে একটি গাড়িতে করে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

তবে তত দিনে পায়ের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আকাশের বাঁ পা হাঁটুর ওপর থেকে কেটে ফেলতে হয়। এর মধ্যে খরচ হয়ে গেছে ধার-দেনা আর সুদে আনা প্রায় ৪ লাখ টাকা। যে স্বৈরাচার হটাতে আন্দোলনে গিয়ে পা হারিয়েছেন আকাশ, সেই স্বৈরাচারেরে পতন হয়েছে গত ৫ আগস্ট। তবে এতদিনেও (১ অক্টোবর পর্যন্ত) পঙ্গু আকাশের খবর নেয়নি কেউ।

একদিকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কা, অন্যদিকে ঋণের বোঝা সব মিলিয়ে দিশেহারা আকাশের পরিবার।

মো. আকাশ মিয়া নেত্রকোনার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বিয়াশি গ্রামের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড় আকাশ। বাবা দুলাল মিয়া দিনমজুর। অভাবের সংসারে জেএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। দুই বছর আগে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মিষ্টির দোকানে সেলসম্যানের কাজ নেন আকাশ। এতে সংসারে অভাব ঘুচে যাচ্ছিল। এর মধ্যে পরিচিত একজনের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ারও কথা হয়েছিল তাঁর। করেছিলেন পাসপোর্টও। কিন্তু পুলিশের গুলিতে সব স্বপ্ন শেষ তাঁর। দুলাল মিয়ার বাড়ির জায়গা আর তাতে একটা জীর্ণ ঘর ছাড়া আর কোনো জমিজমা নেই।

আজ মঙ্গলবার আকাশ মিয়ার কৃত্রিম পা লাগানো হচ্ছে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে। বিনা মূল্যে ব্র্যাক কর্তৃপক্ষ কৃত্রিম পা লাগিয়ে দিচ্ছে বলে জানান আকাশ মিয়া।

সেদিনের ঘটনার বর্ণনায় আকাশ বলেন, ‘মা-বাবা ও এতগুলো ছোট ভাই বোনের ভার আমার ওপর। তারপরও সেদিন শিক্ষার্থীদের ওপর হওয়া জুলুম দেখে নিজেকে সামলে রাখতে পারিনি। কাজ ফেলে ছাত্র জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম।’

আকাশ বলেন, ‘ওই দিন বিকেলে পুলিশ চারদিক থেকে ঘিরে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। চোখের সামনে অনেককে গুলিতে লুটিয়ে পড়ছিল। তাদের তুলে রিকশা ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। কিন্তু আন্দোলন চলছিল। তখন পুলিশ আরও সদস্য বৃদ্ধি করে নির্মমভাবে আক্রমণ শুরু করে। একপর্যায়ে দৌড়ে এসে আমার কর্মস্থল মিষ্টির দোকানে ঢুকে শাটার লাগিয়ে দেই। কয়েকজন পুলিশ পিছু পিছু দৌড়ে এসে শাটার ভেঙে দোকানে ঢুকে। আমাকে ধরে বুকে শটগান লাগিয়ে গুলি করার প্রস্তুতি নেয়। পরিস্থিতি বুঝে শটগানের নলটা হাতে ঠেলে নিছের দিকে নামিয়ে দেই। এতে গুলিটা বাম পায়ে লাগে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মেঝেতে পড়ে গেলে পুলিশ চলে যায়। রক্তে সব ভেসে যায়। তখন আশপাশের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে কাছের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। চিকিৎসক পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললেও যাওয়া সম্ভব হয়নি। তখন পুলিশ আহতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছিল। সরকারি হাসপাতালে গেলে গ্রেপ্তার করবে সেই ভয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। গুলিতে পায়ের মূল শিরাগুলো ছিঁড়ে গিয়েছিল। তিন দিন পর রাতের আঁধারে একটি গাড়িতে করে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসক পা কেটে ফেলেন।’

আকাশ আরও বলেন, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে পা হারিয়েছি। তাতে দুঃখ নেই। স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে। দেশ মুক্ত হয়েছে। এখন যারা ক্ষমতায় আছে তারা অন্তত আমার চিকিৎসার দায়িত্বটুকু নিক। পঙ্গু হয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছি। বাবা-মা এলাকা থেকে ঋণ করে সুদে টাকা এনে চিকিৎসা করাচ্ছে। দুঃখ হলো প্রায় আড়াই মাসে কেউ খবরও নিতে এল না। কোনো সহায়তাও পেলাম না।’

আক্ষেপ করে আকাশ বলেন, ‘নিজের জীবনের কথা না হয় বাদ দিলাম ছোট ভাইবোন ওদের পড়াশোনা খাওয়া দাওয়া ভরণপোষণ কে চালাবে এই চিন্তা করে কষ্ট পাই। এ ছাড়া চিকিৎসার ঋণই বা কীভাবে শোধ হবে। বেসরকারি একটা সংস্থা থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা পেয়েছি। এ ছাড়া কেউ কোনো সহায়তা দেয়নি। বাড়িতে দীর্ঘদিন থেকেছি কেউ একজন সান্ত্বনা দিতেও আসেনি। এটা আরও বড় দুঃখ।’

আকাশের বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘৪ লাখ টাকা ধার-দেনা করে সুদে এনে চিকিৎসা করিয়েছি। পা কাটা নিয়ে ছেলেটা গ্রামের বাড়িতে শুয়ে রয়েছে। এই আড়াই মাসে কেউ খবরও নেয়নি। পাইনি কোনো সহায়তা। গরিব মানুষ কোনো জমিজমা নেই। ছেলেটার আয় দিয়েই পরিবারের খরচ চলত। এখন তার পায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রায় ৪ লাখ টাকা সুদে আনতে হয়েছে। ছেলের জীবন তো শেষ। উল্টো ঋণের বোঝা কাঁধে। আল্লাহ জানেন এই ছেলে মেয়েগুলো নিয়ে কীভাবে চলব। দুচোখে অন্ধকার দেখছি।’

দুলাল মিয়া আরও বলেন, ‘এক আত্মীয়ের মাধ্যমে আকাশকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল। ইতিমধ্যে তার পাসপোর্টও করেছিলাম। সব স্বপ্নই তো শেষ। দেশের মানুষের মুক্তির জন্য আমার ছেলে পা হারিয়েছে। দেশ মুক্ত হলো, কিন্তু কেউ তার চিকিৎসার ভার নেইনি। খোঁজখবর নেয়নি। আর্থিক সহায়তাও করল না কেউ। ছেলেটাকে দেখে সান্ত্বনা দিতেও বাড়িতে এত দিনে কেউ আসেনি। দুঃখ শুধু এটুকুই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আবু বাকেরকে লক্ষ্য করে ককটেল হামলার অভিযোগ, এনসিপির বিক্ষোভ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আবু বাকের মজুমদার। ফাইল ছবি
আবু বাকের মজুমদার। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস—রূপান্তরিত জাতীয় ছাত্রশক্তি) আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার তাঁর মোটরসাইকেল লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাত ৮টার পর রাজধানীর শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি।

রাত ৮টা ৩৪ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে আবু বাকের মজুমদার লিখেছেন, ‘কিছুক্ষণ আগে ৮টা ২৩-২৪ মিনিটের সময় ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে আমার বাইকের সামনে ককটেল মারা হয়েছে। রূপায়ণ টাওয়ারে সাংগঠনিক মিটিংয়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম। রাজনৈতিক কারণে এক্সটার্নাল এবং ইন্টারনাল অনেকের শত্রু হয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ, এখনো সুস্থ আছি, দোয়া করবেন।’

হামলার প্রতিবাদে রাত ১০টার দিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মহাসড়কে কোনো অবৈধ যানবাহন চলতে পারবে না: বিআরটিএ চেয়ারম্যান

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
বিআরটিএর চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
বিআরটিএর চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

বিআরটিএর চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, মহাসড়কে কোনো অবৈধ যানবাহন চলতে পারবে না। এ বিষয়ে পুলিশ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ যৌথ আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিআরটিএর চেয়ারম্যান বলেন, ‘কোনো লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি আমরা মহাসড়কে চলতে দেব না। এ জন্য বিআরটিএ, প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর একসঙ্গে কাজ করছে। সরকারি গাড়িগুলোও ছাড় পাবে না, এমনকি আমি নিজেই বিআরটিএর গাড়ি ডাম্প করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোরে রান্নাঘরে পুঁতে রাখা পিস্তল উদ্ধার

­যশোর প্রতিনিধি
উদ্ধার করা পিস্তল। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার করা পিস্তল। ছবি: সংগৃহীত

যশোর সদরে অভিযান চালিয়ে রান্নাঘরে পুঁতে রাখা বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায়উপজেলার দৌলতদিহির হুমায়ুন কবিরের বাড়ি থেকে পিস্তল উদ্ধার করা হয়।

কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশ পিস্তলটি উদ্ধার করে। এ সময় অস্ত্রের মালিক শাকিল হোসেন পালিয়ে যান। শাকিল হুমায়ুন কবিরের ছেলে।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবুল হাসনাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে পিস্তলটি উদ্ধার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ঢামেক প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আবারও পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে সজিব (১৯) নামের এক শিক্ষার্থীর লাশ পাওয়া গেছে। তিনি এবার বংশালে আহমেদ বাওয়ানী একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলের দিকে বংশালের আগামসিহ লেনের ৯৩/১ নম্বর বাসায় ঘটনাটি ঘটে। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে ওই বাসার চারতলার সিঁড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে। এ সময় ওই শিক্ষার্থীর গলায় জিআই তার পেঁচানো ছিল।

বংশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. দুলাল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিকেলে স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। ওই বাসার চারতলার সিঁড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে অজ্ঞাতনামা হিসেবে এবং পরে মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত হয়। এ সময় সে গলায় জিআই তার পেঁচানো অবস্থায় উপুড় হয়ে সিঁড়িতে পড়ে ছিল। তবে ওই বাসার চারতলায় শুধু একটি পরিবার থাকত বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ওই বাসা পুরোটাই গোডাউন। চারতলার ওই বাসা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল।’

এসআই আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই শিক্ষার্থীকে গলায় জিআই তার পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।

হাসপাতালে নিহত সজিবের চাচাতো ভাই মো. ইসলাম বলেন, ‘সজিবদের বাসা বংশাল আগামসিহ লেনে। সজিব এবার আহমেদ বাওয়ানী একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। তবে সে অকৃতকার্য হয়। কয়েক দিন আগে তাবলিগের সঙ্গে দোহার গিয়েছিল। গতকাল বাসায় আসে। আজ বেলা ৩টার দিকে ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হয়। এরপর বিকেলে জানতে পারি, একটি বাসার সিঁড়িতে সজিবের মরদেহ পাওয়া গেছে।’

সজিব আরও বলেন, ‘যে বাসায় সজিবের মরদেহ পাওয়া গেছে, ওই বাসার চারতলায় সজিবের প্রেমিকা খাদিজাদের বাসা। খাদিজার বাবা বেঁচে নেই। তবে ঘটনার পর থেকে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। ৬ বছর ধরে খাদিজার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সজিবের। মাঝে একবার মনোমালিন্য হয়েছিল। তবে খাদিজার মামারা এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারছিলেন না।’

পরিবারের অভিযোগ, খাদিজার দুই মামা ইকবাল ও কামাল মিলে সজিবকে হত্যা করেছে।

এর আগে, ১৯ অক্টোবর রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলা এলাকার একটি বাসার সিঁড়িতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদল নেতার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির ওই বাসায় জুবায়েদ টিউশনি করাতেন। পরে ডিএমপি এই হত্যাকাণ্ডকে ‘ত্রিভুজ প্রেমের’ ফল বলে জানায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত