Ajker Patrika

সাভার সিটি করপোরেশন: ভালো-মন্দের হিসাব মেলাচ্ছে মানুষ

  • সিটি করপোরেশন গঠনে নীতিগত সিদ্ধান্ত।
  • নাগরিক সুবিধা বাড়বে, অবকাঠামো উন্নয়ন হবে।
  • ট্যাক্স বাড়বে, কষ্টে পড়বে সীমিত আয়ের মানুষ।
অরূপ রায়, সাভার 
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ১৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সাভার পৌরসভাসহ সাভার ও আশুলিয়ার ১২টি ইউনিয়নকে একীভূত করে ‘সাভার সিটি করপোরেশন’ গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্ভাব্যতা যাচাই করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। তবে স্থানীয় বাসিন্দা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

সাভারকে সিটি করপোরেশন করার সিদ্ধান্তের পর থেকে এলাকায় পক্ষে-বিপক্ষে বলাবলি হচ্ছে। কেউ বলছেন, সিটি করপোরেশন করা হলে এই অঞ্চলে নাগরিক সুবিধা বাড়বে, অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়ন হবে। আবার কেউ বলছেন, সিটি হলে কর বাড়বে, তার জেরে বাড়বে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, একটি পৌরসভা ও ৪০৩টি গ্রাম নিয়ে ২৮০.১২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সাভার উপজেলা। রাজধানীর অদূরে হওয়ায় পৌর শহর ছাড়া অনেক গ্রামেও ঘরবাড়ি, ভবনের ক্ষেত্রে কমবেশি শহরের ছোঁয়া লেগেছে। কিন্তু নেই যথাযথ পানীয় জল সরবরাহ, পানিনিষ্কাশন ও পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো নাগরিক সুবিধা।

গত শতকের নব্বইয়ের দশক থেকে সাভার ও আশুলিয়ায় একের পর এক গড়ে উঠতে থাকে ছোট-বড় কলকারখানা।

কারখানাগুলোতে কাজ করতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসতে থাকেন মানুষ। তাঁদের বসবাসসহ নানা চাহিদাকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলে বাড়তে থাকে ভবনের সংখ্যা, যার অধিকাংশই গড়ে উঠছে অপরিকল্পিতভাবে। নগর গবেষকেরা বলছেন, এ কারণে এলাকাটিতে পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

কিন্তু সিটি হলেও আপাতত কী উপকার হবে তা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে সংশয় রয়েছে। সাভারের ব্যবসায়ী ওবায়দুর রহমান অভি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন হলে নাগরিকদের কর বেড়ে যাবে। কিন্তু সাভার ও আশুলিয়ার যে ভৌগোলিক অবস্থা, তাতে গ্রামে নাগরিক সুবিধা পৌঁছাতে ১০০ বছর লেগে যাবে।’

ঢাকা জেলা মহিলা দলের সহসভাপতি মিনি আক্তারও ব্যয় বৃদ্ধির দিকটি উল্লেখ করে বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের ফি তুলনামূলক অনেক কম। সিটি করপোরেশন হলে তা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এ এলাকায় বসবাসকারীদের অধিকাংশই নিম্ন আয়ের পোশাকশ্রমিক। হোল্ডিং ট্যাক্স ও সার্ভিস চার্জ বেড়ে গেলে বাড়িঅলারা নিশ্চয়ই তা ভাড়াটেদের ওপর চাপাবে। এতে পোশাকশ্রমিকদের ব্যয় বেড়ে যাবে।’

সাভার পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বদির বলেন, ‘সিটি করপোরেশন সেই এলাকাতেই করা উচিত, যেটা শহর। সাভার ও আশুলিয়ার অধিকাংশ এলাকাই এখনো প্রত্যন্ত। পুরো সাভার ও আশুলিয়া নয়, সাভার পৌর শহরসহ যেসব এলাকায় শহরের ছোঁয়া লেগেছে, ওই সব এলাকাকে সিটি করপোরেশনের মধ্যে নিলে ভালো হবে।’

তবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান মনে করেন বলেন, রাজধানীসংলগ্ন সাভার এলাকার উন্নয়নের জন্যই এটি সিটি হওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘এলাকার অনেকে আইন মানতে চান না। অনেকেই পরিবেশকে অবজ্ঞা করে নদী-নালাতে বিষাক্ত বর্জ্য ফেলেন। এসব নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের সিটি করপোরেশন দরকার। এই পুরো এলাকার উন্নয়নটা ভারসাম্যপূর্ণ করার জন্য সরকারের আগ্রহ দরকার।’

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাভার পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, ‘সিটি করপোরেশন হলে এলাকার সড়ক, ফুটপাত, ড্রেনেজ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একক কর্তৃপক্ষের হাতে থাকবে। এতে কাজের গতি ও মান বাড়বে। এ ছাড়া জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং করসহ নাগরিকদের সেবা এক ছাদের নিচে পাওয়া যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...