Ajker Patrika

জনগণ শেখ হাসিনাকেই আবারও ক্ষমতায় আনবে: খাদ্যমন্ত্রী

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২২, ১১: ০৬
জনগণ শেখ হাসিনাকেই আবারও ক্ষমতায় আনবে: খাদ্যমন্ত্রী

আগামী নির্বাচনে জনগণ শেখ হাসিনাকেই ক্ষমতায় আনবে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র মজুমদার। সোমবার বিকেলে নিয়ামতপুর উপজেলার ৭ নম্বর শ্রীমন্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খাদ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। 

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির মুক্তি ও একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রাম করেছেন। বারবার কারাবরণ করেছেন। কিন্তু এ দেশের কতিপয় ষড়যন্ত্রকারী ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তে ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধু তাঁর পরিবারের সদস্যসহ নির্মমভাবে নিহত হন। খুনিরা ভেবেছিল, তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধ্বংস করা যাবে। কিন্তু তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন মানুষের মণিকোঠায়।’ 

বিএনপি ষড়যন্ত্রকারীদের দল মন্তব্য করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় এসেছিল তারা। এখন নির্বাচন এলে তারা ভয় পায়। কানাগলি খুঁজতে থাকে ক্ষমতায় যাওয়ার।’ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপিকে সমুচিত জবাব দেবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। 

শ্রীমন্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজহারুল ইসলাম বুলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান বিপ্লব, সহসভাপতি ঈশ্বর চন্দ্র বর্মন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ আহম্মেদ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাইবান্ধায় পাট চাষ: লোকসানে চাষি, লাভে ফড়িয়া

  • মাসখানেক আগে ফড়িয়ারা কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি মণ পাট কেনেন ২ হাজার ৫০০ টাকায়।
  • অধিকাংশ কৃষকের কাছে পাট না থাকলেও বাজারদর বেড়ে ৪২০০ টাকায় পৌঁছেছে।
  • ধারদেনা শোধের চাপে থাকা কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে পাট কিনে মুনাফা গুনছেন ফড়িয়ারা।
আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
বিক্রির জন্য চরাঞ্চল থেকে নৌকায় করে পাট নিয়ে আসেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি গাইবান্ধার পুরাতন ফুলছড়ি বাজারের একটি ঘাটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিক্রির জন্য চরাঞ্চল থেকে নৌকায় করে পাট নিয়ে আসেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি গাইবান্ধার পুরাতন ফুলছড়ি বাজারের একটি ঘাটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জমি বর্গা নিয়ে ও ধারদেনা করে পাট চাষ করেছিলেন কৃষকেরা। তাঁরা দেনা শোধ করার জন্য মাসখানেক আগে খেতের পাটগাছ কেটে সোনালি আঁশ বিক্রি করে দেন। সে সময় ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা দরে কিনে নেন। এতে কৃষকদের আবাদ ও শ্রমিক খরচও ওঠেনি। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ কৃষকের কাছেই পাট নেই। অথচ প্রতি মণ পাটের দাম বেড়ে ৪ হাজার ২০০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষকেরা লোকসানে থাকলেও লাভবান হচ্ছেন পাট মজুত করে রাখা মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা।

সম্প্রতি গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এবং পাটের বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। কৃষকদের অভিযোগ, মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী চক্রের কারণে পাটচাষিরা লোকসানে পড়েন। মৌসুমের সময় তাঁরা কম দামে পাট কিনে এখন চড়া দামে কারখানায় বিক্রি করছেন। প্রতিবছর ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ায় কৃষকেরা পাট চাষ কমিয়ে দিয়েছেন। অনেকে পাটের আবাদই ছেড়ে দিয়েছেন।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ছয় বছর ধরেই পাটের আবাদ কমছে। যদিও গত বছরের তুলনায় এবার কিছুটা বেড়েছে। এর মধ্যে ২০২১ সালে জেলায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছিল। পরের বছর ২০২২ সালে তা নেমে আসে ১৪ হাজার ৩১৩ হেক্টরে। ২০২৩ সালে তা পরিবর্তিত ছিল। ২০২৪ সালে এসে আরও কমে দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৭৯০ হেক্টর। সর্বশেষ ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩২ হেক্টর জমিতে আবাদ বাড়লেও এখনো লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি কৃষি বিভাগ।

জেলার বিভিন্ন হাটে দেখা গেছে, প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায়; যা এক মাস আগেও ছিল ২ হাজার ৫০০ থেকে হাজার ৭০০ টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে মণপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে কৃষকদের কাছে পাটের মজুত নেই। এখন বেচাকেনা চলছে মধ্যস্বত্বভোগী ও বড় ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ফলে পাটের মূল্য বাড়লেও তা কৃষকদের লাভে আসছে না। কারণ, অধিকাংশ কৃষক আগেই ধারদেনা শোধ করতে কম দামে পাট বিক্রি করে দেন।

কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে পাটের দাম নির্ধারণ করেন পাটকলমালিক ও ফড়িয়া সিন্ডিকেট। মৌসুমের শুরুতে তাঁরা কম দামে পাট কিনে মজুত রাখেন। পরে বাজারে চাহিদা বাড়লে দাম বাড়িয়ে দেন। ফলে কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন।

গাইবান্ধার ফুলছড়ির চরাঞ্চলের কৃষক মতি মিয়া বলেন, ‘এখন পাটের দাম ভালো, কিন্তু আমাদের ঘরে তো পাট নাই। কাটার সময় বিক্রি করেছি ২ হাজার ৮০০ টাকায়। তখন বিক্রি না করলে ধারদেনা শোধ হতো না। যাঁরা সেই পাট কিনে মজুত করে রেখেছেন, এখন তাঁরাই লাভ করছেন।’

কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের কৃষক সোবাহান মিয়া বলেন, সার, বীজ, শ্রমিক—সবকিছুতেই খরচ বেশি। আবার ঝুঁকি নিতে হয় বন্যা-খরার। এত কষ্ট করে পাট চাষ করে লাভ হয় না।

একই গ্রামের নাজমুল হোসেন বলেন, ‘সরকার যদি মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকের কাছ থেকে পাট কিনত, তাহলে আমরা লোকসানে পড়তাম না। এখন তো আমরা শুধু সিন্ডিকেটের হাতে মরছি।’

ফুলছড়ি হাটের পাইকারি ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, ‘আমরা স্থানীয়ভাবে পাট কিনি, কিন্তু দাম ঠিক হয় ঢাকার মিলমালিকদের নির্দেশে। আমরা শুধু তাঁদের দেওয়া দামে বেচাকেনা করি।’

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিকুল ইসলাম দৈনিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে পাটের বাজার ভালো। পাট চাষে উৎসাহিত করতে এ বছর জেলায় দুই হাজার কৃষককে বিনা মূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। তবে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারলে কৃষকদের পাট চাষে আগ্রহ ফিরবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বরগুনার ২ আসন: বিএনপির মনোনয়ন চান ১১ জন

বরগুনা প্রতিনিধি
নজরুল ইসলাম মোল্লা, ফিরোজ-উজ-জামান মামুন মোল্লা, ফজলুল হক মাস্টার, নূরুল ইসলাম মনি, খন্দকার শোয়াইব মাহবুব ও মাওলানা শামীম। ছবি: সংগৃহীত
নজরুল ইসলাম মোল্লা, ফিরোজ-উজ-জামান মামুন মোল্লা, ফজলুল হক মাস্টার, নূরুল ইসলাম মনি, খন্দকার শোয়াইব মাহবুব ও মাওলানা শামীম। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বরগুনায় জমে উঠেছে নির্বাচনী রাজনীতি। একসময় আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিতি থাকলেও গত বছরের ৫ আগস্টের পর সেই সমীকরণ বদলে গেছে। মাঠে নেই কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র জাতীয় পার্টি। এমন বাস্তবতায় মাঠে সক্রিয় বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যরা। নির্বাচন সামনে রেখে জেলার দুটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে মরিয়া অন্তত ১১ জন।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে পুরোদমে মাঠে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলো। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন ইতিমধ্যে জেলার দুটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও ভোটারদের মন জয় করতে গণসংযোগ, সভা-সমাবেশে ব্যস্ত। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের তৎপরতা সেভাবে চোখে পড়ছে না।

২০০১ সালে বরগুনায় তিনটি সংসদীয় আসন ছিল। বরগুনা-১ (সদর, বেতাগী), বরগুনা-২ (বামনা, পাথরঘাটা) এবং বরগুনা-৩ (আমতলী, তালতলী)। ২০০৮ সালে এটি কমিয়ে দুটি করা হয়। বর্তমানে বরগুনা-১ আসন গঠিত সদর, আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে। আর বরগুনা-২ আসন গঠিত বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলা নিয়ে। জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় মোট ভোটার ৮ লাখ ১ হাজার ১৭৩ জন। এর মধ্যে বরগুনা-১ আসনে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯১৭ এবং বরগুনা-২ আসনে ৩ লাখ ১৭ হাজার ২৫৬ জন।

বরগুনা-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে তৎপর অন্তত পাঁচজন। তাঁরা হলেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম মোল্লা, কেন্দ্রীয় সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ-উজ-জামান মামুন মোল্লা, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল হক মাস্টার, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হুমায়ুন হাসান শাহিন এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. রেজবুল কবির। এদের মধ্যে নজরুল ইসলাম মোল্লাকে ২০১৮ সালে সাবেক এমপি মতিউর রহমান তালুকদারের সঙ্গে দলীয় মনোনয়ন তালিকায় রাখা হয়েছিল। পরে মতিউর রহমান তালুকদারের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হলে দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।

নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘সারা জীবন বিএনপির রাজনীতি করেছি। ছাত্রদল করেছি, দীর্ঘদিন জেলা যুবদলের সভাপতি ছিলাম। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চার বছর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। শেখ হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। রাজপথে আন্দোলন করেছি। তিনবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। সাধারণ মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছি। আশা করি, দল আমার মূল্যায়ন করবে।’

বরগুনা-২ আসনেও রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। আসনটিতে বিএনপির জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। বিএনপির মনোনয়নের জন্য এখানে অন্তত ছয়জনের দৌড়ঝাঁপের কথা শোনা যাচ্ছে। তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম মনি, মরহুম বিএনপি নেতা খন্দকার মাহবুব হোসেনের ছেলে ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি খন্দকার শোয়াইব মাহবুব, ওলামা দলের মাওলানা শামীম, যুবদলের মনিরুজ্জামান মনির, আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের মিজানুর রহমান খান জাকির এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল হারুনুর রশিদ খান।

নূরুল ইসলাম মনি বিভিন্ন সভায় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে খন্দকার শোয়াইব মাহবুব বলেন, ‘আমার বাবা বিএনপির কঠিন সময়ে দলকে আগলে রেখেছেন। বৃদ্ধ বয়সে জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ পেলে বাবার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে চাই। আশা করি সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দল সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাভার সিটি করপোরেশন: ভালো-মন্দের হিসাব মেলাচ্ছে মানুষ

  • সিটি করপোরেশন গঠনে নীতিগত সিদ্ধান্ত।
  • নাগরিক সুবিধা বাড়বে, অবকাঠামো উন্নয়ন হবে।
  • ট্যাক্স বাড়বে, কষ্টে পড়বে সীমিত আয়ের মানুষ।
অরূপ রায়, সাভার 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সাভার পৌরসভাসহ সাভার ও আশুলিয়ার ১২টি ইউনিয়নকে একীভূত করে ‘সাভার সিটি করপোরেশন’ গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্ভাব্যতা যাচাই করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। তবে স্থানীয় বাসিন্দা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

সাভারকে সিটি করপোরেশন করার সিদ্ধান্তের পর থেকে এলাকায় পক্ষে-বিপক্ষে বলাবলি হচ্ছে। কেউ বলছেন, সিটি করপোরেশন করা হলে এই অঞ্চলে নাগরিক সুবিধা বাড়বে, অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়ন হবে। আবার কেউ বলছেন, সিটি হলে কর বাড়বে, তার জেরে বাড়বে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, একটি পৌরসভা ও ৪০৩টি গ্রাম নিয়ে ২৮০.১২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সাভার উপজেলা। রাজধানীর অদূরে হওয়ায় পৌর শহর ছাড়া অনেক গ্রামেও ঘরবাড়ি, ভবনের ক্ষেত্রে কমবেশি শহরের ছোঁয়া লেগেছে। কিন্তু নেই যথাযথ পানীয় জল সরবরাহ, পানিনিষ্কাশন ও পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো নাগরিক সুবিধা।

গত শতকের নব্বইয়ের দশক থেকে সাভার ও আশুলিয়ায় একের পর এক গড়ে উঠতে থাকে ছোট-বড় কলকারখানা।

কারখানাগুলোতে কাজ করতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতে থাকেন মানুষ। তাঁদের বসবাসসহ নানা চাহিদাকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলে বাড়তে থাকে ভবনের সংখ্যা, যার অধিকাংশই গড়ে উঠছে অপরিকল্পিতভাবে। নগর গবেষকেরা বলছেন, এ কারণে এলাকাটিতে পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

কিন্তু সিটি হলেও আপাতত কী উপকার হবে তা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে সংশয় রয়েছে। সাভারের ব্যবসায়ী ওবায়দুর রহমান অভি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন হলে নাগরিকদের কর বেড়ে যাবে। কিন্তু সাভার ও আশুলিয়ার যে ভৌগোলিক অবস্থা, তাতে গ্রামে নাগরিক সুবিধা পৌঁছাতে ১০০ বছর লেগে যাবে।’

ঢাকা জেলা মহিলা দলের সহসভাপতি মিনি আক্তারও ব্যয় বৃদ্ধির দিকটি উল্লেখ করে বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের ফি তুলনামূলক অনেক কম। সিটি করপোরেশন হলে তা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এ এলাকায় বসবাসকারীদের অধিকাংশই নিম্ন আয়ের পোশাকশ্রমিক। হোল্ডিং ট্যাক্স ও সার্ভিস চার্জ বেড়ে গেলে বাড়িঅলারা নিশ্চয়ই তা ভাড়াটেদের ওপর চাপাবে। এতে পোশাকশ্রমিকদের ব্যয় বেড়ে যাবে।’

সাভার পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বদির বলেন, ‘সিটি করপোরেশন সেই এলাকাতেই করা উচিত, যেটা শহর। সাভার ও আশুলিয়ার অধিকাংশ এলাকাই এখনো প্রত্যন্ত। পুরো সাভার ও আশুলিয়া নয়, সাভার পৌর শহরসহ যেসব এলাকায় শহরের ছোঁয়া লেগেছে, ওই সব এলাকাকে সিটি করপোরেশনের মধ্যে নিলে ভালো হবে।’

তবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান মনে করেন বলেন, রাজধানীসংলগ্ন সাভার এলাকার উন্নয়নের জন্যই এটি সিটি হওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘এলাকার অনেকে আইন মানতে চান না। অনেকেই পরিবেশকে অবজ্ঞা করে নদী-নালাতে বিষাক্ত বর্জ্য ফেলেন। এসব নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের সিটি করপোরেশন দরকার। এই পুরো এলাকার উন্নয়নটা ভারসাম্যপূর্ণ করার জন্য সরকারের আগ্রহ দরকার।’

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাভার পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, ‘সিটি করপোরেশন হলে এলাকার সড়ক, ফুটপাত, ড্রেনেজ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একক কর্তৃপক্ষের হাতে থাকবে। এতে কাজের গতি ও মান বাড়বে। এ ছাড়া জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং করসহ নাগরিকদের সেবা এক ছাদের নিচে পাওয়া যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মিরপুরে পোশাক কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে, হতাহত নেই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বরে একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার স্টেশনের ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ১২টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ছয়তলার পুরোটাই পুড়ে গেছে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে একটি বাণিজ্যিক ভবনের ছয়তলায় এ আগুন লাগে

‎ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা (মিডিয়া) তালহা বিন জসিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুক্রবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে মিরপুর ১২ নম্বরে একটি ছয়তলা ভবনের ওপরের তলায় আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে ফায়ার স্টেশনের সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ১২টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ভবনটির প্রথম দোতলায় ‘বিবাহ বাড়ি’ কমিউনিটি সেন্টার, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ডেকোরেশনের কাজ চলছিল, তাই ফাঁকা রয়েছে। আর ৫ তলায় একটি তৈরি পোশাক কারখানা এবং ছয়তলায় পরিত্যক্ত বিভিন্ন মালামাল ছিল। আগুনে ছয়তলার পুরোটা এবং পাঁচতলার কিছু অংশ পুড়ে গেছে।

‎আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটির ছয়তলায় আগুন লাগে। সেখানে পরিত্যক্ত কাগজ, ফার্নিচারসহ বিভিন্ন মালামাল ছিল। সেগুলো পুরোটাই পুড়ে গেছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

‎কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা জানা যায়নি। তদন্ত করে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত