Ajker Patrika

পদ্মার চরে অপারেশন ফার্স্ট লাইট: আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২০

 লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
অভিযানে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদীর চরাঞ্চল ও স্থলভাগে সন্ত্রাস দমন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ নামের এক বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার ও ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৬ ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযান চলে। এতে নেতৃত্ব দেন নাটোর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) ড. মোহাম্মদ শাহজাহানের নির্দেশনায় ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে জেলা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, স্পেশাল ব্র্যাঞ্চ, র‍্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের প্রায় ৪০০ সদস্য অংশ নেন।

অভিযান চলাকালে পদ্মা নদীর লালপুর উপজেলার চর জাজিরা, চর লালপুর ও চর দিয়াড় বাহাদুরপুর এলাকায় ১৪টি নৌকা ও ট্রলারে নদীপথে এবং ১০টি দল স্থলপথে সাঁড়াশি তল্লাশি চালায়। তল্লাশি অভিযানে দুজন হ্যাকার, ছয়জন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, একজন হত্যা মামলার আসামি, দুজন মাদক কারবারিসহ বিভিন্ন মামলার আসামিসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় দেশীয় একটি ওয়ান শুটারগান, একটি রিভলভার, ছয়টি বড় ছুরি, ২২টি হাঁসুয়া, চারটি চাকু, দুটি চাপাতি, একটি ছোরা, একটি দা, একটি লোহার পাইপ, একটি টিউবওয়েল ও একটি কাঠের চৌকি উদ্ধার করা হয়েছে।

জব্দ অস্ত্র ও টিউবওয়েল। ছবি: আজকের পত্রিকা
জব্দ অস্ত্র ও টিউবওয়েল। ছবি: আজকের পত্রিকা

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, চরাঞ্চল ও পদ্মা নদী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে। অপরাধ দমনে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে ওই এলাকায় জেলা পুলিশের উদ্যোগে বিশেষ টহল কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ওই অভিযানে অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্য নদীপথে টহল দেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পদ্মার চরাঞ্চলে ‘কাকন বাহিনী’ নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তৎপরতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাকনের অনুসারীরা কথায় কথায় গুলিবর্ষণ, অপহরণ, সশস্ত্র হামলা, বালুমহাল দখল, মাছ ধরার ঘাটসহ চরের কৃষিকাজে আধিপত্য বিস্তার করেছে।

গত ২৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, রাজশাহীর বাঘা ও নাটোরের লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী মরিচা ইউনিয়নের নতুন চর এলাকায় খড় কাটতে গেলে কৃষকদের ওপর গুলি চালান কাকন বাহিনীর লোকজন। এতে আমান মণ্ডল ও নাজমুল মণ্ডল নামের দুজন নিহত হন এবং আরও দুজন আহত হন। পরদিন ভেড়ামারার চরে লিটন নামের আরও এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ধারণা করা হয়, গোলাগুলির সময় তাঁকে ধারালো অস্ত্রে আঘাত করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এর আগে ৫ জুন পাবনার ঈশ্বরদীর সাড়াঘাটে ফিল্মি কায়দায় অস্ত্রের মহড়া ও বালুমহাল দখল, ৯ জুন চার যুবলীগ কর্মীকে অপহরণ ও কুপিয়ে জখম, ১২ জুলাই যুবদল নেতা টনি বিশ্বাসের বালুঘাটে হামলা ও গুলিবর্ষণ, ৬ অক্টোবর পুনরায় একই এলাকায় গোলাগুলির ঘটনায় দুজন আহত হন। এসব ঘটনায় কাকন বাহিনীর জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে আসে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...