Ajker Patrika

অহিমায়িত মডেল ঘর প্রকল্প: ৩৬ মডেল হিমাগার অচল

  • নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় ৩৬ ঘর নির্মাণে সরকারের ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
  • সময়ের আগেই পচে নষ্ট হয় ঘরে রাখা আলু, অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে কৃষকেরা।
সিয়াম সাহারিয়া, নওগাঁ
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ০৭
সময়ের আগেই পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অহিমায়িত মডেল ঘরে রাখা আলু। সম্প্রতি নওগাঁর বদলগাছীতে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সময়ের আগেই পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অহিমায়িত মডেল ঘরে রাখা আলু। সম্প্রতি নওগাঁর বদলগাছীতে। ছবি: আজকের পত্রিকা

আলুর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার কৃষকদের জন্য নওগাঁয় তৈরি করেছে আলু সংরক্ষণের অহিমায়িত মডেল ঘর। তবে মাঠপর্যায়ে বাস্তবতা ভিন্ন—এই সরকারি প্রকল্পটি এখন কৃষকের জন্য কোনো কাজেই আসছে না। এসব ঘরে রাখা আলু সময়ের আগেই পচে নষ্ট হয়ে গেছে, ফলে অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।

জানা গেছে, বদলগাছী, মহাদেবপুর, পত্নীতলা, নিয়ামতপুরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণন উন্নয়ন প্রকল্প’ থেকে ৩৬টি ঘর দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘর তৈরি করতে ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ঘরগুলো বাঁশ, কাঠ, টিন, আরসিসি পিলার ও ককশিট দিয়ে তৈরি। একেকটি ঘরে ১০-১৫ জন কৃষক ২৫-৩০ টন আলু চার মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারবেন—এমনটিই বলা হয়েছিল।

সরেজমিন দেখা গেছে, নির্জন জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে তৈরি ঘরগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বেশির ভাগই পড়ে রয়েছে অচল অবস্থায়। ঘরে নেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। ফলে ভেতরে প্রচণ্ড গরমে আলুতে দ্রুত পচন ধরে। কোথাও আবার নিরাপত্তার অভাব, চুরি হওয়ার ভয়ে অনেক চাষি আলু রাখেননি এসব ঘরে।

চাষিরা বলছেন, এ প্রকল্পে সরকার শুধু ঘর বানিয়েই দায় শেষ করেছে, কার্যকারিতা নিয়ে ছিল না কোনো তদারকি বা পরিকল্পনা।

বদলগাছীর কৃষক সানোয়ার হোসেন গত মৌসুমে এই ঘরের মাধ্যমে আলু সংরক্ষণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ঘরে রেখে পরে ভালো দামে আলু বিক্রি করব। কিন্তু ঘরে রাখা ৩০০ মণের মধ্যে ১০০ মণই পচে গেছে।’ ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

শুধু সানোয়ার নন, গ্রামের আরও কয়েকজন কৃষক এমন ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অনেকেই বলছেন, ঘরের ভেতরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা ঠিক নেই, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের কোনো সুযোগও নেই। ফলে কিছুদিন পরই আলুতে পচন ধরে।

কৃষক ওয়াহেদ আলী বলেন, ‘১৩০ মণ আলু রেখেছিলাম, অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। কাটিনাল জাতের আলু একটাও বাঁচে নেই। এখন লোকসান দিতে দিতে মাথায় হাত পড়েছে।’ বৈকুণ্ঠপুরের চাষি রিফাত হোসেন বলেন, ঘর নির্মাণের পর থেকে একইভাবে বারবার আলু পচে নষ্ট হয়ে গেছে। যেভাবে আলু রাখতে বলা হয়েছিল, সেভাবেই রেখেছিলাম; কিন্তু কাজ হয়নি। হুগলবাড়ী গ্রামের কৃষক মামুন হোসেন বলেন, ‘ঘরের লোকেশন এমন জায়গায়, যেখানে রাতে পাহারা দেওয়া যায় না। আলু চুরি হওয়ার ভয়েই অনেক কৃষক ঘর ব্যবহার করেননি।’

জানতে চাইলে তিলকপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলামের নামে ডাকাহার গ্রামে একটি ঘর বরাদ্দ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রথম বছর কিছুটা লাভ হলেও এবার আমাদের দলের ৩০০ মণ আলুর একাংশ নষ্ট হয়ে যায়। দামও নেই, তাই বিক্রিও হচ্ছে না।’

মাঠপর্যায়ের কৃষকেরা মনে করেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাস্তবতা, আবহাওয়া ও কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা না করায় এই ঘর এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকেরা জানান, উৎপাদন খরচ বাড়লেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় এবং সংরক্ষণের সমস্যায় তাঁরা লোকসানের মুখে পড়ছেন বারবার।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় ২৫ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টন। অথচ জেলার সাতটি হিমাগারে ধারণক্ষমতা মাত্র ৪৬ হাজার ৫৩০ টন। ফলে বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারে রাখা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সোহাগ সরকার বলেন, ঘরগুলোতে আলু রেখে অনেক কৃষক লাভবান হয়েছেন। এবারে দু-এক জায়গায় কিছু আলু নষ্ট হয়েছে, তবে এর পেছনে আবহাওয়ার প্রভাবও রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এমন ঘরে সর্বোচ্চ চার মাস পর্যন্ত আলু ভালো থাকে। তবে পচনের শুরুতেই আলু সরিয়ে ফেললে ক্ষতি এড়ানো যেত। তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিকভাবে আলু সংরক্ষণের পুরোনো পদ্ধতির ভিত্তিতেই প্রকল্পের মাধ্যমে মডেল ঘরগুলো তৈরি করা হয়। ডিজাইনেও বৈদ্যুতিক বাতাস বা আলোর ব্যবস্থা ছিল না। এ জন্য চাষিদের বলা হয়েছিল, নিয়মিত দেখভাল করতে হবে। কিন্তু কেউ কেউ সেই নির্দেশনা মানেননি বলেই পচনের ঘটনা ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৩
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ধরতে গিয়ে ভারতে আটক ৬ জেলে, ১৩ মাস পর হস্তান্তর

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও সীমান্ত দিয়ে ছয় বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের হস্তান্তর করা হয়।

হস্তান্তর হওয়া মৎস্যজীবীরা কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন আবুল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫), বাহাদুর মিয়ার ছেলে বিপ্লব মিয়া (৪৫), ইসহাক আলীর ছেলে মীর জাফর আলী (৪৫), ইছাক আলীর ছেলে বকুল মিয়া (৩২), ফকির আলীর ছেলে আমের আলী (৩৫), সলিমুদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে চাঁন মিয়া (৬০)।

বিজিবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ নভেম্বর জিঞ্জিরাম নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ভুলক্রমে সীমান্ত অতিক্রম করে তাঁরা ভারতের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় স্থানীয় পুলিশ ও বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের আটক করে। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁরা সেখানে প্রায় ১৩ মাস সাজা ভোগ করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সন্ধ্যায় শেরপুর ৩৯ বিজিবির দায়িত্বে থাকা এলাকার হাতিপাগার বিজিবি কোয়ার্টার মাস্টার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ভারতের কিল্লাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সঙ্গে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিএসএফ ছয় বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর তাঁদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত